প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের ছেলের মাধ্যমে ছড়ানো অসত্য বক্তব্যের জবাব

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের ছেলের মাধ্যমে ছড়ানো অসত্য বক্তব্যের জবাব

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব টকশো না করে পালিয়ে আসার পর আমরা তা প্রকাশ করে দিলে অসত্য কথনে লিপ্ত হন। যারা পূর্ণ বিবরণ ও পোষ্টমর্টেম নিচে উদ্ধৃত করা হল।

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের নামে উক্ত ঘটনা সম্পর্কে আমরা দুটি বিবরণ পাই। একটি হল, তার ছেলে আব্দুল্লাহ প্রচার করেছেন তার নামে। আরেকটি তার Peace Tv Edutainmentপিস টিভির বাংলা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আপলোডকৃত একটি ভিডিও বার্তা। যার বিবরণ নিচে উদ্ধৃত করা হল।

আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাকের সূত্রে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের জবানবন্দী

আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাকের লেখাটির ফেইসবুক লিংক-

https://www.facebook.com/nibrasresarchfoundation/posts/316795521818136

পূর্ণ লেখাটি হল এই-

Mufti Abdur Razzaq bin Yusuf vs Lutfor Farazi

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বিন্দু মাত্র জানতেন না যে, মোহনা টিভিতে কোনো হানাফী আলেমের সাথে বাহাস করার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি জানেন মোহনা টিভিতে একটা অনুষ্ঠান হবে। মোহনা টিভির অফিসে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন যে, এটা একটা বিতরক অনুস্ঠান । তাও আবার একজন অল্প বয়সী ছেলের সাথে।

শায়খের ভাষ্য অনুযায়ী সেখানে গিয়ে দেখি ২৫/২৬ বছরের এক ছেলের সাথে নাকি আমাকে টক শো করতে হবে। টক শো যদি করাই লাগে তাহলে আহমাদ শফিদের মত আলেমদের সাথে করতে হবে। হাটু জলে ডুবার চাইতে সাগরে ডুবে মরা অনেক ভাল।

সে যাই হোক অইখানেই লুতফর ফারায়েজী ও শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের মাঝে কিছু কথা হয়। যা তার মুখ থেকে শুনে নিচে তুলে ধরলাম।

লুতফর ফারায়েজী:

আপনার বক্তব্যে দেখলাম মাসাহ করার হাদীস কে জঈফ বলেছেন এবং এক কানে আজান এবং এক কানে একামাত এর হাদীস কে জঈফ বলেছেন। কিভাবে হাদীস গুলো জঈফ?

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফঃ তুমি কি জঈফ জাল বুঝ? উসুলে হাদীস বুঝ? বুঝে থাকলে এই ধরনের প্রশ্ন করার কথা নয়। যদি বুঝে থাক তাহলে তোমাকে বলব তুমি দুই ভাবে একটা হাদীসকে জঈফ বা জাল বলতে পার।

, হাদীস জঈফ কি সহিহ এটা জানার জন্য তুমি অতীত মুহাদ্দিসদের বই পড়তে পার হাফেজ জাহাবি হাফেজ ইবনে হাজার, আল্লামা সানানী, এবং নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ সহ বিভিন্ন মুহাদ্দিসদের মন্তব্য পড়বে। তারা হাদীস কে সহীহ ও জঈফ বলে থাকেন।

লুতফর ফারায়েজীঃ তারা তো কেউ কেউ একই হাদীস কে জঈফ আবার সহীহ বলছেন। তাহলে??

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফঃ এর মানে তুমি কি বলতে চাচ্ছ যে, হাদীস সহিহ জঈফ হয়না? তুমি কি মান যে, হাদীস সহীহ জঈফ হয়?

লুতফর ফারায়েজীঃ জী হয়।

, এই রূপ হলে তুমি হাদীসের রাবীদের অবস্থা জাচাই করার জন্য মিযানুল ইতিদাল, উসুদুল গাবাহ, তাহজিবুত তাহজিব, তাক্রীবুত তাহজিব ইত্যাদি বইয়ের সহজোগিতা নিবে এবং দেখবে হাদীসে কোণো জঈফ রাবী আছে কিনা? তারপর তোমার তদন্তে হাদীস জঈফ হলে তুমি কি তাকে জঈফ বলবে না সহীহ বলবে??

লুতফর ফারায়েজীঃ জঈফ বলব।

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফঃ জঈফ বুঝতে পারার পর তুমি কি জঈফ হাদিসের উপর আমল করবে না সহিহ হাদীসের উপর?

লুতফর ফারায়েজীঃ সহিহ হাদীসের উপর।

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফঃ আমরা এটাই করে থাকি।

লুতফর ফারায়েজীঃ কিছু সময় চুপ থাকার পর, রাসুল ছাঃ একদিন তার জুতা পরিস্কার থাকায় জুতা পরেই সালাত আদায় করেছেন। এখন কি আপনি বলবেন যে, জুতা পরে সালাত পড়া সুন্নাত বা সব সময় জুতা পরে সালাত আদায় করা যাবে।

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফঃ কারো জুতা যদি পবিত্র থাকে আর সে যদি সব সময় জুতা পরে সালাত আদায় করে। এতে তোমার কি সমস্যা??

লুতফর ফারায়েজীঃ কিছু সময় চুপ থাকার পর, আচ্ছা ইমাম বুখারী যে হাটুর নিচে কাপড় রাখাকে উত্তম এবং উপরে রাখাকে আস্নাদ বা শক্তিশালি বলেছেন। তাহলে কি আপনি বলবেন হাটুর উপর কাপড় রাখা সুন্নাত?

লুতফর ফারায়েজী সাহেব এখানে ইমাম বুখারীর আরবী কথা নকল করতে গিয়ে ভুল করে ফেলে এবং শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ তা শুদ্ধ করে দিয়ে তার প্রশ্নের জবাবে বলেন।

তুমি কি শরীয়ত কিছু বুঝ? ইমাম বুখারীর কথা এভাবে উল্টাভাবে নিচ্ছ কেন? খোলা মনে শরীয়ত বুঝতে পারনা? এখানে কি উপরে রাখাকে সুন্নত বলা হয়েছে? নিচে রাখাই সুন্নাত এখন কারো যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে সে কাপড় উপরে উঠাতে পারে।

লুতফর ফারায়েজীঃ চুপ

সূত্র

উক্ত লেখাটির স্ক্রীণ শর্ট দেখুন

mohona 1

mohona 3

উপরোক্ত বক্তব্যের মিথ্যাচার এবং জবাব

পয়েন্ট নং-১

টকশো হবে বলে তিনি জানতেন না।

আমাদের কথাঃ

এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই স্বাক্ষ্যি। কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী? অনুষ্ঠান আয়োজকবৃন্দই জানেন তারা কিভাবে কথা বলেছেন আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সাথে। কিন্তু আমার সাথেতো পরিস্কার ভাবেই বলা হয়েছে মাযহাব ও উপমহাদেশে উলামায়ে কেরামের অবদান বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সাথে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হবে। যা হবে টকশো পদ্ধতিতে।

যাইহোক। কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী? এক্ষেত্রে সেটি আল্লাহ তাআলা এবং আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এবং অনুষ্ঠান পরিচালকবৃন্দই জানেন।

পয়েন্ট নং-২

২৫/২৬ বছরের যুবকের সাথে বিতর্ক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি অপছন্দ করেছেন।

আমাদের কথাঃ

এর কোন যৌক্তিক কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষের মাহফিলে উলামায়ে দেওবন্দ ও হানাফী মাযহাবের বিরুদ্ধে জোর গলায় অপপ্রচারকারী ব্যক্তি একটি বাচ্চা ছেলের সাথে টকশো করে তাকে হেস্তনেস্ত করে ফেলে বিজয়ী হওয়ার সুযোগ কেন গ্রহণ করলেন না? সাধারণ মানুষের সামনে বাঘ সেজে যেতে পারেন, আর একজন কম বয়সী আলেমের সামনে দাঁড়ানোর হিম্মত কেন হয়নি?

পয়েন্ট নং-৩

২৫/২৬ বছরের সেই যুবকটি হাটু জল, আর আহমাদ শফী দা.বা. সাগর। আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এ ২৫/২৬ বছরের এ হাটুজলের কাছে হেরে গিয়ে মান সম্মান ডুবাতে চাচ্ছেন না, বরং আহমদ শফী দা.বা. এর মত সাগর জ্বলে ডুবে সম্মানজনক হারের তৃপ্তি অর্জন করতে চাচ্ছেন।

আমাদের কথাঃ

তিনি এতটুকু নিশ্চিত হয়েই উক্ত কথাগুলো বলছেন যে, তিনি যে ডুবে যাবেন তথা হেরে যাবেন এটি নিশ্চিতভাবেই তিনি জানেন। বাকি হাটু জলে ডুবলে মুখ দেখানো যাবে না, সম্মান আর বাকি থাকবে না, তাই সাগর জলে ডুবতে চাচ্ছেন। কিন্তু তিনি এতটুকু সাহস দেখাতে পারলেন না যে, তিনি আসলে ডুববেন না, তিনি হাটুজলকে পরাভূত করে সাগর জলেও ঝাঁপ দিবেন। সেটিকেও পাড়ি দেয়ার দুঃসাহস দেখাবেন।

কিন্তু আফসোস! তিনি হাটু জল দেখেই ভয় পেলেন। সাগর জলের মুলা ঝুলিয়ে স্থান ত্যাগ করে পালালেন।

পয়েন্ট নং-৪

বক্তব্যটি দ্বারা বুঝা যাচ্ছে, আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমাকে তুমিতুমিকরে কথা বলেছেন।

আমাদের বক্তব্যঃ

অথচ এটি একটি ডাহা মিথ্যা কথা। তিনি আমাকে একবারও তুমি বলেননি। তিনি আমাকে সম্মানের সাথে আপনিআপনিকরেই কথা বলেছন। যদিও আমি তার ছেলের বয়সী। তিনি আমাকে তুমি করে বলতেই পারেন। কিন্তু সামনে এসে আপনিআপনিকরে বলে আড়ালে গিয়ে তুমিতুমিকরে বলেছেন মর্মে প্রচার করা প্রতারণা ছাড়া আর কি হতে পারে?

পয়েন্ট নং-৫

উপরের বর্ণনা দ্বারা বুঝা যাচ্ছে, আমি অধমকে আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এভাবে প্রশ্ন করেছেন- তুমি কি জঈফ জাল বুঝ? উসুলে হাদীস বুঝ? বুঝে থাকলে এই ধরনের প্রশ্ন করার কথা নয়।

সেই সাথে আমি এমন সব প্রশ্ন করেছি, যার সঠিক জবাব তিনি মুহুর্তেই দিয়ে আমাকে চুপ করিয়ে ফেলেছেন।

আমাদের বক্তব্যঃ

শুধু এতটুকু বলি- মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত। বর্ণনার কারচুপি, আর শব্দের হেরফের করে কার কাছ থেকে বাঁচতে চায় এসব নামধারী আহলে হাদীসরা? তা আমাদের বোধগম্য নয়। কথোপথনে কি পরিমাণ চালাকি ও ধুর্ততার আশ্রয় আব্দুর রাজ্জাক সাহেব নিয়েছেন, কিভাবে মূল পয়েন্ট রেখে ভিডিও করতে দেখে ক্যামেরার সামনে নিজের ইলম জাহির করতে অযথা বিষয়ের অবতারণা করেছেন? তার বিস্তারিত বিবরণ ইতোপূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে। পুরো বিবরণ পড়লে আশা করি তা সবার কাছেই পরিস্কার হবে ইনশাআল্লাহ।

পূর্ণ বিবরণ জানতে পড়ুন

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-১

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-২

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-৩

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-৪

আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের অসত্য কথনের পোষ্টমর্টেম

আরও জানুন

অন্যের হক আমার কাঙ্ক্ষিত পথ রুদ্ধ করবে না তো?

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাদাত হুসাইন নশ্বর এই পৃথীবিতে চলতে গেলে যেসকল বস্তুর আমরা মুখাপেক্ষী হই তন্মধ্যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *