প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের অসত্য বক্তব্যের জবাব ও প্রকাশ্য আলোচনার আহবান!

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের অসত্য বক্তব্যের জবাব ও প্রকাশ্য আলোচনার আহবান!

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

প্রথমে আমরা পূর্ণ ভিডিওটি দেখে নেই। যা আপলোড করেছে ইউটিউবে Peace Tv Edutainment| সেটির লিংক হল https://www.youtube.com/watch?v=Br4j_liry5Y

 যা আমরাও আপলোড করে দিলাম দর্শকদের জন্য

ভিডিওটি প্রথমে দেখে নিন।

এবার আমরা উক্ত ভিডিওটি নিয়ে পর্যালোচনা করি। কী প্রমাণ করতে চেয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব উক্ত ভিডিও দিয়ে? কি কি বিষয় দাবি করেছেন উক্ত ভিডিওতে?

কয়েকটি বিষয় আমরা দেখতে পাই-

তিনি এসেছিলেন মাযহাবীদের সমন্বয় বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিতে।

আমাদের বক্তব্যঃ

আমরা উক্ত অনুষ্ঠান স্থলে এসে দেখি হযরতের হাতে ফাখরুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তির মাযহাব বিষয়ক একটি বই। যেটি হাতে করে এসেছিলেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব। আমি উক্ত বইটি হযরত থেকে চেয়ে নিয়ে দেখি। যাতে খুবই নি¤œ মানের ভাষায় চার মাযহাবকে তুলে ধরা হয়েছে। মাযহাব ইসলামকে বিভক্ত করেছে মর্মেও একাধিক স্থানে বক্তব্য রয়েছে। সেই বইটি শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব নিয়ে এসেছেন মাযহাব বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য।

হযরতের বক্তব্য এবং বই সাথে সেখানে আসা প্রমাণ করে, তিনি পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন মাযহাব বিষয়ে আলোচনা করতে।

কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হল,

মাযহাব বিষয়ক আলোচনা করতে পারলে, এক তরফা মাযহাবের খারাপী মানুষের সামনে বলে যেতে পারলে, যারা মাযহাবের পক্ষে আছেন, তাদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে ভয় পেলেন কেন? কেন আলোচনা না করে পালানোর ছুতো খুঁজলেন?

কেন তিনি টকশো না করে চলে গেলেন? আর বাচ্চা ছেলেবেশি ফায়দা হয় নাইত্যাদি ছুতো বের করে কেন পালালেন?

কোন প্রকার বিতর্ক হবে বলে তিনি জানতেন না। তিনি আল আমীন মসজিদের মুতাওয়াল্লী নজরুল ইসলাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন-কোন বিতর্ক অনুষ্ঠান হবে কি না?” তখন নজরুল ইসলাম সাহেব বললেন, না সমন্বয় করার বিষয়ে আলোচনা হবে সেখানে আর তর্কের কি আছে?

আমাদের বক্তব্যঃ

আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের উপরোক্ত স্বীকারোক্তি একথা পরিস্কার ভাষায় প্রমাণ করছে, তিনি জানতেন, তার বিপরীতে তথা মাযহাবের পক্ষে লোক থাকবেন। এ কারণেই তার মনে প্রশ্ন জাগে যে, “আবার বিতর্ক হয়ে যাবে কি না?”

যদি শুধু কাজী ইব্রাহীম এবং মুতাওয়াল্লী নজরুল ইসলাম এবং আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের আলোচনাই টিভিতে ধারণ করার অনুষ্ঠান হতো, তাহলে সেখানে নজরুল সাহেবকে কেন আব্দুর রাজ্জাক সাহেব প্রশ্ন করলেন, “বিতর্ক অনুষ্ঠান হবে কি না?”

নিজেদের লোক দিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান হয়? না বিরোধী ব্যক্তি লাগে? আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের মাযহাব বিষয়ে বিতর্ক হতে পারে মর্মে প্রশ্ন করাই প্রমাণ করে, তাকে বলা হয়েছিল যে, সেখানে বিপরীত মতের লোক থাকবে। কিন্তু বিতর্ক করা উদ্দেশ্য হবে না, বরং হানাফী সালাফী সমন্বয়ের একটি চেষ্টা করা হবে।

কিন্তু মাযহাবের পক্ষে লোক থাকবে অনুষ্ঠানেএকথা যে তিনি জানতেন তা আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের বিতর্ক অনুষ্ঠান হবে কি না?” এই এক প্রশ্নের দ্বারাই পরিস্কার। কারণ, কাজী ইব্রাহীম আর নজরুল ইসলাম সাহেবের সাথে অনুষ্ঠানে বিতর্ক হবে কি না? এ প্রশ্ন করাটা আহমকী প্রশ্ন ছাড়া আর কি হতে পারে?

সুতরাং বুঝা যাচ্ছে, মাযহাবের পক্ষের লোক অনুষ্ঠানে থাকবেন একথা পরিস্কার জানতেন আব্দুর রাজ্জাক সাহেব।

এসব জেনেও তিনি এসেছিলেন অনুষ্ঠানস্থলে। হাতে ছিল ফাখরুল ইসলাম সাহেবের লিখিত মাযহাব বিষয়ে বিদ্বেষমাখা বই। যা ভিডিওগুলোতে হাতে ধরে রাখা অবস্থায় দেখা যায় পরিস্কার।

কিন্তু তিনি হয়তো ভেবেছেন, উলামায়ে দেওবন্দতো টিভি প্রোগ্রামে আসে না। সুতরাং বিপরীতে যদি কেউ আসেই, তাহলে নর্মাল কোন আলেম হয়তো আসবে। যে শায়েখকে ভয় পেয়ে অনুষ্ঠানেই যোগ দিতেই চাইবে না। কিন্তু আল্লাহর এক নাখান্দা বান্দা উলামায়ে দেওবন্দের এক খাদিম যে নাছোড়বান্দা। ঠিকই হাজির হয়ে যাবে আহলে বাতিলের সামনে বুক টান করে। তা হয়তো তিনি ভাবতে পারেননি। তাই পরিচয় জানার পর থেকেই একটানা বলে যেতেই থাকেন, “টিভি টক করলে থাকবেন, কিন্তু টকশো করলে চলে যাবেনটিভি টক করলে থাকবেন, কিন্তু টকশো করলে চলে যাবেনটিভি টক করলে থাকবেন, কিন্তু টকশো করলে চলে যাবেন

হযরত বলেছেন- যারা প্রোগ্রাম নিবে তদের দুইজন লোক এসে আমাদের একটা ঘরে নিয়ে গেল। ঘরে নিয়ে আমাদের বসতে দিল আমরা বসলাম। বসতেই কিছুক্ষণ পরে দুইজন ছেলে মানুষ আসলো। এসে আমাদের সামনে বসে কিছু কথা বলতে লাগল। কথার প্রথম কথা ছিল পরিচিতি। আমি জিজ্ঞাসা করলাম-তোমার নাম কি? সে বলল, আমার নাম লুৎফুর রহমান। তারপর নিজেই বলল, আপনার পরিচয় আমি জানি। আপনার বক্তব্য আমি শুনেছি। তো আপনি মনে কিছু না করলে আপনার আমার কিছু জিজ্ঞাসার আছে।

বললাম- বল তোমার কি জিজ্ঞাসা?

সে বলল, আপনি বলেছেন কাঁধ মাসাহ করার হাদীস জাল এবং বাচ্চার এক কানে আজান ও এক কানে ইকামত এই মর্মে হাদীসটি জাল। তো আমিতো দেখছি এই মর্মে হাদীস আছে। একটা খাতা বের করে হাদীস পড়তে যাচ্ছিল।

তো আমি বললাম, তুমি হাদীস পড়তে যাবে, খাতা বের করে পড়তে যাচ্ছো কেন? কোন হাদীস গ্রন্থে আছে হাদীস সেটা বের কর। বের করে দেখ হাদীস ঠিক কি বেঠিক? তুমি কি হাদীস ঠিক বেঠিক দেখা বুঝ? এইভাবে ঠিক বেঠিক দেখতে হই। এই কথা বলে আমি বললাম, হাদীস তদন্ত করার গুরুত্বপূর্ণ একটি বই হচ্ছে মিযানুল ইতিদাল। একটি বই হচ্ছে লিসানুল মিযান। একটি বই হচ্ছে তাকরীবুজ তাহযীব। একটি বই হচ্ছে উসদুল গাবাহ। এই বইগুলোতে রাবীদের নাম আছে। নিজেই তদন্ত কর। তাহলে হাদীস জাল জঈফ সিদ্ধান্তে পৌঁছিতে পারবে। আর এইডা যদি না হয়, তাহলে যেসব বিদ্বান তদন্ত করেছেন তাদের বই দেখ। যারা তদন্ত করেছেন তাদের একজন হচ্ছে নাসীরুদ্দীন আলবানী রহঃ। ইরওয়াউল গালীল। আরেকজন হচ্ছেন মোল্লা আলী কারী। মেশকাত গ্রন্থের ভাস্যকর। বইয়ের নাম হচ্ছে মওজুআতে কাবীর। মোল্লা আলী কারী। সেখানে দেখ। এছাড়া তুহওয়াতুল আহওয়াজী এবং সুবুলুস সালাম এই বইগুলোতে এসব হাদীস তদন্ত করা আছে। দেখ। এই গুলো বলতেই সে একটা জিজ্ঞাসা করল। তাহল এই হাদীসেতো আছে জুতা পায়ে দিয়ে সালাত আদায় করেছেন আল্লাহর রাসূল। তাহলে কি এখন জুতা পায়ে দিয়ে সালাত আদায় করতে হবে? আরো বলল, কিছু হাদীসে দেখা যাই, হাটুর উপর কাপড় রাখা যায়, হাটুর নিচে কাপড় রাখা যায়। তাহলে কি হাটুর উপর কাপড় রাখতে হবে? আমি বললাম, তুমি এভাবে শরীয়ত এইভাবে বুঝতে চাচ্ছ কেন? শরীয়ত যেভাবে বুঝতে হবে সেভাবে বুঝ। এরপর ও বলল যে, আপনি একটি হাদীসকে সহীহ বললেন, আরেকজন একটি হাদীসকে সহীহ বললেন, ঐ হাদীসকে আরেকজন বললেন, এ হাদীসটি জাল জঈফ। তাহলে এর ছিদ্ধান্ত কি হবে? আমি তখন বললাম, তুমি কি এই বলে বলতে চাচ্ছ, সহীহ জঈফ বইলা কোন জিনিস নেই? যে না আমি তা বলতে চাচ্ছি না। তাহলে তুমি বল, যদি তোমার তদন্তে একটা হাদীস জাল বলে প্রমাণ হয়, তাহলে তুমি জাল বলবে কি না? বলে হ্যা তা বলবো। তোমার তদন্তে একটি হাদীস যদি সহীহ বলে প্রমাণ হয়, তাহলে সেটিকে সহীহ বলবে কি না? হ্যা তা বলবো। তো আমরাতো এটাই বলছি। আমরাতো অন্য কিছু বলি না। তখন সে চুপ হয়ে গেল।

এই পর্যায়ে আমাদের এখানে মুটামুটি কথা ছেস হয়। এরপর আমরা যারা প্রোগ্রামের জন্য নিয়ে গেছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম। আচ্ছা, তোমাদের এই প্রোগ্রাম টকশো না টিভি টক? তারা বলল যে, টকশো। আমি বললাম যে না টকশো নয়, টিভি টক কর। তাহলে একটি বিষয় পূর্ণ বলার সুযোগ হই। সুবিধা হয়। আর টকশো হলে একটি আলোচনা করতে করতেই ঐ বিষয়ে পূর্ণ আলোচনা না হতেই আরেকজনকে সময় দেয়া লাগে। বা পরিচালক সময় দিয়ে দেন। তখন বিষয়টি পূর্ণ আলোচনা করা যাইনা। তখন তাদের যে পরিচালক সে বলল, হ্যাঁ, কথাতো ঠিক। ছেস পর্যন্ত আমাদের কথা এটাই হল যে, টকশো হলে আমরা প্রোগ্রাম করি, না হলে আমরা, টিভি টক হলে আমরা প্রোগ্রাম করি নইলে যাই। তোমরা কি টিভি টক নিতে পারবে? তারা বলল, না আমরা টিভি টক আজকের বৈঠকে নিতে পারছি না। আচ্ছা ঠিক আছে। এই বলে আমরা বিদাই নিয়ে চলে আছলাম।

এরপর লুৎফুর ফরায়েজীর সাথে আমার কোন কথা হয়নি। ঐ দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ঐ পর্যন্ত কথা ছেস। টকশো টিভি টকের বিষয়ে লুৎফর ফরায়েজীর ছাথে আমার কোন কথা হয়নি। আমরা উঠে চলে আসলাম তখনো লুৎফুর ফরায়েজী আমাদের কিছু বলেনি।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে পরবর্তীতে যে, আমাদের নামে তার পক্ষ থেকে তাদের পক্ষ থেকে অনেক কিছুই বলা হইয়েছে। তার একটি বলা হয়েছে এই, যে উনি বিতর্কিত আলোচনা করার জন্য এখানে এসেছিলেন। তারপর ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছেন। নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক। দ্বীন প্রচারের ব্যাপারে ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছি অন্তত আমি আব্দুর রাজ্জাকের ব্যাপারে কখনো ঘটেনি। আর ভবিষ্যতে ঘটবে ইনশাআল্লাহ এটা আমি মনে করিনে। ঘটবে না এটাই চূড়ান্ত। তো এই ধরণের মিথ্যা কথা, আলেমদের ব্যাপারে বলা, একজন আলেমের জন্য আমরা শুভনীয় মনে করি না। বরং এটা একটা নিচু শ্রেণীর কমিনা মানুষের কাজ। যেটা ঘটেনি সেটা ইন্টারনেটে আসবে কেন? সাথে সাথে আমাদের এই কথাগুলো ভিডিও হচ্ছে, সেটাও আমরা জানি না। দেখা যাচ্ছে, যারা আমাদেরকে বলছে, তারা বলছে, আপনাদের ছবিতো আমরা দেখলাম। আপনি আছেন এবং আলআমীন মসজিদের মুতাওয়াল্লি জনাব নজরুল ইসলাম সাহেব আছেন। তাহলে ভিডিওর ব্যাপারে আমরা জানলাম না। আমরা সেখানে বিতর্কিত প্রোগ্রামে গেছি পালিয়ে আসলাম এ বিষয়ে আমরা জানলাম না। বিতর্কিত প্রোগ্রাম এটাই আমি জানি না। যে ছেখানে বিতর্কিত প্রোগ্রাম। ভিডিও হচ্ছে এটা আমি জানি না।

তো দেখুন, মুসলিম ভাইও বোন আপনারা। বিষয়টি তলিয়ে দেখুন। আমি আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ। আমি মানুছ। ভুলত্রুটির উর্দ্ধে একথা আমি বলি না। আমি যা কথা বলছি তা সত্যসত্যই তা একশ পার্সেন্ট সত্যই বলছি। বিতর্কিত অনুষ্ঠান এটাও আমি জানতাম না। ভিডিও হচ্ছে এটাও আমি জানতাম না। পালিয়ে আসার বিষয়টি নগদ ডাহা মিথ্যে। যারা মিথ্যাচার করে তাদের অবস্থা কি হবে তা আল্লাহই ভাল জানেন। {আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেবের বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও}

আমাদের বক্তব্যঃ

এই হল হযরতের বক্তব্য। দশ মিনিটের দীর্ঘ এ বক্তব্যের শেষের দিকে তিনি বলেছেন যারা মিথ্যাচার করে তাদের অবস্থা কি হবে তা আল্লাহই ভাল জানেন।

কিন্তু তার জন্য আমাদের আফসোস হয়, তিনি মুখ দিয়ে একথা স্বীকার করার পরও আল্লাহ তাআলাকে ভয় পেয়ে মিথ্যাচার থেকে নিবৃত হননি। অসংখ্য মিথ্যা দিয়ে সাজালেন তার এই ভিডিওটিকে। পয়েন্ট আকারে তা নিচে উদ্ধৃত করা হল।

অসত্য নং- ১

তিনি বলেছেন ঘরে বসার কিছুক্ষণ পর দুইজন ছেলে ঘরে প্রবেশ করে। যেভাবে বলেছেন তিনি তাতে বুঝা যাচ্ছে আগত দুই ছেলের সাথে তার আগে দেখা হয়নি।

আমাদের বক্তব্যঃ

অথচ ঘরে প্রবেশের পূর্বেই তিন তলায় শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এবং আল আমীন মসজিদের মুতাওয়াল্লি নজরুল ইসলাম সাহেবের সাথে আমাদের সালাম মুসাফাহা হয়েছে। তারপর আমরা একই সাথে অনুষ্ঠান যেখানে ধারণ করা হবে সেই রুমে যাওয়ার জন্য রওনা দেই। আগে ছিলেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব। আর পিছনে তার দুই ভক্ত এবং নজরুল ইসলাম সাহেব। এর পিছনেই ছিলাম আমি ও আমার সাথে যাওয়া মুফতী মাহবুবুর রহমান। যেহেতু ওনারা আগে ছিলেন। তাই রুমে তারা আগে প্রবেশ করেন। তাদের পিছন পিছন আমরাও প্রবেশ করি।

কিন্তু শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এখানে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলেছেন, তারা প্রবেশের পর দুইজন ছেলে মানুষ আসে। ভাবটা এমন, আমরা নতুন এসেছি। আমাদের স সাথে তার কোন দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। অথচ আমাদের মাঝে আগেই সালাম মুসাফাহা হয়ে গিয়েছিল।

শায়েখের মুখে এ ছলনা ও মিথ্যাশ্রয়ী বক্তব্য দেখে সত্যিই অবাক হলাম।

অসত্য নং-২

তিনি বলেছেন- এসে আমাদের সামনে বসে কিছু কথা বলতে লাগল।

আমাদের বক্তব্যঃ

এটাও হযরতের একটি ডাহা মিথ্যা কথা। আমরা প্রবেশ করে একদম চুপ হয়ে বসেছিলাম। কোন কথাই বলতে ছিলাম না। কথা শুরু করে নজরুল ইসলাম সাহেব। তিনি বলতে গেলে একটি টকিং মেশিন। কথা শুরু করলে আর থামতেই চান না। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, এই করেছেন, সেই করেছেন আরো কত কি? তারপর তিনিই সূচনা করলেন পরিচিতি পর্বের।

তারপর একে একে আমার পরিচয় জানতে চাওয়া হলে পরিচয় দেই। আর আব্দুর রাজ্জাক সাহেবকে আমি চিনি বলে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা না করে, তিনি কী করেন? তা জানতে চাই। তারপর আমি আর কোন কথা বলি না। চুপ হয়ে যাই।

এখানে তিনি আমরা এসেই কথা বলতে থাকি মর্মে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা মিথ্যার ছলনা থেকে আমাদের হিফাযত করুন।

অসত্য নং-৩

তিনি বলেছেন- পরিচিতি পর্ব শেষ হবার সাথে সাথেই আমি হযরতকে বলেছি- তো আপনি মনে কিছু না করলে আপনাকে আমার কিছু জিজ্ঞাসার আছে।

আমাদের বক্তব্যঃ

এটি একটি জঘন্য পর্যায়ের মিথ্যাচার। এমন একজন শায়েখ কি করে এমন তথ্য বিকৃতি করে মিথ্যা কথা বলতে পারেন, তা আমাদের কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না। পরিচয় পর্ব শেষ হবার পরই আমি একদম চুপ হয়ে যাই। কোন কথাই বলি না।

কথা বলতে থাকে নজরুল ইসলাম সাহেব। যার পূর্ণ বিবরণ ইতোপূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে। 

হযরত যে কথোপথনের কথা বলেছেন, তা আমি নিজেই সূচনা করি ইচ্ছেকৃত। সেটি হয়েছে ধারণকৃত ভিডিও এর ৭ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত চলা কথোপথন চলার পর। ভিডিওটি দেখুন

যাতে প্রথম থেকে ৭ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত পরিস্কারভাবে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আব্দুর রাজ্জাক সাহেব টিভি টকটিভি টকবলে জিকির করছেন। আর সবাই তাকে টকশো করতে অনুরোধ করে যাচ্ছেন।

আমি যখন দেখলাম শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব টিভি টকের ছুতো ধরে পালাবেন। টকশোতে জাতির সামনে আহলে হাদীসী মাযহাবের ভন্ডামী প্রকাশ হতে দিবেন না। তখন ভাবলাম। তিনিতো চলে যাবেন বলেই মনে হচ্ছে। তাই কিছু আলোচনা অন্তত করা উচিত। মাহফিলগুলোতে যারা দরজা গলায় উলামায়ে হকের বিরুদ্ধাচারণ করে বেড়ান তিনি বাস্তবে স্বীয় মাযহাবে কতটা প্রাজ্ঞ? তখন আমি হযরতকে প্রশ্ন করতে শুরু করি। যথেষ্ঠ সমান ও আদব দিয়ে প্রশ্ন চেষ্টা করেছি আমি। 

যার বিস্তারিত বিবরণ ইতোমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে।

 

পূর্ণ বিবরণ জানতে পড়ুন

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-১

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-২

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-৩

যেভাবে পালিয়েছেন শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ-৪

যাইহোক। আশ্চর্য হলাম। বড়ই অবাক হলাম শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের মিথ্যাশ্রয়ী ছলনাময়ী আচরণ দেখে। নিজের ভ্রান্ত মতবাদ রক্ষা করতে আসল ঘটনা আড়াল করে এভাবে ঘটনাকে নিজের মত বানিয়ে বলা ব্যক্তি ঠিক কাদের শায়েখ? তা প্রশ্ন থেকেই যায়। কিভাবে তিনি পরিচিতি পর্ব সমাপ্তের পরই আলোচনা শুরু হয়েছে মর্মে বক্তব্য দিতে পারলেন? হাশর, কিয়ামত, মৃত্যু সবই কি ভুলে গেলেন?

দুনিয়ার সামান্য সম্মান কি এতই বড় হয়ে গেল হযরতের কাছে। হৃদয়টা কি একবারও কাঁপেনি এমন ডাহা মিথ্যা কথা অবলীলায় বলতে?

অসত্য নং-৪

তিনি তার ভিডিওতে যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে বুঝা যাচ্ছে তিনি আমাকে তুমিতুমিকরে সম্বোধন করে কথা বলেছেন।

আমাদের বক্তব্যঃ

এটিও একটি প্রতারণা। তিনি আমাকে একবারও তুমি বলে সম্বোধন করেননি। তিনি পরিস্কার ভাষায় আপনি আপনি করে কথা বলেছেন। 

তিনি আমাকে তুমি করে বলতেই পারেন। কারণ হযরতের ভাষ্য মতে আমি হচ্ছি হাটু জল, [হযরতের ছেলে আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক তার পিতা আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন, তাতে শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমাকে হাটু জল আর আহমদ শফী দা.বা. কে সাগর জল বলে মন্তব্য করেছেন। সেই সাথে শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমার মত হাটুজলে ডুববেন না, বরং আহমদ শফী দা.বা. এর মত সাগর জলে ডুববেন বলে মত ব্যক্ত করেন]  সেই জলে তিনি ডুবতে চাচ্ছেন না, তিনি আহমদ শফী দা.বা. এর মত সাগর জলে ডুবতে চান। কিন্তু কথা হল, সামনে এসে আপনিআপনিকরে বলে আড়ালে গিয়ে তুমিতুমিকরে বলেছেন মর্মে প্রচার করা প্রতারণা ছাড়া আর কি হতে পারে?

অসত্য নং-৫

তিনি নাকি আমাকে সম্বোধন করেছেন- তুমি হাদীস পড়তে যাবে, খাতা বের করে পড়তে যাচ্ছো কেন?

আস্তাগফিরুল্লাহ! পুরো কথোপথনের কোথাও তিনি আমাকে একথা বলেননি যে, আমি কেন খাতা বের করে পড়তে যাচ্ছি। আপনারা পূর্ণ কথোপথনের ভিডিওটি দেখুন। সেখানে কোথাও হযরতের পক্ষ থেকে এমন কোন মন্তব্য আছে?

তাহলে কেন এ মিথ্যার আশ্রয় নেয়া?

অসত্য নং-৬

তিনি নাকি আমাকে প্রশ্ন করেছেন যে, “তুমি কি হাদীস ঠিক বেঠিক দেখা বুঝ?”

আমাদের বক্তব্যঃ

হে আল্লাহ! এমন মিথ্যা আর প্রতারণা থেকে আমাদের হিফাযত করুন। আপনারা নিশ্চয় ইতোপূর্বের বিস্তারিত বিবরণ থেকে পরিস্কার দেখতে পেয়েছেন যে, আমি যখন হযরতকে জিজ্ঞাসা করি যে, কাঁধ মাসাহ করা হাদীসটি কেন জাল? কোন সুনির্দিষ্ট কারণে তা জাল? এ প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দিতে না পেরে সম্পূর্ণ অপ্রসাঙ্গিকভাবে হাদীস যাচাইয়ে কুরআন ও হাদীস রেখে কিভাবে ব্যক্তির মতামতকে কুরআন ও হাদীসের মতই মান্য করতে হয়ে তাই বুঝাতে শুরু করলেন।

যার বিবরণ দেখলে সবাই বুঝতে পারবেন। প্রশ্নের উত্তর না দিতে পেরে নিজেকে প্রবোধ দেয়ার জন্য তিনি এ অপ্রাসঙ্গিক বিষয়টির অবদান করেছেন। অথচ তিনি যখন ভিডিও করলেন, তখন কিভাবে শায়েখের ভাব নিয়ে এমনভাবে কথাগুলো বললেন, যেন তিনি আমাকে সেখানে ছাত্র হিসেবে বুঝিয়েছেন। সামনা সামনি এক হালাত আর আড়ালে ভিন্ন। এ কেমন দ্বিমুখী আচরণ?

আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব ছলনা ও প্রতারণা থেকে হিফাযত করুন। আমীন।

অসত্য নং-৭

তিনি বলেছেন- ঐ দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ঐ পর্যন্ত কথা ছেস।

আমাদের বক্তব্যঃ

মাত্র দুটি বিষয়? আশ্চর্য। পুরো ৩৫ মিনিটের আলোচনা। শুধু দুটি বিষয় নিয়ে? তিনি যে দুটি বিষয়ের কথা বলেছেন, তার একটি হল শুরুতে আর একটি হল একদম শেষে। তাহলে মাঝখানের দীর্ঘ আলোচনা গেল কোথায়?

যেখানে আরো একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যার প্রতিটিই তিনি এড়াতে চেষ্টা করেছেন। কোনটারই কোন সঠিক জবাব দেননি। যা আপনারা পূর্ণ কথোপথন দেখলেই দেখতে পাবেন। যেমন আমরা হযরতকে প্রশ্ন করেছিলাম-

সহীহ শব্দটি একটি পারিভাষিক শব্দ। মুহাদ্দিসীনদের মাঝে এই সহীহ শব্দের সংজ্ঞা নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে। কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণ করতে গেলে কার সহীহ এর সংজ্ঞা মেনে সহীহ হাদীস অনুসরণ করতে হবে? এ ব্যাপারে কুরআন ও সহীহ হাদীসে কোন ব্যক্তি বিশেষের সহীহ এর সংজ্ঞা অনুসরণের নির্দেশ আছে কি?

জারাহ তাদীলের গ্রন্থে একই ব্যক্তির ক্ষেত্রে একাধিক বক্তব্য রয়েছে। যে কাউকে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার দিয়ে সাধারণ মানুষকেও মনমত সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার দিয়ে বিরাট ধর্মীয় বিভক্তির দিকে আহবান করছি কি না?

এসবের কোন সঠিক জবাব তিনি দিতে পারেননি। পারেননি আরো অনেক প্রশ্নেরই কোন জবাব দিতে। পূর্ণ কথোপথনে তিনি শুধু প্রশ্ন এড়ানোরই চেষ্টা করেছেন। সেই সাথে পরিস্কার ভাষায় তাকলীদকে স্বীকার করেছেন। আবার অস্বিকার করে এক জগাখিচুরী পাকিয়েছেন। তাছাড়া তিনি তার ধারণকৃত ভিডিওতে যে সাজানো কথোপথন দিয়েছেন। তার পোষ্টমর্টেম আশা করি আপনারাই করতে পারবেন, মূল কথোপথনের ভিডিও দেখে।

ভিডিওতে তিনি যেভাবে শুধু দুটি বিষয় সম্পর্কে কথা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তা দেখে সত্যিই আমরা মর্মাহত হয়েছি।

এরকম প্রতারণামূলক আচরণ দেখে আমরা অবাক হয়েছি। আল্লাহ তাআলা এরকম ধোঁকাবাজীপূর্ণ আচরণ থেকে সকলকে হিফাযত করুন। আমীন।

অসত্য নং-৮

ভিডিওর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না মর্মে জোড়ালো দাবি করেছেন।

আমাদের বক্তব্যঃ

তিনি কি এ ব্যাপারে আমাদের সাথে মুবাহালা করতে রাজি আছেন? আমরা এ বিষয়ে শরয়ী মুবাহালা করতে রাজি আছি আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করে। এমন মিথ্যা কথা একজন মানুষ কি করে বলতে পারে? তিনি নিজেই বলেছেন আমরা একই রুমে সামনাসামনি বসেছি। আর আমার পাশ থেকে আমার সাথে যাওয়া মুফতী মাহবুব ভিডিও করেছে। যে বসেছিল সরাসরি আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সামনে। ভিডিও হচ্ছে দেখে তিনি বারবার ভিডিও ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলেন। ভিডিও হচ্ছে এটি রুমের সবাই দেখছিল। দেখছিল নজরুল সাহেব এবং শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সাথে আসা তার দুই ভক্তও। কারণ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের দুই ভক্তের পাশাপাশি সোফায় বসে থাকা অবস্থায়ই ভিডিও ধারণ করা হয়। সবার সামনে ভিডিও হল। শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সামনে ভিডিও হল, আর তিনি ভিডিও ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বেশি বেশি কথা বললেন। যাতে করে তার ভুলগুলো ধরা না পড়ে, সেই তিনি কি করে বলতে পারছেন ভিডিও হচ্ছিল বলে তিনি জানেনই না? এমন মিথ্যাচার বিষয়ে হেদায়াতের প্রার্থনা করা ছাড়া আমাদের কিই বা করার আছে?

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব! নিজের বিবেককে একবার প্রশ্ন করে দেখুন। এমন জঘন্য মিথ্যা কথা বলে আপনি কাদের হিরো হতে চাচ্ছেন? দিনের হিরো হতে চাচ্ছেন? শেষ বিচারের দিন এমন জঘন্য মিথ্যাচারের জবাব কড়ায় গন্ডায় দিতে হবে এ বিশ্বাসটুকু একটু রাখবেন কি? সময় কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। এখনো হক পখে ফিরে আসার উদাত্ব আহবান থাকবে আপনার প্রতি।

অসত্য নং-৯

বিতর্কিত প্রোগ্রাম হবে বলে তিনি জানতেন না।

আমাদের বক্তব্যঃ

এটি শায়েখের আরেকটি চরম মিথ্যা কথা। শায়েখের হাতে ছিল জনাব ফাখরুল ইসলামের মাযহাব বিষয়ক বিতর্কিত বই। মাযহাব বিষয়ক বিষোদগার সম্বলিত বইটি নিয়ে তিনি মাযহাব সংক্রান্ত বিতর্কিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে এসেছিলেন।

আমরা হযরতকে জিজ্ঞাসা করি- হযরত! আপনার হাতে যে বইটি ছিল সেটি কি বিতর্কিত বই নয়? আপনি মাযহাব সম্পর্কে যা বলতেন, বা যা বলতে চান সেটি কি এদেশে বিতর্কিত বিষয় নয়? আপনি কি মাযহাব বিষয়ে বিতর্কিত বিষয়ে কথা বলতেন না?

আল্লাহ তাআলার উপর সামান্য বিশ্বাস থাকলে সেই সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ্জাব না হলে আপনি নিশ্চিত উপরোক্ত তিন প্রশ্নের জবাবেই বলবেন- হ্যাঁ, এসবই বিতর্কিত। তারপরও কিভাবে বলছেন, বিতর্কিত প্রোগ্রাম হবে বলে আপনি জানতেন না?

একটুতো আখেরাত বিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাতে নিয়ে আসা বই বিতর্কিত। মাযহাব বিষয়ে আপনার নিজের মানসিকতা বিতর্কিত। সেই সাথে আলোচনার বিষয়বস্তু বিতর্কিত। আর আপনি বলছেন বিতর্কিত কোন প্রোগ্রামের কথা আপনি জানতেনই না।

এরকম রসিকতা আর শুনিনি হযরত। তাও একজন শায়েখের কাছ থেকে এমন এক অবাক রসিকতা। হে আল্লাহ! আমাদের এমন রসিক মিথ্যাশ্রয়ী শায়েখদের প্রতারণা থেকে হিফাযত করুন। আমীন।

অসত্য কথন-১০

অনুষ্ঠান থেকে তিনি পালিয়ে যাননি।

আমাদের বক্তব্যঃ

তিনি বলেছেন, তার টিভি টকের আবেদন গ্রহনীয় না হওয়ায় তিনি অনুষ্ঠান না করেই চলে গেছেন। আমরা বলেছি- তিনি অনুষ্ঠান না করে পালিয়ে গেছেন।

তাহলে কি দেখা গেল? “তিনি অনুষ্ঠান না করেই গেছেনএ ব্যাপারে আমরা এবং তিনি একমত।

মতভেদটা হল, আমরা গেছেনশব্দটার আগে পালিয়েশব্দটা বাড়িয়েছি। আর তিনি গেছেনশব্দটার আগে চলেশব্দটা বাড়িয়েছেন। বাকি অনুষ্ঠান না করেই যে গেছেন এতে কোন মতভেদ নেই। তিনিও স্বীকার করেছেন, অনুষ্ঠান করতে এসেছিলেন। কিন্তু অবশেষে না করেই গেছেন।

এই যাওয়াকে আসলে কি বলা যায়? তা বিজ্ঞ পাঠকদের কাছেই বিচারের ভার ন্যস্ত করে দিলাম।

হযরতের কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা- মাযহাব বিষয়ে আলোচনা করতে এসে। হাতে মাযহাব বিষয়ে বিতর্কিত বই নিয়ে এসে। অনুষ্ঠান স্থলে এসে, আপনার ভাষায় একজন বাচ্চা ছেলেকে দেখে আপনার কি হয়ে গেল যে, আপনি অনুষ্ঠান না করে চলে গেলেন? টিভি টকে যা বলবেন তা কি আপনি টকশোতে বলতে পারতেন না? টিভি টকে যা বলবেন, তাই টকশোতে বলতে আপনাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। তারপরও আপনি কেন চলে গেলেন?

আর টকশো হবে একথা আপনি জানতেন না এটি কি সত্য কথা? আপনি নিজেইতো বলেছেন, তিনজনের অনুষ্ঠান হবে। আর আপনার মনে প্রশ্নও জেগেছিল বিতর্ক হবে কি না? যদি টকশোই না হয়, তাহলে বিতর্ক হবার সুযোগ কোথায়? মানে আপনি জানতেন আগে থেকে টকশো হবে। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি দেখে টিভি টকের বাহানা করে আপনার ভাষায় চলে গেছেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটাকে কাপুরুষের মত পালানোই বলে থাকে হযরত।

উঁচু শ্রেণীর শায়েখের মুখে নিচু শ্রেণীর গালি কেন?

শায়েখ বলেছেন- এটা একটা নিচু শ্রেণীর কমিনা মানুষের কাজ।

আমাদের বক্তব্যঃ

একের পর মিথ্যা, ছলনা, প্রতারণা, তারপর আবার নিজেই গালি দেয়া কার কাজ? সেটি আল্লাহ তাআলা হাশরের ময়দানে নির্দিষ্ট করবেন ইনশাআল্লাহ।

আপনার ভক্তরা আরেকটি মজার কথাও প্রচার করছে যে, মোহনা টিভি নাকি বেরেলবীদের টিভি। তাই আপনি এতে অনুষ্ঠান কতে চাননি। এটি যে, কতটা হাস্যকর কথা। তা হযরতের ভিডিও দেখলেই বুঝা যাচ্ছে। হযরত বারবার বলছেন, টিভি টক নেন। আমি ৫/৬টি প্রোগ্রাম করি। যদি বেরেলবী টিভি বলে এতটাই অগ্রহণীয় হয়ে থাকে, তাহলে শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব এত প্রোগ্রাম করতে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন কেন?

প্রকাশ্য আলোচনার আহবান!

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেব বলেছেনঃ [আহলে হাদীসী] দ্বীন প্রচার করতে গিয়ে তিনি কখনোই পালিয়ে যাননি, কখনো যাবেন না এটাই নাকি হযরতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

যদি তাই হয়, তাহলে আপনি নিজেই দিন ক্ষণ ঠিক করুন। আপনি নিজেই স্থান ঠিক করুন। ঢাকার যে কোন স্থানে আমাদের বিরুদ্ধে আপনার যত অভিযোগ, সেসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা পর্যালোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন। আল্লাহ তাআলার উপর পূর্ণ ভরসা করে বড়দের দুআ নিয়ে আমি অধম একাই আপনার সাথে আলোচনা পর্যালোচনায় বসতে রাজি আছি ইনশাআল্লাহ।

সাধারণ মানুষকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। আসুন আমরা সরাসরি আলোচনা পর্যালোচনা করে এসব ছোটখাট বিষয়গুলোকে সমাধান করে নেই। মানুষের সামনে দ্বীনকে আর হাসি ঠাট্টার বস্তু না বানাই। প্রকাশ্য আলোচনার আমাদের এ আহবান গ্রহণ করুন।

সত্য ও হেদায়াতের পথে আসুন। হক ও হক্কানিয়্যাতের পথে আসুন। স্লোগান সর্বস্ব মতবাদ পরিত্যাগ করে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের সঠিক অনুসারী হোন। হেদায়াতের দুআ সবার জন্য।

0Shares

আরও জানুন

বাউল সম্প্রদায় সম্পর্কে একথাগুলো কি আমরা জানি?

সংগৃহিত  আমরা জানি না লালন আসলে কে? লালন ছিলেন বাউল সম্প্রদায়ের গুরু।আমরা কি জানি কারা …

No comments

  1. মাশাআল্লাহ!

  2. Mr. Abdur Razzaq is a liar. It is as true as daylight.

  3. Let Abdur Razzak and his followers sit together with our Olamas and finish this dispute and deceptions RIGHT NOW!

  4. আবু বকর ছিদ্দিক

    আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন । আল্লাহ আপনাকে আরো জ্ঞান দান করুন, আর সৎ পথে পরিচালিত করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *