প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / ‘তুমি এমন করলে তো ডিভোর্স পেপার রেডি রাখা লাগবে’ বলার দ্বারা কি বিয়ের পর তালাক হয়?

‘তুমি এমন করলে তো ডিভোর্স পেপার রেডি রাখা লাগবে’ বলার দ্বারা কি বিয়ের পর তালাক হয়?

প্রশ্ন

 আসসালামু আলাইকুম।

প্রথমেই ক্ষমা চাচ্ছি দ্বিতীয় বার ইমেইল করার জন্য। আগের ইমেইলে  ঘটনার বণর্নায় ভুল ছিল। তাই বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি দয়া করে আগের ইমেইল বাতিল করে  এই ইমেইল এর উত্তর দিবেন।

আমি……. [নাম, ঠিকানা ও মোবাইল উহ্য রাখা হলো: কর্তৃপক্ষ]

আমার পরিবার একটা ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে। কিছুদিন পর ওই ছেলের সাথে আমার বিয়ে হবে। সম্প্রতি আমি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। আমার শারীরিক অবস্থা জানার জন্য ছেলেটি আমাকে ফোন করে। ফোন রের্কডটি তুলে ধরা হলো।

কথা বলার এক পর্যায়ে ছেলেটি আমাকে বলে “শুনলাম তুমি ঠিকমত খাওনা,আর না খেয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে গেছো”।

উত্তরে আমি বলি যে, “আমার ভালো লাগে না”।

আসলে এখানে আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম ‘আমার খেতে ভালো লাগে না’।

তখন ছেলেটি আমাকে বলে, “এইযে এই জিনিসগুলো যদি বলো তাহলে কিন্তু ডিভোর্স পেপার রেডি দেখো”।

পরে আবার বলে যে “এই কথাগুলো যদি বলো তাহলে কিন্তু ডিভোর্স পেপার রেডি রাখা লাগবে তোমার”।

তখন আমি বলি ‘কি বললেন আপনি?’

তখন সে আবার বলে যে,“এই  কথাগুলো যদি বলো তাহলে ডিভোর্স পেপার রেডি রাখা লাগবে কিন্তু”।

পরে আমি বললাম  ‘এসব ফালতু কথা বলবেন না’।

তখন সে বলে ‘১০৫ বার বলব, সারা জীবন ই বলব, তুমি যদি না খাও তাহলে সারা জীবন ই বকবো তোমাকে,এসব বলবো নাতো কি বলবো আর কত ভালোভাবে বলব?’

পরে আমি তাকে বলি যে ‘এখন যদি বিয়ের পর আপনি আমাকে খেতে বলেন আর আমি যদি না খায় তাহলে যদি আমার ওপর তালাক পতিত হয়’।

তখন ছেলেটি আমাকে বলে ‘তুমি সব সময়ই খাবে তাহলেই তো হলো’।

তখন আমি বলি ‘সবসময় তো খেতে মন চাইবে না’।

তখন ছেলেটি আমাকে বলে যে, “আমি আমার কথা তুলে নিলাম”।

আরো বলে যে “তুমি এমন করছো তাতে মনে হচ্ছে আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়েছি”।

তখন আমি ফোন কেটে দিয়েছি।

এখন আমার প্রশ্ন হলো উপরোক্ত কথোপকথনের জন্য কি আমাদের বিয়ের পর কোনো সমস্যা হবে?

বিয়ের পর আমাকে যদি খেতে বলে আর আমি যদি বলি ভালো লাগেনা আমার বা আমি যদি না খায় তাহলে কি আমার ওপর কোনো তালাক পতিত হবে?

দয়া করে উত্তর দিবেন।

উল্লেখ্য (তুমি সবসময় ই খাবে তাহলেই তো হলো) এই কথার দ্বারা কি না খেলে তালাক নিশ্চিত হয়ে গেছে ?

দয়া করে উত্তর দিবেন।

আমি একজন মেজর ocd পেশেন্ট। দয়া করে উল্লেখ করবেন কোন ইমেইল এর উত্তর দিলেন, দয়া করে আমার ফোন নাম্বারটা উল্লেখ করবেন । ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। বিষয়টি নিয়ে অনেক পেরেশানিতে আছি। দয়া করে উত্তর দিলে খুবই উপকৃত হতাম। জাজাকাল্লাহ খাইরান।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার সর্বশেষ মেইলের উত্তর!

উপরোক্ত বিবরণ ও কথোপথন অনুপাতে বিয়ের পর কোন তালাক পতিত হবে না। আপনি যদি খেতে না চান তবুও কোন তালাক পতিত হবে না।

“তুমি সবসময় ই খাবে তাহলেই তো হলো” এ কথার দ্বারাও কোন তালাক নিশ্চিত হয়নি।

সুতরাং অহেতুক পেরেশান হবার কিছু নেই।

আপনার উচিত তালাক সংক্রান্ত চিন্তা মাথা থেকে সম্পূর্ণরূপে ঝেড়ে ফেলা। এভাবে সারাক্ষণ তালাকের চিন্তা করতে থাকলে আপনি আরো বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন।

আপনি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত তালাকের কোন মাসআলা পড়বেন না। তালাক সংক্রান্ত কোন প্রশ্নও কাউকে করবেন না।

বেশি পেরেশান হলে কুরআন পড়ুন। নবীগণের জীবনী পড়ুন। সাহাবাগণের জীবনী। মহিলা সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত কাহিনী।  বেশি বেশি সূরা ফালাক ও সূরা নাসের আমল করুন। আল্লাহর কাছে এ রোগ থেকে হেফাযতের জন্য বেশি বেশি করে দুআ করুন। ইনশাআল্লাহ আপনার এর রোগ দূর হবে।

صيغة المضارع لا يقع بها الطلاق الا اذا غلب فى الحال كما صرح به الكمال بن الهمام (الفتاوى الحامدية، كتاب الطلاق-38، رشيدة)

وفى الدر المختار، بخلاف قوله طلقى نفسك فقالت أنا طالق، أو أنا اطلق نفسى، لم يقع لأنه وعد، (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-3/319

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *