প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / ঋণ দেয়া টাকা ও জমি বায়নায় প্রদান করা টাকা এবং ভিসার জন্য জমাকৃত টাকার যাকাতের বিধান কী?

ঋণ দেয়া টাকা ও জমি বায়নায় প্রদান করা টাকা এবং ভিসার জন্য জমাকৃত টাকার যাকাতের বিধান কী?

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। মাসআলাটি জানা আমার জন্য খুবই জরুরী মেহেরবানী করে উত্তর দিবেন।

১/আলহামদুলিল্লাহ আমি যাকাতের নেসাব পরিমাণ মালের মালিক। আমি জানতে চাচ্ছি যে আমি আমার ছোট ভাইকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছি তার ওয়ার্ক পারমিট বের হয়েছে সে বিদেশে যাবে এইজন্য। এখন তার ভিসার কাজ শেষ না হওয়াতে সে আমার কাছেই এক লক্ষ টাকা জমা রাখে । এখন এই এক লক্ষ টাকার কি যাকাত আসবে? আর যাকাত আসলে যাকাত দিবেন কে? আমি নাকি আমার ছোট ভাই।

২/আমি এবং আমার ছোট ভাই একজন থেকে জমি নেওয়ার জন্য 2 লক্ষ 20 হাজার টাকা বায়না করেছি যার মধ্যে থেকে 100000 আমার 120000 আমার ছোট ভাইয়ের আমরা প্রথমে ব্যবসার নিয়তে জমিটি বায়না করি পরবর্তীতে আমারা নিয়ত করি এই জমিটি আমরা রেজিস্ট্রেশন করে রেখে দেবো ভবিষ্যতে কাজে দিবে এখন এই জমির বায়না করা টাকার উপর কি যাকাত আসবে?

৩/আলহামদুলিল্লাহ আমার ছোট ভাই নিসাব পরিমাণ মালের মালিক। সে ইউরোপে কাজের জন্য যাবে ওই দেশের ওয়ার্ক পারমিট বের হয়েছে এখন ভিসার কাজ চলিতেছে ।

ভিসার মোট মূল্য সাত লক্ষ টাকা সে জমা দিয়েছে 1 লক্ষ 30 হাজার টাকা। বাকি রয়েছে 5 লক্ষ 70 হাজার টাকা।এখন ভিসার যে টাকা বাকি আছে সেটা তার নেসাব পরিমাণ যত মাল আছে সেগুলো দেওয়ার পরেও তাকে আরো টাকা ঋণ করতে হবে এমতাবস্থায় তার ওপর যাকাতের হুকুম কি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি এক লাখ টাকা আপনার ভাইকে হিবা বা হাদিয়া হিসেবে একেবারেই প্রদান করে থাকেন। তাহলে উক্ত টাকার মালিকানা আপনার উক্ত ভাইয়ের। এখন আপনার কাছে জমা রাখলে তা আমানত হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তাহলে উক্ত টাকার যাকাত আদায় করা আপনার ভাইয়ের উপর দায়িত্ব। আপনার উপর নয়।

আর যদি উক্ত টাকা হেবা বা হাদিয়া নয়, বরং ঋণ হিসেবে  প্রদান করে থাকেন। তাহলে উক্ত টাকা যেমন আপনার ভাইয়ের হাতে থাকা অবস্থায় যাকাত আপনার উপর আবশ্যক, তেমনি আপনার কাছে আমানত রাখা অবস্থায়ও এর যাকাত আপনার উপর আবশ্যক।

لو دفع ألى إنسان وديعة ثم نسى المودع فإن كان المدفوع إليه من معارفه فعليه الزكاة (بدائع الصنائع، كتاب الزكاة، الشرائط التى ترجع إلى المال، زكريا-2\89)

عن عبد الله بن دينار، عن ابن عمر قال: زكوا ما كان فى أيديكم، وما كان من دين فى ثقة، فهو بمنزلة ما فى أيديكم، وما كان من دين ظنون فلا زكاة فيه حتى يقبضه (السنن الكبرى للبيهقى، كتاب الزكاة، باب زكاة الدين إذا كان على معسر أو جاحد، دار الفكر-6\69، رقم-7717)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: زَكُّوا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ حَوْلًا إِلَى حَوْلٍ، وَمَا كَانَ مِنْ دَيْنِ ثِقَةٍ فَزَكِّهِ، وَإِنْ كَانَ مِنْ دَيْنِ مَظْنُونٍ فَلَا زَكَاةَ فِيهِ حَتَّى يَقْضِيَهُ صَاحِبُهُ (المصنف لابن أبى شيبة، كتاب الزكاة، فى زكاة الدين-6\485، رقم-10351)

জমি বায়না হিসেবে প্রদানকৃত টাকার যাকাত প্রদান করা আপনাদের উপর আবশ্যক নয়।

ومنها الملك التام وهو ما اجتمع فيه الملك واليد وأما إذا وجد الملك دون اليد كالصداق قبل القبض، أو وجد اليد دون الملك كملك المكاتب والديون لا تجب فيه الزكاة (الفتاوى الهندية، كتاب الزكاة، الباب الأول فى تفسيرها وصفتها وشرائطها-1\172، جديد-1\233)

উক্ত টাকা প্রদান করার আগ পর্যন্ত যদি যাকাত আবশ্যকের অন্যান্য শর্ত যেমন বছর অতিক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত টাকার যাকাত আদায় করতে হবে।

إذا امسكه لينفق منه كل ما يحتاجه فحال الحول، وقد بقى معه منه نصاب فإنه يزكى ذلك الباقى، وإن كان قصده الإنفاق منه أيضا فى المستقبل لعدم استحقاق صرفه إلى حوائجه الأصلية وقت حولان الحول (رد المحتار، كتاب الزكاة، مطلب فى زكاة ثمن المبيع وفاء، زكريا-3\179، كرتاشى-2\262)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *