প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / কিয়ামতের আলামতসমূহ (পর্ব-২)

কিয়ামতের আলামতসমূহ (পর্ব-২)

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

১ম পর্বটি পড়ে নিন

সমকামিতা বৃদ্ধি পাবে

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِِذَا اسْتَحَلَّتْ أُمَّتِي خَمْسًا فَعَلَيْهِمُ الدَّمَارُ، إِِذَا ظَهَرَ التَّلَاعُنُ، وَشَرِبُوا الْخُمُورَ، وَلَبِسُوا الْحَرِيرَ، وَاتَّخِذُوا الْقِيَانَ، وَاكْتَفَى الرِّجَالُ بِالرِّجَالِ، وَالنِّسَاءُ بِالنِّسَاءِ

হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন আমার উম্মত ৫টি বস্তুকে হালাল মনে করতে থাকবে। তখন তাদের উপর ধ্বংস নেমে আসবে। একে অন্যের উপর লা’নত করা ব্যাপক হবে, মদ পান করতে থাকবে, রেশম পরিধান করতে থাকেব, গায়িকা রাখতে শুরু করবে। পুরুষ পুরুষের সাথে এবং নারীরা নারীদের সাথে থাকাকেই যথেষ্ট মনে করতে থাকবে। [শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫০৮৬]

عَنْ وَاثِلَةَ بْنِ الْأَسْقَعِ رَفَعَهُ قَالَ: ” سِحَاقُ النِّسَاءِ زِنًا بَيْنَهُنَّ “

হযরত ওয়াছিলা বিন আসক্বাহ মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেন যে, মহিলাদের পারস্পরিক সমকামিতা তাদের মধ্যকার যিনা। [শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫০৮২, মুসনাদে আবু ইয়ালা মুসিলী, হাদীস নং-৭৪৯১]

عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا أَتَى الرَّجُلُ الرَّجُلَ فَهُمَا زَانِيَانِ، وَإِذَا أَتَتِ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَهُمَا زَانِيَانِ “

হযরত আবূ মূসা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন কোন পুরুষ পুরুষের কাছে এবং কোন নারী আরেক নারীর কাছে (যৌন কামনা পূর্ণ করতে) আসে, তখন এরা উভয়ে যিনাকারী হয়। [শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫০৭৫]

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

مَلْعُونٌ مَلْعُونٌ مَلْعُونٌ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ،

ঐ ব্যক্তি অভিশপ্ত, অভিশপ্ত, অভিশপ্ত যে কওমে লূতের আমল তথা সমকামিতা করে। [শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫০৮৯]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «وَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ، لَا تَنْقَضِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَتَّى يَقَعَ بِهُمُ الْخَسْفُ وَالْمَسْخُ وَالْقَذْفُ» قَالُوا: وَمَتَى ذَلِكَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي؟ قَالَ: «إِذَا رَأَيْتَ النِّسَاءَ قَدْ رَكِبْنَ السُّرُوجَ، وَكَثُرَتِ الْقَيْنَاتُ، وَشُهِدَ شَهَادَاتُ الزُّورِ، وَشَرِبَ الْمُسْلِمُونَ فِي آنِيَةِ أَهْلِ الشِّرْكِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ، وَاسْتَغْنَى الرِّجَالُ بِالرِّجَالِ، وَالنِّسَاءُ بِالنِّسَاءِ فَاسْتَدْفِرُوا وَاسْتَعِدُّوا»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:ঐ সত্তার কসম! যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। এই দুনিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত ধ্বংস হবে না, যতক্ষণ না লোকদের মাঝে ধ্বস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বৃষ্টি পাওয়া যাবে। লোকেরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান! এসব কখন ঘটবে? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন তোমরা মহিলাদের দেখবে যে, তারা (ঘোড়ার) জিন ধরে সাওয়ারীতে আরোহন করছে (মহিলারা ড্রাইভিং করছে), গায়িকার সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে, মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়া শুরু হয়েছে, মুসলমানরা মুশরিকদের পাত্র তথা স্বর্ণ রূপার পাত্রে পান করছে, পুরুষের মাধ্যমে (নারী থেকে) এবং নারী আরেক নারীর মাধ্যমে (পুরুষ থেকে যৌনতা বিষয়ে) অমুখাপেক্ষী হয়ে যাচ্ছে। তখন তোমরা প্রস্তুত হয়ে যাও। [মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৮৩৪৯]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: ” لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَسَافَدَ النَّاسُ فِي الطُّرُقِ كَمَا يَتَسَافَدُ الدَّوَابُّ، يَسْتَغْنِي الرِّجَالُ بِالرِّجَالِ، وَالنِّسَاءُ بِالنِّسَاءِ، أَتَدْرُونَ مَا التَّسَاحُقُ؟ قَالُوا: لَا، قَالَ: تَرْكَبُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ ثُمَّ تَسْحَقُهَا “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ বলেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত কায়েম হবে না, যতক্ষণ না মানুষ পশুর মত রাস্তায় যৌনকাজে লিপ্ত হবে। পুরুষ পুরুষের মাধ্যমে (নারী থেকে) এবং নারী নারীদের মাধ্যমে (পুরুষ থেকে যৌনকর্ম বিষয়ে) অমুখাপেক্ষী হয়ে যাবে। তোমরা কি জানো “তাছাহুক” কী? তারা বললেন, না। জবাবে আবূ হুরায়রা রাঃ বলেন,এক নারী আরেক নারীর উপরে উঠবে এবং তার সাথে ‘ছাহহাক’ তথা কামনা পূর্ণ করবে। [আলফিতান লিনাঈম বিন হাম্মাদ, বর্ণনা নং-১৭৯৪]

সুদ ব্যাপক হয়ে যাবে

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ يَظْهَرُ الرِّبَا، وَالزِّنَا، وَالْخَمْرُ

ইবনে মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে সুদ, যিনা ও মদ ব্যাপকতা লাভ করবে। [আলমু’জামুল আওসাত লিততাবারানী, হাদীস নং-৭৬৯৫]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لَا يَبْقَى أَحَدٌ إِلَّا أَكَلَ الرِّبَا، فَإِنْ لَمْ يَأْكُلْهُ أَصَابَهُ مِنْ بُخَارِهِ» قَالَ ابْنُ عِيسَى: «أَصَابَهُ مِنْ غُبَارِهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের উপর এমন এক যুগ আসবে, যখন কেউ-ই সুদ খাওয়া ছাড়া থাকবে না। যদি কেউ সুদ না খায় তবুও তার ধোঁয়া তাকে স্পর্শ করবে। ইবনু ঈশার বর্ণনায় রয়েছেঃ তার ধুলা-ময়লা তাকে স্পর্শ করবে। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৩৩৩১, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১০৪৭৩]

মদ পান হতে থাকবে

قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ: أَنْ يُرْفَعَ العِلْمُ، وَيَظْهَرَ الجَهْلُ، وَيَفْشُوَ الزِّنَا، وَتُشْرَبَ الخَمْرُ،

হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের নিদর্শন হল, দ্বীনী ইলম উঠে যাওয়া, মূর্খতার প্রসার ঘটা, ব্যাপকপারে যিনা ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়া, মদ পান করা হবে। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২০৫]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ কে কিয়ামতের অনেকগুলো আলামত বলেছিলেন, এর মাঝে এটাও বলেন যে,

يَا ابْنَ مَسْعُودٍ، إِنَّ مِنْ أَعْلَامِ السَّاعَةِ وَأَشْرَاطِهَا أَنْ تَظْهَرَ الْمَعَازِفُ وَالْكِبْرُ، وَشُرْبُ الْخُمُورِ

হে ইবনে মাসঈদ!কিয়ামতের আলামতের মাঝে রয়েছে: বাদ্যযন্ত্র, অহংকার এবং মদ পান করা। [মু’জামুল আওসাত লিততাবারানী, হাদীস নং-৪৮৬১]

কথিত মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রগুলোতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পর্যটন এলাকায় মদের লাইলেন্স প্রদান করা কিয়ামতের আলামতেরই বাস্তব প্রমাণ বহন করছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নতুন আইনে আছে যে,

কোনো এলাকায় কমপক্ষে ১০০ জন স্থানীয় মদের লাইসেন্সধারী বা বিদেশি থাকলে সে এলাকায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দিতে পারবে।

এভাবে গ্রামে গঞ্জে পুরো দেশে মদ পানের এ বিশাল আয়োজন কিয়ামতের আলামত ছাড়া আর কী?

আমানতের খিয়ানত হবে

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ» قَالَ: كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «إِذَا أُسْنِدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ»

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন আমানত নষ্ট করা হবে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা কর।  একজন জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমানত কিভাবে নষ্ট করা হবে? ইরশাদ করেন, যখন অযোগ্য লোকের হাতে দায়িত্ব অর্পন করা হবে, তখন কিয়ামতের অপেক্ষা কর। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৪৯৬]

ابْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ: «أَوَّلُ مَا تَفْقِدُونَ مِنْ دِينِكُمُ الْأَمَانَةُ , وَآخِرُ مَا تَفْقِدُونَ مِنْهُ الصَّلَاةُ , وَسَيُصَلِّي قَوْمٌ وَلَا دِينَ لَهُمْ , وَإِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ الَّذِي بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ كَأَنَّهُ قَدْ نُزِعَ مِنْكُمْ»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ বলেন, সর্বপ্রথম তোমাদের দ্বীনের মধ্যকার যে বস্তু হারাবে, তাহলো আমানত। সর্বশেষে যে বস্তু হারাবে, তাহলো নামায। অচিরেই এমন সব লোক হবে, যাদের মাঝে দ্বীন থাকবে না। কুরআনে কারীম তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকার পরও এমন হবে। এমন যেন কুরআন তোমাদের থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৭৫৮৫]

আমানতের অর্থ

‘আমানত’ শুধুমাত্র কারো রাখা বস্তুর দেখাশোনার নাম নয়। ইসলামী শরীয়তে আমানতের অর্থ অনেক ব্যাপক। প্রতিটি ব্যক্তির কাছে একই সময়ে অনেক আমানত থাকে।

১ মানুষকে আল্লাহ তাআলা ভালো ও মন্দ কাজের যে শক্তি দিয়েছেন সেটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একটি আমানত।

২ বিবাহিত হলে তার স্ত্রী সন্তান তার কাছে আমানত।

৩ মজলিস আমানত।

৪ অঙ্গিকার ও জিম্মাদারী আমানত।

৫ কেউ তার গোপন কোন বিষয় জানালে, যার কাছে জানালো সেটি তার কাছে আমানত।

৬ কেউ ভালো পরামর্শ চাইলে, তাকে উত্তম পরামর্শ দেয়া একটি আমানত।

৭ হুকুমত বা ইসলামী শাসনব্যবস্থা।

এটি প্রতিটি আমানত যথার্থভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করতে হবে। নতুবা উক্ত ব্যক্তি আমানতের খিয়ানতকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَىٰ أَهْلِهَا [٤:٥٨]

নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। [সূরা নিসা-৫৮]

হারামকে হালাল মনে করা হবে

النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ، يَسْتَحِلُّونَ الحِرَ وَالحَرِيرَ، وَالخَمْرَ وَالمَعَازِفَ،

আমার উম্মতের মাঝে কতিপয় লোক এমন  সৃষ্টি হবে, যারা যিনা, সিল্ক বা রেশম পরিধান করা এবং মদপানকে হারাম হবার পরও হালাল মনে করতে তাকবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৯০]

عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ “‏ لَيَشْرَبَنَّ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي الْخَمْرَ يُسَمُّونَهَا بِغَيْرِ اسْمِهَا يُعْزَفُ عَلَى رُءُوسِهِمْ بِالْمَعَازِفِ وَالْمُغَنِّيَاتِ يَخْسِفُ اللَّهُ بِهِمُ الأَرْضَ وَيَجْعَلُ مِنْهُمُ الْقِرَدَةَ وَالْخَنَازِيرَ ‏

আবূ মালেক আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের কতক লোক মদের ভিন্নতর নামকরণ করে তা পান করবে। (তাদের পাপসক্ত অবস্থায়) তাদের সামনে বাদ্যবাজনা চলবে এবং গায়িকা নারীরা গীত পরিবেশন করবে। আল্লাহ তা‘আলা এদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দিবেন এবং তাদের কতককে বানর ও শূকরে রূপান্তরিত করবেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০২০]

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:لَيَسْتَحِلَّنَّ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي الْخَمْرَ بِاسْمٍ يُسَمُّونَهَا إِيَّاهُ

হযরত উবাদা বিন সামতে রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের মাঝে একদল লোক মদকে ভ্ন্নি নাম দিয়ে তাকে হালাল মনে করবে।  [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৭০৯]

رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «يُوشِكُ أَنْ تَسْتَحِلَّ أُمَّتِي فُرُوجَ النِّسَاءِ وَالْحَرِيرِ

হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অচিরেই আমার উম্মতের মাঝে কিছু লোক মহিলাদের লজ্জাস্থান তথা যিনাকে এবং সিল্ক তথা রেশমকে হালাল মনে করতে থাকবে। [মুসনাদুশ শামিয়্যীন লিততাবারানী, হাদীস নং-৮৫৮]

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَيَبِيتَنَّ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى أَشَرٍ وَبَطَرٍ وَلَعِبٍ وَلَهْوٍ، فَيُصْبِحُوا قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ بِاسْتِحْلَالِهِمُ الْمَحَارِمَ، وَاتِّخَاذِهِمُ الْقَيْنَاتِ، وَشُرْبِهِمُ الْخَمْرَ، وَأَكْلِهِمُ الرِّبَا، وَلُبْسِهِمُ الْحَرِيرَ “

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন। কসম ঐ সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ। অচিরেই এমন সময় আসবে যে, আমার উম্মতের মাঝে কিছু লোক অহংকর ও অহমিকার সাথে রাত্রিযাপন করবে। খেলাধুলার সাথে রাত কাটাবে। তাদের সকাল বেলা বানর ও শুকরের আকৃতিতে পাল্টে দেয়া হবে। এটা এ কারণে হবে যে, তারা হারাম কাজকে হালাল মনে করতে থাকবে। গায়িকা নর্তকী রাখতে শুরু করবে। মদ পান করবে। সূদ খাবে এবং রেশমী পোশাক পরিধান করবে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৭৯০]

সম্পদে হালাল ও হারামের পার্থক্য উঠে যাবে

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لاَ يُبَالِي الْمَرْءُ مَا أَخَذَ مِنْهُ أَمِنَ الْحَلاَلِ أَمْ مِنْ الْحَرَامِ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপার্জন করল, হালাল হতে না হারাম হতে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২০৫৯]

৩য় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

0Shares

আরও জানুন

ইসলামের দশ শতাংশে (নাজাত) দশ শতাংশ কোন কোন আমল?

প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম! মুহতারাম আমার একটা বিষয় বহুদিন থেকে জানার ইচ্ছে, একজন বক্তা বয়ানে বলেছিলেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *