বাংলাদেশে গড়ে ওঠা নতুন উগ্রবাদি একটি
কুফরী সংগঠন হেযবুত তওহীদ। এদের অনেকগুলো মনগড়া ও কুফরী বিশ্বাস নিয়ে আমরা ইতিপূর্বে অকাট্য দলিল দিয়ে আলোচনা করেছি।
বর্তমান যুগের কিছু সমস্যাকে চটকদার কথার আড়ালে তারা যেসব বিষয় নিয়ে অপব্যাখ্যা দেয় তার একটি হলো: পোশাক। আজকে দালিলিক আলোচনা এই বিষয়ে,প্রমান করবো হেযবুতিদের কুরআন হাদিস নিয়য়ে মিথ্যাচার।আশাকরি ধৈর্য্য নিয়ে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
★প্রথম ভাষ্য:হেযবুত তওহীদের ভাষ্যমতে,
ইসলামে কোন নির্দিষ্ট পোশাক নেই (নাউজুবিল্লাহ)
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
★প্রমাণ :- তাদের বইয়ে তারা লিখেছে;
❝ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে কোনরূপ বাধ্যবাধকতা নেই যে, পুরুষদেরকে আরবীয়
জুব্বা পরিধান করতে হবে, মেয়েদেরকে
আপাদমস্তক ঢাকা বোরকা পরিধান করতে হবে
পৃথিবীর একেক অঞ্চলের মানুষ একেক ধরনের
পোশাক পরে থাকে। ভৌগলিক অবস্থা, জলবায়ু
ঐতিহাসিক পটভূমি ইত্যাদি এলাকার মানুষের পোশাক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এসলাম যেহেতু সমগ্র পৃথিবীর জন্য এসেছে তাই
এর কোন নির্দিষ্ট পোশাক থাকা সম্ভবও নয়। শুধু
একটি মাত্র শর্ত আল্লাহ দিয়েছেন তা হলো
পোশাক যেন শালীনতা পরিপন্থী না হয়। অশালীন পোশাক পরিধান করা নিশ্চয় কোন ধর্মমতেই
অনুমোদিত নয়।❞
[সূত্র: আসুন-সিস্টেমটাকেই পাল্টাই: ১৭ পৃঃ]
★পর্যালোচনা :-
প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন, তাদের লেখনীর মধ্যে
একটি বিষয় ফুটে উঠেছে আর তা হল, তারা শরীয়তের পোশাকের বাধ্যবাধকতা মানে না। এখানে
তাদের মুল দাবি হলো,পুরুষ হোক বা মহিলা হোক
ইসলামে উভয়ের কোন নির্দিষ্ট পোশাক নেই।
আমি আপনাদের সামনে কোরআন সুন্নাহ থেকে
তুলে ধরবো, ইসলামি কোন পোশাক আছে কি না।
প্রথমেই দেখবো পোশাকের ব্যপারে মহান আল্লাহ
তাআলা পবিত্র কোরআনে কি বলেছেন
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন :-
يَا بَنِي آَدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآَتِكُمْ وَرِيشًا
وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آَيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
অর্থ: হে বনী-আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক
অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত
করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ-সজ্জার বস্ত্র এবং
পরহেযগারীর পোশাক এটি সর্বোত্তম। এটা আল্লাহর
কুদরতের অন্যতম নিদর্শন যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
প্রিয় পাঠক লক্ষ করুন: আলোচ্য আয়াতে
শুধুমাত্র মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়নি
বরং সমগ্র বনি আদমকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে
এতে ইঙ্গিত রয়েছে যে গুপ্তাঙ্গ আচ্ছাদন ও পোশাক।
মানবজাতির একটি সহজাত প্রবৃত্তি ও প্রয়োজন। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এ নিয়ম পালন করেন আয়াতে তিন প্রকার পোশাকের কথা আলোচিত হয়েছে
১/ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآَتِكُمْ এখানে يُوَارِي শব্দটি موارة
শব্দ থেকে এসেছে, এর অর্থ আবৃত করা। سوآت
শব্দটি سوأة এর বহুবচন এর অর্থ মানুষের ওই সব অঙ্গ, যেগুলো খোলা রাখাকে মানুষ স্বভাবগতভাবেই খারাপ ও লজ্জাকর মনে করে। উদ্দেশ্য এই যে আমি তোমাদের মঙ্গলার্থে এমন একটি পোশাক সৃষ্টি
করেছি যদ্বারা তোমরা গুপ্তাঙ্গ আবৃত করতে পারো।
২/ এরপর বলা হয়েছে وَرِيشًا – সাজসজ্জার জন্য
মানুষ যে পোশাক পরিধান করে তাকে رِيش বলা হয়
অর্থ এই যে গুপ্তাঙ্গ আবৃত করার জন্য তো সংক্ষিপ্ত পোষাকই যথেষ্ট হয়, কিন্তু আমি তোমাদেরকে আরও পোশাক দিয়েছি যাতে তোমরা তদ্দ্বারা সাজসজ্জা করে বাহ্যিক দেহাবয়বকে সুশোভিত করতে পারো।
৩/ لِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ -তাকওয়ার পোশাক এটি সর্বোত্তম পোশাক। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)
ও ওরওয়া ইবনে যুবায়ের (রাঃ) এর তাফসীর অনুযায়ী
তাকওয়ার পোশাক বলে সৎকর্ম ও
আল্লাহ ভীরুতাকে বুঝানো হয়েছে।
[সূত্র:তাফসীরে মারেফুল কুরআন]
প্রিয় পাঠক উক্ত আয়াতের আলোচনার মাধ্যমে
আমরা জানতে পারলাম স্বভাবজাতভাবেই মানুষ
উলঙ্গ নয় বরং পোশাকআশাকে আচ্ছাদিত থাকতে
পসন্দ করে বরং আবশ্যকীয় বটে। এবং পোশাকের
মাধ্যমে সাজসজ্জা করে সুশোভিত হওয়াকে ভালোবাসে
তবে এ মানুষ জাতির মধ্যে মুসলমান এমন একটি জাতি
যে জাতির জীবন পরিচালনার জন্য রয়েছে
সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা। তারা মন মত যা ইচ্ছা তাই
করতে পারেনা বরং আল্লাহর হুকুম ও রাসুল সঃ এর
তরিকা অনুযায়ী,তাদের জীবন পরিচালনা করতে হয়
ঠিক তেমনি পোশাকের ক্ষেত্রেও রয়েছে নির্দিষ্ট সীমা-রেখা। মানুষ পোশাকের মাধ্যমে সুশোভিত হবে ঠিক আছে, তবে তা কেমন হবে সেটা রাসুল ﷺ এর আদর্শের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে। অন্য কারো নয়
কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন :-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুল ﷺ এর মধ্যে
তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। (আহযাব: ২১)
তো চলুন দেখা যাক
মহা নবী ﷺ এ বিষয়ে কি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন
★নবীজি ﷺ ইরশাদ করেছেন
من تشبه بقوم فهو منهم
যে ব্যক্তি যে জাতির সাথে সামঞ্জস্য রাখবে
সে তাদের মধ্যেই গন্য হবে।
(সূত্র: আবু দাউদ হাঃ নং ৪০৩১)
সুতরাং আমাদের পোশাক যেন বিজাতীয় কোন
পোশাকের সাথে সামঞ্জস্য না হয়।অতএব আমরা
যা খুশি তাই পরতে পারবোনা।
বরং ভিন্ন ধর্মীয় কোন পোশাক পরিধান করতেও
নবীজি ﷺ নিষেধ করে দিয়েছেন।
عن عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَأَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَىَّ ثَوْبَيْنِ مُعَصْفَرَيْنِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ مِنْ ثِيَابِ الْكُفَّارِ فَلاَ تَلْبَسْهَا-
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আছ রাঃ হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমার পরিধানে
দু’টি রঙ্গিন কাপড় দেখে বললেন,এটা কাফিরদের
কাপড়। অতএব তা পরিধান করো না’
[সূত্র:মুসলিম হাঃ নং ২০৭৭]
শুধু তাই নয়, নবীজি ﷺ
আমাদের পোশাকের একটি সীমানাও দিয়েছেন
আর তা হলো আমাদের পরিধানের বস্ত্র যেন টাখনু
গিরার নিচে না যায়, নবীজি ﷺ ইরশাদ করছেন
ما اسفل من الكعبين من الازار فى النار
টাখনুর যেই অংশ পায়জামা বা লুঙ্গি দ্বারা ঢাকা
থাকবে সেই অংশ জাহান্নামে যাবে।
[সূত্র:বুখারী হাঃ নং ৫৭৮৭]
আল্লাহু আকবার কতোবড় ধমকি! তবুও আমরা
এর উপরে আমল করতে চাইনা।
নবীজি ﷺ ঐ পোশাক পরিধান নিষিদ্ধ করেছেন
যে পোশাক অন্যান্য মানুষের চেয়ে খ্যাতি বা প্রসিদ্ধি লাভ করার জন্য পরা হয়।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَبِسَ ثَوْبَ شُهْرَةٍ أَلْبَسَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَوْبَ مَذَلَّةٍ.
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,যে ব্যক্তি দুনিয়ায় খ্যাতির পোশাক পরবে,কিয়ামতের দিন আল্লাহ
তাকে লাঞ্ছনার পোশাক পরাবেন।
[ইবনে মাজাহ হাঃ নং ৩৬০৬/মিশকাত হাঃ নং ৪৩৪৬]
প্রিয় পাঠক আরো লক্ষ্য করুন- অন্য হাদিসে প্রিয় নবীজি ﷺ পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
عن انس رضي اللّٰه عنــه قال نهى النبي
صلى اللّٰه عليه وسلم ان يتزعفر الرجل
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী ﷺ পুরুষদের জাফরানি রং এর কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন
[সূত্র: বুখারী হাঃ নং ৫৮৪৬]
পুরুষদের জন্য আরো এরশাদ করেছেন
من لبس الحرير في الدنيا
لم يلبســــه في الاخــــــرة
নবী করীম ﷺ বলেছেন:যে লোক দুনিয়ায় রেশমি কাপড় পরবে, পরকালে সে তা পরবে না।
[সূত্র: বুখারী হাঃ নং ৫৮৩৩]
তবে রেশমি কাপড় মহিলাদের জন্য বৈধ
عَنْ عَلِىٍّ قَالَ أُهْدِيَتْ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حُلَّةُ سِيَرَاءَ فَبَعَثَ بِهَا إِلَىَّ فَلَبِسْتُهَا فَعَرَفْتُ الْغَضَبَ فِى وَجْهِهِ فَقَالَ إِنِّى لَمْ أَبْعَثْ بِهَا إِلَيْكَ لِتَلْبَسَهَا إِنَّمَا بَعَثْتُ بِهَا إِلَيْكَ لِتُشَقِّقَهَا خُمُرًا بَيْنَ النِّسَاءِ.
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ ﷺ
কে একটা রেশমের পোশাক উপহার দেওয়া হলো
পরে তিনি সেটা আমার নিকট পাঠিয়েন দিলেন।
আমি সেটি পরলাম। এতে তাঁর চেহারায় অসন্তোষের
চিহ্ন দেখতে পেলাম। তিনি বললেন,ওটা তোমার নিকট
এজন্য পাঠাইনি যে, তুমি পরবে। বরং এটা তোমার
কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে, তুমি ওটা টুকরো করে
ওড়না বানিয়ে মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করবে।
[সূত্র: মুসলিম হাঃ নং ২০৬৮/মিশকাত হাঃনং ৪৩২২]
★আরো লক্ষ্য করুন:
মহিলাদের জন্য নির্ধারিত বা তাঁদের পোশাকের সাথে
সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাক, পুরুষদের পরিধান করা নিষিদ্ধ।
তেমনি পুরুষদের জন্য নির্ধারিত বা তাদের
পোশাকের সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাকও, মহিলাদের জন্য পরিধান করা হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে
لعن رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم
المتشبهين من الرجل بالنساء والمتشبهين
من النساء بالرجال: [رواه البخــــــــــــارى]
অভিসম্পাত করেছেন নবীজি ﷺ ঐসকল পুরুষের
উপর, যারা মহিলাদের মত পোশাক পরিধান করে।
এবং ঐসকল নারীদের উপর যারা পুরুষের মত
পোশাক পরিধান করে।
[সূত্র:বুখারী হাঃ নং ৫৮৮৫]
এরপর হাদিসে প্রিয়নবীজির পছন্দনীয় পোশাকের
বর্ননাও এসেছে, যেমন উম্মে সালমা রাঃ বলেন:-
كان احب الثياب الى رسول اللّٰه
صلى اللّٰه عليه وسلم القميص
নবীজি সঃ এর পছন্দনীয় পোশাক ছিলো ক্বামিস।
[সূত্র: মিশকাত শরিফ ৩৭৪ পৃঃ]
শুধু এতটুকুই নয়, নবীজি ﷺ এর এই ক্বামিস কতটুকু লম্বা ছিলো তাও হাদিসে পাকে এসেছে
عن ابن عباس رضي اللّٰه عنه انه صلى اللّٰه عليه وسلم
كان يلبس قميصا فوق الكعبين (الجامع الصغير للسيوطى
برواية ابن ماجه بحوالة مرقـــــــات: ٨\٢٤٥ باكســــــــتان)
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্নিত আছে যে
নবীয়ে আকরাম ﷺ যে ক্বামিস পরিধান করতেন
তা টাখনু গিরার উপরে ছিলো। (মেশকাত)
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
মনে রাখবেন পোশাক দ্বারা শুধু শরীর আবৃত
করাই উদ্দেশ্য নয় বরং তার পাশাপাশি সওয়াবের
সাথেও সম্পর্ক রয়েছে অতএব আমাদের পোশাক
ইসলামি নীতিমালা অনুযায়ী হতে হবে।
যা খুশি তাই পরিধান করা যাবেনা
★হেযবুতিদের ২য় ভাষ্য:
উক্ত বক্তব্যের শুরুতে লিখেছে
❝ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে কোনরূপ
বাধ্যবাধকতা নেই যে পুরুষদেরকে আরবীয়
জুব্বা পরিধান করতে হবে। ❞
এসব অজ্ঞ মূর্খদের উক্তির জবাবে বলি,
পবিত্র হাদিসে জুব্বার কথাও এসেছে-
যার দ্বারা প্রমাণিত হয় জুব্বা অবশ্যই ইসলামি পোশাক
তবে বাধ্যতামূলক নয়
حدثنى المغيرة بن شعبة رضي اللّٰه عنه قال
انطلق رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم لحاجته
ثم اقبل فلقيته بماء فتوضأ وعليه جبة شاميــة
মুগীরাহ ইবনে শু’বা রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল ﷺ একদা হাজত
পূরণের জন্য গেলেন। সেখান থেকে ফিরে এলে,
আমি তাঁর নিকট পানি নিয়ে গেলাম। তিনি তা দিয়ে
উযূ করেন। তাঁর পরিধানে ছিল সিরীয় জুব্বা।
[সূত্র: বুখারী হাঃ নং ২৯১৮]
অন্য হাদিসে এসেছে
عن سلمان الفارسي ان رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم
توضأ فقلب جبة صوف كانت عليه فمســـح بهاوجهــــــه
হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) তিনি বলেন:
রাসূল ﷺ অযু করলেন
এবং নিজের পরনের জুব্বা উল্টিয়ে চেহারা মুছলেন।
[সূত্র: ইবনে মাজাহ হাঃ নং ৪৬৮!]
উক্ত হাদিসদ্বয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো নবীজি ﷺ
জুব্বা পরিধান করেছেন, যে ব্যক্তি নবীজি ﷺ কে
ভালোবাসে সে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও সুন্নাহ হিসেবে জুব্বা পরিধান করতে অবশ্যই পছন্দ করবে।
এরপর তাদের বক্তব্য হলো মেয়েদেরকে আপাদমস্তক
বোরকা পরিধান করতে হবে। এটা নাকি বাধ্যতামূলক নয়।
নাউজুবিল্লাহ এই বক্তব্যের মাধ্যমে পর্দার মত ফরজ
বিধানকে অস্বীকার করা হলো। তাফসীরে মারেফুল
কুরআনে পর্দার স্তর সুন্দর ভাবে বর্নিত হয়েছে।
মুফতি মুহাম্মদ শফী রহঃ লিখেছেন :
প্রয়োজনের ক্ষেত্রে নারী গৃহ থেকে বের হলে কোন
বোরকা অথবা লম্বা চাদর দ্বারা আপাদমস্তক আবৃত
করে বের হওয়ার বিধান রয়েছে। এর প্রমাণ সুরা
আহযাবের এই আয়াত:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ
وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ
হে নবী আপনি আপনার পত্নীগণকে কন্যাগণকে এবং মুসলমানদের স্ত্রীদেরকে বলুন তারা যেন
তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়
আয়াতে যে জিলবাবের কথা বলা হয়েছে
জিলবাব সেই লম্বা চাদরকে বলা হয় যার দ্বারা
নারীর আপাদমস্তক আবৃত হয়ে যায়।
ইবনে জারীর হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে
জিলবাব ব্যবহারের প্রকৃতি এই বর্ণনা করেছেন যে
নারীর মুখমণ্ডল ও নাকসহ আপদমস্তক এতে
ঢাকা থাকবে এবং পথ দেখার জন্য কেবল একটি চোখ খোলা রাখবে।
[সূত্র: মারেফুল কুরআন বাংলা ইঃ ফাঃ খন্ড ৭ পৃঃ ২০৯]
★হেযবুতিদের ৩য় ভাষ্য:
সবশেষে তারা একটি শর্তের কথা বলেছে যে-
❝ পোশাক যেন শালীনতা পরিপন্থী না হয়।
অশালীন পোশাক পরিধান করা নিশ্চয়
কোন ধর্মমতেই অনুমোদিত নয়।❞
আমাদের কথা হলো, জ্বি ঠিক বলেছেন পোশাক
শালীন হতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো কোনটা শালীন
পোশাক আর কোনটা অশালীন পোশাক এটা নির্বাচন করে দিবে কে?
সেটা ঠিক করবে হেযবুত তওহীদ? না কুরআন সুন্নাহ?
সোজা উত্তর-অবশ্যই কুরআন সুন্নাহই নির্বাচন করে দিবে
কোন পোশাক শালীন আর কোন পোশাক অশালীন।
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
প্রিয় পাঠক
এভাবে স্পষ্টভাবে ইসলামি পোশাকের রূপরেখা
কুরআন সুন্নাহে নির্দেশিত হওয়া সত্ত্বেও, যারা
ইসলামি পোশাককে অস্বীকার করে, তারা আর
যাই হোক তাওহীদের দল হতে পারেনা, অথচ তারা
নিজেদের নাম দিয়েছে হেযবুত তওহীদ।
আল্লাহ পাক যমানার এই দাজ্জালী ফেতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করুন।
হেযবুত তওহীদের কর্মীদের সঠিক বুঝ দান করুন।
অা-মীন
©মাওলানা Yousuf Azadi হাঃফি