প্রচ্ছদ / পরিবার ও সামাজিকতা / শ্বাশুরী বদমেজাজী হলে কী করবে?

শ্বাশুরী বদমেজাজী হলে কী করবে?

প্রশ্ন

প্রশ্নকর্তা- নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

আসসালামু আলাইকুম! হুজুর!

আমার শ্বাশুরী বদমেজাজি টাইপের ছিদ্রান্বেষী। আর যখন তখন গালাগালি করেন। ফলে প্রায়ই চিৎকার চেঁচামেচি অশান্তি সৃষ্টি হয়। আমার স্বামী যদি আমাকে আলাদা থাকার ব্যবস্থা করে দেয় আমি যদি শ্বাশুরী থেকে আলাদা থাকতে চাই, তাহলে শরীয়তে কি কোন বাঁধা আছে? অনুগ্রহ করে জানাবেন।

 

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী আইনগতভাবে শ্বশুর শ্বাশুরীর খেদমাত করা স্ত্রীর উপর ফরজ নয়। কিন্তু নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি জরুরী বিষয়। একজন স্ত্রী তার স্বীয় মা-বাবা ছেড়ে স্বামীর গৃহে আসে। এখানে যদি স্বামীর মাকে নিজের মা মনে করতে পারে, স্বামীর পিতাকে নিজের পিতা মনে করতে পারে, তাহলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সেই সাথে শ্বশুর ও শ্বাশুরী যদি পুত্রবধুকে নিজের মেয়ে মনে করে, তাহলে আসলে সংসারে অশান্তি-ঝগড়া থাকার কথা নয়।

শুধুমাত্র এ দৃষ্টিভঙ্গির অভাবের কারণে আমাদের সমাজে বউ-শ্বশুরির এ দ্বন্দ।

নিজের কষ্ট হলেও বৃদ্ধ বয়সের অসহায় মানুষটির প্রতি লক্ষ্য করে যদি একটু কষ্ট বরদাশত করে থাকেন, তাহলে আমরা আশাবাদী আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনার এ ধৈর্য্যরে জন্য অনেক সওয়াব ও পূণ্য দান করবেন।

তাই আপনাকে আমাদের বোন হিসেবে বলছি, বৃদ্ধ মানুষটির মনে কষ্ট না দিয়ে একসাথে থাকার চেষ্টা করুন। এ সময়টি একসময় আপনারও আসবে। মানুষের বয়স বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক উপসর্গ দেখা দেয়। অযথাই কথা বলতে মনে চায়। শিশুদের মতই উপদ্রব করার মানসিকতা সৃষ্টি হয়। তাই নিজগুণে এসবকে ক্ষমা করে দিয়ে একসাথে থাকার জন্য চেষ্টা করুন।

বাকি তারপরও যদি একসাথে থাকা সম্ভব না হয়। তাহলে পৃথক হয়ে যাওয়া জায়েজ আছে। আলাদা বাসস্থানে থাকা আপনার জন্য বৈধ আছে।

কিন্তু আপনার স্বামীর জন্য তার মায়ের পূর্ণ খেয়াল রাখা, সাধ্যানুযায়ী খেদমাত করা আবশ্যক থেকে যাবে। কোনভাবেই মাকে কষ্ট দেয়া তার জন্য জায়েজ হবে না। মা যত খারাপই হোক না, মাকে শরয়ী কারণ ব্যতিত কষ্ট দেয়া হারাম।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ (سورة البقرة-153

 

وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا (23) وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا (سورة الإسراء-24

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *