প্রশ্ন
আস্সালামুয়ালিকুম,
আমি প্রশ্ন করেসিলাম, Forex Trading (Online base currency trading) কি ইসলামিক দৃষ্টিতে জায়েজ; নাকি হারাম?
হারাম হলে, কি কি কারণে হারাম দয়াকরে বলবেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোনো কিছুতে দু-একটা ব্যাপার ত্যাগ করলে তা জায়েজ হয়ে যায়, এই দিকটাও লক্ষ করবেন ইন্নশাআল্লাহ।
আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম, আল্লাহ-হাফিজ।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনার প্রদত্ব তথ্যাবলী এবং লিংক থেকে ফরেক্স ট্রেডিং সিষ্টেম সম্পর্কে আমরা যা বুঝতে পেরেছি তা আগে উদ্ধৃত করে দেই। যাতে করে উক্ত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শরয়ী হুকুম বলা সহজ হয়। সেই সাথে সবার কাছে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে দাঁড়ায়।
ফরেক্স ট্রেডিং কি?
ফরেক্স হল একটি আন্তর্জাতিক বৈদেশিক বিনিময় বাজার। এই নামটি এসেছে ফরেন(FOReign) এবং এক্সচেঞ্জ(Exchange) শব্দদ্বয়ের সংমিশ্রণ থেকে যার অর্থ হল বৈদেশিক বিনিময় কার্যক্রম। ফরেক্স হল সবচেয়ে নতুন আর্থিক বাজারগুলোর একটি: এটা গত শতাব্দীর ৭০ এর দশক থেকে কাজ করছে। যদিও, আয়তন এবং দ্রুত-বর্ধনশীলতার দিক থেকে এটাই সবচেয়ে বড় বাজার। ফরেক্সে দৈনিক বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যেটা আমেরিকার সকল স্টক এক্সচেঞ্জ মার্কেটের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণের ৩০ গুনেরও বেশি।
যেকোন মার্কেটের মতো, ফরেক্স ট্রেড করে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে এই পণ্য হল বিভিন্ন দেশের মুদ্রা।
মুদ্রা হারের পরিবর্তন সাধিত হয় সরকারি ব্যক্তিদের পাশাপাশি বাণিজ্যিক কোম্পানির মাধ্যমে, যারা পণ্য বা সেবা রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত মুদ্রা দেশিয় মুদ্রায় পরিবর্তন করে। যদিও এটা বৈদেশিক মুদ্রাবাজার লেনদেনের মাত্র ৫% পরিমাণ গণনা করে। বাকি ৯৫% লেনদেন সংঘটিত হয় ফটকাবাজদের মাধ্যমে যারা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে কিছু মুনাফা অর্জন করতে চায়।
বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এটার স্থিতিশীলতা। একটি আর্থিক বাজারে এটা সবার জানা আছে যে, সবচেয়ে খারাপ বিষয়টা হল মেল্টডাউন বা স্টক সূচকের পতন। যদিও, ফরেক্স বাজার তার নির্দিষ্ট উপাদান মুদ্রার মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে যা অন্যান্য স্টক এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার থেকে ভিন্ন। যদি শেয়ারের মূল্যহ্রাস ঘটে তবে এটাকে বলা হয় আর্থিক পতন। কিন্তু যদি মার্কিন ডলারের পতন হয় তবে, অন্য মুদ্রা আরও শক্তিশালী হয়; সুতারাং এটা মার্কেটে গতির সঞ্চালন করে। সুতারাং, একজন ট্রেডারের জন্য অতিরিক্ত মুনাফা পেতে এটা একটি ভালো সুযোগ। উল্লেখিত যে বৈশিষ্ট্য ফরেক্স লাইনের চমৎকার স্থবিরতা থাকে তা হল: মুদ্রা হল সবচেয়ে তরল এবং নির্ভরযোগ্য ট্রেডিং উপাদান।
সাধারণত ব্রোকারগণ সবচেয়ে বেশি প্রচলিত(সবচেয়ে বেশি তরল) মুদ্রাসমুহে আগ্রহী হয় যেগুলোকে বলা হয় ভিত্তি বা মূল। এসময়, ৮৫% এর চেয়েও বেশি ট্রেডার মার্কিন ডলার (USD), জাপানিজ ইয়েন (JPY), ইউরো (EUR), ব্রিটিশ পাউন্ড (GBP), সুইচ ফ্রাঙ্ক (CHF), কানাডিয়ান ডলার (CAD)এবং অস্ট্রেলিয়ান ডলার (AUD) এর মতো মৌলিক মুদ্রাসমূহে লেনদেন করে।
ফরেক্স আপনার আশেপাশেই সহজলভ্য। ইন্টারনেটে প্রবেশ করে আপনি পৃথিবীর অন্য প্রান্তের গ্রাহকের সাথেও লেনদেন করতে পারেন। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সর্বদা আপনাকে মুনাফা করার সুযোগ দেয় কারণ একদিনে বেশ কয়েকবার মুদ্রামূল্য উঠানামা করে থাকে। এভাবেই, মুদ্রাহারের উঠানামা, আপনার সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং নতুন নতুন প্রযুক্তিসমূহ আপনাকে উচ্চমুনাফাযোগ্য ব্যবসা করার সুযোগ প্রদান করে।
উপরোক্ত বক্তব্যটি নেয়া হয়েছে- https://www.instaforex.com/bd/what_is_forex.php থেকে।
আমরা যা বুঝতে পেরেছি
অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা করার জন্য একটি একাউন্ট খুলতে হয়। তারপর বিভিন্ন দেশের কারেন্সি একটির দ্বারা আরেকটি ক্রয় বিক্রয় করা হয়। মাঝখানের মুনাফাটি থেকে যায় ব্যক্তির।এই হল ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মোদ্দাকথা।
এই হিসেবে শরয়ী হুকুম কি হবে? তা নিচে উদ্ধৃত করা হল।
শরয়ী হুকুম
এ বিষয়টির শরয়ী হুকুম জানতে হলে আমাদের দু’টি বিষয়ের দিকে খেয়াল করতে হবে। যথা-
১
কোন কারেন্সির বিনিময়ে কোন কারেন্সির কম-বেশি করে লেনদেন জায়েজ?
২
ফরেক্স ট্রেডিংয়ের উক্ত পদ্ধতিতে ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হচ্ছে কি না?
এ দু’টি বিষয় সম্পর্কে শরয়ী দৃষ্টিকোণ জানতে পারলেই বিষয়টি সম্পর্কে শরয়ী বিধান পরিস্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
কারেন্সি ব্যবসা কি জায়েজ?
এক্ষেত্রে বিষয় হল ২টি। যথা-
১
এক দেশের কারেন্সির বিনিময়ে আরেক দেশের কারেন্সি কমবেশি করে ক্রয় বিক্রয় বৈধ কি না?
২
একই দেশের কারেন্সি কমবেশি করে ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ কি না?
ভিন্ন দেশের কারেন্সির লেনদেন
এক দেশের কারেন্সি আরেক দেশের কারেন্সির বিনিময়ে কমবেশি করে বিক্রি করা জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে মজলিসেই কমপক্ষে একপক্ষ টাকাটি হস্তগত করে নিতে হবে। যদি একজনও তাদের বিনিময়কৃত কারেন্সি হস্তগত না করে তাহলে ক্রয় বিক্রয়টি জায়েজ হবে না।
যেমন ডলারের বিনিময়ে বাংলাদেশী টাকা বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে যিনি ডলার কিনল তিনি ক্রয় বিক্রয়ের মজলিসেই ডলার হস্তগত করে নিবে। বা যিনি টাকা কিনল তিনি উক্ত মজলিসেই টাকা হস্তগত করে নিবে।
যদি উভয়েই তাদের ক্রয়কৃত কারেন্সি হস্তগত করে নেয়, তাহলেতো উত্তম। কিন্তু কমপক্ষে একজনও হস্তগত করা শর্ত। আর যদি দুইজনের কেউই হস্তগত না করে, বরং পুরোটাই বাকিতে থাকে, তাহলে উক্ত ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হয় না।
এক দেশের কারেন্সির পরস্পর লেনদেন
একই দেশের কারেন্সির পরস্পর লেনদেনের সময় সমতা রক্ষা করা আবশ্যক। কমবেশি করে বিক্রি করলে উক্ত ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হবে না।
যেমন আমেরিকান ডলারের বিনিময়ে যদি আমেরিকান ডলারই বিক্রি করে, তাহলে কমবেশি করে বিক্রি করলে তা জায়েজ হবে না। সমান সমান হলে জায়েজ হবে।
অর্থাৎ দশ ডলারের বিনিময়ে দশ ডলারই বিক্রি লেনদেন করতে পারবে। এর চেয়ে কমবেশিতে ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হবে না।
فى الهداية-ويجوز بيع الفلس بالفلسين بأعيانهما” عند أبي حنيفة وأبي يوسف، وقال محمد: لا يجوز لأن الثمنية تثبت باصطلاح الكل فلا تبطل باصطلاحهما، وإذا بقيت أثمانا لا تتعين فصار كما إذا كانا بغير أعيانهما (هداية، كتاب البيوع، باب الربى-3/85، طبع رحمانية)
فى المستدرك للحاكم- عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «نَهَى عَنْ بَيْعِ الْكَالِئِ بِالْكَالِئِ» (مستدرك على الصحيحين-2/65-66، رقم-2342، شرح معانى الآثار، رقم-5554، سنن الدرقطنى، رقم-3060
ফরেক্স ট্রেডিং পদ্ধতির শরয়ী হুকুম
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা একথা পরিস্কার হয়ে গেছে যে,যদি ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মাঝে আর যদি কোন শরয়ী নিষেধকৃত বিষয় না পাওয়া যায়, তাহলে দুই দেশের মুদ্রা লেনদেন হলে কমবেশি মূল্যে ক্রয় বিক্রয় জায়েজ আছে।তবে শর্ত হল একজন তার ক্রয় বা বিক্রিকৃত পণ্যটি ক্রয়বিক্রয়ের মজলিসেই হস্তগত করে নিতে হবে।
যদি উক্ত শর্ত মানা হয়, তাহলে ভিন্ন দেশের মুদ্রা কমবেশিতে ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হবে। সুতরাং এর থেকে অর্জিত মুনাফাও জায়েজ হবে। কোন সমস্যা নেই।
কিন্তু যদি শর্তটি মানা না হয়, তথা একজনও তাদের লেনদেনকৃত কারেন্সি হস্তগত না করে, তাহলে উক্ত ক্রয় বিক্রয় জায়েজ হবে না। সেই হিসেবে এর দ্বারা অর্জিত মুনাফাও জায়েজ হবে না।
আর এক দেশীয় মুদ্রাকে সমমানের মুদ্রা দিয়ে ক্রয় বিক্রয় করলে জায়েজ হবে। কমবেশি করে বিক্রি করে বিক্রি করলে জায়েজ হবে না।
আরেকটি বিষয়ঃ
একজন কোন দেশের কারেন্সি ক্রয় করার পর, তা হস্তগত করার আগেই আরেকজনের কাছে বিক্রি করলে উক্ত ক্রয় বিক্রয় সহীহ হবে না। বরং আগে হস্তগত করে নিতে হবে। তারপর বিক্রি করতে হবে।
যদি হস্তগত করার আগেই বিক্রি করে, তাহলে উক্ত ক্রয় বিক্রয়টি হারাম হবে। সুতরাং ক্রেতা নিজেই উক্ত কারেন্সি হস্তগত করতে হবে, বা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে তা হস্তগত করতে হবে, তারপর অন্যের কাছে তা দ্বিতীয়বার বিক্রি করতে পারবে।
এ বিষয়টিও উক্ত ট্রেডিং এর মাঝে লক্ষ্য রাখতে হবে। হস্তগত হবার আগেই বিক্রি করে দিলে এভাবে ট্রেড করা জায়েজ হবে না।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: أَمَّا الَّذِي نَهَى عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُوَ الطَّعَامُ أَنْ يُبَاعَ حَتَّى يُقْبَضَ.
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ بِرَأْيِهِ: وَلا أَحْسِبُ كُلَّ شَيْءٍ إِلا مِثْلَهُ. (مسند الشافعى، رقم الحديث-1403، صحيح البخارى، رقم الحديث-2135، 2028، شرح مشكل الآثار، رقم الحديث-5642
বিঃদ্রঃ
উপরে ফরেক্স ট্রেডিংয়ের যে হুকুমটি লেখা হয়েছে, তা শুধুমাত্র ”আমরা যা বুঝতে পেরেছি” শিরোনামে যে সুরত উদ্ধৃত করা হয়েছে এই সুরতের হুকুম। অর্থাৎ ব্যবসা করার জন্য একটি একাউন্ট খুলতে হয়, তারপর এক দেশের কারেন্সি আরেক দেশের কারেন্সির বিনিময়ে বিক্রি করা হয়। এর মাঝখানের মুনাফা লাভের আশায় এ ট্রেড করা হয়ে থাকে।
যদি এতে আরো কোন সমস্যা থেকে থাকে, যা আমাদের কাছে স্পষ্ট করা হয়নি, তাহলে সেসব ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য করা যাবে না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
বিস্তারিত দেখতে পারেন –
1.http://bdpips.com/topic/19552-forex-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%87/
2.http://bdpips.com/topic/29028-%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8-%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%82/
3.http://bdpips.com/topic/1533-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%83%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8/
প্রথমত উত্তরের জন্য ধন্যবাদ।
আমার মনে হয় আরও কিছু তথ্য আদান-প্রদান করলে আমি এই ব্যবসায়-এর ব্যাপারে একটি শিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।
১. এই ব্যবসায় ব্রোকার-গুলো সাধারণত বড় অনুপাতের Leverage(ঋৃণ)-এর সুবিধা প্রদান করে থাকে, যেমন ১:১০০ অথবা ১:১০০০ ইতাদি।
যখন আমি ১: ১০০ Leverage নিয়ে একাউন্ট খুলব, তখন আমি ১ ডলার ডিপোজিট করলে ১০০ ডলার-এর ট্রেড খুলতে পারব।
আবার যখন ১: ২০০ Leverage নিয়ে একাউন্ট খুলব, তখন আমি ১ ডলার ডিপোজিট করলে ২০০ ডলার-এর ট্রেড খুলতে পারব।
এই ক্ষেত্রে আমার সিধান্ত হছে, ১:১ Leverage(অর্থাৎ ঋণ না নিয়ে) নিয়ে আমি এই ব্যবসায় করতে পারব। কারণ ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত হাদীস অনুসারে, “তুমার হাতে/কাছে যা নাই তা বিক্রয় করা নিষেদ”। ( ভুল সংশোদন করার অনুরোদ রইলো)
এই ক্ষেত্রে আপনার মতামত জানানোর অনুরোদ করছি।
২. এই মার্কেট-এ কিভাবে একটি লেনদেন সংগটিত হয় (ভিডিও লিংক-টি দেখুন): https://www.youtube.com/watch?v=XCs_m7CA49I
এই ব্যাপারে আপনার পরিষ্কার ধারণা হওয়া আমার জন্য জরুরী, কেননা আপনার শরীয়া বিষয়ক জ্ঞানের উপর করেই আমাকে সিদান্তে উপনীত হতে হবে।
আর্থিক লেনদেন-এর ক্ষেত্রে শরীয়া হুকুম হলো, লেনদেন hand-to-hand হতে হবে। ভিডিও দেখে মনে হতে পারে লেনদেন গুলো সরাসরি হছে না। আমি চিন্তা করে দেখলাম, যুদিও আমি সফটওয়্যার-এ Pending order place করসি কিন্তু যখন লেনদেন সংগটিত হছে তা সরাসরি-ই হছে। ( প্রয়োজনে আমরা ফোনে কথা বলতে পারি।)
৩. আমি আমার এক ভাই-এর সাতেও এই ব্যাপারে পরামর্শ করেসিলাম। তার মতে যেহেতু আমাকে এখানে অনুমানের ওপর নির্ভর করে ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে, তাই এটা শরীয়ত সম্মত হবে না। যেমন; আমি যখন কুনও মুদ্রা ক্রয় করব তখন এই আশাতেই ক্রয় করব যেন এই মুদ্রার মুল্য বৃদ্ধি পায়।
এক্ষেত্রে শরীয়া হুকুম কি জানানোর অনুরোদ করছি ?
সবিনয়ে বলতে চাচ্ছি যে,ফরেক্স ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে এমাউন্ট টা গ্রহন করা হয় সম্পূর্ণই অনলাইনভিত্তিক যা যেকোন সময় উইথড্র অর্থাৎ টাকা উত্তোলন করা যায় ব্যাংক থেকে।
এখানে আমার বুঝানো উদ্দেশ্য হল বর্তমানে ত ক্রেডিট কার্ড,ডেভিট কার্ড,মাস্টার কার্ড,ভিসা কার্ড ইত্যাদির মধ্যে যেমন অনলাইনে টাকা জমা রাখা হয় এবং যেকোন সময় দেখা যায় এটিএম বুথ বা ব্যাংক শাখা থেকে টাকা উঠানো যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এর মাধ্যমে অনেক লেনদেনও করা হয়,যেমন পণ্য বিক্রয়ের জন্য ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এখন প্রশ্ন হল ব্যাংকে টাকা পাঠালে সেটা কি কব্জা’র হুকুমে পড়ে কিনা?কব্জা’র হুকুমে না পড়লে আমার প্রশ্ন এখানেই শেষ।আর যদি কব্জা’র হুকুমে পড়ে তাহলে ২য় প্রশ্ন হল ফরেক্সের লভ্যাংশটাও তো ব্যাংক একাউন্টের সাদৃশ্যতা রাখে।তাহলে সেটা কি কব্জা’র হুকুমে পড়বেনা?
আর টাকাও কিন্তু মেইন মুদ্রা নয় কোন দেশেরই,বরং টাকা হচ্ছে স্বর্ণ বা রুপার একটা দলীল স্বরুপ আর স্বর্ণ রুপা হচ্ছে মূল মুদ্রা।
অতএব,ক্রেডিট কার্ডে জমাকৃত টাকা মূল মুদ্রার দলীল হতে পারে কিনা টাকার মত?কারণ উন্নত রাষ্ট্র গুলোতে এখন অধিকাংশ ক্রয় বিক্রয়ই দেখা যায় এসব কার্ডের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে,সরাসরি টাকা লেনদেন অনেকটাই কমে গেছে আগের তুলনায়।
দয়া করে এর সমাধান জানিয়ে উপকৃত করে বাঁধিত করবেন।আর কথার বেয়াদবি মাফ করবেন….