প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেব হুজুরের কাছে আমি জানতে চাই- কবুতরের বিষ্টা/পায়খানা সম্পর্কে মাসআলায় জেনেছি যে, তা পাক! বিষয়টা মনের ভেতরে আমার রীতিমত খটকা তৈরী করে ৷
কেউ প্রশ্ন করলে অযৌক্তিকতা ও দিধা মনের ভেতরে রেখেই তা পাক বলতে হয়!
বিষয়টা আমি একটু বুঝতে চাই, মুহতারাম! কোন যুক্তিতে তা পাক হবে?! আফওয়ান ৷ আহলে হক মিডিয়ার অ্যাপে মাসআলাটি খুঁজেছি, কিন্তু পাই নি ৷
দিল ঠান্ডা উত্তরের প্রত্যাশায় অপেক্ষমান রইলাম ৷
– ইব্রাহীম খলীল কাসেমী
নাগরপুর, টাংগাইল ৷
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কবুরের বিষ্টা পাক। এটাই ঠিক। কারণ মূলত জরুরতের কারণে। এটি একটি গ্রহপালিত পাখি।
এছাড়া এ পাখি ঘরবাড়ি এমন কি মসজিদেও বিচরণ করে থাকে। যদি এটার বিষ্টাকে নাপাক বলা হয়, তাহলে অনেক সমস্যা তৈরী হয়। যেমন মসজিদে হারামে প্রচুর কবুতর দেখা যায়। এমন কি বাইতুল্লার উপরে এবং মসজিদে হারামের বিভিন্ন স্থানে তারা অবাধ বিচরণ করে থাকে।
এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামগণ রাঃ থেকে নিয়ে কোন ফক্বীহ কোন কালেই কোন প্রকার বিরূপ মনোভাব পোষণ করেননি।
এছাড়া আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃ নিজ হাতে কবুতরের বিষ্টা পরিস্কার করে হাত না ধুয়েই নামায পড়েছেন মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়।
যদি কবুতরের বিষ্টা নাপাক হতো, তাহলে অবশ্যই এ থেকে মসজিদ পবিত্র করার কথা সাহাবাগণ এবং ফক্বীহগণ বলতেন।
এছাড়া এটি নাপাক ধরা হলে হাজীদের নামায পড়া এবং কাপড় পবিত্র রাখা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে যাবে।
এ জরুরতের কারণে কবুতরের বিষ্টাকে পাক সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর মানে তা কাপড়ে লাগলে, বা অন্য কোন স্থান লাগলে তা নাপাক হবে না।
(وَلَنَا) إجْمَاعُ الْأُمَّةِ فَإِنَّهُمْ اعْتَادُوا اقْتِنَاءَ الْحَمَامَاتِ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْمَسَاجِدِ الْجَامِعَةِ مَعَ عِلْمِهِمْ أَنَّهَا تَذْرِقُ فِيهَا، وَلَوْ كَانَ نَجِسًا لَمَا فَعَلُوا ذَلِكَ مَعَ الْأَمْرِ بِتَطْهِيرِ الْمَسْجِدِ، وَهُوَ قَوْله تَعَالَى: {أَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ} (البقرة: 125)
وَرُوِيَ عَنْ ابْنِ عُمَرَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – أَنَّ حَمَامَةً ذَرَقَتْ عَلَيْهِ فَمَسَحَهُ وَصَلَّى، وَعَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – مِثْلُ ذَلِكَ فِي الْعُصْفُورِ، وَبِهِ تَبَيَّنَ أَنَّ مُجَرَّدَ إحَالَةِ الطَّبْعِ لَا يَكْفِي لِلنَّجَاسَةِ مَا لَمْ يَكُنْ لِلْمُسْتَحِيلِ نَتْنٌ وَخُبْثُ رَائِحَةٍ تَسْتَخْبِثُهُ الطِّبَاعُ السَّلِيمَةُ، وَذَلِكَ مُنْعَدِمٌ هَهُنَا عَلَى أَنَّا إنْ سَلَّمْنَا ذَلِكَ لَكَانَ التَّحَرُّزُ عَنْهُ غَيْرَ مُمْكِنٍ؛ لِأَنَّهَا تَذْرِقُ فِي الْهَوَاءِ فَلَا يُمْكِنُ صِيَانَةُ الثِّيَابِ وَالْأَوَانِي عَنْهُ، فَسَقَطَ اعْتِبَارُهُ لِلضَّرُورَةِ كَدَمِ الْبَقِّ وَالْبَرَاغِيثِ وَحَكَى مَالِكٌ فِي هَذِهِ الْمَسْأَلَةِ الْإِجْمَاعَ عَلَى الطَّهَارَةِ، وَمِثْلُهُ لَا يَكْذِبُ فَلَئِنْ لَمْ يَثْبُتْ الْإِجْمَاعُ مِنْ حَيْثُ الْقَوْلُ يَثْبُتُ مِنْ حَيْثُ الْفِعْلُ وَهُوَ مَا بَيَّنَّا (بدائع الصنائع، كتاب الطهارة، فصل فى الطهارة الحقيقية، شركة المطبوعات العلمية بمصر-1/62)
(قَوْلُهُ حَمَامٍ وَعُصْفُورٍ) أَيْ وَنَحْوِهِمَا مِمَّا يُؤْكَلُ لَحْمُهُ مِنْ الطُّيُورِ سِوَى الدَّجَاجِ وَالْإِوَزِّ (قَوْلُهُ فِي الْأَصَحِّ) رَاجِعٌ إلَى قَوْلِهِ وَكَذَا سِبَاعُ طَيْرٍ أَيْ مِمَّا لَا يُؤْكَلُ لَحْمُهُ مِنْ الطُّيُورِ، وَهَذَا مَا صَحَّحَهُ فِي الْمَبْسُوطِ وَصَحَّحَ قَاضِي خَانْ فِي جَامِعِهِ النَّجَاسَةَ بَحْرٌ (قَوْلُهُ لِتَعَذُّرِ صَوْنِهَا) أَيْ الْبِئْرِ عَنْهُ: أَيْ عَنْ الْخُرْءِ الْمَذْكُورِ.
وَمُفَادُ التَّعْلِيلِ أَنَّهُ نَجَسٌ مَعْفُوٌّ عَنْهُ لِلضَّرُورَةِ، وَفِيهِ اخْتِلَافُ الْمَشَايِخِ، لَكِنَّ الَّذِي اخْتَارَهُ فِي الْهِدَايَةِ وَكَثِيرٍ مِنْ الْكُتُبِ أَنَّهُ لَيْسَ بِنَجِسٍ عِنْدَنَا لِلْإِجْمَاعِ الْعَمَلِيِّ عَلَى اقْتِنَاءِ الْحَمَامَاتِ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ مِنْ غَيْرِ نَكِيرٍ مَعَ الْعِلْمِ بِمَا يَكُونُ مِنْهَا كَمَا فِي الْبَحْرِ (رد المحتار، زكريا-1/379، كرتاشى-1/220) وَذَرْقُ مَا يُؤْكَلُ لَحْمُهُ مِنْ الطَّيْرِ طَاهِرٌ عِنْدَنَا مِثْلُ الْحَمَامِ وَالْعَصَافِيرِ. كَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة،الباب السابع في النجاسة وأحكامها،الفصل الثاني في الأعيان النجسة،46/1)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]