প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / সৌদী বাদশাহ ফাসিক হলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে কি?

সৌদী বাদশাহ ফাসিক হলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে কি?

প্রশ্ন

সৌদী আরবের বাদশাহগণের যে রাজবংশীয় সিলসিলাহ দেখা যায় শাসনের ক্ষেত্রে তা
ইসলামী শরীয়তের বিবেচনায় কিরূপ?
এবং,সৌদীর শাসকগণের সবারই দেখা যায় থুতনীর নিচে অল্প কিছু দাড়ি।তাও এক
মুষ্টি সমপরিমাণ কিনা তাও অনিশ্চিত।আবার উনাদের কারো কারো যুবক বয়সের
ছবিতে দেখা যায় দাড়িবিহীন,পাশ্চাত্য ভদ্রলোকের কাপড় যা থেকে না মনে হয়
একজন আলেম,না মনে হয় নবীর দেশের মানুষ,না মনে হয় খাদেমুল হারামাঈন
শরীফাইন তথা দুই পবিত্র মসজিদের সেবক।উনাদের আবার এমনও দেখা যায় যে
প্যালেস্টাইনে,বাইতুল মুকাদ্দাসে হামলাকারী ইয়াহুদীদের রক্ষাকবচ দেশগুলোর
দাজ্জালরূপী নেতাদের সাথে হাত ধরাধরি করে হাটতে,পারিবারিক অনুষ্ঠানেও
দেখা যায়।এমতাবস্থায় উনাদের সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দিক থেকে
কিরূপ আক্বীদা রাখা উচিত?
এবং,উনারা কি সত্যিই ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা রাখেন?
দ্রুত উত্তর কামনা করি।এই নাফরমান অধমের তরফ থেকে লাখো কোটি দরূদ আমাদের
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিকে ওয়া সাল্লামের উপর।শুরুতে ও শেষে সালাম।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখা সুষ্পষ্ট ফাসেকী। সেই সাথে মুসলমানদের দুশমনদের সহযোগিতা করাও ফাসেকী। যে বা যারাই উপরোক্ত কাজগুলো করবে, তারা ফাসেকী কাজ করছে। গোনাহের কাজ করছে। এসব কাজ সৌদী বাদশাহরা করলেও তারা ফাসেকী ও পাপের কাজ করছে।

দাড়ি বিষয়ে জানতে হলে পড়ুন- দাড়ি কতটুকু পরিমাণ রাখতে হবে? এক মুষ্টির চেয়ে কম দাড়ি রাখলে কী ব্যক্তি ফাসিক?

আর সৌদী বাদশাহ ইসলামের প্রতিনিধি হওয়া কোন জরুরী বিষয় নয়। তারা কেবলি একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রের সরকার। এতটুকুই।

আর মুসলমানদের উপর কোন ফাসেকও নেতা হয়ে গেলে সরাসরি শরীয়তের আইন বিরোধী কোন আইন জনগণের উপর  চাপিয়ে না দিলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা বৈধ নয়। এ হিসেবে বর্তমানে সৌদী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাও বৈধ হবে না।

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ عَلَى المَرْءِ المُسْلِمِ فِيمَا أَحَبَّ وَكَرِهَ، مَا لَمْ يُؤْمَرْ بِمَعْصِيَةٍ، فَإِذَا أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلاَ سَمْعَ وَلاَ طَاعَةَ»

হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুসলিম আমীরের কথা পছন্দ হোক বা না হোক তার কথা শোনা ও মানা উচিত যতক্ষণ না সে গোনাহের আদেশ করে। যদি সে গোনাহের আদেশ করে, তাহলে তার কথা শোনা ও মানা যাবে না। [বুখারী, হাদীস নং-৭১৪৪]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ يَرْوِيهِ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ رَأَى مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا فَكَرِهَهُ [ص:63] فَلْيَصْبِرْ، فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ يُفَارِقُ الجَمَاعَةَ شِبْرًا فَيَمُوتُ، إِلَّا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তাদের শাসকের মাঝে খারাপ কিছু দেখে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে, কেননা, একতাবদ্ধ দলকে ভেঙ্গে পৃথক হওয়া বৈধ নয়। সে যদি আলাদা হয়ে মৃত্যু বরণ করে, তাহলে সে জাহিলী মৃত্যুবরণ করল। [বুখারী, হাদীস নং-৭১৪৩]

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. মাহতাব

    জাযাকাল্লাহ ভাই। তবে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী হুকুমত পৃথিবীর কোন দেশে জারি হয়ে গেলে অথবা আরব বিশ্বে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পর তাদেরকে হটিয়ে সত্যিকারের খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করা বৈধ হবে কিনা?

Leave a Reply to মাহতাব Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *