প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুফতী সাহেব,
মহান আল্লাহর জন্যই আপনাকে অনেক ভালবাসি।
আপনার লেখা পড়ি ও প্রচার করি।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, হাসতে হাসতে জান্নাত যাওয়ার হাদিস আমি এতদিন মানুষকে বলতে না করেছি আপনার লেখা পড়ে, এখন একটা দলিল পেয়েছি।
দয়া করে জানাবেন দলিল ঠিক আছে কিনা, তাহলে এই হাদিস আমিও প্রচার করব ইনশাআল্লাহ।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জিকিরের মাধ্যমে জিহবা তরোতাজা রাখলে উক্ত ব্যক্তি হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করা মর্মের হাদীসের ক্ষেত্রে আমরা ইতোপূর্বে উত্তর দিয়েছি যে, অনেক তত্ব তালাশ করে উক্ত হাদীস আমরা খুঁজে পাইনি। সেই সাথে একথাও লিখে দিয়েছিলাম যে, আমরা পাইনি এর মানে এই নয় যে, এ হাদীস নেই। হয়তো আছে, কিন্তু আমাদের পড়াশোনার কমতির কারণে তা খুঁজে পাইনি।
আগের প্রশ্নোত্তরটি পড়তে ক্লিক করুন!
আপনাকে জাযাকাল্লাহ যে, আপনি এ হাদীসের সন্ধান দিয়েছেন।
হাদীসটি হলো:
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ: «إِنَّ الَّذِينَ لَا تَزَالُ أَلْسِنَتُهُمْ رَطْبَةً مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَهُمْ يَضْحَكُونَ»
হযরত আবু দারদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, নিশ্চয় যাদের জিহবা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে তরোতাজা থাকে, তারা হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৪৫৮৭, আয যুহদু ওয়ার রাক্বায়েক লিইবনিল মুবারক, হাদীস নং-১১২৬]এবং
হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ এর মন্তব্য হলো: حسن موقوفতথা হাসান পর্যায়ের বর্ণনা ও এটি মাওকূফ। [নাতায়েজুল আফকার-১/৯৫]
মওকূফ মানে হলো, এটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে সরাসরি নিসবত করা বর্ণনা নয়, বরং এটি সাহাবী আবূ দারদা এর কওল।
সুতরাং সাহাবীর কওল তথা আছারে সাহাবা হিসেবে এটি বলার সুযোগ রয়েছে। সরাসরি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস বলা যাবে না।
তবে সাহাবীর কওলও যেহেতু কতিপয় মুহাদ্দিসগণের মতে হাদীস, তাই এটিকে আমভাবে হাদীস হিসেবে উল্লেখ করাটাও দোষণীয় হবে না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
প্রধান মুফতী: জামিয়াতুস সুন্নাহ লালবাগ, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com