প্রচ্ছদ / জায়েজ নাজায়েজ / আবাসিক এলাকায় সারাদিন মাইকে কালেকশন ও মসজিদে নামাযের পর দানবাক্স চালানো কি জায়েজ?

আবাসিক এলাকায় সারাদিন মাইকে কালেকশন ও মসজিদে নামাযের পর দানবাক্স চালানো কি জায়েজ?

প্রশ্ন

From: mubarak
বিষয়ঃ মসজিদের কালেকশন

প্রশ্নঃ
১.প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজের পরই কানে ভেসে আসে সাভার বাস্টান্ড মসজিদের কালেকশনের আওয়াজঃ আয় আল্লাহর বান্দারা, নবীর(স) উম্মতেরা……… চলে একদম রাত ৯ টা পর্যন্ত। দেখছি প্রায় তিন চার বছর বা ভার্সিটি ভর্তির পর থেকেই (মনে নেই)। এই আওয়াজ প্রায় আশপাশের সব বাসা থেকে ভীষণভাবে শোনা যায়।
আশপাশের মানুষকে এভাবে কষ্ট দিয়ে মসজিদের কালেকশন! কেউ বাধা দিতে পারবে কিনা জানি না। কেউ সাহস করে না।
কিন্তু উলামায়ে কিরাম এভাবে একটি বিষয়কে চলতে দিয়ে ইসলাম ও মুসলমান বিশেষ করে নিজেদেরকেই হেয় প্রতিপন্ন করছেন বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।
কারণ আমার কাছে মনে হয় প্রতিদিন এদেরকে বদ দুয়া করি।
উলামা হজরতগণকে এবিষয়ে উদ্যোগ গ্রহনের আহবান জানাই।
২.আমরা জানি ফরয নামাজের পর ইস্তিগফার, আয়াতুল কুরছি পড়া সুন্নাত। কিন্তু বর্তমানে কি ফরয নামাজের সালাম ফিরানোর সাথে সাথেই “দান বক্স চালিয়ে দেই” পড়া বিদাতের মধ্যে গণ্য হবে না? বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের কাছে ফতওয়া জানতে চাই।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

এভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে কালেকশন করা জায়েজ নেই। তাই একাজ পরিহার করা আবশ্যক।

দানবাক্স চালানোর মাঝেও দুআ দরূদ ও ইস্তিগফার করা যায়। এছাড়া একাজ বিদআতের সংজ্ঞায় পড়ে না।

সুতরাং যদি দানবাক্স চালানোর কারণে কারো নামাযে কোন প্রকার ডিস্টার্ব না হয়, তাহলে এভাবে দানবাক্স চালানোতে কোন সমস্যা নেই।

তবে মাসবূকসহ অন্যান্যা নামাযরত ব্যক্তিদের ডিস্টার্ব হলে মাকরূহ হবে।

وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا [٣٣:٥٨

যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। [সূরা আহযাব-৫৮]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ: اعْتَكَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ، فَسَمِعَهُمْ يَجْهَرُونَ بِالْقِرَاءَةِ، فَكَشَفَ السِّتْرَ، وَقَالَ: «أَلَا إِنَّ كُلَّكُمْ مُنَاجٍ رَبَّهُ، فَلَا يُؤْذِيَنَّ بَعْضُكُمْ بَعْضًا، وَلَا يَرْفَعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِي الْقِرَاءَةِ»

হযরত আবু সাঈদ রাঃ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে “ইতিকাফ” করাকালীন সাহাবীদের উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করতে শুনে পর্দা উঠিয়ে বলেন, জেনে রাখ! তোমরা প্রত্যেকেই তোমাদের রবের সাথে গোপন আলাপে রত আছো। অতএব তোমরা [উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠের দ্বারা] একে অন্যকে কষ্ট দিও না, এবং তোমরা একে অন্যের চেয়ে উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করো না। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৩৩২]


فى الدر المختار: فرع يكره إعطاء سائل المسجد إلا إذا لم يتخط رقاب الناس  في المختار كما في الاختيار و متن مواهب الرحمن لأن عليا تصدق بخاتمه في الصلاة فمدحه الله بقوله { ويؤتون الزكاة وهم راكعون } المائدة 55

وقال ابن عابدين-قوله إلا إذا لم يتخط ) أي ولم يمر بين يدي المصلين قال في الاختيار : فإن كان يمر بين يدي المصلين ، ويتخطى رقاب الناس يكره لأنه إعانة على أذى الناس ، حتى قيل : هذا فلس لا يكفره سبعون فلسا ا هـ .

وقال ط فالكراهة للتخطي الذي يلزمه غالبا الإيذاء وإذا كانت هناك فرجة يمر منها لا تخطى فلا كراهة كما يؤخذ من مفهومه (الفتاوى الشامية كتاب الحظر والإباحة، فرع  يكره إعطاء سائل المسجد إلا إذا لم يتخط رقاب الناس، 9/597، النهر الفائق-1/365، فتاوى بزازية على هامش الهندية-4/76)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

সাক্ষীদের না জানা অবস্থায় ইংরেজী ভাষায় ইজাব কবুল করলে বিবাহ হবে কি?

প্রশ্ন সম্মানিত মুফতি সাহেব,আল্লহ আপনার ছায়াকে আমাদের জন্য দীর্ঘায়িত করুন।বিনয়ের সাথে একটি সমস্যার সমাধান জানতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *