প্রশ্ন
আসসালামু ওয়ালাইকুম ,
বিশ্বইজতেমায় দেশ বিদেশ থেকে যে সকল মসুল্লী এসেছেন তারা কি মুসাফির নয়? যদি মুসাফির হয় তবে কি তারা জুম্মার নামাজ পড়বে নাকি ৫ ওয়াক্ত নামাজই কসর আদায় করবে?
প্রশ্নকর্তা- নূরুল আমীন
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মুসাফির ব্যক্তির উপর জুমআর নামায পড়া ওয়াজিব নয়। তবে জুমআ না পড়লে জোহর পড়া আবশ্যক।
মুসাফির ব্যক্তির জন্য চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযকে দুই রাকাত পড়া আবশ্যক। অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামায কসর পড়বে তথা দুই রাকাত পড়বে।
কিন্তু যদি মুসাফির জুমআর নামায পড়ে নেয়, তাহলে তার জুমআ আদায় হয়ে যাবে এবং তার যিম্মা থেকে জোহরের নামাযও সাকিত হয়ে যাবে।
এমনিভাবে মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকীম ইমামের পিছনে নামায আদায় করে, তাহলে মুকীম ইমামের ইক্তিদা করে মুসাফির চার রাকাত নামাযই আদায় করবে। দুই রাকাত নয়। কিন্তু মুসাফির যদি একাকী নামায আদায় করে বা ইমাম নিজেই মুসাফির হয়, তাহলে চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রাকাতই আদায় করবে। চার রাকাত নয়।
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ (صحيح مسلم، كتاب صلاة المسافرين، باب صَلاَةِ الْمُسَافِرِينَ وَقَصْرِهَا، رقم الحديث-1611
হযরত ইবনে ওমর রাঃ বলেন-নিশ্চয় আমি রাসূল সাঃ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাঃ এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি হযরত ওমর রাঃ এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি হযরত উসমান রাঃ এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-আমি তোমাদের জন্য তাদের মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। [সূরা মুমতাহিনা-৬]
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬১১,
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১২২৫,
সুনানে বায়হাকী, হাদীস নং-৫২৯৫।
عَنْ مُوسَى بْنِ سَلَمَةَ، قَالَ: كُنَّا مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ بِمَكَّةَ، فَقُلْتُ: إِنَّا إِذَا كُنَّا مَعَكُمْ صَلَّيْنَا أَرْبَعًا، وَإِذَا رَجَعْنَا إِلَى رِحَالِنَا صَلَّيْنَا رَكْعَتَيْنِ. قَالَ: ” تِلْكَ سُنَّةُ أَبِي الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “
إسناده حسن، محمد بن عبد الرحمن الطفاوي شيخ أحمد وثقه علي بن المديني، وقال أبو حاتم: صدوق إلا أنه بهم أحياناً، وقال ابن معين: لا بأس به، وذكره الذهبي في كتابه “من تكلم فيه وهو موثق” ص 164، وقال في “الميزان”: شيخ مشهور ثقة روى عنه أحمد والناس، وقال أبو زرعة: منكر الحديث، وقال الحافظ في “التقريب”: صدوق يهم، وله في البخاري ثلاثة أحاديث، ومن فوقه ثقات من رجال الصحيح.
وأخرجه الطبراني (12895) من طريق أحمد بن حنبل، بهذا الإسناد. (مسند احمد، رقم الحديث-1862
فى البحر الرائق، ومن لا جمعة عليه إن اداها جاز عن فرض الوقت…… ويسقط عنهم الظهر، (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة الجمعة-2/152
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।