লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
১ম লা মাযহাবী ভাইটি অনেক চালাক। তিনি কোথাও আটকে গেলে কিভাবে সেখান থেকে জান ছাড়াতে হয় তা ভাল করেই রপ্ত করেছেন। আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এবার নতুন সূর উঠালেন। বলতে লাগলেন- ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অনুসরণ করার কথা আপনি বলছেন। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ফিক্বহ বলে যা প্রচলিত। তাতো তার সংকলিত নয়। আর তিনি কি কোন কিছু লিখিয়ে গেছেন? যা কিছু নিসবত করা হয় এরতো কোন সনদই ইমাম আবু হানীফা পর্যন্ত নেই। তাই হানাফী ফিক্বহের কিতাবের নিসবত তার দিকে করাটা ভুল।
আমি- আপনার বক্তব্যের সারমর্ম হল, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কোন লিখিত গ্রন্থ নেই, আর যা ফিক্বহে হানাফী বলে আছে তার সনদ না থাকায় তা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ফিক্বহ নয় এইতো আপনার অভিযোগ।
আপনার মনে এ প্রশ্নটি উদয় হয়েছে দু’টি বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে। একটি হল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর স্বহস্তে লিখিত কিতাব সম্পর্কে আপনি কিছুই জানেন না। সেই সাথে উস্তাদের কথা ছাত্র লিখলে যে সেটি উস্তাদেরই কিতাব হয় সেটি না জানার কারণে।
আর দ্বিতীয় অজ্ঞতা হল, মুতাওয়াতির বিষয়ের সনদ প্রয়োজন হয় না মুহাদ্দিস ও ফুক্বাহাদের এ সর্বজনবিদিত উসুলটি না জানার কারণে এ প্রশ্ন উত্থাপন করলেন।
ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর লিখিত কিতাব “মুসনাদে আবী হানীফা” এখনো বিদ্যমান। আমাদের কাছেও সেই কিতাব আছে। তাছাড়া আরো অনেক কিতাব আছে। যেমন ফিক্বহুল আকবর।
আর ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বলা উসুল অনুপাতে তার ছাত্ররা যেসব কিতাব সংকলিত করেছেন তাও অনেক। তাছাড়া আবু হানীফা রহঃ এর ছাত্র মুহাম্মদ রহঃ মুয়াত্তা। ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ এর আসার। ইমাম মুহাম্মদ রহঃ এর ছয় কিতাব তথা জামে কাবীর, জামে সগীর, সিয়ারে সগীর, সিয়ারে কাবীর, মাবসূত, জিয়াদাত ইত্যাদি গ্রন্থ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর উসুল ও ফাতওয়ার আলোকে লিখা। যা পরবর্তীতে কাফী নামক কিতাবে একসাথে সন্নিবিষ্ট করা হয়।
উস্তাদের নির্দেশনায় কিতাব লেখাটি মূলত উস্তাদেরই লেখা হয়। যেমন ইমাম বুখারী রহঃ এর ছাত্র ফিরাবরী রহঃ ইমাম বুখারী রহঃ এর নির্দেশনায় বুখারীর বেশ কিছু হাদীস সংকলিত করেছেন যা বুখারীর ১ম খন্ডের ১৫০ নং পৃষ্ঠার টিকায় লিখা আছে। ফিরাবরী রহঃ বুখারীর হাদীস একত্রিত করার কারণে গ্রন্থটি ফিরাবরীর হয়ে যায় নি। বরং যেহেতু ইমাম বুখারীর নির্দেশে সংকলিত করা হয়েছে তাই গ্রন্থটির মূলক লেখক ইমাম বুখারীই রয়ে যাচ্ছেন। তেমনি ইমাম মুহাম্মদ রহঃ যেহেতু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর উসুল ও মূলনীতির আলোকে গ্রন্থ সংকলিত করেছেন, তাই সেসব মূলত ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর গ্রন্থই থেকে যাচ্ছে।
আর আপনি হেদায়া কুদুরীর সনদের বিষয়ে যেকথাটি বলেছেন। সে দু’টি গ্রন্থ মুতাওয়াতির হওয়ার পরও আপনার সনদ তালাশ করাটি হয়ে গেছে পুরাই নাস্তিকদের প্রশ্নের মত। মুসলিমের প্রশ্ন হয়নি। কারণ মুতাওয়াতির বস্তুর সনদ লাগে না। আপনি নিজেও জানেন এটি ফিক্বহে হানাফী যদিও আপনি এ গ্রন্থ মানেন না। আবার আমরা যারা ফিক্বহে হানাফী মানি তারাও জানি এটি ফিক্বহে হানাফী। তাহলে যারা মানে তারা যেমন ফিক্বহে হানাফী হিসেবে মানছে, আবার যারা মানছে না সমালোচনা করছে তারাও ফিক্বহে হানাফী হিসেবেই সমালোচনা করছে। তাহলে কি দাঁড়াল? এটি যে ফিক্বহে হানাফী এতে কোন সন্দেহ নেই। এটি মুতাওয়াতির। সংকলনের পর থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম বিশ্ব এটিকে ফিক্বহে হানাফী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। লাখো মাদরাসায় এটি দরসে নিজামীর অন্তর্ভূক্ত। পৃথিবীব্যাপী কোটি ছাত্র শিক্ষক এটি ফিক্বহে হানাফী হিসেবে পড়ছে পড়াচ্ছে। মুহাদ্দিস, মুফতী, ফক্বীহ সেই সাথে সাধারণ মানুষ এক বাক্যে এসব গ্রন্থকে ফিক্বহে হানাফী হিসেবেই জেনে আসছে।
১২৪৬ হিজরীর আগে ফিক্বহে হানাফীর উপর কোন অভিযোগের কথা এ উপমহাদেশে কেউ শুনেনি। সর্বপ্রথম যে শিয়া ফিক্বহে হানাফীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তারপর তারই অনুসরণ করে কথিত আহলে হাদীস বা গায়রে মুকাল্লিদীনরা ফিক্বহে হানাফীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারাও একথা স্বীকার করতো এসব ফিক্বহে হানাফী।
তাহলে এমন একটি মুতাওয়াতির বিষয়ের সনদ তালাশ করা আহমকী হয়। আমি আগেই বলেছি মুতাওয়াতির বিষয়ের সনদ তালাশ করা মুসলিমের কাজ নয়। নাস্তিকদের পদ্ধতি। যেমন- কোন নাস্তিক আপনাকে প্রশ্ন করল- রাসূল সাঃ এর উপর যে কুরআন নাজিল হয়েছে এটি যে হুবহু সেই কুরআন। তার কি সনদ আছে? কুরআনের প্রতিটি আয়াতের সনদ কি রাসূল সাঃ পর্যন্ত প্রমাণিত? সনদ নেই বলে কুরআন কি নাউজুবিল্লাহ নবীর উপর নাজিলকৃত কুরআন নয়? কি জবাব রয়েছে আপনার কাছে?”
এক সাথে কলকলিয়ে উঠলেন দুই লা মাযহাবী। অবশেষে ১ম লা মাযহাবী ভাই বললেন- কুরআন আর ফিক্বহে হানাফী এক জিনিস নয়।
আমি- কুরআন আর ফিক্বহে হানাফী এক জিনিস আপনাকে কে বলেছে? উল্টো কথা বলেন কেন? আমি বলেছি কুরআনের প্রতি আয়াতের সনদ কি আছে? না থাকলে কি তা অগ্রহণীয় হয়ে যাবে?
১ম লা মাযহাবী- কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্বতো আল্লাহ নিয়েছেন। তাই এটির সনদ প্রয়োজন নেই।
আমি- আপনি যে সংরক্ষণের কথাটি বলছেন সেটিওতো কুরআন দ্বারা প্রমাণিত। নাস্তিক যখন সনদ ছাড়া কুরআন মানতেই নারাজ, সেখানে আপনি কুরআনের আয়াত দিয়েই তা সংরক্ষিত কিভাবে প্রমাণ করবেন?
১ম লা মাযহাবী- এটা প্রমাণ করা খুবই সোজা। সারা পৃথিবীতে কুরআনের নুসখা একই রকম। তাই এটি রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত কুরআন।
আমি- আপনি কি বলছেন নিজে বুঝতে পারছেনতো? ভাষা এক হলেই সনদ না থাকলে তা গ্রহণীয় হলে, হেদায়া কুদুরীর সারা পৃথিবীর যেসব নুসখা আছে তাতে কি আপনি কোন পরিবর্তন পেয়েছেন? সবতো একই বক্তব্য নির্ভর। তাহলে এটির সনদ তালাশ করছেন কেন?
উসূল সম্পর্কে না জানার কারণে আপনি হক মানতে পারছেন না। কুরআন মুতাওয়াতির। সবাই জানে এটি কুরআন। নাস্তিকও জানে। আস্তিকও জানে। মান্যকারীও জানে অমান্যকারীও জানে। সারা পৃথিবীতে তা প্রচলিত। তাই এ মুতাওয়াতিরের হক প্রমাণের জন্য সূত্র তথা সনদ প্রয়োজন হয় না। যেমনটি শরহু নুখবাতিল ফিক্বারে ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ পরিস্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন। মুতাওয়াতিরের সনদ তালাশ করা মুর্খতা ছাড়া কিছু নয়।
তেমনি হেদায়া কুদুরী যে ফিক্বহে হানাফী সে কথা প্রথম বিরোধীতাকারী শিয়াও স্বীকার করেছে, তার অনুসরণ করে আপনারা যারা বর্তমানে বিরোধিতা করছেন তারাও স্বীকার করেন এসব ফিক্বহে হানাফী, আর আমরা যারা মান্য করি তারাও জানি এসব ফিক্বহে হানাফী। সারা পৃথিবীতে এসব কিতাব ফিক্বহে হানাফী হিসেবে পড়া হচ্ছে। মাদরাসায় পড়ানো হচ্ছে। মুফতী, মুহাদ্দিস, ফক্বীহ এসবকে ফিক্বহে হানাফী হিসেবেই জেনে আসছে। তাই এটি মুতাওয়াতির। আর মুতাওয়াতির বস্তুর সনদ লাগে না। যে সনদ তালাশ করে ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ এর ভাষায় উক্ত ব্যক্তি জাহিল।
আবার ১ম লা মাযহাবী ভাইটি চালাকীর পরিচয় দিল। নিজেই প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে এ স্থানে এসেছিল। এখন যখন দেখছে বিপদে পড়েছে। এবার আবার মূল প্রসঙ্গে চলে যাওয়ার কথা উঠাল। বলতে লাগল- আসলে এভাবে কথা বললে কথা শেষ হবে না। চলুন আমরা রফউল ইয়াদাইনের বিষয়ে আলোচনা করি।
আমি- আলোচনাতো রফয়ে ইয়াদাইন নিয়েই ছিল। আপনারাইতো প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে এ স্থানে নিয়ে এলেন। যাইহোক আমরা রফয়ে ইয়াদাইনের বিষয়ে আপনাদের পূর্ণ আমল নিয়ে কথা বলছিলাম। আপনারা জানিয়েছেন চার রাকাত নামাযে আপনারা ১৮ রফয়ে ইয়াদাইন কখনোই করেন না, আর ১০ স্থানে সর্বদা করে থাকেন। তো…..
১ম লা-মাযহাবী- এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে আমরা জানতে চাই। আমরাতো আপনার কাছ থেকে জানতে এসেছি। তাই আপনি বিষয়টি বুঝিয়ে দিন।
আমি- আপনি যেভাবে আমল করছেন সেটিতো আপনার আমল। আমার না। আমিতো আমার আমলের দলীল দিব। আপনি আপনার আমলের দলীল দিবেন। আপনি আগে যেটি করতেন সেটি ছেড়ে দিয়ে কেন এ নতুন আমল ধরলেন। আর আপনার পড়াশোনা অনুপাতে আপনার বর্তমানের আমলটি কেন সহীহ মনে হচ্ছে? তা প্রমাণ করাতো আপনার দায়িত্ব। আপনার দায়িত্ব আমার কাঁধে কেন চাপাতে চাচ্ছেন? প্রসিদ্ধ হাদীসটি শুনেননি? দাবিকারী দলীল উপস্থাপন করবে, আর অস্বিকারকারীর উপর আবশ্যক হল ইয়ামীন করা।
তাহলে রফয়ে ইয়াদাইনের ক্ষেত্রে আপনারা দাবিকারী হয়ে আমাদের কাছে দলীল চাচ্ছেন কেন? আমরাতো আপনার দলীল খন্ডন করে তা অস্বিকার করবো।
১ম লা মাযহাবী- দাবিকারীতো আমরা না আপনি?
আমি- কিভাবে?
১ম লা মাযহাবী- হাদীসে রফয়ে ইয়াদাইনের কথা এসেছে। আর আপনারা তা অস্বিকার করছেন। তাই আপনাদের দলীল দিতে হবে।
আমি- “আপনি বাদি আর বিবাদির সংজ্ঞাই বুঝেননি। হাদীস হচ্ছে দলীল। আর আপনি যা বলছেন তা হচ্ছে দাবি। আমি যা বলছি তা হচ্ছে অস্বিকার। অস্বিকারকারীর বক্তব্য দাবি হয় না হয় অস্বিকার। আপনি বলছেন রফয়ে ইয়াদাইন করতে হবে রুকুতে যেতে আসতে। আমি বলছি একথা মানি না। তাহলে দাবিকারী আমি সাব্যস্ত হলাম কিভাবে? আমিতো অস্বিকার করছি। দাবিতো করছেন আপনি। দাবিকারী হয়ে দলীল অস্বিকারকারীর কাছে চাওয়াতো হাদীসের নির্দেশনা অমান্য করা। হাদীস অনুসারী এমন কাজ কি করে করতে পারে?”
আবারো হাম তাম শুরু করে দিল ২য় লা-মাযহাবী। দলীল দিতে রাজি হচ্ছে না একজনও। পরিস্থিতি দেখে বিষয়টি আরো পরিস্কার করার জন্য বললাম- আচ্ছা, বলুন আপনারা যে রফয়ে ইয়াদাইন করছেন তার হুকুম কি?
১ম লা মাযহাবী- সুন্নত।
আমি- এটি সুন্নত একথা কোথায় আছে?
১ম লা মাযহাবী- রাসূল সাঃ যা করেছেন তা সবই করা আমাদের উপর কর্তব্য। সবই জরুরী।
আমি বললাম- বুখারী মুসলিমে এসেছে রাসূল সাঃ জুতা পা দিয়ে নামায পড়েছেন, জুতা পা দিয়ে নামায পড়ার হুকুম কি আপনার বক্তব্য অনুপাতে সুন্নত নয়?
১ম লা মাযহাবী- জুতা পা দিয়ে নামায পড়া জায়েজ।
আমি- একথা আপনি কোথায় পেলেন? রফয়ে ইয়াদাইনের নির্দেশ যেমন আল্লাহর নবী সাঃ দেননি শুধু নামাযরত অবস্থায় আমল করেছেন মর্মে আপনারা হাদীস দেখান। তেমনি রাসূল সাঃ জুতা পা দিয়ে নামায পড়েছেন কিন্তু পড়তে আদেশ দেননি মর্মে হাদীসে এসেছে। তাহলে রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নত হলে জুতা পায়ে নামায পড়া সুন্নত নয় কেন?
১ম লা মাযহাবী- জুতা ছাড়া নামায পড়েছেন একথা হাদীসে এসেছে। তাই আমরা এটিকে ছেড়ে দেই।
আমি- আপনার ইচ্ছে হলেই সহীহ হাদীসে আসা রাঃ এর নামায সংক্রান্ত আমল ছেড়ে দেন? এর নাম কুরআন ও হাদীসের অনুসরণ? আর কোন হাদীসে জুতা খুলে নামায পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে একটি হাদীসের কিতাবের নাম বলুনতো।
২য় লা-মাযহাবী- আরে! আপনি কিসের সাথে কি মিলাচ্ছেন? জুতা পরিধান করে নামায পড়া সুন্নত হবে কেন? এটি এমনিতেই পড়েছেন। আপনি এটিকে রফয়ে ইয়াদাইনের সাথে মিলাচ্ছেন কেন?
আমি- আমি মিলাচ্ছি না আপনারা গুলিয়েছেন। রাসূল সাঃ যা করেছেন, তাই সুন্নত বললেন, অথচ জুতা পরিধান করে নামায পড়েছেন সেটিকে সুন্নত মানতে নারাজ কেন?
২য় লা-মাযহাবী- রাসূল সাঃ জুতা খুলেও নামায পড়েছেন।
আমি- কোন হাদীসে এসেছে রাসূল সাঃ জুতা খুলে নামায পড়েছেন সেই হাদীসটা একটু দেখানতো? [বেটা হাদীসের কিতাব দেখলেই কাঁপে, আবার ঝারি দিয়ে বেড়াচ্ছে হাদীসে আছে, হাদীসে আছে বলে]
১ম লা-মাযহাবী- হ্যাঁ, পেয়েছি। হাদীসে এসেছে রাসূল সাঃ একবার জুতা পা দিয়ে নামায পড়ছিলেন, তখন জিবরাঈল আঃ এসে বললেন আপনার জুতায় নাপাক আছে, তখন তিনি জুতা খুলে বাকি নামায পড়েন। সুতরাং বুঝা গেল জুতা খুলে নামায পড়া জায়েজ।
আমি- এ হাদীসতো আরো পরিস্কার করছে যে, জুতা পরিধান করেই নামায পড়তে হবে। শুধু নাপাক থাকলে খুলে পড়বে এতটুকু প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু নাপাক না থাকলে খুলে পড়বে একথাও কি প্রমাণ হচ্ছে? যেমন হাত উঠাতে না পারলে হাত না উঠানোর যেমন সুযোগ থাকে, কিন্তু আপনার দাবি অনুপাতে সে সময় রফয়ে ইয়াদাইনের সুন্নত বাদ হয় না, কিন্তু নাপাক থাকলে জুতা খুলে পড়বে তা দিয়ে জুতা পরিধান করে নামায পড়ার সুন্নত হওয়াকে অস্বিকার করছেন কিভাবে?
১ম লা মাযহাবী- আপনি শুধু শুধুই ঘুরাচ্ছেন। জুতা পরিধান করা আর রফয়ে ইয়াদাইন এক বস্তু নয়।
২য় লা-মাযহাবী- রফয়ে ইয়াদাইন না করার কোন হাদীসই নেই। আর জুতা খুলে নামায পড়ার হাদীস আছে। তাই দু’টি এক হতে পারে না।
আমি- রফয়ে ইয়াদাইন না করার কোন হাদীসই নেই?
২য় লা-মাযহাবী- না কোন হাদীস নেই।
আমি- হাদীস সম্পর্কে মাশাআল্লাহ ভালই জ্ঞান রাখেন দেখছি। ……
১ম লা মাযহাবী- দেখেন রাসূল সাঃ যে আমল করেছেন যদি সেটির বিপরীত কর্ম প্রমাণিত না হয়, তাহলে সেটি করা জরুরী। আর যদি বিপরীতটি প্রমাণিত হয়, তাহলে সেটির ব্যাপারে ব্যাখ্যা আছে। যেমন এখানে রফয়ে ইয়াদাইনের বিপরীত কোন হাদীস নেই। তাই এটি সুন্নত। আর যেহেতু জুতা খুলে নামায পড়ার হাদীস আছে তাই এটি জায়েজ।
আমি- আপনার এসব ব্যাখ্যা কুরআন ও সহীহ হাদীসের কোথাও আছে? না আপনার মন যা বলে তাও শরীয়ত?
১ম লা মাযহাবী- এসবতো বুঝা যায়।
আমি- তাহলে আপনার বুঝের নাম আপনার কাছে শরীয়ত। কুরআন ও হাদীসের ইবারত নয়। আরেকটি বিষয় আপনি একবার বলছেন জরুরী আবার বলছেন সুন্নত এ পার্থক্যের মানে কি? কোনটির আসলে হুকুম কি? কিসের ভিত্তিতে এসব বলে থাকেন?
১ম লা মাযহাবী- যে কাজ না করলে নামায হয় না, সেটি আবশ্যক বা ফরজ। আর যেটি ছাড়া নামায হয় সেটি সুন্নত।
আমি- মাশাআল্লাহ! সুন্দর সংজ্ঞা। কিন্তু এ সংজ্ঞাটি কুরআনের কোন আয়াতের অনুবাদ বা কোন হাদীসের অনুবাদ?
১ম লা মাযহাবী- এসব বুঝা যায়।
আমি- হু বুঝা যায়। আর আপনার সেই বুঝের নাম কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসরন? আচ্ছা, তাহলে আপনার এই সংজ্ঞা অনুপাতে আমাকে নামাযের শুরুতে তাকবীরে তাহরীমা বলা আর রফয়ে ইয়াদাইনের পার্থক্যটি বুঝান। কোনটির হুকুম কি?
১ম লা মাযহাবী- তাকবীরে তাহরীমা রুকন। আর রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নত।
আমি- এ দুই হুকুম কুরআন ও সহীহ হাদীসের কোথায় আছে?
১ম লা মাযহাবী- যেহেতু তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া নামায হয় না তাই এটি রুকন। আর রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয় তাই এটি সুন্নত।
আমি- তাহরীমা ছাড়া নামায হয় না, আর রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয় একথা কুরআনের কোন আয়াত বা কোন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
১ম লা মাযহাবী- তাকবীর বলে নামায পড়তে বলা হয়েছে তাই এটি ছাড়া নামায হবে না। কিন্তু রফয়ে ইয়াদাইনের ক্ষেত্রে এমন বলা হয়নি। তাই এটি সুন্নত।
আমি- মাযহাবীদের কিয়াসকারী বলে গালি দেন। কিন্তু নিজেরা যেভাবে যেটা মনে চায় সেটির একেকটি বানোয়াট হুকুম সাব্যস্ত করে চলেন তা দেখে সত্যিই হাসি পাই। আপনি বলেছেন যা ছাড়া নামায হয় না, তা রুকন, আর যা ছাড়া নামায হয় তা সুন্নত। সেই হিসেবে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া নামায হয় না বলে সেটিকে রুকন সাব্যস্ত করেছেন। আর রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয় বলে এটিকে সুন্নত সাব্যস্ত করছেন। কিন্তু রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয় একথারও কোন দলীল পেশ করেননি, আবার তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া নামায না হওয়ারও কোন স্পষ্ট দলীল পেশ করতে পারেননি আপনার কথিত যুক্তি ছাড়া।
এসব পরিভাষা কোত্থেকে আমদানী করলেন? কুরআনের কোন আয়াত বা কোন হাদীসের অনুবাদ এসব পরিভাষা সেটিও জানাননি। শুধু নিজের ইচ্ছেমত একেকটিকে একেকটি বলে দিলেন, এর নাম কুরআন ও হাদীসের অনুসরণ?
বলুনতো কিয়াম ছাড়া নামায হয়?
১ম লা মাযহাবী- না হয় না।
আমি- এর কী দলীল আছে? কিয়াম ছাড়া নামায হয় না, রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয়, এসব পার্থক্য আপনাকে কে বানিয়ে দিয়েছে? নাম কুরআন ও হাদীসের আর কাজ নিজের খাহেশাত নিঃসৃত যুক্তির এ কেমন কাজ ভাই?
১ম লা মাযহাবী- দেখেন ! আমরা এভাবে আলোচনা করতে থাকলে কোন কিছুই হবে না। চলুন আমরা রফয়ে ইয়াদাইন নিয়ে কথা বলছি সেটাই শেষ করি।
আমি- আচ্ছা, চলুন, রফয়ে ইয়াদাইন নিয়েই কথা বলি। আপনি রফয়ে ইয়াদাইন বিষয়ে আপনাদের আমলতো বললেন। অর্ধেক হুকুম বলে দিয়েছেন মানে রফয়ে ইয়াদাইন করা সুন্নত। এবার হুকুমের দ্বিতীয় অংশটি বলুন! রফয়ে ইয়াদাইন না করার হুকুম এবং যারা করে না তাদের হুকুম সেই সাথে রফয়ে ইয়াদাইন না করা নামাযের হুকুম কি?
১ম লা মাযহাবী- রফয়ে ইয়াদাইন ছাড়া নামায হয়ে যায়। অনিচ্ছায় ছেড়ে দিলে গোনাহ নেই। ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে সুন্নত ছেড়ে দেয়ার গোনাহ হবে।
আমি- এই কাজ সুন্নত এবং সুন্নত ছেড়ে দেয়ার গোনাহটা কি জিনিস? একটু পরিস্কার করে বলুন।
১ম লামাযহাবী- মানে, রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নত। আর ইচ্ছেকৃত না করলে সুন্নত ছেড়ে দিলে যে গোনাহ হয় সে গোনাহ হবে।
আমি- সুন্নত ছেড়ে দিলে কি গোনাহ হয়?
১ম লামাযহাবী- আল্লাহ তাআলা কুরআনে নবীজী সাঃ এর অনুসরণের আদেশ দিয়েছেন। তাই রাসূল সাঃ যা করেছেন তা ছেড়ে দিলে সুন্নত ছেড়ে দেয়ার গোনাহ হবে।
আমি- ভাই! আগামাথা কিছুই বুঝলাম না। আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন নবীজীকে অনুসরণের। তাই সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে। এই দু’ইয়ের মাঝে মিল কোথায়? আল্লাহ বলছেন নবীজীকে অনুসরণের, আর আপনি বলছেন সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে, “অনুসরণ আর সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে” এই দুইয়ের মাঝে মিল কোথায়? আর “সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে” একথার দলীল অনুসরণের নির্দেশের দ্বারা হয় কিভাবে?
সহজ করে বলছি, আল্লাহ বলছেন, নবীজী সাঃ কে অনুসরণ করতে। আর আপনি বলছেন সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে।
এর মাঝে “সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে” বক্তব্যটি আপনার দাবি, আর “নবীজী সাঃ কে অনুসরনের” নির্দেশ সম্বলিত আয়াত হচ্ছে আপনার দলীল। এখন আমাকে বলুন, আপনার দাবির স্বপক্ষে দলীলটি প্রয়োগ হয়েছে কি না?
একদিকে অনুসরণের নির্দেশ, অপরদিকে “সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে”। আপনার দলীলে “গোনাহ হওয়ার বিষয়” কোথায়? আর সুন্নত শব্দ কোথায়?
যেভাবে ইচ্ছে আয়াত ও হাদীসকে একটিকে অপরটির সাথে লাগানোর নাম কুরআন ও হাদীসের অনুসরণ। আমাদের ব্যাপারে বদনাম করে বেড়ান, আমরা কিয়াস করে বেড়াই। কুরআন ও হাদীসের ধার ধারি না। কিন্তু আপনাদের যা হালাত দেখা যাচ্ছে, সব কিছুতেই দেখি প্রথমে কিয়াস করে থাকেন আপনারা। তবে পার্থক্য হল, আমাদের এখানে প্রয়োজনে কিয়াস করে সর্বজনস্বীকৃত মুজতাহিদ আর আপনাদের এখানে আরবী দেখে পড়তেও জানে না, এমন জাহিল ব্যক্তিরা।
কাজ কিয়াসের, নাম কুরআন ও হাদীসের! এ কেমন ধোঁকা?
“‘রফয়ে ইয়াদাইন ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে’ এই মর্মে আপনাদের কথিত কিয়াস ছাড়া আর কোন দলীল আপনাদের কাছে নেই” স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেন?
১ম লা-মাযহাবী- না, না আছেতো।
আমি- কিভাবে আছে? উপরে তাহলে কি দেখালাম? আপনার বক্তব্যের দলীল এসব আয়াত না আপনার কিয়াসকে দলীল বানাচ্ছেন? যে কিয়াসের কোন ভিত্তিই নেই। আয়াতে বলছে অনুসরণের নির্দেশের কথা। আর আপনি বলছেন “সুন্নত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে” মিলল কিভাবে?
১ম লা-মাযহাবী- আচ্ছা, ভাই! এই সব বিষয়ে এখন কথা বললে আসলে কোন সমাধান হবে না। অল্প অল্প করে আমরা একেক দিন আলোচনা করবো। তাই আজকে শুধু রফয়ে ইয়াদাইন না করা বিষয়ে আপনাদের দলীলটি জানতে চাই।
আমি- আমিতো আগেই বলেছি, দলীল দেয়া আমাদের যিম্মায় নয়। কারণ আমরা অস্বিকারকারী। আপনারা দাবিকারী। রফয়ে ইয়াদাইন করার দাবি করছেন, আর আমরা অস্বিকার করছি। বলছি, রফয়ে ইয়াদাইন করতে হবে না। প্রসিদ্ধ হাদীস অনুপাতে দলীল দেয়া দাবিকারীর উপর আবশ্যক। অস্বিকারকারীর উপর নয়।
১ম লামাযহাবী- আজকে চলে যাবো। আরেক দিন আসবো। সেই দিন আরো বিস্তারিত কথা হবে।
আমি- সেদিন কি রফয়ে ইয়াদাইন করার উপর দলীল পেশ করবেন?
১ম লা-মাযহাবী- হ্যাঁ, সাথে সাথে আপনাদের দলীলগুলো আমাকে দিলে ভাল হয়। আমি উভয়টি রিসার্চ করবো। যদি আপনাদের দলীল শক্তিশালী মনে হয় তাহলে আপনাদেরটা গ্রহণ করবো।
মনে মনে হাসি পেল আমার। হাদীসের কিতাব দেখে যে ব্যক্তির শরীর কাঁপতে থাকে। তিনি কুরআন ও হাদীসের দলীল যাচাই করে যেটিকে সঠিক মনে হয় সেটি মানবেন। কি মারাত্মক দুঃসাহস! এরকম জাহিলরা পুরো দ্বীনটাকেই হাসি তামাশার বস্তু বানিয়ে রেখেছে। নিজের জাহালাত আর মুর্খতা সত্বেও নিজেকে মনে করছে বিশাল গবেষক। গবেষণা করবে, রিসার্চ করবে, তারপর নিজের জাহেলী সমঝে যেটিকে হক মনে করবে, সেটিকে মানবে, আর যেটি বুঝে আসবে না মানবে না।
কি ভয়াবহ মানসিকতা। দ্বীনটা তাদের কাছে কতটা ছেলেখেলা। যে দ্বীন শিখার জন্য একেকজন বিদ্যানুরাগীরা দিনের পর দিন সফর করেছেন। বছরের পর বছর শায়েখদের কাছে পড়ে রয়েছেন। সেই দ্বীন শুধু কিছু অনুবাদ পড়ে, ভিডিও দেখে ইন্টারনেটের কিছু লেখা পড়ে শিখে যাবে! নিজের ইচ্ছেমত যাকে তাকে বিশ্বস্ত, যাকে তাকে সহীহ-জঈফ সাব্যস্ত করে দিবে। এর নামও দ্বীন?
আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব ভয়ানক গবেষকদের ফিতনা থেকে হিফাযত করুন।
আমি ১ম লা মাযহাবীকে বললাম- আমার দলীল দেয়ার দায়িত্ব নয়। তবু আপনাকে দিচ্ছি। রফয়ে ইয়াদাইন বিষয়ে আমরা নামাযে যা করি তার পূর্ণ আমলের পূর্ণ দলীল এই দু’টি বইয়ে আছে। একটি হল, মাওলানা আব্দুল মতীন সংকলিত “দলীলসহ নামাযের মাসায়েল” আর শায়েখ মুহাম্মদ ইলিয়াস ফয়সালে “নামাযে পয়ম্বর” গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ “নবীজীর নামায” এ। এ দুটি কিতাব দেখে নিন।
এবার আপনি রফয়ে ইয়াদাইন বিষয়ে আপনার পূর্ণ আমলের শুধু একটি সহীহ হাদীস পেশ করবেন। আর আপনার পূর্ণ আমল মনে থাকবেতো?
১ম লা-মাযহাবী- থাকবে না কেন? থাকবে।
আমি- হয়তো থাকবে না। আমি লিখে দিচ্ছি। তাহলে মনে থাকবে।
১ম লা-মাযহাবী- হ্যাঁ, তাহলে লিখে দিন।
আমি যখন কাগজ কলম নিচ্ছি লিখে দেয়ার জন্য। তখন ২য় লামাযহাবীটি কথা বলে উঠল। বলতে লাগল- আপনি আপনার দলীল দিন। আমাদের কাছে এসব লিখে দিচ্ছেন কেন? আমাদের কাঁধে চাপাতে চাচ্ছেন কেন?
১ম লামাযহাবী- ওনাদের দলীলতো ওনারা দিয়েছেন। যা এই দুই কিতাবে বিদ্যমান। আমরা আমাদের আমলের দলীল লিখে নিয়ে আসবো আগামী একদিন।
আমি- এইতো বুঝেছেন। ঠিক আছে লিখেন রফয়ে ইয়াদাইন বিষয়ে-
চার রাকাত নামাযে সর্বদা দশ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করা, ১৮ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন না করা, একাজটি সুন্নত, ইচ্ছেকৃত ছেড়ে দিলে সুন্নত ছেড়ে দেয়ার গোনাহ হবে ইদ্যাদি বক্তব্য সম্বলিত একটি সহীহ হাদীস, যাকে আল্লাহ ও রাসূল সাঃ বা তাদের সমর্থনে সহীহ বলে প্রমাণিত হয়েছে।
১ম লা-মাযহাবী- আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি কিন্তু এসবের লিখিত জবাব নিয়ে আসবো।
আমি- কোন সমস্যা নেই। লিখিতই নিয়ে আসুন। কিন্তু উপরের সব ক’টি পয়েন্ট কিন্তু ভুলবেন না। আমল পূর্ণ করে, অর্ধেকের দলীল পেশ করা ধোঁকাবাজী একথাতো মানেন?
১ম লা-মাযহাবী- তাতো অবশ্যই। পূর্ণ আমল করলে দলীলতো পূর্ণ আমলেরই দিতে হবে। অর্ধেক আমলের দিবে কেন?
আমি- তাহলে ঠিক আছে। রফয়ে ইয়াদাইনের পূর্ণ আমলের দলীলই আশা করি পেশ করবেন।
১ম লা-মাযহাবী- আরেকটি কথা, আমি ব্যস্ত মানুষতো। অফিস থেকে এসে তারপর পড়াশোনা করতে বসতে হয়। তাই আমার বেশ কিছুদিন দেরী হতে পারে আপনার উত্তর দিতে।
আমি- যত ইচ্ছে সময় নিন। আরেকটি কথা জেনে রাখুন, কিয়ামত পর্যন্ত আপনাদের এসব আমলের পূর্ণ দলীল আপনারা উপস্থিত করতে পারবেন না ইনশাআল্লাহ। এটি আমাদের প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।
১ম লামাযহাবী- আচ্ছা, দেখা যাক। একটু কিন্তু দেরী হবে আগেই বলে নিচ্ছি।
আমি- জানি দেরী হবে। আপনার দেরী হবে বলার কোন দরকার নেই। যেহেতু দেরীই করবেন, তাহলে নামাযের আবশ্যকীয় আরো কয়েকটি বিষয়ের সমাধানও একটু খুঁজে দেখবেন আশা করি।
১ম লা-মাযহাবী- বলেন।
আমি- লিখুন- নামাযের ফরজ কয়টি ও কী কী? ফরজের সংজ্ঞাসহ এর হুকুম কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
নামাযের সুন্নত কয়টি ও কী কী? সুন্নতের সংজ্ঞাসহ এর হুকুম কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
নামায ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কী কী? সুনির্দিষ্ট করে কুরআন ও হাদীস জানতে চাই।
নামাযের মাকরূহ কয়টি ও কী কী? মাকরূহের সংজ্ঞাসহ এর হুকুম কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
১ম লা-মাযহাবী- ব্যস, ব্যস। এতটুকু থাক।
২য় লা-মাযহাবী- আমরা ওনাকে কোন কিছু করার দায়িত্ব দিয়ে যাবো না? শুধু আমরাই নিয়ে যাবো?
১ম লা-মাযহাবী- ওনিতো ওনার দায়িত্ব পালনই করেছেন। ওনার দলীল লিখে দিয়েছেন। এ দুই কিতাবে আছে। আমরা আমাদের আমলের দলীল এখন পেশ করবো।
আমি- মাশাআল্লাহ! আপনি ভাল বুঝেছেন। তাহলে পরে একদিন দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
সবাই- জি ইনশাআল্লাহ! আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
আমার দীর্ঘ সময় নষ্ট করে চলে গেল ভ্রাতারা। বলে গেল আবার আসবে। কিন্তু আমি জানি, ওরা আসবে না। ওরা আসতে পারে না। সত্যের আলোকচ্ছটা বিকির্ণিত হলে আঁধার থাকতে পারে না। সেখানে অন্ধকার ঢুকতে পারে না। যদি পরিবর্তিত হয়, তাহলে আসবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু নিজের অন্ধ মাযহাব আঁকড়ে ধরে থাকলে আসবে না। কারণ তিনি ধাক্কা খেয়েছেন। এতদিনকার গর্বিত মাযহাবটা যে, বড় ঠুনকো তা মুখে স্বীকার না করলেও চেহারার ভঙ্গিমায় তা ঠিকই জানান দিয়েছেন।
ভাইয়েরা আবার ফিরে আসুক। সত্য ও ন্যায়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে। অসত্য, ধোঁকা, মিথ্যাচারের ভাগাড় ছেড়ে আলোকিত হয়ে। আমীন। ছুম্মা আমীন।
কিন্তু আজ অনেক দিন হয়ে গেল উক্ত ভাইদের কোন সাড়া শব্দ আমরা আর পাচ্ছি না। কপালে হেদায়াত না থাকলে হয়তো আর কোনদিনও আসবেন না আমাদের কাছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এসব কথিত আহলে হাদীস নামধারীদের ধোঁকা থেকে বেঁচে দ্বীনের উপর সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।