প্রচ্ছদ / খিলাফত/ইসলামী রাষ্ট্রনীতি / আইএসসহ অন্য জিহাদী সংগঠনের কার্যক্রম কি ইসলামী শরীয়া ভিত্তিক?

আইএসসহ অন্য জিহাদী সংগঠনের কার্যক্রম কি ইসলামী শরীয়া ভিত্তিক?

প্রশ্ন

আই. এস. আল-কায়দা ও অন্যান্য জিহাদী সংগঠনগুলোর বর্তমান কর্মকান্ড কি ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক?? এটাকে কি ইসলামী জিহাদ বলা যায়?? ইহুদী-খ্রিষ্টানদের বিপরীতে তারা তো আজ মুসলমানদেরকেই হত্যা করে চলেছে।  রাসূল তো বলেছেন— “যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলল এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য সব উপাসনাপ্রত্যাখান করল, সে তার জান ও মালকে নিরাপদ করে নিয়েছে (অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হারাম)। তারচূড়ান্ত হিসাব-নিকাশ আল্লাহর উপর ন্যস্ত।” [মুসলিম ১ম খন্ড/৩৬/৩৮]

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

মুসলমানদের হত্যা করা হারাম। এটা ইসলাম ধর্মে সর্বজনবিদিত। আলকায়দাসহ সকল সংগঠনের বিষয়ে পরিস্কার মতামত দেয়া আমাদের পক্ষে দুস্কর। কারণ তাদের প্রকৃত চিত্র আমাদের কাছে পরিস্কার নয়। ইহুদী খৃষ্টান নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ আমাদের কাছে প্রামাণ্য নয়। তাই ঢালাওভাবে সকল সংগঠন বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকাই উপযোগী বলে মনে করি।

কিন্তু ইসলামের ইবাদত জিহাদ বদনামকারী সংগঠন “আইএস” সম্পর্কে আমাদের পরিস্কার মন্তব্য হল, এরা ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কাজ করছে না। বরং মুসলমানদের হত্যার মিশনে বিধর্মীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।

যদি তারা সত্যিকার ইসলামের জন্যই কাজ করতো, তাহলে তারা মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী রাষ্ট্রগুলোকে তছনছ না করে সরাসরি ইজরাইল ও মিয়ানমারের মত মানবতার দুশমন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতো।

তাই তাদের থেকে সতর্ক থাকা জরুরী।

وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا [٤:٩٣]

যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। [সূরা নিসা-৯৩]

 أَبَا الدَّرْدَاءِ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: كُلُّ ذَنْبٍ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَغْفِرَهُ، إِلَّا مَنْ مَاتَ مُشْرِكًا، أَوْ مُؤْمِنٌ قَتَلَ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا، فَقَالَ هَانِئُ بْنُ كُلْثُومٍ: سَمِعْتُ مَحْمُودَ بْنَ الرَّبِيعِ، يُحَدِّثُ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ: مَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا فَاعْتَبَطَ بِقَتْلِهِ، لَمْ يَقْبَلِ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا، وَلَا عَدْلًا.

আবূ দারদা (রাঃ)-বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ সব গুনাহই ক্ষমা করবেন; কিন্তু মুশরিক অবস্থায় কেউ মারা গেলে অথবা কোনো ঈমানদার ব্যক্তি অপর কোনো ঈমানদারকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলে (তা ক্ষমা করবেন না)। অতঃপর হানী ইবনু কুলসূম বলেন, আমি মাহমূদ ইবনুল রবী‘কে উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো ঈমানদারকে হত্যা করলো এবং এতে আনন্দিত হলো, আল্লাহ তার কোনো ফরয বা নফল ইবাদাত কবুল করবেন না। [সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং-৪২৭০]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …