লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
বর্তমান সময়ে কতিপয় জেনালের শিক্ষিত ব্যক্তিদের কুরআন ও হাদীসের গবেষক হতে দেখা যায়। যারা একাডেমিক জ্ঞান অর্জন না করেও ইংরেজী বাংলা অনুবাদ পড়ে বিশাল বড় বড় পণ্ডিতের আসনে আসীন হয়ে যায়। ইসলামের আইন বিষয়ক জটিল জটিল বিষয়ে বড় গলায় গবেষণা প্রকাশ করে থাকেন।
যাদের কথা ও লেখা দেখলে মনে হবে যে, দেশের বিজ্ঞ উলামাগণ সারা জীবন কুরআন ও হাদীস পড়ে ও গবেষণা করে আসলেই কিছুই জানেন না। বরং ইংরেজী অনুবাদ পড়ে এসব জেনারেল শিক্ষিতরাই মহাজ্ঞানী।
বেশিরভাগ সময়েই এসব পশ্চিমা মনস্ক ইসলাম বিশেষজ্ঞরা ইসলামের ভুল ধরার কাজেই নিজেকে ব্রত করে থাকেন। যদিও মুখে মুখে বা লেখায় ইসলামকে অনুসরণ করার দাবী করে থাকেন।
কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য হয়, ইসলামকে গোড়া থেকে দুর্বল করে দেয়া। কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে মানুষকে স্বন্দিগ্ধ করে তোলা।
এদের অনেকেই আবার ইহুদী খৃষ্টানদের পেইড এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। আবার কতিপয় নিজেকে বড় পণ্ডিত জাহির করার মনোবৃত্তি এবং অহংকারের কারণেই এ বিভ্রান্তিতে পতিত হয়।
এমনই এক বিভ্রান্তিকর গবেষকের নাম কবি হাসান মাহমুদ। যিনি ‘শারিয়া কি বলে আমরা কি করি’ এবং ‘হাউ শরিয়াইজম হাইজেকট ইসলাম’ নামে চরম বিভ্রান্তিকর এবং ভুলতথ্যে ভরপুর দু’টি বই রচনা করেছেন।
যাতে তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিধান, হুদুদ, দণ্ডবিধি বিষয়ে বিষোদগার ও ভুল তথ্য তুলে ধরেছেন।
আমরা ধারাবাহিকভাবে এ বিভ্রান্তিকর বইটির আসল চেহারা আপনাদের সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
অজ্ঞতা-১
আর আছে ব্যভিচারী নারী-পুরুষকে একশ’ করে চাবুক মারতে। সুরা নূর, আয়াত ২।
অথচ শারিয়া আইনে আছে বিবাহিত বা বিবাহিতা অপরাধীর শাস্তি জনগণের সামনে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড, যাকে রজম বলা হয়। আর যার বিয়ে হয়নি তাকে একশ’ চাবুক। (সূত্র ঃ হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৭৮, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, ধারা ১২৯, পাকিস্তানের হুদুদ আইন ৭-১৯৭৯, অর্ডিন্যান্স ২০-১৯৮০ দ্বারা পরিবর্তিত, আইন নম্বর ৫ (২)-এর “অ” ইত্যাদি)।
অর্থাৎ এ-আইন কোরাণকে লঙ্ঘন করেছে। [শারিয়া কী বলে-২৬]
উত্তর
আরবীতে একটি শব্দ হল ‘ইজমাল’। আরেকটি শব্দ হল ‘তাফছীল’।
ইজমাল মানে হল সংক্ষেপ। আর তাফছীল মানে হল বিস্তারিত।
কুরআনে অধিকাংশ বিধানই ইজমালীভাবে বর্ণিত। বিস্তারিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জেনে নিতে আল্লাহ তাআলা কুরআনে নির্দেশ দিয়েছেন।
যেমন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥٩:٧]
রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা হাশর-৭]
আরেক আয়াতে আসছে:
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا [٣٣:٢١]
যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। [সূরা আহযাব-২১]
যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন যে, নবীজী যা বলেন তা গ্রহণ করতে। আর যা থেকে নিষেধ করেন তা বর্জন করতে। এর মানে নবীজীর আনুগত্য করা মানে আল্লাহরই আনুগত্য করা।
কুরআনে নামায পড়ার নির্দেশ আছে। কিন্তু বিস্তারিত বিবরণ নেই। আছে নবীজীর হাদীসের মাঝে।
কুরআনে হজ্বের নির্দেশ আসছে। কিন্তু বিস্তারিত বিবরণ নেই। আছে নবীজীর হাদীসের মাঝে।
এখন হাদীসের আলোকে নামায পড়া এবং হজ্ব করা এটা মূলত আল্লাহর কুরআন তথা আল্লাহর আদেশেরই অনুসরণ মাত্র।
এখন কেউ যদি হাদীসের আলোকে নামায পড়তে দেখে এ দাবী করে যে, এটা কুরআনের আইনের লঙ্ঘণ। কারণ, কুরআনে সূরা ফাতিহা, সূরা মিলানো, রুকুর তাসবীহ, সেজদার তাসবীহ, তাশাহুদ কিছুই নেই। এসব নামাযে পড়া ও করা সবই কুরআনের আইনের লঙ্ঘণ। কারণ, কুরআনে শুধু নামায পড়ার কথা আসছে। এসব করতে বলা হয়নি।
আমরা এমন উদ্ভট অভিযোগকারীকে কী বলবো?
আরেকজন যদি একইভাবে হজ্ব নিয়ে অভিযোগ করে যে, বাইতুল্লাহ এর মাঝে যেতে কুরআনে বলা হয়েছে। কিন্তু উকুফে আরাফা, রমিয়ে জিমার, উকুফে মুযদালিফা, উকুফে মিনা এসব করা কুরআনের লঙ্ঘণ।
কারণ, কুরআনে শুধু বাইতুল্লাহয় যাবার কথা আছে। কিন্তু এসব করার কথা নেই।
আমরা এমন অভিযোগকারীকে কী বলবো?
আমরা বলবো যে, আরে ভাই! কুরআনের বিধানটা ‘মুজমাল’ তথা সংক্ষিপ্ত। আর নবীজীর কাছে থেকে বিস্তারিত জানতে আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন।
সুতরাং নবীজী যে বিবরণ দেন, সেটি কুরআনের বিপরীত বা কুরআনের লঙ্ঘণ নয়, বরং সেটি ইজমালের তাফছীল।
আর তাফছীল কখনোই ইজমালের বিপরীত বা লঙ্ঘণ নয়।
যে এমন বলে সে হয়তো, অজ্ঞ, নতুবা পাগল। কিংবা উম্মতকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্রকারী।
এবার বুঝুন কবি হাসান মাহমুদের কবিতা রেখে দ্বীনী বিষয়ে গবেষণার নামে বোকামীর হাকীকত।
তার দাবী হল, কুরআনে যিনার শাস্তি শুধু একশত বেত্রাঘাতের কথা বলা হয়েছে।
সুতরাং হাদীস অনুপাতে বিবাহিত যিনাকারীকে রজম করাটা কুরআনের আইনের লঙ্ঘণ।
নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক।
হাদীসে কী আসছে?
خُذُوا عَنِّي، فَقَدْ جَعَلَ اللهُ لَهُنَّ سَبِيلًا، الثَّيِّبُ بِالثَّيِّبِ، وَالْبِكْرُ بِالْبِكْرِ، الثَّيِّبُ جَلْدُ مِائَةٍ، ثُمَّ رَجْمٌ بِالْحِجَارَةِ، وَالْبِكْرُ جَلْدُ مِائَةٍ، ثُمَّ نَفْيُ سَنَةٍ»
তোমরা আমার নিকট থেকে জেনে নাও যে, আল্লাহ তাআলা ব্যভিচারীদের ব্যাপারে পন্থা বাতলে দিয়েছেন। বিবাহিত পুরুষ বিবাহিত নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করলে এবং অবিবাহিত পুরুষ অবিবাহিতা নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করলে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। (সুতরাং শাস্তি হল যে,) বিবাহিতকে একশ’ বেত্রাঘাত করা হবে অতঃপর প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে। আর অবিবাহিতকে একশ’ বেত্রাঘাত করা হবে অতঃপর এক বছরের জন্য দেশান্তর করা হবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৯০]
দেখুন!
হাদীসের মাঝে কুরআনের ইজমালী বিধান যে, “যিনাকারীকে একশত বেত্রাঘাত করতে হবে” এটার একটু তাফছীল আসছে। সেটি হল, যিনাকারী অবিবাহিত হলে একশত বেত্রাঘাত ঠিক আছে। আর যদি বিবাহিত হয়ে থাকে, তাহলে একশত বেত্রাঘাতের সাথে সাথে তাকে রজম করে হত্যা করা হবে।
তাহলে অতিরিক্ত বিধান আরোপ করা কি করে কুরআনের বিধানের লঙ্ঘণ হল?
যদি বলা হতো যে, বিবাহিত ও অবিবাহিত সবাইকে বেত্রাঘাত ছাড়াই হত্যা করা হবে।
তাহলে কুরআনে আসছে বেত্রাঘাত আর হাদীসে হত্যার কথা বললে, এ দাবী করা যেতো যে, হাদীসের বিধান কুরআনের খেলাফ।
কিন্তু এখানে ইজমালের তাফছীল করায় কি করে কুরআনের আইনের লঙ্ঘণ হলো?
আসলে কবিকে বলবো? আপনার নিজের চড়কায় তেল দেয়া উচিত।
আপনার কাজ হল, নারী পুরুষের যৌন সুড়সুড়ি আর হারাম প্রেমের কবিতা লেখা। ইসলামের শরয়ী বিধান নিয়ে গবেষণা করা আপনাকে মানায় না।
আগে ইজমাল, তাফছীল, লঙ্ঘণ আর সম্পূরক কাকে বলে? এসব শিখুন। তারপর এসব জটিল বিষয়ে কথা বলতে আসবেন।
অজ্ঞতা–২
কবি হাসান মাহমুদ লিখেছেন:
হাদিস থেকে আমরা দেখিঃ
১। মায়াজ নামের সাহাবি নবীজীকে বলল তাকে পবিত্র করতে।
২। নবীজী তাকে হাঁকিয়ে দিলেন এই বলে − দূর হও, অনুতাপ কর ও ক্ষমা চাও।
৩। মায়াজ ফিরে গিয়ে আবার ফিরে এসে একই কথা বলল। নবীজী একই কথা বললেন।
৪। তিনবার এটা ঘটার পর নবীজী জিজ্ঞেস করলেন − ব্যাপার কি। মায়াজ বলল সে ব্যভিচার করেছে।
৫। তারপর নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, মায়াজ কি পাগল ? নেশা করেছে ? লোকেরা বলল, না।
৬। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন − মায়াজ কি বিবাহিত ? লোকেরা বলল, হ্যাঁ।
৭। তখন নবীজী তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে নির্দেশ দিলেন।
এ-হাদিস সত্যি হলে নবীজী অন্তত তিনবার তাকে অনুতাপ-ক্ষমার দিকে ঠেলেছেন,
শাস্তি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন, শেষে একান্ত বাধ্য হয়েই রজম ঘোষণা করেছেন।
শারিয়ার আইনে এই সুন্নত মেনে কোন ‘অপরাধী’-কে তিনবার ফিরিয়ে দেয়ার নিয়ম নেই।
পাগলামি বা নেশার কথা জিজ্ঞেস করাও নেই। আমরা জানি মানুষ ভ্রান্তিময়, অপরাধ এক হলেও সব অপরাধী এক হয় না। একই অপরাধ কেউ করে অভাবে, কেউ করে স্বভাবে, খাসলতে। একই অপরাধ কেউ করে উত্তেজনার গরম মাথায়, কেউ করে পরিকল্পনা করে ঠাণ্ডা মাথায়। সে-জন্যই একই অপরাধের সর্বদা একই শাস্তি হতে পারে না।
অথচ শারিয়ার হুদুদে ঠিক তাই’ই হয়, হঠাৎ-অপরাধ ও খাসলতের অপরাধে বিচারককে একই শাস্তি দিতে হয়, তাঁর হাত-পা বাঁধা থাকে। [কবি হাসান মাহমুদ রচিত শরিয়া কী বলে-২৭]
উত্তর
কবি সাহেব তার উক্ত লেখায় যা আনলেন:
১
হযরত মায়াজ রাঃ কে তিনবার তিনি ক্ষমা ও অনুতাপের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছেন।
২
একান্ত বাধ্য হয়ে সাহাবীকে রজম করতে আদেশ করেছেন।
৩
শরিয়া আইনে অপরাধীকে তিনবার ফিরিয়ে দেবার কোন নিয়ম নেই।
আসলে কোন শাস্ত্রে একাডেমিক পড়াশোনা ছাড়া ভাসা ভাসা পড়াশোনা করে বিজ্ঞের মত মতামত পেশ করাটা যে কতোটা হাস্যস্পদ। তা যৌনতা নির্ভর প্রেমের কবিতা রচনাকারী এ কবির অদ্ভুত গবেষণা দেখলেই পরিস্কার হয়ে যায়।
মূল বিষয় হল, ইসলামের হুদুদ বিধান প্রয়োগের জন্য এক নাম্বার শর্ত, সুনিশ্চিতভাবে অপরাধটি প্রমাণিত হতে হবে।
যদি সামান্যতম কোন সন্দেহ থাকে, তাহলে সেই অপরাধের শাস্তি হদ কায়েম করা যায় না।
আর অপরাধ প্রমাণে একেক অপরাধে একেকটি বিষয় আবশ্যক।
যেমন ব্যভিচার প্রমাণে চারজন সাক্ষী হলে তা প্রমাণিত হয়। চারজনের কম হলে ব্যভিচারের হদ তথা শাস্তি কায়েম করা যাবে না।
وَاللَّاتِي يَأْتِينَ الْفَاحِشَةَ مِن نِّسَائِكُمْ فَاسْتَشْهِدُوا عَلَيْهِنَّ أَرْبَعَةً مِّنكُمْ ۖ [٤:١٥]
আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। [সূরা নিসা-১৫]
لَّوْلَا جَاءُوا عَلَيْهِ بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ ۚ فَإِذْ لَمْ يَأْتُوا بِالشُّهَدَاءِ فَأُولَٰئِكَ عِندَ اللَّهِ هُمُ الْكَاذِبُونَ [٢٤:١٣]
তারা কেন এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী উপস্থিত করেনি; অতঃপর যখন তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, তখন তারাই আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী। [সূরা নূর-১৩]
যদি চারজন সাক্ষী না থাকে, তাহলে ব্যক্তির চারবার স্বীকারোক্তি চারজন সাক্ষীর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ধর্তব্য হবে।
এবার আমরা কবির অজ্ঞতাটা সহজেই বুঝতে পারবো:
১
নবীজী মায়াজকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন কেন? কারণ, তার যিনার স্বপক্ষে কোন সাক্ষী ছিল না। তাই তার চারবার স্বীকারোক্তি ছাড়া তার উপর হদ জারি করার সুযোগ ছিল না।
এ কারণে নবীজী তাকে তিনবার ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু চতুর্থবার স্বীকার করার পর কিন্তু ফিরিয়ে দেননি। বরং সাক্ষীর স্থলাভিষিক্ত চারবারের স্বীকারোক্তির প্রমাণ হয়ে যাওয়ায় হদ জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
২
একান্ত বাধ্য হয়ে রজম কেন করলেন? কারণ, রজম করার দলীল প্রমাণিত হয়ে গেছে। সেটি ছিল চারজনের সাক্ষী বা চারবারের স্বীকারোক্তি।
সুতরাং এটাকে ভিন্ন কিছু মনে করার সুযোগ নেই।
৩
শরিয়া অপরাধীকে ফিরিয়ে দেয়ার নিয়ম নেই আপনাকে কে বলছে? আপনি আসলে শরীয়া আইন সম্পর্কে না জানার কারণে এ বোকামীসূলভ কথা বলছেন।
যদি কোন ব্যক্তি যিনা করে। কিন্তু তার যিনার চারজন সাক্ষী না থাকে।
তাহলে তার উপর যিনার হদ কায়েম করা হবে না।
যদি সে তিনবার স্বীকার করে। চতুর্থবার স্বীকার না করে, তাহলেও তার উপর হদ কায়েম করা হবে না। বরং তাকে মুক্ত করে দেয়া হবে।
কারণ, তিনবার স্বীকার করা পর্যন্ত যিনার হদ কায়েমের সাক্ষী পূর্ণতা পায় না।
কিন্তু চারবার করে ফেললে তার উপর হদ কায়েম করা আবশ্যক।
যেমনটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়াজের ক্ষেত্রে করেছেন। তিনবার ফিরিয়ে দিলেন। কিন্তু চতুর্থবার স্বীকার করার পর যিনার হদ রজম কায়েম করেছেন।
সুতরাং বুঝা গেল যে, কবি সাহেবের শরয়ী আইনকে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিধানের বিপরীত বলাটা তার পড়াশোনার গভীরতা না থাকার কারণেই মনে হয়েছে।
আসলে শরয়ী আইনতো তা’ই যা আল্লাহ ও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরই বিধান।
যে শরয়ী বিধান আল্লাহ ও নবীর বিধানের উল্টো সেটিতো শরীয়তের বিধানই হতে পারে না।
শরীয়া আইনকে নবীজীর আইনের বিরোধী বলাটা কবি সাহেবের অজ্ঞতার সাথে সাথে ধৃষ্টতারও নামান্তর।