লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
আগের লেখা পড়ে নিন- সত্য ইমাম মাহদী ও ভণ্ড ইমাম মাহদী [১ম পর্ব]
ভণ্ড মাহদীর কারগুজারী
নাম
মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান। পিতা আব্দুল কুদ্দুস। বাড়ী টঙ্গি, গাজীপুর।
লোকটি স্বপ্নযুগে জানতে পেরেছেন তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশধর। এটাও জানতে পেরেছে যে, সে নাকি ইমাম মাহদী।
সব কিছুই তার স্বপ্নযুগে পাওয়া।
আমরা প্রথমে স্বপ্ন বিষয়ে একটু শরয়ী দৃষ্টিকোণ জেনে নেয়া জরুরী মনে করি।
স্বপ্ন
স্বপ্ন তিন প্রকার। যথা- সুসংবাদবাহী স্বপ্ন। দুঃসংবাদবাহী স্বপ্ন। আরেকটি স্বপ্ন হল কল্পনাপ্রসূত। [সহীহ মুসলিম-২/২৪১, হাদীস নং-৫৮৫৯, জামে তিরমিজী-২/৫৩, হাদীস নং-২২৭০]
ভালো স্বপ্ন দেখলে সুসংবাদ গ্রহণ করবে। আর খারাপ স্বপ্ন দেখলে বামদিকে থুথু দিয়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। আর স্বপ্ন একান্ত মোহাব্বতের মানুষ ছাড়া কারো কাছে বর্ণনা করা উচিত নয়। [সহীহ মুসলিম-২/২৪১, হাদীস নং-৫৮৫৬]
এই হল, স্বপ্নের অবস্থা। স্বপ্ন কোন উম্মতীর জন্যই শরয়ী দলীল নয়। স্বপ্নের নির্দেশ মান্য করা বা অন্যকে মানতে আদেশ করা গোমরাহী ছাড়া আর কিছু নয়।
কিন্তু এ স্বপ্ন নিয়ে চলছে এলাহী কাণ্ড। স্বপ্নে পাওয়া মাজার। স্বপ্নে পাওয়া ঔষধী চিকিৎসা। স্বপ্নে খিলাফত পাওয়া পীর। স্বপ্নযোগে হওয়া নবী।
এখন নতুন সংযোজন হয়েছে স্বপ্নের জোরে ইমাম মাহদী।
স্বপ্নের কথা বলে মানুষকে ধোঁকা দেয়া একদম সহজ। কারণ, এটা প্রমাণ করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ, তা অন্য কেউ দেখতে পারে না। তাই প্রতারকদের যুৎসই অস্ত্রের নাম এই স্বপ্ন।
আলই’তিসাম থেকে এ সংক্রান্ত আলোচনাটি অবশ্য পাঠ্যঃ-
বর্ণিত আছে, একদা বিচারপতি শরীক বিন আব্দুল্লাহ খলীফা মাহদীর দরবারে গেলেন। খলীফা তাকে দেখেই একজনকে নির্দেশ দিলেন তরবারী দিয়ে আগন্তুককে আক্রমণ কর। বিচারপতি বললেন,অপরাধ কি হে আমীরুল মু’মিনীন? বাদশা বললেন, আমি স্বপ্নে তোমাকে আমার দরবারে উপস্থিত হয়ে অন্য দিকে মুখ ফিরে থাকতে দেখেছি। আমার এ স্বপ্ন তাবীরকারকের নিকট বর্ণনা করলে সে আমাকে বলেছে যে, তুমি প্রকাশ্যে আনুগত্য দেখাও আর আড়ালে আমার বিরোধীতা কর।
জবাবে শরীক ইবনে আব্দুল্লাহ বললেন, আল্লাহর কসম! আপনার স্বপ্ন খলীলুল্লাহ ইবরাহীম আঃ এর স্বপ্ন নয়। আর তাবীরকারী তথা ব্যাখ্যাদাতা ইউসুফ আঃ নয়। এরূপ মিথ্যা স্বপ্নের ভিত্তিতে মুমিন মুসলমানদের গর্দান উড়িয়ে দিবেন?
খলীফা মাহদী এতে লজ্জিত হন এবং বলেন, তুমি এখান থেকে বেরিয়ে যাও। তারপর তাকে দূরে সরিয়ে দিলেন।
আর কেউ যদি স্বপ্নে দেখে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কোন হুকুম করছেন, তাহলে সে ক্ষেত্রেও বিবেচনা করা কর্তব্য। কেননা, যদি সে শরীয়ত সমর্থিত কোন হুকুম পালনের কথা স্বপ্নে শুনে থাকে, তাহলে হুকুম পালন শরীয়তের নির্দেশ মোতাবিকই হল। স্বপ্নের কারণে নয়। আর যদি স্বপ্নে শরীত বিরোধী কোন হুকুম পালনের কথা শুনে থাকে, তাহলে এ শ্রবণ অবশ্যই ভুল। কেননা, এটা অসম্ভব যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পর তার জীবদ্দশার শ্বাশত শরীয়তকে তিনি স্বপ্নে রহিত করে দিবেন। এরূপ ধারণা কুরআন ও হাদীস এবং উম্মতের ঐক্যমত্বের ভিত্তিতে বাতিল। কাজেই যদি স্বপ্নে কেউ শরীয়তের খেলাফ কোন কিছু দেখে, তাহলে সে মোতাবেক আমল করা যাবে না। [আলই’তিসাম-১/৩৩৩-৩৩৪]
সুতরাং বুঝা গেল, স্বপ্নে দেখার মাধ্যমে নিজেকে নবীর বংশের দাবী করা নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করা ভণ্ডামী ছাড়া আর কিছু নয়।
কথিত ইমাম মাহদীর পোষ্টমর্টেম
ইমাম মাহদী দাবিদার মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান নামের ব্যক্তিটি ৫৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড করেছে। যাতে সে তার ইমাম মাহদী হবার প্রমাণ পেশ করার অপচেষ্টা করেছে।
আমরা তার পুরো ভিডিওর খানিক পোষ্টমর্টেম আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১ নং দাবী
২০১৩ সাল থেকে স্বপ্ন দেখেন তিনি নবীজীর বংশধর। তারপর নবীজীর রওজার সামনে যাবার পর জানানো হয়, তিনি নবীর বংশধর।
২ নং দাবী
মাহদী বিষয়ে স্বপ্ন দেখছিল। স্বপ্ন দেখলো যে, একজন এসে বলল, আমি তোমাকে মোহাব্বত করি। আর যে তোমাকে মোহাব্বত করবে, সে আল্লাহর যিম্মায় থাকবে। কারণ, তুমি আল্লাহর খলীফা।
৩ নং দাবী
২০২০ সালের রমজানে ১৮ তারিখে আল্লাহ তাআলা জানালেন انا جعلناك فى الأرض خليفة। তারপর সে জিজ্ঞাসা করল যে, লোকেরা কখন খলীফা হবে? বলা হয়, সময়টা খুব কাছাকাছি।
৪ নং দাবী
নবীজী স্বপ্নে এসে তাকে জানালো যে, সে ইমাম মাহদী।
প্রতিবাদ
উপরের সবক’টি বিষয় তাকে জানানো হয়েছে স্বপ্নে মাধ্যমে। স্বপ্ন বিষয়ক আমরা ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি যে, স্বপ্নে মাধ্যমে কোন শরয়ী বিধান প্রমাণিত হয় না। ইমাম মাহদী হওয়া ইসলামী শরীয়তের একটি আকীদা। এমন স্পর্শকাতর একটি বিষয় স্বপ্নের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, এটা পাগলামী ছাড়া আর কী?
এসবই যে ভণ্ডামী তা বুঝতে আশা করি কোন দলীলের প্রয়োজন নেই।
৫ নং দাবী
কথিত মাহদী আবূ দাউদের একটি হাদীসের খণ্ডাংশ পেশ করে নিজেকে মাহদী হবার প্রমান পেশ করে। সেটি হল,
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَكُونُ اخْتِلَافٌ عِنْدَ مَوْتِ خَلِيفَةٍ، فَيَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ هَارِبًا إِلَى مَكَّةَ، فَيَأْتِيهِ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ فَيُخْرِجُونَهُ وَهُوَ كَارِهٌ، فَيُبَايِعُونَهُ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ، وَيُبْعَثُ إِلَيْهِ بَعْثٌ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ، فَيُخْسَفُ بِهِمْ بِالْبَيْدَاءِ بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ، فَإِذَا رَأَى النَّاسُ ذَلِكَ أَتَاهُ أَبْدَالُ الشَّامِ، وَعَصَائِبُ أَهْلِ الْعِرَاقِ، فَيُبَايِعُونَهُ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ،
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জনৈক খলীফাহর মৃত্যুকালে মতানৈক্য সৃষ্টি হবে। এ সময় মদীনাবাসী জনৈক ব্যক্তি পালিয়ে মক্কায় চলে যাবে। মক্কাবাসীরা তার নিকট এসে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসবে এবং তারা রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের মাঝখানে তার হাতে বাই‘আত করবে। অতঃপর তার বিরুদ্ধে সিরিয়া থেকে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠানো হবে। এদেরকে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে দেখতে পাবে, তখন সিরিয়ার ধার্মিক ব্যক্তিগণ ও ইরাকবাসীদের কয়েকটি দল তার নিকট এসে রুকন ও মাকামের মাঝখানে তার হাতে বাই‘আত করবে। [আবূ দাউদ, হাদীস নং-৪২৮৬, ইফাবা-৪২৩৭]
ইবারতে ভুল
১- ইখতিলাফুন কে পড়েছে এখতেলাফান।
২- তার লেখা ইবারতে আছে হারিবুন, আর সে পড়েছে হারিবান। তবে হাদীসের মূল ইবারত হারিবানই হবে।
৩- হাদীসের শব্দ হল, ফাউবাইয়ূনাহু। যার অর্থ হল, তারা বাইয়াত হবে। আর সে পড়েছে ফাবায়ূনাহু। যার অর্থ হল, সে বাইয়াত হয়েছে।
৪- হাদীসের শব্দ হল, ফাউখসাফু। অর্থ তাদের ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। আর সে পড়ছে ফাখুসিফা। তারা ধ্বসে গিয়েছে।
৫- নাছ শব্দে আলিফ লাম নেই। তেমনি মাক্কাতা শব্দে আলিফ লাম নেই। কিন্তু উভয় স্থানে আলিফ লামসহ পড়েছে।
দু’ই লাইনের হাদীস পড়তে গিয়ে যে ৬টি মোটা দাগের ভুল করে সে আর যা’ই কিছু হোক ইমাম মাহদী হতে পারে না।
উক্ত হাদীসটি আনার পর এবার কথিত মাহদী মুস্তাক অপব্যাখ্যার ঝাপি খুলে বসে। নিম্নে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হল।
১ নং দাবী
মদীনা দ্বারা উদ্দেশ্য মদীনাতুল মুনাওয়ারা নয়, বরং যে কোন শহর।
প্রতিবাদ
অথচ হাদীসে উদ্ধৃত মদীনা বলে উদ্দেশ্য হল, মদীনাতুল মুনাওয়ারাহ।
২ নং দাবী
রুকনে বলতে হাজরে আসওয়াদ স্থাপিত হবার স্থান ও মাকামে ইবরাহীমকে স্থান মানতে সে নারাজ।
প্রতিবাদ
অথচ তা দু’টি স্থানকেই বুঝায়। এ ব্যাপারে সমস্ত মুহাদ্দিসীনে কেরাম একমত।
৩ নং দাবী
২০১৫ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহ মারা যাবার সময় তখন তিন রাজপুত্র মুকরিন বিন আব্দুল আজীজ, মুহাম্মদ বিন নাইফ এবং মুহাম্মদ বিন সালমান এর মাঝে দ্বন্দ্বটাই হাদীসের ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের সময়।
৪ নং দাবী
মদীনাবাসী পালিয়ে মক্কায় যাবার ব্যাখ্যা হল, সে ২০১৮ সালে পালিয়ে মক্কা গিয়েছে। এর মানে মদীনা হলে হল টঙ্গী।
৫ নং দাবী
মক্কার কিছু লোক ইমাম মাহদীর কাছে আসার অর্থ হল- টঙ্গির কিছু লোক তার কাছে আসবে। মক্কা বলতে উদ্দেশ্য হল টঙ্গি।
কারণ,
ক) মক্কার হরফের মান আর টঙ্গির হরফের মান একই।
খ) টঙ্গিতে ইজতিমা হয়। মক্কায় হজ্জ হয়।
গ) টঙ্গিতে হেফাযতে ইসলামের কারণে ইজতিমা স্থগিত। আর মক্কায়ও হজ্জ স্থগিত এখানেও মিল।
ঘ) মক্কায় নবী দাওয়াত দিতে পারেননি। টঙ্গিতে তাকেও দাওয়াত দিতে দেয়া হয়নি।
ঙ) নবী মক্কায় জন্ম ও বড় হয়েছেন। সেও টঙ্গিতে জন্ম নিয়ে বড় হয়েছে।
চ) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন। সেও নাকি ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছে।
ছ) মক্কা থেকে নবীও হিজরত করেন, সেও টঙ্গি থেকে হিজরত করে।
জ) নবীর হিজরতের সময় কিছু সাথীকে বন্দী করা হয়, তার হিজরতের সময়ও কিছু লোককে বাংলাদেশে বন্দী করা হয়।
প্রতিবাদ
সে যে একটা বদ্ধ উন্মাদ তা তার উপরোক্ত দাবীগুলোর দ্বারাই পরিস্কার। প্রথমে বলল যে, মদীনা হল টঙ্গী। আবার একটু পরই বলল টঙ্গী হল মক্কা।
তাহলে এ প্রতারকের প্রথম কথা সঠিক নাকি দ্বিতীয় কথা সঠিক?
টঙ্গী যদি মদীনা হয়, তাহলে টঙ্গী আবার মক্কা হয় কিভাবে?
দ্বিতীয় প্রতারক মুস্তাক টঙ্গী আর মক্কার হরফের মান বের করতে গিয়ে চরম জালিয়াতি করে টঙ্গী শব্দকে আরবী লিখেছে تونجى। অথচ তার উচিত ছিল تونغى তথা ج না লিখে غ হরফ দিয়ে টঙ্গীর বানান লেখা। কারণ, এটাই যথার্থ।
সে ‘গাইন’ এর বদলে ‘জীম’ হরফ ব্যবহার করেছে, নিজের খাহেশাত অনুপাতে হরফের মান ঠিক রাখার জন্য। ‘গাইন’ দিয়ে লেখলে জালিয়াতি ধরা পড়ে যাবে বলে সে এ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।
৬ নং দাবী
তাকে প্রকাশ করা হবে। এটাও ঘটেছে। কারণ, ফেইসবুক ইত্যাদিতে সমালোচনা ও ভিডিও এর মাধ্যমে।
প্রতিবাদ
প্রশ্ন হল, ইমাম মাহদী নিজেকে মাহদী দাবী করবেন না। কিন্তু সে কেন দাবী করে ফেতনা করছে?
৭ নং দাবী
ইমাম মাহদী বাইয়াত করাতে অপছন্দ করবেন। এর মানে হল, এসব সমালোচনা আমি পছন্দ করিনি।
প্রতিবাদ
অথচ হাদীসে আসছে বাইয়াত নিতে অপছন্দ করবেন। আর সে তার বিরুদ্ধে সমালোচনাকে অপছন্দ করছে।
৮ নং দাবী
রুকন মানে রুকনে ইয়ামানী নয়। বরং আশ্রয়ে সড়ে যাওয়া। গুগুল ট্রান্সলেট দ্বারা বুঝা যায়। রকুন শব্দকে কুরআনে কোণ হিসেবে কোথাও ব্যবহার করা হয়নি। বরং আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সূরা ফাতাহ এর প্রথম আয়াতে হুদাইবিয়ার সন্ধিতে অপমানজক পরিস্থিতির কারণে নবীজী সরে গেলেন, তেমনি সেও ফেইসবুক ইন্টারনেটে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কারণে সে অপমানিত হয়ে সরে গেছে।
প্রতিবাদ
ক)
হাদীসে রুকন মানে গোড়া বা কিনারা অর্থে এসেছে। যেমন-
حَتَّى أَجِدَ سَعِيدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ جَالِسًا إِلَى رُكْنِ المِنْبَرِ،
দেখি, সা‘ঈদ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আমর ইবনু নুফাইল (রাঃ) মিম্বরের গোড়ায় বসে আছেন,[সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৮৩০]
খ)
হাদীসে আসছে রুকন ও মাকামের সামনে বাইয়াত হবে। আর সে গেল পালিয়ে। কিভাবে মিলল?
৯ নং দাবী
হাদীসে মাকাম দ্বারা মাকামে ইবরাহীম উদ্দেশ্য নয়, বরং স্থান উদ্দেশ্য।
প্রতিবাদ
এটা পরিস্কারভাবে একাধিক বিশুদ্ধ হাদীসকে অস্বিকার করা হয়। যা শুধু মুনকিরীনে হাদীস ও যিন্দিকদের দ্বারাই সম্ভব। কোন মুসলমান এমন অপব্যাখ্যা করতে পারে না।
১০ নং দাবী
মাহদীকে হত্যার জন্য শামের বাহিনী আসা, মাটি ধ্বসে যাওয়া, ইরাক ও শামের লোকদের দলে দলে তার বাইয়াত, এক রাতের পরিশুদ্ধির মাকামের ঘটনা বাকি আছে।
প্রতিবাদ
এসব কবে ঘটবে কথিত মাহদী সাহেব? এসব আর বাকি রাখলেন কেন? স্বপ্নের মাধ্যমে হয়ে গেছে বলে চালিয়ে দিলেই মনে হয় কেল্লাফতে হয়ে যাবে!
হাদীসের বাকি অংশ পড়লো না কেন কথিত মাহদী?
ثُمَّ يَنْشَأُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ أَخْوَالُهُ كَلْبٌ، فَيَبْعَثُ إِلَيْهِمْ بَعْثًا، فَيَظْهَرُونَ عَلَيْهِمْ، وَذَلِكَ بَعْثُ كَلْبٍ، وَالْخَيْبَةُ لِمَنْ لَمْ يَشْهَدْ غَنِيمَةَ كَلْبٍ، فَيَقْسِمُ الْمَالَ، وَيَعْمَلُ فِي النَّاسِ بِسُنَّةِ نَبِيِّهِمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَيُلْقِي الْإِسْلَامُ بِجِرَانِهِ فِي الْأَرْضِ، فَيَلْبَثُ سَبْعَ سِنِينَ، ثُمَّ يُتَوَفَّى وَيُصَلِّي عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ»
অতঃপর কুরাইশ বংশের জনৈক ব্যক্তির উদ্ভব হবে, কাল্ব গোত্র হবে তার মাতুল গোত্র।
সে তাদের মুকাবিলায় একটি বাহিনী পাঠাবে। যুদ্ধে মাহদীর অনুসারীরা কালব বাহিনীর উপর বিজয়ী হবে। এ সময় যারা কালবের গনীমাত নিতে উপস্থিত হবে না তাদের জন্য আফসোস! মাহদী গানীমাতের সম্পদ বণ্টন করবেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত অনুযায়ী মানুষের মাঝে কার্য পরিচালনা করবেন, আর ইসলাম সারা পৃথিবীতে প্রসারিত হবে। অতঃপর তিনি সাত বছর অবস্থান করার পর মারা যাবেন। আর মুসলিমরা তার জানাযার সালাত পড়বে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, কেউ কেউ হিশাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন, আবার কেউ বলেন, সাত বছর। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪২৮৬]
১
কুরাইশ বংশের কালব গোত্রের এক ব্যক্তির বাহিনী সাথে ইমাম মাহদীর যুদ্ধ হবে।
২
ইমাম মাহদী অনেক গনীমত অর্জন করে তা বন্টন করবেন।
৩
ইসলাম সারা পৃথিবীতে প্রসারিত হয়ে যাবে।
৪
ইমাম মাহদী প্রকাশ হবার পর ৭ বা ৯ বছর পর তিনি মারা যাবেন।
এসবও ঘটবে কথিত মাহদীর জীবনে? সে হাদীসের বাকি অংশ গিলে খেলো কেন? কারণ, একটাই বাকি অংশ পড়লে তার ভণ্ড হওয়া খুব সহজেই সাধারণ্যের কাছে প্রতিভাত হয়ে যাবে। তাই সে বাকি অংশ না পড়ে দ্বিতীয় হাদীসের অপব্যাখ্যায় চলে যায়।
২য় হাদীস পর্যালোচনা
কথিত মাহদী সাহেব তার নিজের ইমাম মাহদী হবার মিথ্যা দাবির স্বপক্ষে দলীল দেবার জন্য দ্বিতীয় আরেকটি হাদীসের অপব্যাখ্যায় নামে। সেটি হল,
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَقْتَتِلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ ثَلَاثَةٌ، كُلُّهُمُ ابْنُ خَلِيفَةٍ، ثُمَّ لَا يَصِيرُ إِلَى وَاحِدٍ مِنْهُمْ، ثُمَّ تَطْلُعُ الرَّايَاتُ السُّودُ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ، فَيَقْتُلُونَكُمْ قَتْلًا لَمْ يُقْتَلْهُ قَوْمٌ» – ثُمَّ ذَكَرَ شَيْئًا لَا أَحْفَظُهُ فَقَالَ – فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَبَايِعُوهُ وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ، فَإِنَّهُ خَلِيفَةُ اللَّهِ الْمَهْدِيُّ “
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট পরপর তিনজন খলীফার পুত্র নিহত হবে। তাদের কেউ সেই খনিজ সম্পদ দখল করতে পারবে না। অতঃপর প্রাচ্যদেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হবে। তারা তোমাদেরকে এত ব্যাপকভাবে হত্যা করবে যে, ইতোপূর্বে কোন জাতি তদ্রূপ করেনি। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও কিছু বলেছেনঃ যা আমার মনে নাই। তিনি আরো বলেনঃ তাকে আত্মপ্রকাশ করতে দেখলে তোমরা বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তার সাথে যোগদান করো। কারণ সে আল্লাহর খলীফা মাহ্দী। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০৮৪]
অপব্যাখ্যা
১ নং দাবী
খলীফার মৃত্যুকালে ধনভান্ডার নিয়ে তিনজন ঝগড়া করে কেউ তা গ্রহণ করতে পারবে না। এর মানে হল, মুকরিন বিন আব্দুল আজীজ মারা গেছে। মুহাম্মদ বিন নাইফ জেলে। আর মুহাম্মদ বিন সালমান বাদশাহ হতে পারবে না।
প্রতিবাদ
এসব দাবী উন্মত্ত পাগলের প্রগলভতা ছাড়া আর কী?
২ নং দাবী
পূর্ব দিক থেকে কালো ব্যানারের বাহিনী আসবে। যারা ব্যাপক হত্যাকাণ্ড করবে। এর দ্বারা
ক) আমেরিকার যে বাহিনী সৌদীতে আছে সেটা হলো কালো পতাকার বাহিনী।
প্রতিবাদ
অথচ আমেরিকা হল পশ্চিমে। আর হাদীসে আসছে বাহিনীটা আসবে পূর্ব দিক থেকে।
খ) কালো বিজ্ঞান উদ্দেশ্য। যেমন করোনা ইত্যাদি দিয়ে মানুষকে হত্যা করা।
প্রতিবাদ
এটি একটি পরিস্কার অপব্যাখ্যা। যেখানে পরিস্কার হাদীসে কালো পতাকার কথা আসছে। সেখানে কালো বিজ্ঞান গুগুল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে আবিস্কার করা হাস্যকর ছাড়া আর কী?
আরো মজার বিষয় হল,, এমন আরেকটি বর্ণনা তার এ ভ্রান্ত দাবীকে ধ্বংস করে দেয়। সেটি হল,
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ: «إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّايَاتِ السُّودَ خَرَجَتْ مِنْ قِبَلِ خُرَاسَانَ فَائْتُوهَا وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ، فَإِنَّ فِيهَا خَلِيفَةَ اللَّهِ الْمَهْدِيَّ»
হযরত সাওবান রাঃ বলেন, যখন তোমরা কালো পতাকাবাহী দেখতে পাবে। যারা খোরাসানের দিক থেকে বের হবে। তখন তোমরা তার কাছে যাবে। যদিও বরফে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়। কারণ, তাদের মাঝে আল্লাহর খলীফা ইমাম মাহদী থাকবে। [কিতাবুল ফিতান, আবু আব্দুল্লাহ নুআইম আলমারওয়াজীকৃত, হাদীস নং-৮৯৬]
এ বর্ণনায় কালো পতাকার বাহিনীতে ইমাম মাহদী থাকার কথা বলা হয়েছে। তাহলে কথিত মাহদীর অপব্যাখ্যা আর টিকে রইল কিভাবে?
৩ নং দাবী
আগে কখনো এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। এর মানে হল, করোনা ভাইরাস তৈরী করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। যা আগে কখনো ঘটেনি।
প্রতিবাদ
অথচ করোনা কারো তৈরী করা ভাইরাস তা প্রমাণিত নয়। তাছাড়া ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের আগেই এমন রোগব্যাধী ছড়াবে তা কিন্তু নয়, বরং আরো কিছু কারণেও তা হতে পারে মর্মে হাদীসে আসছে। যেমন-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: ” يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ، وَأَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ: لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ، حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا، إِلَّا فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ، وَالْأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلَافِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا
আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেনঃ হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০১৯]
এই হাদীসে পরিস্কার যে, অশ্লীলতার কারণে এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা ইতোপূর্বের কেউ দেখেনি। এটাই বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জন্য বাস্তবসম্মত হাদীস। কিন্তু সে লাগিয়ে দিল কোথায়?
৪ নং দাবী
যখন হত্যাকাণ্ড শুরু হবে তখন ইমাম মাহদী প্রকাশ পাবে। তাকে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তার কাছে বাইয়াত হবে।
এর ব্যাখ্যা হল, ব্যাপক মৃত্যু শুরু হবার আগেই সে মানুষকে তার হাতে বাইয়াত হবার জন্য সতর্ক করছিল। তারপর লকডাউন শুরু হল।
প্রতিবাদ
কিন্তু কথা হল, ইমাম মাহদী তার হাতে বাইয়াত হবার জন্য আহবান করবেন এমন কথা হাদীসের কোথাও আসেনি। বরং সে নিজেই আগের হাদীস দেখিয়েছে যে, ইমাম মাহদীকে জোর করে মানুষ বাইয়াত হবে। তিনি তা অপছন্দ করবেন।
তাহলে তার বাইয়াতের আহবান করাই প্রমাণ করে সে আসল মাহদী নয় ভণ্ড মাহদী।
তাছাড়া তার উদ্ধৃত করা হাদীসেই আসছে যে, হত্যাকাণ্ড শুরু হবার পর ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে। আর সে নিজেই বলছে যে, ব্যাপক হত্যাকাণ্ড শুরু হবার আগেই সে মানুষকে বাইয়াতের আহবান শুরু করেছে।
এটাতেও পরিস্কার যে, সে আসল মাহদী নয় বরং ভণ্ড।
৫ নং দাবী
মদীনায় সে স্বপ্ন দেখেছে তার নাম মুহাম্মদ বিন আব্দিল্লাহ।
প্রতিবাদ
অথচ তার নাম হল, মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান। বাবার নাম আব্দুল কুদ্দুস।
৬ নং দাবী
তার দাবী হল, আব্দুল কুদ্দুস আর আব্দুল্লাহ একই অর্থ।
প্রতিবাদ
অথচ আব্দুল্লাহ মানে আল্লাহর বান্দা। আর আব্দুল কুদ্দুস মানে হল, কুদ্দুসের বান্দা। তুইটা এক হল কিভাবে?
৭ নং দাবী
সংখ্যা তথ্য হিসেবে খান হল, বাদশাহ, আর আল্লাহ ও হলেন বাদশা।
প্রতিবাদ
এসব উদ্ভট কুযুক্তি ছাড়া আর কিছু নয়।
৮ নং দাবী
সে স্বপ্নে দেখেছে যে, ইমাম মাহদীর দাদা, পিতা ও মাহদীকে দেখল। মাহদী কিছুই বুঝতেছে না। অবুঝের মত। তখন সে ইংরেজীতে জিজ্ঞাসা করল। তখন জবাব দেয়া হল ১৯৮১।
প্রতিবাদ
প্রশ্ন হল, সে নিজেই যদি মাহদী হয়, তাহলে সে অবুঝ কোন মাহদীকে স্বপ্ন দেখল? এর মানে কি ইমাম মাহদী কিছুই বুঝেন না। অবুঝ? তাহলে সে এতো পণ্ডিত কেন?
৯ নং দাবী
সে ঘরে লুকিয়ে আছে। ঘর থেকে স্ত্রী সন্তানসহ পালাতে হয়। পালিয়ে মসজিদে হারামে আশ্রয় নিয়েছে।
১০ নং দাবী
দলাদলী রেখে সকল মুসলমানদের তার হাতে বাইয়াত হবার আহবান করেছে। সে সব মুসলমানকে বাইয়াত হবার জন্য চিঠি পাঠাচ্ছে।
প্রতিবাদ
ইমাম মাহদী এভাবে বাইয়াত হবার আহবান করবেন। মুসলমানদের কাছে চিঠি পাঠাবেন এমন কোন কথা হাদীসে আসেনি। এটাও তার ভণ্ড হবার আরেকটি প্রকিষ্ট প্রমাণ।
১১ নং দাবী
তাকে জানানো হয়েছে এখন দল গঠন করতে হবে। সকল বাতিলের বিরুদ্ধে ঈমানী শক্তির মাধ্যমে মুকাবিলা করতে হবে।
প্রতিবাদ
অথচ ইমাম মাহদী জিহাদের মাধ্যমে মুসলিম মিল্লাতকে একত্রিত ও শক্তিশালী করবেন।
১২ নং দাবী
২০২৮/২৯ হিজরীর মাঝে মুসলমানদের ঝাণ্ডা সারা দুনিয়াতে উড়বে।
প্রতিবাদ
অথচ তার আবির্ভাব যদি ২০১৮ সালে হয়ে থাকে। তাহলে ২০২৫/২৭ সালে তার মরে যাবার কথা। তাহলে ইসলামের বিজয় সারা বিশ্বে কি ইমাম মাহদীর ইন্তেকালের পরে হবে? অথচ হাদীসতো বলে ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পরেই ইসলাম সারা পৃথিবীতে বিজয়ী হবে।
উপরোক্ত আলোচনা ও তার উদ্ধৃত ভাষ্য জানার দ্বারা আশা করি আর সন্দেহ থাকার কথা নয় যে, মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান নামক ব্যক্তিটি একটা ভণ্ড ও প্রতারক ছাড়া আর কিছু নয়। তাকে যেখানেই পাওয়া যাবে, গণধোলাই দিয়ে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়া প্রতিটি ঈমানদের দায়িত্ব।