প্রচ্ছদ / দুআ-দরূদ ও অজীফা / প্রচলিত সম্মিলিত জিকির সম্পর্কে বিস্তারিত

প্রচলিত সম্মিলিত জিকির সম্পর্কে বিস্তারিত

প্রশ্ন

আমাদের দেশে প্রচলিত সম্মিলিত জিকির সম্পর্কে জানতে চাই। অনেক মাহফিলে দেখা যায় যে, জিকির করতে করতে একেকজন বাঁশের উপর উঠে যাচ্ছে। কেউবা পাগলামী করছে। জোরে আওয়াজ করছে। এসব বিষয়ে দলীলসহ জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

জিকির জোরে আস্তে উভয় সূরতে করারই সুযোগ রয়েছে। তবে আস্তে করাই উত্তম।

কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে জোর আওয়াজে জিকির করার বৈধতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ৪টি মাসআলা সামনে আসে। যথা-

১-উঁচু আওয়াজে জিকির করা।

২-হালকায়ে জিকির বা জিকিরের মজলিসে জিকির করা।

৩-সম্মিলিতভাবে জিকির করা।

৪-জিকিরের মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ করা। যেমন পাগলামী ইত্যাদি।

উঁচু আওয়াজে জিকির

কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে স্বাভাবিক আওয়াজের চেয়ে উঁচু আওয়াজে জিকির করা জায়েজ। যথা-

১- অন্য কারো ইবাদতে বিঘ্ন না হতে হবে।

২- অন্যের ঘুমের ক্ষতি না হতে হবে।

৩- লৌকিকতামুক্ত হতে হবে।

৪- জিকিরকারীর নফসের আত্মশুদ্ধির উন্নতির আশা থাকতে হবে।

قُلِ ادْعُوا اللَّهَ أَوِ ادْعُوا الرَّحْمَٰنَ ۖ أَيًّا مَّا تَدْعُوا فَلَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا [١٧:١١٠]

বলুনঃ আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে,যে নামেই আহবান কর না কেন,সব সুন্দর নাম তাঁরই। আপনি নিজের নামায আদায়কালে স্বর উচ্চগ্রাসে নিয়ে গিয়ে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন। [সূরা বনী ইসরাঈল-১১০]

أَنَّ أَبَا مَعْبَدٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ، «أَنَّ رَفْعَ الصَّوْتِ لِلذِّكْرِ حِينَ يَنْصَرِفُ النَّاسُ مِنَ الْمَكْتُوبَةِ، كَانَ ذَلِكَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»، وَأَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ: «كُنْتُ أَعْلَمُ إِذَا انْصَرَفُوا بِذَلِكَ وَأَسْمَعُهُ»

ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে লোকেরা ফারয সলাত শেষে উচ্চস্বরে তাকবীর বলতো। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন,এভাবে উচ্চস্বরে তাকবীর বলা শুনে আমি বুঝতে পারতাম যে,লোকদের সলাত সমাপ্ত হয়েছে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১০০৩]

وأجمع العلماء سلفا وخلفا على استحباب ذكر الله تعالى جماعة في المساجد وغيرها من غير نكير إلا أن يشوش جهرهم بالذكر على نائم أو مصل أو قارىء قرآن كما هو مقرر في كتب الفقه وفي الحلبي الأفضل الجهر بالقراءة إن لم يكن عند قوم مشغولين ما لم يخالطه رياء اهـ (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-318)

وَقَدْ حَرَّرَ الْمَسْأَلَةَ فِي الْخَيْرِيَّةِ وَحَمَلَ مَا فِي فَتَاوَى الْقَاضِي عَلَى الْجَهْرِ الْمُضِرِّ وَقَالَ: إنَّ هُنَاكَ أَحَادِيثَ اقْتَضَتْ طَلَبَ الْجَهْرِ، وَأَحَادِيثَ طَلَبَ الْإِسْرَارِ وَالْجَمْعُ بَيْنَهُمَا بِأَنَّ ذَلِكَ يَخْتَلِفُ بِاخْتِلَافِ الْأَشْخَاصِ وَالْأَحْوَالِ، فَالْإِسْرَارُ أَفْضَلُ حَيْثُ خِيفَ الرِّيَاءُ أَوْ تَأَذِّي الْمُصَلِّينَ أَوْ النِّيَامِ وَالْجَهْرُ أَفْضَلُ حَيْثُ خَلَا مِمَّا ذُكِرَ، لِأَنَّهُ أَكْثَرُ عَمَلًا وَلِتَعَدِّي فَائِدَتِهِ إلَى السَّامِعِينَ، وَيُوقِظُ قَلْبَ الذَّاكِرِ فَيَجْمَعُ هَمَّهُ إلَى الْفِكْرِ، وَيَصْرِفُ سَمْعَهُ إلَيْهِ، وَيَطْرُدُ النَّوْمَ وَيَزِيدُ النَّشَاطَ اهـ (رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/570)

وفصل آخرون فقالوا: الإخفاء أفضل عند خوف الرياء والإظهار أفضل عند عدم خوفه، وأولى منه القول بتقديم الإخفاء على الجهر فيما إذا خيف الرياء أو كان في الجهر تشويش على نحو مصل أو نائم أو قارئ أو مشتغل بعلم شرعي، وبتقديم الجهر على الإخفاء فيما إذا خلا عن ذلك وكان فيه قصد تعليم جاهل أو نحو إزالة وحشة عن مستوحش أو طرد نحو نعاس أو كسل عن الداعي نفسه أو إدخال سرور على قلب مؤمن أو تنفير مبتدع عن بدعة أو نحو ذلك، (تفسير روح المعانى-8/140)

আরো জানতে হলে দেখুন

ফাতাওয়া উসমানী/২৬০২৬১

ইমদাদুল ফাতাওয়া-৫/১৫৯

হালকায়ে জিকির বা জিকিরের মজলিসে জিকির

হালকায়ে জিকির বা জিকিরের মজলিস কায়েম করে জিকির করা জায়েজ আছে। হাদীসের মাঝে এর অনেক প্রমাণ ও ফযীলত বিদ্যমান রয়েছে। যেমন-

عَنِ الْأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، أَنَّهُ قَالَ: أَشْهَدُ عَلَى أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «لَا يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا حَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمِ السَّكِينَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ»

হযরত আবূ হুরায়রা ও হযরত আবূ সাঈদ রাঃ দুইজনই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন যে, যে জামাত আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে, ফেরেশতারা উহাকে চারিদিক থেকে ঘিরে নেয়। আল্লাহর রহমাত তাদেরকে ঢেকে নেয়। তাদের উপর সকীনা নাজিল হয়। আর আল্লাহ তাআলা নিজ মজলিসে (গর্ব করে) তাদের আলোচনা করেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১৮৭৫]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ،

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে;আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৪০৫]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، قَالَ: خَرَجَ مُعَاوِيَةُ، إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ. قَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: وَاللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ، وَمَا كَانَ أَحَدٌ بِمَنْزِلَتِي مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقَلَّ حَدِيثًا عَنْهُ مِنِّي، إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ عَلَى حَلْقَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ وَنَحْمَدُهُ لِمَا هَدَانَا لِلإِسْلاَمِ وَمَنَّ عَلَيْنَا بِهِ، فَقَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: آللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ لِتُهْمَةٍ لَكُمْ، إِنَّهُ أَتَانِي جِبْرِيلُ وَأَخْبَرَنِي أَنَّ اللَّهَ يُبَاهِي بِكُمُ الْمَلاَئِكَةَ

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মু’আবিয়াহ (রাযিঃ) মাসজিদে গেলেন। তিনি (মাসজিদে কিছুলোক বসা দেখে তাদেরকে) বললেন, তোমাদের কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আমরা বসে বসে আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার যিকরই কি বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ আল্লাহ তা’আলার যিকরই আমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেন, শোন! তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে শপথ করাইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমার চেয়ে কম হাদীস বর্ণনাকারীও কেউ নেই।

একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথীদের এক দরবারে পৌছে বললেনঃ তোমাদেরকে কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বলেন, এখানে বসে আমরা আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি এবং তার প্রশংসা করছি, কেননা ইসলামের দিকে তিনিই আমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন এবং ইসলামের মাধ্যমে আমাদের প্রতি বিরাট অনুগ্রহ করেছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! এটাই তোমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে কি? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ! আমাদেরকে শুধুমাত্র এটাই বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেনঃ তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে কসম দেইনি। জিবরীল (আঃ) আমার কাছে এসে আমাকে জানিয়েছেন যে, আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সম্মুখে তোমাদের নিয়ে গর্ব করছেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩৩৭৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০১]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ قَوْمٍ اجْتَمَعُوا يَذْكُرُونَ اللهَ، لَا يُرِيدُونَ بِذَلِكَ إِلَّا وَجْهَهُ، إِلَّا نَادَاهُمْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ: أَنْ قُومُوا مَغْفُورًا لَكُمْ، قَدْ بُدِّلَتْ سَيِّئَاتُكُمْ حَسَنَاتٍ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে সমস্ত লোক আল্লাহর জিকিরের জন্য একত্রিত হয় এবং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তখন আসমান হতে এক ফেরেশতা ঘোষণা করে যে, তোমাদের ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে এবং তোমাদের গোনাহকে নেকী দ্বারা পাল্টে দেয়া হয়েছে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৪৫৩, মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৬৭৬৪]

عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: «قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: ” لَيَبْعَثَنَّ اللَّهُ أَقْوَامًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي وُجُوهِهِمُ النُّورُ، عَلَى مَنَابِرِ اللُّؤْلُؤِ، يَغْبِطُهُمُ النَّاسُ، لَيْسُوا بِأَنْبِيَاءَ وَلَا شُهَدَاءَ “.

قَالَ: فَجَثَا أَعْرَابِيٌّ عَلَى رُكْبَتَيْهِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، حَلِّهِمْ لَنَا نَعْرِفْهُمْ.

قَالَ: هُمُ الْمُتَحَابُّونَ فِي اللَّهِ، مِنْ قَبَائِلَ شَتَّى، وَبِلَادٍ شَتَّى، يَجْتَمِعُونَ عَلَى ذِكْرِ اللَّهِ يَذْكُرُونَهُ»

হযরত আবু দারদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা কিছু লোকের হাশর এমনভাবে করাবেন যে, তাদের চেহারায় নূর চমকাতে থাকবে, তারা মোতির মিম্বরে বসা থাকবে। অন্যান্য লোক তাদের প্রতি ঈর্ষা করতে থাকবে। তারা নবীও হবেন না, শহীদও হবেন না। কেউ বলল যে, হে আল্লাহর রাসূল, তাদের অবস্থা বলে দিন, যেন আমরা তাদের চিনতে পারি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা ঐ সমস্ত লোক যারা বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং বিভিন্ন খান্দান হতে এক জায়গায় একত্রিত হয়ে আল্লাহর জিকিরে মগ্ন হতো। [মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৬৭৭০]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الجَنَّةِ فَارْتَعُوا قَالُوا: وَمَا رِيَاضُ الجَنَّةِ؟ قَالَ: حِلَقُ الذِّكْرِ

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন জান্নাতের বাগান দিয়ে পথ অতিক্রম করবে তখন তাতে বিচরণ করো। সাহাবীরা বললেনঃ জান্নাতের বাগান কি? তিনি বললেনঃ যিকিরের হালাকাসমূহ। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩৫১০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৫২৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৬৯০৭]

4617 – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ أَحْمَدَ، ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ الْحَسَنِ الْخَفَّافُ، ثنا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، ثنا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ: ” نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ فِي بَعْضِ أَبْيَاتِهِ: {وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ} [الكهف: 28] ، خَرَجَ يَلْتَمِسَهُمْ، فَوَجَدَ قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللهَ مِنْهُمْ ثَائِرُ الرَّأْسِ، وَجَافُّ الْجِلْدِ، وَذُو الثَّوْبِ الْوَاحِدِ، فَلَمَّا رَآهُمْ جَلَسَ مَعَهُمْ، فَقَالَ: «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي جَعَلَ فِي أُمَّتِي مَنْ أَمَرَنِي أَنْ أَصْبِرَ نَفْسِي مَعَهُمْ»

আব্দুর রহমান বিন সাহল বিন হুনাইফ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এক ঘরে থাকাকালীন সময়ে সূরা কাহাফের ২৮ নং আয়াত وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ নাজিল হয়। তখন তিনি তাদের
অনুসন্ধানে বের হলেন। তখন এক জামাতকে পেলেন যারা আল্লাহর জিকিরে মশগুল। যাদের মাঝের কিছু লোকের মাথার চুল এলোমলো, শরীরের চামড়া শুকনা, এবং একটি মাত্র কাপড় পরিহিত। যখন নবীজী তাদের দেখলেন তখন তাদের সাথে বসে গেলেন। তারপর বললেন, আল্লাহর শুকরিয়া যিনি আমার উম্মতের মাঝে এমন লোক সৃষ্টি করেছেন, স্বয়ং আমাকে যাদের সাথে বসার হুকুম করেছেন। [মারিফাতুস সাহাবা, লিআবী নুআঈম, হাদীস নং-৪৬১৭, মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১০৯৯৮, তাফসীরে তাবারী-৬/১৮, তাফসীরে ইবনে কাসীর-৫/১৩৯, ফাতহুল কাদীর, শাওকানীকৃত-৩/৩৩৬]

ইমাম হায়ছামী হাদীসটির ক্ষেত্রে মন্তব্য করেছেন- رِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِঅর্থাৎ এ হাদীসটির রাবীগণ বুখারীর রাবী।

সম্মিলিত জিকির

সম্মিলিত জিকির বলতে সকলে একই সুরে একই জিকির কোরাস করে করাকে বুঝানো হচ্ছে। এভাবে জিকির করার কোন প্রমাণ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাযুগ থেকে পাওয়া যায় না। তাই এভাবে জিকির করাকে সুন্নত মনে করা বা বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করলে তা বিদআত হবে।

এভাবে সম্মিলিতভাবে কোরাস করে জিকির করাকে আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ অপছন্দ করে মজলিস থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। [ফাতওয়া মাহমূদিয়া, ঢাবেল-৪/৪৪০, কিতাবুন নাওয়াজিল-৪৫৫-৪৫৬]

عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، قَالَ: بَلَغَ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ أَنَّ قَوْمًا، يَقْعُدُونَ مِنَ الْمَغْرِبِ إِلَى الْعِشَاءِ يُسَبِّحُونَ يَقُولُونَ: قُولُوا كَذَا وَقُولُوا كَذَا، قَالَ عَبْدُ اللهِ: «إِنْ قَعَدُوا فَآذِنُونِي» ، فَلَمَّا جَلَسُوا أَتَوْهُ فَانْطَلَقَ فَدَخَلَ مَعَهُمْ فَجَلَسَ وَعَلَيْهِ بُرْنُسٌ، فَأَخَذُوا فِي تَسْبِيحِهِمْ فَحَسَرَ عَبْدُ اللهِ عَنْ رَأْسِهِ الْبُرْنُسَ، وَقَالَ: «أَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُودٍ» ، فَسَكَتَ الْقَوْمُ، فَقَالَ: «لَقَدْ جِئْتُمْ بِبِدْعَةٍ ظَلْمَاءَ، أَوْ لَقَدْ فَضَلْتُمْ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِلْمًا» ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ: مَا جِئْنَا بِبِدْعَةٍ ظَلْمَاءَ، وَلَا فَضَلْنَا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِلْمًا، فَقَالَ عَمْرُو بْنُ عُتْبَةَ بْنِ فَرْقَدٍ: أَسْتَغْفِرُ اللهَ يَا ابْنَ مَسْعُودٍ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ، فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَتَفَرَّقُوا، (المعجم الكبير للطبرانى، رقم الحديث-8630، مصنف عبد الرزاق، رقم الحديث-5409)

أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَنبَأَنَا عَمْرُو بْنُ يَحْيَى، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، يُحَدِّثُ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كُنَّا نَجْلِسُ عَلَى بَابِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَبْلَ صَلَاةِ الْغَدَاةِ، فَإِذَا خَرَجَ، مَشَيْنَا مَعَهُ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَجَاءَنَا أَبُو مُوسَى الْأَشْعَرِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَالَ: أَخَرَجَ إِلَيْكُمْ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ قُلْنَا: لَا، بَعْدُ. فَجَلَسَ مَعَنَا حَتَّى خَرَجَ، فَلَمَّا خَرَجَ، قُمْنَا إِلَيْهِ جَمِيعًا، فَقَالَ لَهُ أَبُو مُوسَى: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، إِنِّي رَأَيْتُ فِي الْمَسْجِدِ آنِفًا أَمْرًا أَنْكَرْتُهُ وَلَمْ أَرَ – وَالْحَمْدُ لِلَّهِ – إِلَّا خَيْرًا. قَالَ: فَمَا هُوَ؟ فَقَالَ: إِنْ عِشْتَ فَسَتَرَاهُ. قَالَ: رَأَيْتُ فِي الْمَسْجِدِ قَوْمًا حِلَقًا جُلُوسًا يَنْتَظِرُونَ الصَّلَاةَ فِي كُلِّ حَلْقَةٍ رَجُلٌ، وَفِي أَيْدِيهِمْ حصًا، فَيَقُولُ: كَبِّرُوا مِائَةً، فَيُكَبِّرُونَ مِائَةً، فَيَقُولُ: هَلِّلُوا مِائَةً، فَيُهَلِّلُونَ مِائَةً، وَيَقُولُ: سَبِّحُوا مِائَةً، فَيُسَبِّحُونَ مِائَةً، قَالَ: فَمَاذَا قُلْتَ لَهُمْ؟ قَالَ: مَا قُلْتُ لَهُمْ شَيْئًا انْتِظَارَ رَأْيِكَ أَوِ انْتظارَ أَمْرِكَ. قَالَ: «أَفَلَا أَمَرْتَهُمْ أَنْ يَعُدُّوا سَيِّئَاتِهِمْ، وَضَمِنْتَ لَهُمْ أَنْ لَا يَضِيعَ مِنْ حَسَنَاتِهِمْ»، ثُمَّ مَضَى وَمَضَيْنَا مَعَهُ حَتَّى أَتَى حَلْقَةً مِنْ تِلْكَ الْحِلَقِ، فَوَقَفَ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ: «مَا هَذَا الَّذِي أَرَاكُمْ تَصْنَعُونَ؟» قَالُوا: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ حصًا نَعُدُّ بِهِ التَّكْبِيرَ وَالتَّهْلِيلَ وَالتَّسْبِيحَ. قَالَ: «فَعُدُّوا سَيِّئَاتِكُمْ، فَأَنَا ضَامِنٌ أَنْ لَا يَضِيعَ مِنْ حَسَنَاتِكُمْ شَيْءٌ وَيْحَكُمْ يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ، مَا أَسْرَعَ هَلَكَتَكُمْ هَؤُلَاءِ صَحَابَةُ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَافِرُونَ، وَهَذِهِ ثِيَابُهُ لَمْ تَبْلَ، وَآنِيَتُهُ لَمْ تُكْسَرْ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنَّكُمْ لَعَلَى مِلَّةٍ هِيَ أَهْدَى مِنْ مِلَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أوْ مُفْتَتِحُو بَابِ ضَلَالَةٍ». قَالُوا: وَاللَّهِ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، مَا أَرَدْنَا إِلَّا الْخَيْرَ. قَالَ: «وَكَمْ مِنْ مُرِيدٍ لِلْخَيْرِ لَنْ يُصِيبَهُ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدَّثَنَا أَنَّ» قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ “، وَايْمُ اللَّهِ مَا أَدْرِي لَعَلَّ أَكْثَرَهُمْ مِنْكُمْ، ثُمَّ تَوَلَّى عَنْهُمْ (سنن الدارمى-1/286، رقم-210)

তবে হক্কানী কোন পীর যদি মুরীদদেরকে জিকিরের প্রশিক্ষণ করানোর জন্য সম্মিলিতভাবে কোরাসের সাথে জিকির করান, সেটিকে বিদআত বলার সুযোগ নেই। কারণ, এ সূরতটিকে সওয়াবের কাজ বা সুন্নত মনে করে করা হচ্ছে না, বরং তালীম বা প্রশিক্ষণের জন্য করা হচ্ছে। তাই এটি বিদআতের পারিভাষিক সংজ্ঞায় পড়বে না।

যেমন দ্বীন শিক্ষার একাডেমিক পদ্ধতি কোন সুন্নত বা সওয়াবের নিয়তে আবিস্কার করা হয়নি। বরং দ্বীন শিখানো বা প্রশিক্ষণের জন্য আবিস্কার করা হয়েছে।

তবে কোরাস করে সম্মিলিত সুরে না করে স্বতন্ত্র স্বরে জিকির করাই উচিত। তবে প্রশিক্ষণ হলে ভিন্ন কথা।

জিকিরে অস্বাভাবিক আচরণ করা

ইচ্ছেকৃত অস্বাভিক আচরণ করা হারাম। যারা ইচ্ছেকৃত জিকির করার সময় পাগলামী করে এটা শয়তানী কাজ।

তবে যদি জিকির করার সময় অনিচ্ছাকৃত কোন হাল সৃষ্টি হয়ে যায়, সম্পূর্ণ অনিচ্ছায় কোন অস্বাভাবিক আচরণ করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি মা’জূর মনে করা হবে। তাকে ভর্ৎসনা করা যাবে না। {আওয়ারিফুল মাআরিফ-১১৮-১১৯, আলই’তিসাম-১/৩৫৬}


وَأَمَّا مَا ابْتَدَعَهُ الصُّوفِيَّةُ فِي ذَلِكَ فَمِنْ قَبِيلِ مَا لَا يُخْتَلَفُ فِي تَحْرِيمِهِ لَكِنَّ النُّفُوسَ الشَّهْوَانِيَّةَ غَلَبَتْ عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ يُنْسَبُ إِلَى الْخَيْرِ حَتَّى لَقَدْ ظَهَرَتْ مِنْ كَثِيرٍ مِنْهُمْ فِعْلَاتُ الْمَجَانِينِ وَالصِّبْيَانِ حَتَّى رَقَصُوا بِحَرَكَاتٍ مُتَطَابِقَةٍ وَتَقْطِيعَاتٍ مُتَلَاحِقَةٍ وَانْتَهَى التَّوَاقُحُ بِقَوْمٍ مِنْهُمْ إِلَى أَنْ جَعَلُوهَا مِنْ بَابِ الْقُرَبِ وَصَالِحِ الْأَعْمَالِ وَأَنَّ ذَلِكَ يُثْمِرُ سِنِيِّ الْأَحْوَالِ وَهَذَا عَلَى التَّحْقِيقِ مِنْ آثَارِ الزَّنْدَقَةِ وَقَوْلُ أَهْلِ الْمُخَرِّفَةِ وَاللَّهُ الْمُسْتَعَانُ اه

“তথাকথিত সূফীরা উক্ত বিষয়ে এমন সব বিদআত সৃষ্টি করেছে, যেগুলোর হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। সঠিক পথের দাবীদারদের অনেকে উপর প্রবৃত্তি প্রাধান্য লাভ করেছে। সে ফলশ্রুতিতে অনেকেরই পক্ষ থেকে পাগল ও বালকসূলভ আচরণ, যেমন তালে তালে নৃত্য ইত্যাদি প্রকাশ পেয়েছে। এর অশুভ পরিণতি এতদূর পর্যন্ত গড়ায় যে, তাদের কেউ কেউ একে ইবাদতে শামিল করে এবং আমলে সালেহ তথা পূণ্যকর্ম বলে সাব্যস্ত করে। আরো বলে যে, এটা অবস্থার উন্নতি সাধন করে। অতএব, নিশ্চিতরূপে বলা যায় যে, এগুলো চরম ইসলামবিদ্বেষী যিন্দিকদের প্রভাব এবং নির্বোধদের প্রলাপ”। {ফাতহুল বারী-২/৩৬৮, রিসালাতুল মুসতারশিদীন এর টিকা-১১৩-১১৪}

আল্লামা শাতেবী রহঃ তার ‘আলইতসাম’গ্রন্থে আল্লামা আবূ বকর আজুররী থেকে উদ্ধৃত এক দীর্ঘ আলোচনার এক স্থানে উল্লেখ করেনঃ

كَمَا يَفْعَلُ كَثِيرٌ مِنَ الْجُهَّالِ؛ يَصْرُخُونَ عِنْدَ الْمَوَاعِظِ وَيَزْعَقُونَ، وَيَتَغَاشَوْنَ ـ قَالَ: وَهَذَا  كُلُّهُ مِنَ الشَّيْطَانِ يَلْعَبُ بِهِمْ، وَهَذَا كُلُّهُ بِدْعَةٌ وَضَلَالَةٌ،

ওয়াজ নসীহতের সময় অধিকাংশ মুর্খরা যে চিৎকার করে উঠে লাফ-ফাল দেয়, মাতাল মাতাল ভাব করে, এ সবই শয়তানী কর্মকান্ড। শয়তান ওদের সাথে খেলা করে। এগুলো বিদআত ও ভ্রষ্টতা। {আলইতিসাম-১/৩৫৬}

ইলমে তাসাওউফের প্রসিদ্ধ ইমাম ইমাম শাইখ সোহরাওয়ার্দী রহঃ তার “আওয়ারিফুল মাআরিফ’গ্রন্থে এ বিষয়ে আলোকপাত করে লিখেনঃ

“এ ব্যাপারে গোনাহের ব্যাখ্যা হবে অনেক দীর্ঘ। [জিকিরকারী বা জিকিরের মজলিসে উপস্থিত ব্যক্তি] আল্লাহ তাআলাকে ভয় করবে। ইচ্ছেপূর্বক সামান্যও নড়বে না। [লাফালাফি, নাচানাচি করবে না] তবে যদি তার অবস্থা এমন রোগীর মত হয়, যে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া ইচ্ছে করলেও বন্ধ করতে পারে না। কিংবা হাঁচিদাতার মত হয়, যে হাঁচিকে রোধ করতে পারে না, অথবা তার নড়াচড়া যদি শ্বাসের ন্যায় হয়ে যায়, যে শ্বাস গ্রহণে সে প্রকৃতিগতভাবে বাধ্য [তাহলে ভিন্ন কথা]।” {আওয়ারিফুল মাআরিফ-১১৮-১১৯}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …