হেযবুত তওহীদে আসলেই দুই শহীদের মর্যাদা।
হেযবুত তাওহীদের বক্তব্যঃ
এমনিতেতো হেযবুত তওহীদে আসলেই দুই শহীদের মর্যাদা।যে নাকি শেষ পর্যন্ত আছে।(আল্লাহর মোজেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা -৬৪)
বিশ্বনবী বলেছেন, ‘”অভিশপ্ত দাজ্জালকে যারা প্রতিরোধ করবে তাদের মরতবা বদর ও ওহুদ যুদ্ধে শহীদের মরতবার সমান হবে (বোখারী ও মুসলিম)।”
রাসূলুল্লাহর এই হাদীসটি এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে ।মাননীয় এমামুজ্জামান দাজ্জালকে চিহ্নিত করেছেন এবং তাঁর অনুসারীগণ দাজ্জালের পরিচয় বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছেন,এভাবে তারা দাজ্জালকে প্রতিরোধ করছেন ।হেযবুত তওহীদ ছাড়া পৃথিবীতে আর কেউই দাজ্জালকে দাজ্জাল বলে চিনছেন না,সুতরাং তাকে প্রতিরোধও করছেন না।কাজেই বিশ্বনবীর হাদীস মোতাবেক হেযবুত তওহীদের প্রত্যেক অকপট মোজাহেদ মোজাহেদা জীবিত অবস্থাতেই দুই জন কোরে শহীদের সমান।(মহাসত্যের আহ্বান-১৯)
বিগত পর্বে আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বেশ কিছু অকাট্য হাদীস থেকে প্রমাণ দেখিয়েছি যে দাজ্জাল কোন যান্ত্রিক সভ্যতা নয়,বরং সে একজন রক্তে মাংসে গড়া মানব সন্তান ।দাজ্জালকে সভ্যতা রূপে আখ্যায়িত করা পন্নী সাহেবের নিজস্ব মনগড়া মতবাদ ।হাদীসের সাথে এর দূরতম সম্পর্ক নেই।নিজস্ব মনগড়া মতবাদে তৈরিকৃত দাজ্জালের বিরোধিতা করে হাদীসে বর্ণিত সত্যিকারের দাজ্জাল প্রতিরোধের ফজিলত সম্বলিত হাদীস নিজেদের দলের স্বপক্ষে পেশ করা নিতান্তই হাস্যকর ও অগ্রহণযোগ্য ।
[দ্বিতীয়ত]হিযবুত তাওহীদ স্পষ্টভাবেই তাদের লিখনীতে একাধিকবার উল্লেখ করেছে “এই উম্মত রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের ৬০-৭০ বছর পর পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে ।ইসলাম সম্পূর্ণ বিকৃত হয়ে গিয়েছে। হিযবুত তাওহীদ নতুনভাবে সহীহ ইসলাম প্রচার করছে ।”
অর্থাৎ হিযবুত তাওহীদ প্রাচীন ইসলামের প্রচারক নয়,বরং তারা এর বিপরীত ইসলামের প্রচারক যা তাদের ভাষায় -‘দ্বীনুল হক্ব।’অতএব হিযবুত তাওহীদের প্রচারিত মতবাদের নিরবিচ্ছিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র নেই।
অপরদিকে নিচের হাদীসটি লক্ষ্য করুনঃ
◾ইমরান ইবন হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
لا تزال طائفة من امتي يقاتلون على الحق ظاهرين على من ناواهم حتى يقاتل اخرهم المسيح الدجال
আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দলসর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাদের দুশমনের বিরুদ্ধেু যুদ্ধ করে তাদের উপর জয়ী হবে। অবশেষে তাদের শেষদলটি কুখ্যাত প্রতারক দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ করবে।(সুনানে আবু দাউদ-২৪৭৬)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হল দাজ্জালের সাথে যারা যুদ্ধ করবে তাঁরা নতুন কেউ নয়।বরং তাঁদের এই জামাত প্রত্যেক যুগেই ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ করে আসছে।তারা হুট করে জন্ম নেয়া নতুন কোনো দল নয়।
তাই দাজ্জাল প্রতিরোধকারীদের ফজিলত নিজেদের পক্ষে পেশ করার অধিকার নব্য ফিরকা হিযবুত তাওহীদের নেই।
[তৃতীয়ত]বিজ্ঞ পাঠক, এবার নিচের হাদীসগুলো ভাল করে লক্ষ্য করুনঃ
◾নাফি ইবনু উতবাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
تَغْزُونَ جَزِيرَةَ الْعَرَبِ فَيَفْتَحُهَا اللَّهُ ثُمَّ فَارِسَ فَيَفْتَحُهَا اللَّهُ ثُمَّ تَغْزُونَ الرُّومَ فَيَفْتَحُهَا اللَّهُ ثُمَّ تَغْزُونَ الدَّجَّالَ فَيَفْتَحُهُ اللَّهُ
তোমরা জাযিরাতুল আরবে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তা বিজিত করে দিবেন। অতঃপর পারস্যবাসীদের সঙ্গে লড়াই করবে, আল্লাহ তাও তোমাদের আয়ত্তে এনে দিবেন। এরপর রোমীয়দের সঙ্গে লড়াই করবে, আল্লাহ তা’আলা এতেও তোমাদের বিজয় দান করবেন। পরিশেষে তোমরা দাজ্জালের সঙ্গে লড়াই করবে, এখানেও আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন।(সহীহ মুসলিম-৭১৭৬)
◾ইউসায়র ইবনু জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
قَالَ هَاجَتْ رِيحٌ حَمْرَاءُ بِالْكُوفَةِ فَجَاءَ رَجُلٌ لَيْسَ لَهُ هِجِّيرَى إِلاَّ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ جَاءَتِ السَّاعَةُ . قَالَ فَقَعَدَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ إِنَّ السَّاعَةَ لاَ تَقُومُ حَتَّى لاَ يُقْسَمَ مِيرَاثٌ وَلاَ يُفْرَحَ بِغَنِيمَةٍ . ثُمَّ قَالَ بِيَدِهِ هَكَذَا – وَنَحَّاهَا نَحْوَ الشَّأْمِ – فَقَالَ عَدُوٌّ يَجْمَعُونَ لأَهْلِ الإِسْلاَمِ وَيَجْمَعُ لَهُمْ أَهْلُ الإِسْلاَمِ . قُلْتُ الرُّومَ تَعْنِي قَالَ نَعَمْ وَتَكُونُ عِنْدَ ذَاكُمُ الْقِتَالِ رَدَّةٌ شَدِيدَةٌ فَيَشْتَرِطُ الْمُسْلِمُونَ شُرْطَةً لِلْمَوْتِ لاَ تَرْجِعُ إِلاَّ غَالِبَةً فَيَقْتَتِلُونَ حَتَّى يَحْجُزَ بَيْنَهُمُ اللَّيْلُ فَيَفِيءُ هَؤُلاَءِ وَهَؤُلاَءِ كُلٌّ غَيْرُ غَالِبٍ وَتَفْنَى الشُّرْطَةُ ثُمَّ يَشْتَرِطُ الْمُسْلِمُونَ شُرْطَةً لِلْمَوْتِ لاَ تَرْجِعُ إِلاَّ غَالِبَةً فَيَقْتَتِلُونَ حَتَّى يَحْجُزَ بَيْنَهُمُ اللَّيْلُ فَيَفِيءُ هَؤُلاَءِ وَهَؤُلاَءِ كُلٌّ غَيْرُ غَالِبٍ وَتَفْنَى الشُّرْطَةُ ثُمَّ يَشْتَرِطُ الْمُسْلِمُونَ شُرْطَةً لِلْمَوْتِ لاَ تَرْجِعُ إِلاَّ غَالِبَةً فَيَقْتَتِلُونَ حَتَّى يُمْسُوا فَيَفِيءُ هَؤُلاَءِ وَهَؤُلاَءِ كُلٌّ غَيْرُ غَالِبٍ وَتَفْنَى الشُّرْطَةُ فَإِذَا كَانَ يَوْمُ الرَّابِعِ نَهَدَ إِلَيْهِمْ بَقِيَّةُ أَهْلِ الإِسْلاَمِ فَيَجْعَلُ اللَّهُ الدَّبْرَةَ عَلَيْهِمْ فَيَقْتُلُونَ مَقْتَلَةً – إِمَّا قَالَ لاَ يُرَى مِثْلُهَا وَإِمَّا قَالَ لَمْ يُرَ مِثْلُهَا – حَتَّى إِنَّ الطَّائِرَ لَيَمُرُّ بِجَنَبَاتِهِمْ فَمَا يُخَلِّفُهُمْ حَتَّى يَخِرَّ مَيْتًا فَيَتَعَادُّ بَنُو الأَبِ كَانُوا مِائَةً فَلاَ يَجِدُونَهُ بَقِيَ مِنْهُمْ إِلاَّ الرَّجُلُ الْوَاحِدُ فَبِأَىِّ غَنِيمَةٍ يُفْرَحُ أَوْ أَىُّ مِيرَاثٍ يُقَاسَمُ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ سَمِعُوا بِبَأْسٍ هُوَ أَكْبَرُ مِنْ ذَلِكَ فَجَاءَهُمُ الصَّرِيخُ إِنَّ الدَّجَّالَ قَدْ خَلَفَهُمْ فِي ذَرَارِيِّهِمْ فَيَرْفُضُونَ مَا فِي أَيْدِيهِمْ وَيُقْبِلُونَ فَيَبْعَثُونَ عَشَرَةَ فَوَارِسَ طَلِيعَةً . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنِّي لأَعْرِفُ أَسْمَاءَهُمْ وَأَسْمَاءَ آبَائِهِمْ وَأَلْوَانَ خُيُولِهِمْ هُمْ خَيْرُ فَوَارِسَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ يَوْمَئِذٍ أَوْ مِنْ خَيْرِ فَوَارِسَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ يَوْمَئِذٍ
তিনি বলেন, একবার কুফা নগরীতে লাল ঝঞ্ঝা বিশিষ্ট বায়ু প্রবাহিত হলো। এমন সময় জনৈক লোক কুফায় এসে বলল যে, হে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ সতর্ক হও, কিয়ামাত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না উত্তরাধিকার সম্পদ অবণ্টিত থাকবে এবং যতক্ষণ না মানুষেরা গনীমাতের বিষয়ে আনন্দ প্রকাশ না করবে। তারপর তিনি নিজ হাত দ্বারা সিরিয়ার প্রতি ইশারা করে বললেন, আল্লাহর শক্ররা একত্রিত হবে মুসলিমদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য এবং মুসলিমগণও তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য একত্রিত হবে। এ কথা শ্রবণে আমি বললাম, আল্লাহর শক্র বলে আপনাদের উদ্দেশ্য হলো রোমীয় (খ্ৰীষ্টান) সম্প্রদায়। তিনি বললেন, হ্যাঁ! এবং তখন ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। তখন মুসলিম জাতি একটি দল অগ্রে প্রেরণ করবে, তারা মৃত্যুর জন্য সম্মুখে এগিয়ে যাবে। বিজয় অর্জন করা ছাড়া তারা প্রত্যাবর্তন করবে না। এরপর পরস্পর তাদের মধ্যে যুদ্ধ হবে। যুদ্ধ করতে করতে রাত্রি অতিবাহিত হয়ে যাবে। তারপর দু’ পক্ষের সৈন্য জয়লাভ করা ছাড়াই ফিরে চলে যাবে। যুদ্ধের জন্য মুসলিমদের যে দলটি এগিয়ে গিয়েছিল তারা প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে।
অতঃপর পরবর্তী দিন মুসলিমগণ মৃত্যুর জন্য অপর একটি দল সামনে পাঠাবে। তারা সবাই মৃত্যুবরণ করবে। অতঃপর পরবর্তী দিন মুসলিমগণ মৃত্যুর জন্য অপর একটি দল সামনে পাঠাবে। তারা বিজয়ী না হয়ে ফিরবে না। এদিনও পরস্পরের মধ্যে মারাত্মক যুদ্ধ হবে। পরিশেষে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। উভয় বাহিনী বিজয়লাভ করা ছাড়াই স্বীয় শিবিরে প্রত্যাবর্তন করবে। যে দলটি সামনে ছিল তারা সরে যাবে। অতঃপর তৃতীয় দিন আবার মুসলিমগণ মৃত্যু বা বিজয়ের উদ্দেশে অপর একটি বাহিনী পাঠাবে। এ যুদ্ধ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকবে। পরিশেষে বিজয়লাভ করা ছাড়াই উভয় বাহিনী প্রত্যাবর্তন করবে। তবে মুসলিম বাহিনীর সামনের সেনাদলটি শাহীদ হয়ে যাবে। তারপর যুদ্ধের চতুর্থ দিনে অবশিষ্ট মুসলিমগণ সকলেই যুদ্ধের জন্য সামনে এগিয়ে যাবে। সেদিন কাফিরদের উপর আল্লাহ তা’আলা অকল্যাণ চক্র চাপিয়ে দিবেন। তারপর এমন যুদ্ধ হবে যা জীবনে কেউ দেখবে না অথবা যা জীবনে কেউ দেখেনি। পরিশেষে তাদের শরীরের উপর পাখী উড়তে থাকবে। পাখী তাদেরকে অতিক্রম করবে না; এমতাবস্থায় তা মাটিতে পড়ে নিহত হবে।
একশ’ মানুষ বিশিষ্ট একটি গোত্রে, মাত্র এক লোক বেঁচে থাকবে। এমন সময় কেমন করে গনীমাতের সম্পদ নিয়ে লোকেরা আনন্দোৎসব করবে এবং কেমন করে উত্তরাধিকার সম্পদ ভাগ করা হবে। এমতাবস্থায় মুসলিমগণ আরেকটি ভয়ানক বিপদের খবর শুনতে পাবে এবং এ মর্মে একটি শব্দ তাদের কাছে পৌছবে যে, দাজ্জাল তাদের পেছনে তাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ সংবাদ শুনতেই তারা হাতের সমস্ত কিছু ফেলে দিয়ে রওনা হয়ে যাবে এবং দশজন অশ্বারোহী ব্যক্তিকে সংবাদ সংগ্রাহক দল হিসেবে প্রেরণ করবে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দাজ্জালের খবর সংগ্রাহক দলের প্রতিটি লোকের নাম, তাদের বাপ-দাদার নাম এবং তাদের ঘোড়ার রং সম্পর্কেও আমি জ্ঞাত আছি। এ পৃথিবীর সর্বোত্তম অশ্বারোহী দল সেদিন তারাই হবে।(সহীহ মুসলিম-৭১৭৩)
◾আবু হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَنْزِلَ الرُّومُ بِالأَعْمَاقِ أَوْ بِدَابِقَ فَيَخْرُجُ إِلَيْهِمْ جَيْشٌ مِنَ الْمَدِينَةِ مِنْ خِيَارِ أَهْلِ الأَرْضِ يَوْمَئِذٍ فَإِذَا تَصَافُّوا قَالَتِ الرُّومُ خَلُّوا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الَّذِينَ سَبَوْا مِنَّا نُقَاتِلْهُمْ . فَيَقُولُ الْمُسْلِمُونَ لاَ وَاللَّهِ لاَ نُخَلِّي بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ إِخْوَانِنَا . فَيُقَاتِلُونَهُمْ فَيَنْهَزِمُ ثُلُثٌ لاَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ أَبَدًا وَيُقْتَلُ ثُلُثُهُمْ أَفْضَلُ الشُّهَدَاءِ عِنْدَ اللَّهِ وَيَفْتَتِحُ الثُّلُثُ لاَ يُفْتَنُونَ أَبَدًا فَيَفْتَتِحُونَ قُسْطُنْطِينِيَّةَ فَبَيْنَمَا هُمْ يَقْتَسِمُونَ الْغَنَائِمَ قَدْ عَلَّقُوا سُيُوفَهُمْ بِالزَّيْتُونِ إِذْ صَاحَ فِيهِمُ الشَّيْطَانُ إِنَّ الْمَسِيحَ قَدْ خَلَفَكُمْ فِي أَهْلِيكُمْ . فَيَخْرُجُونَ وَذَلِكَ بَاطِلٌ فَإِذَا جَاءُوا الشَّأْمَ خَرَجَ فَبَيْنَمَا هُمْ يُعِدُّونَ لِلْقِتَالِ يُسَوُّونَ الصُّفُوفَ إِذْ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ فَأَمَّهُمْ فَإِذَا رَآهُ عَدُوُّ اللَّهِ ذَابَ كَمَا يَذُوبُ الْمِلْحُ فِي الْمَاءِ فَلَوْ تَرَكَهُ لاَنْذَابَ حَتَّى يَهْلِكَ وَلَكِنْ يَقْتُلُهُ اللَّهُ بِيَدِهِ فَيُرِيهِمْ دَمَهُ فِي حَرْبَتِهِ
কিয়ামাত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না রোমীয় (সিরিয়ার অন্তর্গত) সেনাবাহিনী আমাক অথবা দাবিক নহরের কাছে অবতীর্ণ হবে। তখন তাদের মুকাবিলায় মদীনাহ হতে এ দুনিয়ার সর্বোত্তম মানুষের এক দল সৈন্য বের হবে। তারপর উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবার পর রোমীয়গণ বলবে, তোমরা ঐ সমস্ত লোকেদের থেকে পৃথক হয়ে যাও, যারা আমাদের লোকেদেরকে বন্দী করেছে। আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমগণ বলবে, আল্লাহর শপথ আমরা আমাদের ভাইদের থেকে কক্ষনো সম্পর্কচ্ছেদ করব না। পরিশেষে তাদের পরস্পর যুদ্ধ হবে। এ যুদ্ধে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ সৈন্য পলায়নপর হবে। আল্লাহ তা’আলা কক্ষনো তাদের তাওবাহ্ গ্রহণ করবেন না। সৈন্যদের এক তৃতীয়াংশ নিহত হবে এবং তারা হবে আল্লাহর কাছে শহীদানের মাঝে সর্বোত্তম শহীদ। আর সৈন্যদের অপর তৃতীয়াংশ বিজয়ী হবে। জীবনে আর কক্ষনো তারা ফিতনায় আক্রান্ত হবে না। তারাই কুম্ভনতিনিয়া বিজয় করবে।
তারা নিজেদের তলোয়ার যাইতুন বৃক্ষে লটকিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ভাগ করতে থাকবে। এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে শাইতান (শয়তান) উচ্চঃস্বরে বলতে থাকবে, দাজ্জাল তোমাদের পেছনে তোমাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ কথা শুনে মুসলিমরা সেখান থেকে বের হবে। অথচ এ ছিল মিথ্যা সংবাদ। তারা যখন সিরিয়া পৌছবে তখন দাজ্জালের আগমন ঘটবে। যখন মুসলিম বাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে এবং সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হতে শুরু করা মাত্র সলাতের সময় হবে। অতঃপর ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন এবং সলাতে তাদের ইমামাত করবেন। আল্লাহর শত্রু(দাজ্জাল) তাকে দেখামাত্রই বিচলিত হয়ে যাবে যেমন লবণ পানিতে মিশে যায়। যদি ঈসা (আঃ) তাকে এমনিই ছেড়ে দেন তবে সেও নিজে নিজেই বিগলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহ তা’আলা ঈসা (আঃ) এর হাতে তাকে হত্যা করবেন এবং তার রক্ত ঈসা (আঃ) এর বর্শাতে তিনি তাদেরকে (তাঁর ঈমানদার সাথিদের) দেখিয়ে দিবেন। (সহীহ মুসলিম-৭১৭০)
এই হাদীসগুলো হতে প্রমাণিত হয় দাজ্জালকে নির্মূল করা হবে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে।এবং এই জিহাদের নেতৃত্বে থাকবেন ঈসা (আঃ)।
যেহেতু এখনও ঈসা (আঃ) এর আগমণ ঘটেনি এবং হিযবুত তাওহীদ সশস্ত্র জিহাদে লিপ্ত নেই, তাই দাজ্জাল প্রতিরোধের ফজিলত নিজের দলের পক্ষে বর্ণনা করা হঠকারিতা ছাড়া কিছুই নয়।