প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / নিয়ত ছাড়া তালাক এবং মনে মনে তালাক দেবার হুকুম কী?

নিয়ত ছাড়া তালাক এবং মনে মনে তালাক দেবার হুকুম কী?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

আমি একটা সমস্যায় আছি। দয়া করে আমার প্রশ্ন গুলির উত্তর দিলে আমি খুব খুশি হবো। আমি একদিন নামাজ পড়ার পর দোয়া পড়তে ছিলাম। দোয়া পড়া অবস্থায় হঠাত আমার মনে মনে জেন বলতেছি যে নামাজ না পড়লে তালাক যা আমি মুখেও বলিনি এবং আমারর স্ত্রীকে উদেশ্য করেও বলিনি আল্লাহর কসম করে বলছি হুজুর।

দ্বিতীয় হলো একদিন আমি তালাক নিয়ে চিন্তার করতে করতে মনে মনে বলতেছি যে এরোকুম করলে তালাক হয়ে যা এ প্রযন  গিয়ে আমি মুখে আস্তগফিরুল্লা পড়তে শুরু করি এবং বলতে থাকি যেএগুলা আমার কথা নয় সয়তানের কথা। এটিও আমি আমার স্ত্রী কে উদেশ্য করে বলিনি হুজুর।

এতে করে আমাদের স্বামী স্ত্রীরির কোন সমস্যা হবেকিনা জানাবেন হুজুর।আমি আমার স্ত্রীকে খুবই ভালো ভাসি। এগুলো যা হয়েচে আমার অনইচ্চাকৃত হয়েছে। এবং এসমস্যা গুলো হয়েছে আমি অনেক গুলো তালাক বিষয়ক আটিকেল পড়ার পর থেকে।

বর্তমানে এই গুলো নিয়ে চিন্তা করতে করতে আমি পাগলের মত হয়ে গেছি হুজুর।যত তারা তারি উত্তর দিবেন আমার জন্য খুবই ভাল হবে হুজুর। আর আমার দুটি অতিরিক্ত প্রশ্নে উত্ত জানাবেন।

১/ মনে মনে তালাকের চিন্তা করলে তালাক হয় কিনা ও মুখে তালাক শব্দ উচ্চারণ না করলে তালাক হয় কিনা?

২/ মুখে অথবা মনে তালাকের নিয়ত না থাকলে তালাক শব্দ উচ্চারণ করলে তালাক হয় কি?

৩/ মনে মনে তালাক দিলে তালাক হয় কিনা?

শেষ কথা হলো হুজুর আল্লাহর কসম খেয়ে বলচি হুজুর আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার উদেশ্যে এ কথাগুলি মুখে ও বলিনি মনে মনে ও বলিনি তখন আমার স্ত্রীরির কথা আমার মনে ছিলনা।

তালাক বিষয়ক আটিকেল পড়ার পর থেকে এ বিষয় গুলা আমার মনে সব সময় গুর পাক হতে হতে সমস্যা হয়েছে।আর কোন একটা বিষয় আমার মাথায় ডুকলে আমি আর সেখান থেকে বেরিয়ে আস্তে পারিনা হুজুর।

আমার উত্তর টা তাড়াতারি দিবার চেষ্টা করবেন হুজুর। আমি খুব পেরেশানির মধ্যে আছি।আমি যে সমস্যা গুলার কথা বলেচি আল্লাহর কসম করে বলচি হুজুর একটা কথাও মিথ্যা বলনি।যা গঠেচে তাই উল্লেখ করেছি। আসসালামু আলাইকুম।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার করা তিন প্রশ্নের উত্তর হল, তালাক হয় না। সুতরাং এটি নিয়ে ভাবনা বা দুঃশ্চিন্তা করার কিছু নেই।

فى تنوير الأبصار– وشرعا- رفع قيد النكاح فى الحال أو المأل بلفظ مخصوص (تنوير الأبصار مع رد المحتار-4/424-426)

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)

لَوْ قَالَ: امْرَأَةٌ طَالِقٌ أَوْ قَالَ طَلَّقْت امْرَأَةً ثَلَاثًا وَقَالَ لَمْ أَعْنِ امْرَأَتِي يُصَدَّقُ اهـ وَيُفْهَمُ مِنْهُ أَنَّهُ لَوْ لَمْ يَقُلْ ذَلِكَ تَطْلُقُ امْرَأَتُهُ، لِأَنَّ الْعَادَةَ أَنَّ مَنْ لَهُ امْرَأَةٌ إنَّمَا يَحْلِفُ بِطَلَاقِهَا لَا بِطَلَاقِ غَيْرِهَا، فَقَوْلُهُ إنِّي حَلَفْت بِالطَّلَاقِ يَنْصَرِفُ إلَيْهَا مَا لَمْ يُرِدْ غَيْرَهَا لِأَنَّهُ يَحْتَمِلُهُ كَلَامُهُ، بِخِلَافِ مَا لَوْ ذَكَرَ اسْمَهَا أَوْ اسْمَ أَبِيهَا أَوْ أُمَّهَا أَوْ وَلَدَهَا فَقَالَ: عَمْرَةُ طَالِقٌ أَوْ بِنْتُ فُلَانٍ أَوْ بِنْتُ فُلَانَةَ أَوْ أُمُّ فُلَانٍ، فَقَدْ صَرَّحُوا بِأَنَّهَا تَطْلُقُ، وَأَنَّهُ لَوْ قَالَلَمْ أَعْنِ امْرَأَتِي لَا يُصَدَّقُ قَضَاءً إذَا كَانَتْ امْرَأَتُهُ كَمَا وَصَفَ (رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب سن بوش-3/248، وكذا فى الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الباب الثانى فى ايقاع الطلاق-1/358، وكذا فى قاضى خان على هامش الهندية-1/465، وكذا فى الفتاوى التاتارخانية، كتاب الطلاق، نوع فى ايقاع بطريق الإضمار-3/280)

আপনি বর্তমানে তালাক সংক্রান্ত কোন লেখা পড়বেন না। আর এক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ সময় ভাববেন না। যখনি কোন বিষয় আপনার মাথায় ঢুকে যায়, কিন্তু বের করতে পারছেন না, তখন অন্য আরেকটি বিষয়ে মগ্ন হয়ে পড়ুন। নতুবা এক সময় ওয়াসওয়াসার রোগ আপনার মাথায় ঝেঁকে বসবে। ফলে তা মানসিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহ হিফাযত করুন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

যাকাতের নিয়তে গরীবকে খানা খাওয়ালে কি যাকাত আদায় হবে?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু   আমি আহলে হক মিডিয়ার নিয়মিত একজন পাঠক। …