প্রশ্ন
আমরা জানি যে দুনিয়াতে অনেক কিছু হারাম আছে যা জান্নাতে হালাল হয়ে যাবে। যেমন পুরুষের জন্য স্বর্ন পরিধান করা, রেশমের কাপড় পড়া ইত্যাদি। একইভাবে জান্নাতে কি নারীদের জন্য পর্দার বিধান থাকবে? যেমনটা গায়রে মাহরামদের সাথে দুনিয়ায় করতে হয়।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
জান্নাত এমন একটি স্থান যার সাথে দুনিয়ার কোন কিছুরই তুলনা হয় না। দুনিয়া দিয়ে আখেরাত কল্পনা করার শক্তিও আমাদের নেই।
দুনিয়ার অনুভূতি, আবেগ, মানসিকতা ইত্যাদি দিয়ে আখেরাতের পরিবেশ পরিস্থিতি চিত্রিত করার মত মেধা ও ক্ষমতা আমাদের নেই।
জান্নাত কেমন? এ হাদীসটিই যথেষ্ঠ তা বুঝার জন্যঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ اللَّهُ «أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ»
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, ‘‘কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে’’-(আসসাজদাহঃ ১৩) [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২৪৪]
যেহেতু জান্নাত অচিন্তনীয় একটি স্থান। যার ব্যাপারে আমরা অনুমান করে কিছুই বলার ক্ষমতা রাখি না। তাই এর ব্যাপারে ধারণা করে কোন মন্তব্য করা কিছুতেই সমীচিন হবে না।
নারীরা সেখানেও পর পুরুষ থেকে পর্দা করবে কি না? এ বিষয়ে কুরআন বা হাদীসে স্পষ্ট কোন নিদের্শনা আসেনি। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
আর এসব অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকাই প্রকৃত মুমিনের কাজ।
পর্দা এটি শুধু শরীয়তের বিধানই নয়। বরং অভিজাত ও ভদ্র পরিবারের ভুষণও। পর পুরুষের দৃষ্টিবাণ থেকে নিজের সৌন্দর্যকে হিফাযত করা প্রতিটি ভদ্র এবং সভ্য পরিবারের সৌন্দর্যতার অন্তর্ভূক্ত।
এ কারণেই এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছেঃ
فِيهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ [٥٥:٥٦]
তথায় থাকবে আনতনয়ন রমনীগন, কোন জিন ও মানব পূর্বে যাদের ব্যবহার করেনি। [সূরা আর রহমান-৫৫]
এ আয়াত দ্বারা ইংগিত পাওয়া যায় যে, জান্নাতী রমণীগণ হবেন আনতনয়না। অর্থাৎ তারা চোখ তুলে বেগানা পুরুষের দিকে তাকাবে না।
তবে এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলাই সমধিক অবগত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]