প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম,
হযরতের নিকট বিনীত আরয, নিম্নোক্ত দু’টি ক্ষেত্রে ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না জানালে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
ক্ষেত্র-১: ব্যক্তির মালিকানায় ৩.৫ ভরির মত স্বর্ণ আছে আর অল্প পরিমাণ (নিসাবের থেকে অনেক কম) রৌপ্য আছে। কোন ক্যাশ টাকা নেই; এক্ষেত্রে কি তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?
ক্ষেত্র-২: ব্যক্তির মালিকানায় ৩.৫ ভরির মত স্বর্ণ আর অল্প পরিমাণ (নিসাবের থেকে অনেক কম) রৌপ্য আছে এবং অল্প কিছু টাকা (১০০/২০০ এর মত) ক্যাশ আছে; এক্ষেত্রে কি তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যাকাত, কুরবানী ও সদকায়ে ফিতিরের নিসাবের ক্ষেত্রে মূলনীতি হল, যখন কোন ব্যক্তির কাছে একাধিক নিসাবের অংশ বিশেষ থাকে। কোনটি দিয়েই নিসাব পূর্ণ না হয়, এক্ষেত্রে যে কোন একটিকে নিসাব ধরে অন্য নিসাবী পণ্যের মূল্য হিসাবে আনা হয়। তখন যদি কোন একটি নিসাবের সমপরিমাণ মূল্যের নিসাব পূর্ণ হয়ে যায়, তাহলেই তার উপর যাকাত, কুরবানী ও সদকায়ে ফিতির আবশ্যক হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। তাহল, গরীবদের জন্য উপকারী বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হয় মূলনীতি অনুপাতে যেটি দিয়ে নেসাব পূর্ণ হবে, সেটিকেই গ্রহণ করতে হয়।
উদাহরণতঃ
আপনার কাছে রূপা ও আছে আবার স্বর্ণও আছে। কিন্তু কোনটি দ্বারাই নিসাব পূর্ণ হচ্ছে না। এখন রূপার নিসাব সাড়ে বয়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্য কত? তা নির্ধারণ করতে হবে।
তারপর সেই মূল্যমান পরিমাণ যদি স্বর্ণের বাজার মূল্য হয়, তাহলে বলা হবে রূপা হিসেবে নেসাব পূর্ণ হয়ে গেছে।
আর যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ এর মূল্য স্বর্ণ ও রূপা মিলে হয়ে যায়, তাহলে স্বর্ণের মূল্য হিসেবে নেসাব পূর্ণ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে।
যদি কোনটি দ্বারাই তার মূল্যের নেসাব পূর্ণ না হয়, তাহলেই কেবল বলা হবে যে, নেসাবের মালিক হয়নি।
সেই হিসেবে প্রশ্নে উল্লেখিত উভয় সূরতেই নেসাব পূর্ণ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। কারণ, বর্তমান রূপার মূল্য সাড়ে সাতশত থেকে আটশত টাকা তোলা। সেই হিসেবে চল্লিশ বিয়াল্লিশ হাজার টাকায় রূপা নিসাব পূর্ণ হয়ে যায়।
আর আপনার কাছে যে পরিমাণ স্বর্ণ আছে, তা এ মূল্যমানের। তাই আপনি রূপা হিসেবে নেসাবের মালিক।
এ কারণে আপনার উপর কুরবানী আবশ্যক।
فى الدر المختار–وَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا دُونَ الْآخَرِ تَعَيَّنَ مَا يَبْلُغُ بِهِ، وَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا وَخُمُسًا وَبِالْآخَرِ أَقَلَّ قَوَّمَهُ بِالْأَنْفَعِ لِلْفَقِيرِ (رد المحتار، كتاب الزكاة، باب زكاة المال-3/229، وكذا فى الهداية-1/196، وكذا فى الهندية-1/179، وكذا فى التاتارخانية-2/237، وكذا فى المبسوط للسرخسى-2/191
وفى بدائع الصنائع- فاما اذا كان له ذهب مفرد فلا شيئ فيه حتى يبلغ عشرين مثقالا، فاذا بلغ عشرين مثقال ففيه نصف مثقال (بدائع الصنائع-2/18
(وَأَمَّا) (شَرَائِطُ الْوُجُوبِ) : مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،………. وَالْمُوسِرُ فِي ظَاهِرِ الرِّوَايَةِ مَنْ لَهُ مِائَتَا دِرْهَمٍ أَوْ عِشْرُونَ دِينَارًا أَوْ شَيْءٌ يَبْلُغُ ذَلِكَ سِوَى مَسْكَنِهِ وَمَتَاعِ مَسْكَنِهِ وَمَرْكُوبِهِ وَخَادِمِهِ فِي حَاجَتِهِ الَّتِي لَا يَسْتَغْنِي عَنْهَا، فَأَمَّا مَا عَدَا ذَلِكَ مِنْ سَائِمَةٍ أَوْ رَقِيقٍ أَوْ خَيْلٍ أَوْ مَتَاعٍ لِتِجَارَةِ أَوْ غَيْرِهَا فَإِنَّهُ يُعْتَدُّ بِهِ مِنْ يَسَارِهِ، (الى قوله) وملك نصابا تجب عليه الاضحية، (إلى قوله) وجميع ما ذكرنا من الشرائط يستوى فيه الرجل والمرأة (الفتاوى الهندية، كتاب الأضحية، فصل شرائط الوجوب-5/292، رد المحتار، كتاب الاضحية-9/452-453، مجمع الانهر-4/167
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com