প্রশ্ন
From: তোফায়েল আহমেদ (ত্বোহা)
বিষয়ঃ কোরবানী
কোরবানী ওয়াজীব হওয়ার সর্ত কি কি? আমি কি ভাবে নির্ধারন করবো যে, আমি গরু কোরবানী দিব না খাসী/ছাগল কোরবানী দিব? কখন আমাকে একাদিক গরু/খাসী/ছাগল কোরবানী দিতে হবে? আশা করি কুরআন এবং হাদিসের ভিত্তিতে বিস্তারিত জানাবেন। জাযাকাল্লা!
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
যে ব্যক্তির কাছে জিলহজ্ব মাসের দশ এগার ও বারো তারিখের সূর্য অস্ত যাবার আগ পর্যন্ত প্রয়োজন অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা এর সমমূল্য কিংবা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা এর সমমূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকে, এবং তা ঋণ বহির্ভূত হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তির উপর কুরবানী করা আবশ্যক।
(وَأَمَّا) (شَرَائِطُ الْوُجُوبِ) : مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،………. وَالْمُوسِرُ فِي ظَاهِرِ الرِّوَايَةِ مَنْ لَهُ مِائَتَا دِرْهَمٍ أَوْ عِشْرُونَ دِينَارًا أَوْ شَيْءٌ يَبْلُغُ ذَلِكَ سِوَى مَسْكَنِهِ وَمَتَاعِ مَسْكَنِهِ وَمَرْكُوبِهِ وَخَادِمِهِ فِي حَاجَتِهِ الَّتِي لَا يَسْتَغْنِي عَنْهَا، فَأَمَّا مَا عَدَا ذَلِكَ مِنْ سَائِمَةٍ أَوْ رَقِيقٍ أَوْ خَيْلٍ أَوْ مَتَاعٍ لِتِجَارَةِ أَوْ غَيْرِهَا فَإِنَّهُ يُعْتَدُّ بِهِ مِنْ يَسَارِهِ،(الفتاوى الهندية، كتاب الأضحية، فصل شرائط الوجوب-5/292، رد المحتار، كتاب الاضحية-9/452-453، مجمع الانهر-4/167)
কুরবানী উট, মহিষ, গরু, খাসি, দুম্বা, ভেড়া যেকোন প্রাণী দ্বারাই আদায় করা যায়। এটি ব্যক্তির এখতিয়ার। এ বিষয়ে কোন নীতিমালা নেই যে, কখনো গরু, কখনো উট, কখনো বকরী বা দুম্বা আবশ্যক হয়। বরং আমভাবে কুরবানী করা আবশ্যক। ব্যক্তি তার ইচ্ছেমত উপরোক্ত যেকোন পশু কুরবানী করতে পারে। এ বিষয়ে কোন বিধিনিষেধ নেই।
আর ইচ্ছে করলে নিজের আবশ্যকীয় কুরবানী ছাড়া নফল কুরবানী যত ইচ্ছে করা যায়। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কুরবানী ছাড়াও উম্মতের পক্ষ থেকে নফল কুরবানী করতেন।
ذَبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الذَّبْحِ كَبْشَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مُوجَأَيْنِ، فَلَمَّا وَجَّهَهُمَا قَالَ: إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا، وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِين.َ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ، وَعَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِهِ بِاسْمِ اللَّهِ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ. ثُمَّ ذَبَحَ.
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন দুটি সাদা কালো বড় শিংবিশিষ্ট খাসিকৃত দুম্বা যবেহ করেছেন। যখন যবেহ করার জন্য শোয়ালেন, তখন বললেন,
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ …
এরপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে যবাই করলেন। {মুসনাদে আহমদ , হাদীস ১৫০২২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২২৫]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]