লেখক– মুনাজিরে ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর ওকাড়বী রহঃ
অনুবাদঃ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
একটি মিথ্যাচার!
এবার সে বলতে লাগলঃ “তোমাদের উসূলের কিতাব “মুআল্লামুস সুবূত” এ লিখা আছে যে, মুকাল্লিদ না কুরআন থেকে দলীল নিতে পারে, না হাদীস থেকে। তার দলীল কেবল তার ইমামের বক্তব্য। তাহলে আপনি কুরআন ও হাদীস থেকে দলীল দেন কেন?”।
আমি বললামঃ “একদম ডাহা মিথ্যা কথা যে, মুকাল্লিদ কুরআন ও হাদীস থেকে দলীল নিতে পারে না। আমাদের নিকটতো মুয়াজ রাঃ এর হাদীসের ভিত্তিতে ইজতিহাদ তখনই জায়েজ যখন কোন বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের কোন স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকে। যদি থাকে তাহলেতো ইজতিহাদের প্রশ্নই উঠে না। এ কারণেই ইজতিহাদী বিষয়ে মুকাল্লিদের নিকট মুজতাহিদের বক্তব্য দলীল। তাই গায়রে মুকাল্লিদ ভাইদের উপর দায়িত্ব হল, তারা আমাদের উপস্থাপিত হাদীসের সহীহ জঈফ হওয়া হয়তো আল্লাহ তাআলার বক্তব্য দ্বারা সহীহ/জঈফ প্রমানিত করবেন। নতুবা রাসূল সাঃ এর বক্তব্য দ্বারা সহীহ/জঈফ প্রমাণিত করবেন। যদি কোনটাই না পারেন। তাহলে আপনাদের কোন অধিকার নেই যে, কোন হাদীসকে সহীহ বা জঈফ বলার। হ্যাঁ, তবে আমাদের বিরুদ্ধে কোন হাদীসকে সহীহ বা জঈফ প্রমাণ করতে আমাদের ইমাম থেকে উক্ত হাদীসের সহীহ জঈফ সম্বলিত বক্তব্য উপস্থাপিত করলে বা ইমামের ফাতওয়া উল্লেখ তা আমাদের বিরুদ্ধে ইলজামী দলীল হবে।
কিন্তু আপনিতো ক্যাসেট শুনেছেন! সেখানে কি লোকটি কোন একটি হাদীসকে আল্লাহ বা রাসূল সাঃ থেকে সহীহ বা জঈফ প্রমাণ করতে পেরেছে?
লোকটি বললঃ “একেবারেই না”।
আমি বললামঃ “সে কোন একটি হাদীসকে আমার ইমাম রহঃ এর বক্তব্য অনুপাতে সহীহ বা জঈফ প্রমাণ করতে পেরেছে?”
লোকটি বললঃ “এটাতো সে ব্যক্তির শোচনীয় পরাজয়”।
মূল মাসআলা
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ “আপনি ভাল করেই জানেন যে, চার রাকাত নামাযে তারা আঠার স্থানে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠিয়ে রফয়ে ইয়াদাইন করাকে সুন্নত পরিপন্থী বলে থাকে। আর চার রাকাত নামাযে দশ স্থানে সর্বদা কাঁধ পর্যন্ত উঠানোকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলে থাকে। আর যারা এ রফয়ে ইয়াদাইন করে না, তাদের নামায হয় না বলে থাকে। এটি তারা সর্বস্থানে করে থাকে। কিন্তু গায়রে মুকাল্লিদ বিতার্কিক লোকটি একবারও স্বীয় জবানে এ দাবীটি বর্ণনা করেনি। অথচ আমি তাদের প্রতিটি বক্তৃতায় তাদের একথাটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তাদের জিহবাই পুড়ে যেত যদি একবার তাদের পুর্ণ দাবীটি বর্ণনা করতো। তারা এমনটি করলো না কেন? এ কারণে যে, তাদের এ পূর্ণ দাবীর পক্ষে একটি হাদীসও নেই”। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ “আপনি কি তার মুখে নিজেদের পূর্ণাঙ্গ দাবীটি ক্যাসেটে একবার হলেও শুনেছেন?”
লোকটি বললঃ “বিলকুল না”।
আমি বললামঃ “এটা কি নিজেদের কাপুরুষতা এবং অপমানের পরিচয়বাহী নয়?”
লোকটি বললঃ “হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন”।
সুন্নতে মুআক্কাদা
আমি তাকে বললামঃ “সেতো দাবী খুব জোরে শোরে করেছে যে, এ রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নতে মুআক্কাদা। কিন্তু এ সুন্নতে মুআক্কাদার হুকুম সে না আল্লাহ থেকে দেখাতে পেরেছে না রাসূল সাঃ থেকে দেখাতে পেরেছে। না সে আল্লাহ ও রাসূল সাঃ থেকে সুন্নতের কোন পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছে। সেতো নিজের অজ্ঞতা ব্যর্থতা ও পরাজয়ের উপর এতটাই নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল যে, সে উম্মতীদের উসূলে ফিক্বহ থেকেও সুন্নতে মুআক্কাদা সংজ্ঞা বলতে পারেনি। কেননা, সংজ্ঞা বলার পর রফয়ে ইয়াদাইনকে সুন্নতে মুআক্কাদা প্রমাণ করা সম্ভবই নয়।
হাদীস
পূর্ণ বিতর্কে সে সহীহ ও জঈফের সংজ্ঞাইতো কুরআন ও হাদীস থেকে দেখাতে পারেনি। আপনি কি ক্যাসেটে এসবের সংজ্ঞা শুনেছেন?” লোকটি বললঃ “একদম না”। আমি বলরামঃ “এরকম বিতার্কিকের লজ্জায় ডুবে মরা উচিত নয় কি?”। লোকটি বললঃ “ঠিকই বলেছেন”।
আমার প্রশ্ন
আমার প্রশ্ন, যা আমি আমার প্রতিটি বক্তৃতায় কতবার কত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় বলেছি যে, যেমন আমাদের কালিমা স্বীকার করা [আল্লাহকে] ও [গাইরুল্লাহকে] অস্বিকার করার সমন্বয়ে গঠিত। ঠিক তেমনি আপনারা আপনাদের দাবীর প্রমাণিত ও অপ্রমাণিত উভয় অংশের পূর্ণাঙ্গ দলীল দিন। বলুন যে, রাসূল সাঃ চার রাকাত নামাযে আঠার স্থানে [যথা দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাকাতের শুরুতে ৮ সেজদার আগে ও পরে] রফয়ে ইয়াদাইন করতে নিষেধ করেছেন, আর দশ স্থানে [যথা প্রথম ও তৃতীয় রাকাতের শুরুতে, আর চার রুকুর শুরুতে ও উঠতে] কাঁধ পর্যন্ত রফয়ে ইয়াদাইন করতে হুকুম দিয়েছেন। আর সাথে সাথে রাসূল সাঃ সর্বদা এর উপর আমল করেছেন। সাথে একথাও বলেছেন যে, যারা এভাবে রফয়ে ইয়াদাইন না করবে, তাদের নামায হয় না। আর উক্ত হাদীসটিকে আল্লাহ বা রাসূল সাঃ সহীহও বলেছেন।
এরকমভাবে হাদীস উপস্থাপন করলে আমি উক্ত হাদীস শুনার সাথে সাথে কোন প্রকার দলীল খোঁজা ও বিলম্ব করা ছাড়াই চার রাকাত নফল উক্ত পদ্ধতিতে পড়ে নিব। আর মৃত্যু পর্যন্ত উক্ত পদ্ধতির উপরই বহাল থাকবো।
তারা কি কখনো এরকম হাদীস শুনাতে পারবে”?
লোকটি বললঃ “জীবনেও পারবে না”।
আমি বললামঃ “তারা কখনো আমাকে বা আমার কোন সাথীকে কি বাধ্য করে বলেছে যে, তারা এ পাঁচটি বিষয় সম্বলিত একটি হাদীস দেখাবে তাই তারাও এভাবে চার রাকাত নামায পড়বে, আর আমরাও এভাবে চার রাকাত নামায পড়বো?”।
লোকটি বললঃ “কখনোই এমন হয়নি”।
আমি বললামঃ “ঠিক আছে। আমি এখনো এ দাবীর উপর আছি। তাই আমাকে উক্ত ক্যাসেট থেকে এরকম হাদীস দেখান আমি এখনি চার রাকাত নামায উক্ত পদ্ধতিতে পড়বো”।
লোকটি বললঃ “ক্যাসেটেতো এরকম কোন হাদীসের কথা নেই”।
আমি বললামঃ “এর দ্বারাতো একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তাদের নামায পদ্ধতি রাসূল সাঃ থেকে কিছুতেই প্রমাণিত নয়। যদি তাদের নামায সুন্নত অনুপাতে হয়, তাহলে নাউজুবিল্লাহ রাসূল সাঃ এর নামায খেলাফে সুন্নত হবে। আর যদি রাসূল সাঃ এর নামায সহীহ বলাই বাহুল্য সুনিশ্চিতভাবে তা সহীহ-ই, তাহলে তাদের নামায কিছুতেই সহীহ হতে পারে না”।
সাহাবায়ে কেরাম রাঃ
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ “আপনি কি পূর্ণ ক্যাসেট শুনেছেন? তাহলে বলুনতো সে কি খোলাফায়ে রাশেদীন এবং বাকি আশারায়ে মুবাশশারা মাঝ থেকে কোন একজন থেকে তাদের আমলের এ পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি দেখাতে পেরেছে”।
লোকটি বললঃ “ না, পারেনি”।
আমি বললামঃ “তাহলেতো তাদের মতে আশারায়ে মুবাশশারার নামাযও খেলাফে সুন্নত হয়ে গেল, তাই নয়কি?”।
লোকটি বললঃ “হ্যা, তাইতো”।
আমি জিজ্ঞেস করলামঃ “কোন একজন মুহাজির, কোন একজন আনসারী, কোন একজন সাহাবী থেকে পূর্ণ বিতর্কের মাঝে সে কি তাদের নামাযের পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি দেখাতে পেরেছে”?
-নাতো, পারেনি।
– তাহলে বুঝা গেল যে, তাদের মতে সকল সাহাবাগণ রাঃ খেলাফে সুন্নত নামায পড়তেন। যদিও একটি সুন্নতকেও ছেড়ে দিয়ে থাকেন [নাউজুবিল্লাহ]।
এর দ্বারা একথা পরিস্কার হয়ে গেল যে, তারা [গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদীস] যা কিছু তাদের কিতাব, তাদের প্রচারপত্র এবং নিজেদের বক্তৃতায় বলে বেড়ায় যে, রাসূল সাঃ এবং সমস্ত সাহাবাগণ তাদের মত করে নামায পড়েছেন, তা জঘন্য মিথ্যাচার। আল্লাহ তাআলা তাদের মিথ্যা থেকে তওবা করার তৌফিক দান করুন। আর আহলে সুন্নতদের তার প্রোপাগান্ডা থেকে হিফাযত করুন।
আইয়িম্মায়ে কেরাম
তারপর আমি জিজ্ঞেস করলামঃ “পূর্ণ ক্যাসেটে তাদের পূর্ণ দাবীটি কোন চার ইমামের কোন ইমাম থেকে প্রমাণ করতে পেরেছে?”
লোকটি বললঃ “কিছুতেই পারেনি”।
আমি বললামঃ “এর নামই জিতে যাওয়া?!
অংশ বিশেষের প্রমাণ
লোকটি বললঃ “সে যদিও তার পূর্ণাঙ্গ দাবীর উপর দলীল না দিতে পারলেও আলাদা অংশের উপরতো দলীল দেয়ার চেষ্টাতো করেছে”।
আমি বললামঃ “আচ্ছা শোন! এক কাদিয়ানী বলতে লাগল যে, “আমি কুরআনে কারীম থেকে দেকাতে পারবো যে, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী মসীহ এবং রাসূল ছিল”। যখন তার সামনে কুরআনে কারীম রাখা হল, তখন সে বলতে লাগল যে, “এক স্থান থেকেতো আমার দাবী প্রমাণ করতে পারবো না, তবে ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে দেখাতে পারবো”। তখন সে কুরআনে কারীমের এক স্থান থেকে ‘গোলাম’ শব্দ দেখালো, আরেক স্থান থেকে ‘আহমদ’ আরেক স্থান ‘মাসীহ’ আর আরেক স্থান থেকে ‘রাসূল’ দেখালো। এভাবে দেখানোর ফলে কি তার দাবী প্রমাণিত হয়ে গেছে”?
লোকটি বললঃ “না”।
আমি বললামঃ “কাদিয়ানী লোকটিতো চার স্থান দেখিয়ে নিজের দাবী প্রমাণের ব্যার্থ চেষ্টা করেছে, আর সেতো এটাও করতে পারেনি”।
নিষেধাজ্ঞা
আমি বলেছিলামঃ “যে আঠার স্থানে আপনারা রফয়ে ইয়াদাইন করেন না, এসব স্থানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার শব্দ দেখান। আর নয় স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন নিষেধাজ্ঞার শব্দ আমাদের থেকে দেখে নিন। আর ঐ আঠার স্থানে ক্ষেত্রে রফয়ে ইয়াদাইন রহিত হওয়ার দলীল দেখান, আর আমাদের থেকেও রহিত হওয়ার দলীর দেখে নিন। সেই সাথে ঐ আঠার স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করা হারাম বা মাকরূহ হওয়ার দলীল আমাদের দেখান। আর বাকি নয় স্থানের ক্ষেত্রে আমাদের থেকে হারাম ও মাকরূহের শব্দ দেখে নিন। আর এ আঠার স্থানের ক্ষেত্রে আপনারা রফয়ে ইয়াদাইন ছেড়ে দেয়ার দলীল দেখান আর আমাদের থেকেও দলীল দেখে নিন।
এবার আপনিই বলুন! আঠার স্থানের মাসআলা বড় না নয় স্থানের? নিশ্চয় আঠার স্থানের। তাই আগে আঠার স্থানের রফয়ে ইয়াদাইন করার মাসআলাটির সমাধান হোক। তারপর নয় স্থানের। এবার আপনি একটি ভেবে চিন্তে বলুনতো! ক্যাসেটে লোকটি কি আঠার স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করার উপর নিষেধাজ্ঞা, রহিত হওয়া, হারাম বা মাকরূহ কিংবা ছেড়ে দেয়া সংক্রান্ত কোন দলীল দেখাতে পেরেছে”।
লোকটি বললঃ “না, দেখাতে পারেনি”।
নামায না হওয়া
তার দাবী- “দশ স্থানে যারা রফয়ে ইয়াদাইন করবে না, তাদের নামায হবে না” এর স্বপক্ষে কোন দলীল পেশ করতে পেরেছে”।
– না, একদম পারেনি।
– হাদীসে মুসীউস সালাত তথা যে হাদীসে রাসূল সাঃ এক গ্রাম্য সাহাবীকে নামাযের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন, যে হাদীসটি বুখারী-১/১০৪, ১/১০৯, ২/৯২৪, ২/৯৮৬, মুসলিমের ১/১৭০, তিরমিজীর ১/৬৬, আবু দাউদের ১/১২৪, নাসায়ীর ১/১৪১, ১/১৬১, ১/১৭০, ১/১৯৪ এবং ইবনে মাজাহের ৭৪ নং পৃষ্ঠায় বিদ্যমান। উক্ত হাদীসে গায়রে মুকাল্লিদদের নামাযের ক্ষেত্রে আরকানে আরবাআ তথা চার মূল স্তম্ভ তথা বুকের উপর হাত বাঁধা, আমীন জোরে বলা, ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়া এবং রফয়ে ইয়াদাইন করা ইত্যাদির একটিও বলা হয়নি। কিছু কিছু বর্ণনায়তো একথাও এসেছে যে, রাসূল সাঃ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, এভাবে নামায পড়ে নিলে [অর্থাৎ এ চারটি ছাড়াই] নামায পূর্ণ হয়ে যাবে।
মোটকথা সে এ আংশিক দাবীর স্বপক্ষেও দলীল দিতে পারেনি। শুধু শুধুই চিল্লাফাল্লা করে বেড়ায়। ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার একেই বলে।
৯ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করা
গায়রে মুকাল্লিদ বিতার্কিকের মনে হয় দশ পর্যন্ত গণনাও মনে ছিল না, তাই নয় আর দশের পার্থক্য বুঝতে পারেনি। সে দশ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইনকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলে থাকে। আর এর উপরই শেষ পর্যন্ত আমল বাকি ছিল মর্মে দলীল দেখানো তার দায়িত্ব ছিল। সে দশ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করা সুন্নতে মুআক্কাদা এবং শেষ পর্যন্ত তা বাকি ছিল মর্মে শব্দ দেখাবেতো দূরে থাক, সেতো দশ পর্যন্ত গুনতেই ভুল করছিল। তারপর যখন তাকে বলা হল যে, ইমাম বুখারী রহঃ এ হাদীসকে ইমাম মালিক রহঃ এর সনদে নকল করেছেন। অথচ মুয়াত্তা মালিকে পাঁচ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইনের কথা এসেছে। আর বুখারীতে اذا كبر للركوع তথা “যখন রুকুর জন্য তাকবীর বলবে” শব্দ বলে পাঁচকে নয় বানানো হয়েছে। এছাড়া মদীনার ইমামের লিখা কিতাব মুয়াত্তা মালিকে লিখা হয়েছে رفع يديه তথা “তিনি হাত উঠালেন” শব্দ এসেছে, সেখানে মক্কার বাহিরের লেখকের সংকলিত বুখারীতে كان يرفع يديه তথা “তিনি হাত উঠাতেন” শব্দ বানানো হয়েছে। যার ভুল অনুবাদ করে আপনারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে থাকেন। আপনারা মদীনার সাথে বিদ্রোহ করে পারস্যে কেন গেলেন? [ইমাম বুখারী পারস্যের]
এ তিন জিনিষের কোন জবাব সে ক্যাসেটে দিয়েছে?”
লোকটি বললঃ “নাতো একদমই দেয়নি”।
আমি বললামঃ “দশ স্থানে রফয়ে ইয়াদাইন করার সাথে সুন্নতে মুআক্কাদা শব্দ এবং শেষ সময় পর্যন্ত তা বাকি ছিল মর্মে শব্দ দেখানো জনাবের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু সে কিছুই দেখাতে পারেনি। আর আপনিতো ভাল করেই জানেন যে, একটি সুন্নত বাকি থাকলেও নামায খেলাফে সুন্নতভাবে আদায় হয়। নামায তাদের বক্তব্য অনুপাতে সুন্নত অনুযায়ী হওয়ার জন্য এরকম শব্দ হাদীসে থাকা জরুরী। অথচ যেহেতু বুখারী মুসলিমে তা নেই, তাই তাদের মতানুসারে একথা প্রমাণিত হচ্ছে যে, রাসূল সাঃ শেষ জীবন পর্যন্ত খেলাফে সুন্নত নামায পড়েছেন। [নাউজুবিল্লাহ]। কেননা, একটি সুন্নত ছেড়ে দিলেও নামায খেলাফে সুন্নতই হয়।
সমস্ত গায়রে মুকাল্লিদরা পেরেশান হয়ে যায়। এ কেমন গায়রে মুকাল্লিদ বিতার্কিককে বিতর্ক করার জন্য মনোনিত করা হয়েছে, যে রাসূল সাঃ এর নামাযকে খেলাফে সুন্নত করতে শুরু করেছে!