প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
মুহতারাম, আমাদের একটি বিজনেস গ্রুপ আছে। সেখানে আমরা বিভিন্ন সদস্যগণ সম্মিলিতভাবে টাকা সঞ্চয় করি এবং সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা করি।
জানার বিষয় হলো, বছরের মধ্যখানে কোনো সদস্য তার সদস্যপদ বাতিল করতে চাইলে (যদিও তিন বছরের ভিতর কেউ যেতে পারবেন না বলে আমাদের রুলস আছে)
আমরা যতটুকু সম্ভব, তখন পর্যন্ত যে পরিমাণ মুনাফা আমাদের হাতে উপস্থিত থাকে, সেখান থেকে খরচ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকা সংশ্লিষ্ট সদস্যকে দিয়ে থাকি।
কিন্ত কোনো সদস্য যদি বছরের মধ্যখানে নতুন করে গ্রুপে এড হতে চান সেক্ষেত্রে আমরা তাকে আমাদের ব্যবসার পুরো মুনাফা নিয়ে (যেগুলো আমাদের হাতে এখনো আসেনি) গ্রুপের সদস্য বানাই।
উদাহরণত, যেমন ধরুন আমাদের ১০ জন সদস্য আছে
আমরা একটা পণ্য কিস্তিতে বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা লাভ করেছি। আর সেই টাকা ১০ মাসে আসবে।
পাঁচ মাসে মূল টাকার সাথে ৫ হাজার টাকা লাভ এসেছে এখন কেউ সদস্য পদ বাতিল করতে চাইলে আমরা তাকে মূল টাকার সাথে ৫০০ টাকা লাভ দিয়ে সদস্যপদ বাতিল করে দেই। যেহেতু আমাদের হাতে পাঁচ মাসে প্রতি জনে ৫০০ টাকা লাভ এসেছে।
কিন্তু কেউ যদি পাঁচ মাস পরে নতুন সদস্য হতে চান সেক্ষেত্রে আমরা তার নিকট থেকে পুরো ১ হাজার টাকা মুনাফা নিয়ে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করি।
(এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল যদি কোন কারণে নতুন সদস্য নেওয়ার পরে আর কোন লেনদেন না হয়, তাহলে নতুন সদস্যের টাকা কোনো বিনিয়োগ না করেও তিনি মুনাফা পাচ্ছেন, এজন্য আমরা নতুন সদস্যদের কাছ থেকে পুরাতন লেনদেনের পুরো মুনাফা আদায় করে থাকি এবং সাধারণত আমাদের বিনিয়োগের পুরো টাকাও আমরা আদায় করতে সক্ষম হই)
বি:দ্র: পরবর্তীতে যে ৫০০ টাকা হাতে আসবে, ঐ টাকা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সবার মধ্য বন্টন করা হয়।
আমাদের এই পদ্ধতিতে সদস্য গ্রহণ কিংবা বাতিল শরীয়াসম্মত হবে কি না?
দয়া করে চিঠির মাধ্যমে অথবা ইমেইলের মাধ্যমে উত্তর জানিয়ে আমাদের উপকৃত করবেন বলে প্রত্যাশা করছি।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উপরোক্ত বিবরণে যদি মুনাফা নির্দিষ্ট না করে পার্সেন্টিচ আকারে শরীকদের মাঝে মুনাফা বন্টনের চুক্তিতে শরীকানা চুক্তি হয়ে থাকে, তাহলে শরীকানা গ্রহণ ও বাতিলের যে পদ্ধতি বলা হয়েছে এতে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। এমন পদ্ধতিতে শরীকানা ব্যবসা করা জায়েজ আছে।
وأما صفة عقد الشركة فهى أنها عقد جائز غير لازم حتى ينفرد كل واحد منهما بالفسخ إلا أن من شرط جواز الفسخ أن يكون بحضرة صاحبه (بدائع الصنائع، كتاب الشركة، فصل فى صفة عقد الشركة، زكريا-5/105، كرتاشى-6/77)
اشتركا فجاء أحدهما بألف والآخر بألفين على أن الربح والوضيعة نصفان فالعقد جائز، والشرط فى حق الوضيعة باطل، فإن عملا وربحا، فالربح على ما شرطا، وإن خسرا فالخسران على قدر رأس فى مالهما (الفتاوى الهندية-2/320، جديد-2/326، بدائع الصنائع، زكريا-5/83، كرتاشى-6/62، رد المحتار، زكريا-6/484، كرتاشى-4/312، الموسوعة الفقهية الكويتية-26/61)
عن عمر بن عوف المرنى: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: المسلمون على شروطهم إلا شرطا حرم حلالا، أو أحل حراما (المعجم الكبير للطبرانى-17/22، رقم-30، سنن الترمذى-1/251، رقم-1352، صحيح البخارى-2/506، رقم-3594)
أذا شرطا الربح على قدر المالين متساويا، أو متفاضلا، فلا شك أنه يجوز ويكون الربح بينهما على الشرط، سواء شرطا العمل عليهما، أو على أحدهما، والوضيعة على قدر المالين متساويا، ومتفاضلا (بدائع الصنائع، زكريا-5/83، كرتاشى-6/62، رد المحتار، زكريا-6/484، الموسوعة الفقهية الكويتية-26/61)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com