প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
মুহতারাম-
এক ব্যক্তি মারা গেছে তার স্ত্রী এবং দুজন মেয়ে রেখে গেছে, এবং তার চার বোন এবং এক ভাই জীবিত আছে।
এখন জানার বিষয় হল উক্ত চার বোন এবং এক ভাই এই মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদে অংশীদার হবে কিনা?
উপকার করলে ভালো হয়।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হ্যাঁ। অংশীদার হবে।
স্ত্রী পাবে পুরো সম্পদের আট ভাগের এক ভাগ। দুই মেয়ে পাবে পুরো সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ। এরপর বাকি সম্পদ চার বোন ও এক ভাইয়ের মাঝে দুই বোন সমান এক ভাই হিসেবে বন্টিত হবে। অর্থাৎ দুই বোন যা পাবে এক ভাই তার সমান পাবে হিসেবে বন্টিত হবে।
অর্থাৎ পুরো সম্পদ ২৪ ভাগের মাঝে ৩ ভাগ মৃতের স্ত্রী। ১৬ ভাগ সমানহারে ভাগ করে তথা ৮ ভাগ করে পাবে মৃতের দুই মেয়ে।
আর বাকি ৫ ভাগ পাবে মৃতের এক ভাই এবং চার বোন।
পূর্ণ সম্পদের মিরাছ ভাগ হবে মোট ১৪৪ ভাগ:
স্ত্রী পাবে ১৮ ভাগ।
দুই মেয়ে পাবে ৪৮ ভাগ করে মোট ৯৬ ভাগ।
এক ভাই পাবে ১০ ভাগ।
প্রতি বোন পাবে ৫ ভাগ করে মোট ২০ ভাগ।
لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۚ فَإِن كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ ۖ [٤:١١]
একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু মেয়েই হয় দু’ এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে ত্যাজ্য সম্পদ থেকে। [সূরা নিসা-১১]
وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم [٤:١٢]
স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও। [সূরা নিসা-১২]
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةُ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ بِابْنَتَيْهَا مِنْ سَعْدٍ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَاتَانِ ابْنَتَا سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ قُتِلَ أَبُوهُمَا مَعَكَ يَوْمَ أُحُدٍ شَهِيدًا وَإِنَّ عَمَّهُمَا أَخَذَ مَالَهُمَا فَلَمْ يَدَعْ لَهُمَا مَالاً وَلاَ تُنْكَحَانِ إِلاَّ وَلَهُمَا مَالٌ . قَالَ ” يَقْضِي اللَّهُ فِي ذَلِكَ ” . فَنَزَلَتْ آيَةُ الْمِيرَاثِ فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَمِّهِمَا فَقَالَ ” أَعْطِ ابْنَتَىْ سَعْدٍ الثُّلُثَيْنِ وَأَعْطِ أُمَّهُمَا الثُّمُنَ وَمَا بَقِيَ فَهُوَ لَكَ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, সা’দ ইবনুর রাবী (রাঃ)-এর স্ত্রী সা’দের ঔরসজাত তার দুই মেয়েসহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরা সাদ ইবনুর রাবীর দুই মেয়ে। এদের বাবা উহুদের যুদ্ধে আপনার সাথে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়েছেন। এদের সমস্ত ধন-সম্পদ এদের চাচা নিয়ে নিয়েছে, এদের জন্য সামান্য কিছুও রাখেনি। এদের কোন ধন-সম্পদ না থাকলে এদের বিয়েও তো হবে না। তিনি বললেনঃ এ বিষয়টি আল্লাহ তা’আলাই সমাধান করে দিবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মীরাস বণ্টন বিষয়ক আয়াত অবতীর্ণ হয়। তাদের চাচাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেকে এনে বললেনঃ সা’দের দুই মেয়েকে দুই-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি এবং তাদের মাকে এক-অষ্টমাংশ সম্পত্তি দিয়ে দাও, তারপর যেটুকু বাকী থাকে তা তোমার। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২০৯২, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৭২০]
ومع الأخ لأب وأم للذكر حظ الأنثيين، يصرن به عصبة لاستوائهم فى القرابة الى الميت، ولهن الباقى مع البنات أو بنات الابن لقوله عليه السلام “اجعلوا الأخوات مع البنات عصبة” (السراجى فى الميراث-24)
أما للزوجات فحالتان:…. الثمن مع الولد أو ولد الابن وإن سفل (السراجى فى الميراث-19)
واما لبنات الصلب فأحوال ثلث: النصف للواحدة، والثلثان للاثنتين فصاعدا (السراجى فى الميراث-20)
ان لا تكون بين سهامهم ورؤوسهم موافقة فيضرب كل عدد رؤوس من انكسرت عليهم السهام فى اصل المسئلة (السراجى فى الميراث-51)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com