প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম। আমি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনাব।
আমি অনেক জিনিস আপনার ওয়েবসাইট থেকে জানতে পেরেছি। আপনাদের দাওয়াতী কাজ কে আল্লাহ আরও সম্প্রসারিত করে দিন।
আমি একটি ইসলামী জিন্দেগী বইয়ে পড়েছিলাম যে মহিলারা ইস্তন্জার সময় প্রথমে দুই হাত ভালো করে ধৌত করবে। অতঃপর পানি দিয়ে হাতের সাহায্যে প্রসাবের রাস্তা, মধ্যের ও পেছনের রাস্তা ভালো করে পরিষ্কার করবে। কিন্তু এখানে বলা নেই তিনবার বা কয় সংখ্যক বার পরিষ্কার করা লাগবে।
অনেকে বলেন একবার পানি প্রবাহিত করলে নাপাকি চলে যাবে। আমার মুল জিজ্ঞাসা হলো, এই যে প্রসাবের পর হাত ধোয়া হল কিন্তু লজ্জাস্হানে হাত দিয়ে প্রসাব পরিষ্কার করার সময় সেখানে লেগে থাকা খানিকটা প্রসাব আবার হাতে লেগে নাপাক হয়ে গেলো। আর হাতের সেই নাপাকি মধ্য জায়গা ও পেছনের রাস্তায়ও তো ছড়িয়ে পড়লো। সেজন্য আমার শুধু মনে হয় প্রথমবার ধোয়া নাপাকি দুর করার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই এব্যাপারে ওয়াসওয়াসার শিকার হয়ে প্রথমবার এক লোটা পানি দিয়ে লজ্জাস্হান ইস্তিন্জার পর দ্বিতীয় বার আরেক লোটা পানি নিয়ে আবার হাত ধুই পরে আবার লজ্জাস্হান ধৌত করি। জনাব আমি এখন কি বুঝবো?
হাত দিয়ে লজ্জাস্হান পরিষ্কারের সময় কি লজ্জাস্হানে লেগে থাকা প্রসাব হাতে লেগে হাত নাপাক হবে না? সেজন্য কি পুনরায় হাত ধৌত করে আবার ইস্তিন্জা করতে হবে না? নাকি একবার পানি প্রবাহিত করাই প্রসাবের নাপাকি দুর করার জন্য যথেষ্ঠ? আমি কি করবো বুঝতে না পেরে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় অধিক সময় ও পানি বাথরুমে ব্যয় করছি। এমনকি ১০/১৫;/২০ মিনিট ধোয়ার পরো মনে হয় জায়গা নাপাক থেকে গেল আর পাজামাও নাপাক হয়ে গেলো। এভাবে করতে করতে আমার নামাজ কাযা হয়ে যায়। দয়া করে আমাকে একটু সঠিক ইস্তিন্জার নিয়ম বিস্তারিত বুঝিয়ে দিয়ে সন্দেহ দুর করুন। জাযাকাল্লাহু খইরান।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পানি ব্যবহার করে ময়লা দূর করা মূল মাকসাদ। সেটা একবারের দ্বারা হয়ে গেলে একবার করবে, আর যদি একবারে না হয়, তাহলে একাধিকবার করবে।
ময়লা দূরিভূত হবার দ্বারা যেমন লজ্জাস্থান পবিত্র হয়ে যায়, তেমনি হাতও পবিত্র হয়ে যায়। তাই আলাদাভাবে হাত ধৌত করার প্রয়োজন নেই।
তবে ইস্তেঞ্জা শেষে হাতে যদি কোন ময়লা দেখা যায়, বা দুর্গন্ধ থাকে, তাহলে হাত ধৌত করবে। অন্যথায় জরুরী নয়।
সুতরাং আপনি মন থেকে ওয়াসওয়াসা দূর করুন।
فَمَا يَبْقَى فِي الْيَدِ مِنْ الْبَلَّةِ بَعْدَ زَوَالِ عَيْنِ النَّجَاسَةِ طَاهِرٌ تَبَعًا لِطَهَارَةِ الْيَدِ فِي الِاسْتِنْجَاءِ بِطَهَارَةِ الْمَحَلِّ، (رد المحتار، كتاب الطهارة، باب الأنجاس، كرتاشى-1/328، زكريا-1/510)
واعلم أن ما يبقى في اليد من البلة بعد زوال عين النجاسة طاهر تبعا لطهارة اليد في الاستنجاء بطهارة المحل (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-159)
ويغسل يده بعد الاستنجاء كما يكون يغسلها قبله، ليكون انقى وانظف، وقد روى عن النبى صلى الله عليه وسلم غسل يديه بعد الاستنجاء وذلك على الحائط كذلك فى التنجيس (الفتاوى الهندية-1/25)
ومع طهارة المغسول تطهر اليد، ويشترط ازالة الرائحة عنها وعن المخرج (الدر المختار مع رد المحتار-1/230)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com