লেখক– মুনাজিরে ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর ওকাড়বী রহঃ
অনুবাদঃ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
কথিত আহলে হাদীস ভাইয়েরা! কুরআন ও সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে জবাব দিন!
১-
নামাযের নিয়ত করার সময় মনে মনে “সময়” “নামায” “সুন্নাত-ফরজ” ইত্যাদির মাঝে কোন কোন বিষয়ের ইচ্ছা করতে হবে? কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
২-
আল্লাহ তাআলার বাণী وذكر اسم ربه فصلى এর সম্পর্ক নামাযের সাথে এবং وربك فكبر আয়াতাংশের সম্পর্ক কি নামাযের সাথে? নাকি না? কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
৩-
এ দুই আয়াত অনুযায়ী কেউ যদি আল্লাহু আকবারের বদলে আল্লাহু আজাল্লু বা আল্লাহু আজামু বলে বলে তাহলে সে কি আয়াতের বিপরীত করল না করেনি? কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
৪-
আল্লাহু আকবার শব্দটি কি ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নাত? কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে জানতে চাই।
৫-
তাকবীরে তাহরীমা একাকী নামায আদায়কারী ব্যক্তি এবং মুক্তাদী সর্বদা আস্তে আওয়াজে বলে। এটা কুরআনের কোন আয়াত বা কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
৬-
তাকবীরে তাহরীমা ইমাম সাহেব সর্বদা জোরে বলে থাকে। কুরআন ও সহীহ হাদীসের কোথায় একথা বিদ্যমান?
৭-
তাকবীরে তাহরীমার সময় হাত উঠানো হাদীস দ্বারা প্রমানিত। কিন্তু এটাকে সুন্নাতে মুআক্কাদা একথা কোন সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে?
৮-
হাতকে কিবলামুখী রাখা সম্পর্কিত হাদীসটি উমায়ের বিন ইমরানের কারণে দুর্বল। {মাযমাউজ যাওয়ায়েদ-২/১০২} অথচ এর উপর আপনাদের আমল কোন সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে?
৯-
নামাযে আঙ্গুলি খোলা ও প্রশস্ত রাখার তিরমিযীর হাদীসটি বাতিল। {কিতাবুল ইলাল লিইবনে আবী হাতেম-১/১৬২} অথচ এর উপর আপনারা কোন সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে আমল করে থাকেন?
১০
পুরুষ কাঁধ পর্যন্ত আর মহিলারা সিনা পর্যন্ত হাত উঠাবে {তাবরানী} এর উপর আপনাদের আমল নেই কেন? শুধু কিয়াস ভিত্তিক আমল করেন কেন?
১১
ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ এর হাদীস হল,রাসূল সাঃ ডান হাতকে বাম হাতের উপর বাঁধতেন। মুসলিম, নাসায়ী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ তায়ালিসী, ইবনে হিব্বানে এ বর্ণনা এসেছে। এ সাত কিতাবে সিনার উপর হাত বাঁধার কথা নেই। শুধু ইবনে খুজাইমাতে সিনায় হাত বাঁধার কথা আছে। যার বর্ণনাকারী মুআম্মাল বিন ইসমাঈল জয়ীফ। এ মুনকারও মারদূদ বর্ণনার উপর আপনাদের আমল কেন?
১২
ফাতওয়া সানায়িয়্যাহ ১ নং খন্ডের ৫৩৪ পৃষ্ঠায় এবং ফাতাওয়া ওলামায়ে হাদীস এর ৩ নং খন্ডের ৯৫ নং পৃষ্ঠায় কুরআনে কারীমের আয়াত فصل لربك وانحر দিয়ে সিনার উপর হাত বাঁধার দলিল দেয়া হয়েছে। অথচ সহীহ হাদীস ও উম্মতের ইজমা হল যে, وانحر দ্বারা উদ্দেশ্য হল কুরবানী। সহীহ হাদীস ও ইজমায়ে উম্মতের বিপরীত কুরআনের ভুল ব্যাখ্যা করা গোনাহ নাকি সওয়াবের কাজ?
১৩
যদি বলা হয় যে, তারা দু’টি অর্থই গ্রহণ করে থাকেন। কুরবানী ও উদ্দেশ্য নেন, আবার সিনার উপর হাত বাঁধাও উদ্দেশ্য নেন। তাহলে কুরবানীতো আপনারা নামাযের পর করে থাকেন, শুধু তাই নয়, বরং ঘরে গিয়ে করে থাকেন। তাহলে সিনার উপর হাত কেন নামাযের ভিতর বাঁধেন। এটাও নামাযের পর ঘরে গিয়ে করেন!
১৪
ফাতাওয়া সানায়িয়্যাহ এর ১ নং খন্ডের ৪৪৩ পৃষ্ঠা এবং ফাতাওয়া উলামায়ে হাদীস এর ৩ নং খন্ডের ৯১ নং পৃষ্ঠায় লিখা আছে যে, সিনার উপর হাত বাঁধার বর্ণনা বুখারী, মুসলিম ইত্যাদিতে আছে। অথচ বুখারী মুসলিমে এমন কোন হাদীসই নেই। তাহলে এ মিথ্যাচার কেন?
১৫
মাওলানা নূর হুসাইন গুজরাটি লিখেছেন যে, হযরত ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ এর রফয়ে ইয়াদাইন এর হাদীসে মুসলিম, ইবনে মাজাহ, দারা কুতনী, দারেমী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, এবং মেশকাতে সিনার উপর হাত বাঁধার শব্দ আছে। [ইসবাতুর রফয়ে ইয়াদাইন-১৯]
অথচ এসব কিতাবের কোন কিতাবেই এ শব্দ নেই। তাহলে অসত্য কথা কেন বলা হল?
১৬
মৌলবী মুহাম্মদ ইউসুফ জিপুরী গায়রে মুকাল্লিদ সাহেব তার “হাকীকাতুল ফিক্বহ” নামক কিতাবে লিখেন যে, “সিনার উপর হাত বাঁধার হাদীস মুহাদ্দিসীন ইমামদের ঐক্যমত্বে সহীহ। হেদায়ার ১ নং খন্ডের ৩৫ নং পৃষ্ঠা ও শরহে বেকায়ার ৯৩ পৃষ্ঠা দেখুন। এ বক্তব্যটি কত মিথ্যা।
১৭
নাভির নিচে হাত বাঁধার হাদীস আইয়িম্মায়ে মুহাদ্দিসীনদের নিকট দুর্বল। দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা হয় যে, হেদায়ার ১ম খন্ড পৃষ্ঠা নয় ৩৫০।
এটিও একটি মিথ্যাচার। হেদায়াতে এমন বক্তব্য নেই। থাকলে আরবী ইবারত দিন।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকারা! লক্ষ্য করুন। কিভাবে কুরআন ও হাদীসের উপর আমলকারীরা ফিক্বহের উপর মিথ্যারোপ করে থাকে।
১৮
ফাতাওয়া সানায়িয়্যাহ এর ১নং খন্ডের ৪৪৪ পৃষ্ঠায় সহীহ ইবনে খুজাইমার দুর্বল হাদীস এনে সহীহ মুসলিমের একটি সনদ জোরে দেয়া হয়েছে। কত বড় জালিয়াতি ভাবা যায়?
১৯
সকল নবীগণ নাভির নিচে হাত বেঁধেছেন মর্মে মুসনাদে জায়েদ ও মুহাল্লা বিন হাযম এ হযরত আলী রাঃ, হযরত আয়শা রাঃ, হযরত আনাস রাঃ থেকে উল্লেখ আছে। রাসূল সাঃ এর নাভির নাভির নিচে হাত বাঁধার বর্ণনা করাচি থেকে প্রকাশিত মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার ১নং খন্ডের ৩৯০ নং পৃষ্ঠায় এসেছে। আর এটি সুন্নাত একথা এসেছে মুসনাদে আহমাদে। কিন্তু হানাফীদের প্রতি বিদ্বেষে গায়রে মুকাল্লিদরা এসব হাদীসের উপর আমল করে না।
২০
ওলামায়ে কেরাম একমত যে, নারীরা সিনার উপর হাত বাঁধবে। {আসসিয়ায়াহ-২/১৫৬} এ ইজমাকে তারা কেন অস্বিকার করে?
সানার উপর আলোচনা
২১
ইমাম হয়ে উঁচু আওয়াজে সানা পড়ার বিষয়টি রাসূল কারীম সাঃ থেকে নাসায়ী এর উর্দু অনুবাদ এ ১ম খন্ডের ৩৫৬ নং পৃষ্ঠায় এবং হযরত ওমর রাঃ থেকে ইমাম হয়ে সানা জোরে পড়ার কথা সহীহ মুসলিমের হাদীস নং ৯১৮তে বর্ণিত। গায়রে মুকল্লিদগন কিসের ভিত্তিতে এর উপর আমল ছেড়ে দিচ্ছে?
২২
নাসায়ী শরীফের উর্দু অনুবাদের ১ম খন্ডের ৩০০ পৃষ্ঠায় মুক্তাদীর সানা জোরে পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে।
গায়রে মুকাল্লিদগন এ হাদীস ছেড়ে কোন হাদীসের উপর আমল করে?
২৩
একাকী নামায আদায়কারী ব্যক্তি সানা আস্তে আস্তে পড়ার আমল গায়রে মুকাল্লিদদের। তাদের এ আমলের পক্ষে কী দলিল আছে?
২৪
রাসূল সাঃ এর পর খুলাফায়ে রাশেদীন এর মাঝে কেউ سبحانك اللهم الخ তথা সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকাÑÑÑ, এ সানা ছাড়া অন্য কোন সানা পড়েন নি। চাই সেটি ফরজ নামায হোক বা সুন্নাত নামায হোক। ঐক্যমত্বের আমল দ্বারা বুঝা যায় যে, এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত। কিন্তু গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা মানেন না কোন সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে?
২৫
যদি নামাযে সানা ইচ্ছেকৃত না পড়ে, তাহলে নামায হবে কি না? সহীহ হাদীস দিয়ে জানান।
২৬
যদি ভুলে সানার স্থলে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেলে, তাহলে সাহু সেজদা আবশ্যক হবে কি না? সহীহ সরীহ হাদীস দিয়ে প্রমাণ দিন।
২৭
وجل ثنائك ব্যতিত জানাযার নামাযের সানায় যা পড়া হয়, তা গায়রে মুকাল্লিদ ভাইগন সহীহ সরীহ হাদীস দিয়ে প্রমানিত করুন।
২৮
রাসূল সাঃ কেরাত পড়ার আগে اعوذ بالله من الشيطان الرجيم পড়তেন। {মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-২/৮৬} রাসূল সাঃ এর পর হযরত ওমর রাঃ ও এটাই পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-১/২৩৭} এটাই প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত।
গায়রে মুকাল্লিদগণ এটাকে সুন্নাত থেকে বাদ দেন কোন সহীহ সরীহ হাদীসের ভিত্তিতে?
২৯
আউজুবিল্লাহ একাকী নামায আদায়কারী, ইমাম ও মুক্তাদীর জন্য আস্তে পড়ার বিধান রাসূল সাঃ এর কোন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? যদি প্রমাণিত না হয়, তাহলে তারা এর উপর আমল করেন কুরআনের কোন আয়াত বা কোন সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে?
৩০
আউজুবিল্লাহ পড়া সুন্নাত না ফরজ? যদি এটি কেউ না পড়ে, তাহলে তার নামায হবে কি না? সহীহ হাদীস দিয়ে প্রমাণ করুন।
allah apnake aro batiler birudde likhar taufiq dan korun
মাশায়াল্লাহ, খুব উপকারী পোস্ট করেছেন। আহলে হাদিসদের ৪১টি প্রশ্নের উত্তর এ লিংকে দেখুন। লিখেছেন প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী। http://www.markajomar.com/?p=981
Naam dhari ahle hadis – eder asol target holo namaji general shikhkhito Muslim. Liflet baj, fetnabaj, Quraan o hadiser opobekhkhakari.