প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / পৃথিবী কি একটি মাছের উপর অবস্থিত?

পৃথিবী কি একটি মাছের উপর অবস্থিত?

প্রশ্ন

মোঃ ইলিয়াস। মুন্সিগঞ্জ।

আসসালামু আলাইকুম।

হযরত অনেকে বলেন যে,এই পৃথিবী হলো একটা মাছের পিঠের ওপর। এটা কি হাদিস? হাদিস হলে এর মান কি?

 

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

এ সংক্রান্ত বর্ণনাটি হল,

عن ابن عباس رضي الله عنهما أنه قال : ( أوّل ما خلق الله من شيء القلم ، فجرى بما هو كائن ، ثم رفع بخار الماء ، فخلقت منه السماوات ، ثم خلق ” النون ” – يعني الحوت – فبسطت الأرض على ظهر النون ، فتحرّكت الأرض فمادت ، فأثبت بالجبال

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম কলমকে সৃষ্টি করেছেন। যা কিছু ঘটবে তা লিখে নিল। তারপর তিনি পানির বাষ্প উঠালেন। তারপর তা দিয়ে আসমান সৃষ্টি করলেন। তারপর “নূন” তথা মাছ সৃষ্টি করলেন। তারপর পৃথিবীকে সেই মাছের উপর বিস্তৃত করলেন। ফলে জমিন কখনো নড়ে উঠে আবার স্থির হয়। তারপর সেটিকে পাহাড় দিয়ে মজবুত করলেন। [তাফসীরে আব্দুর রাজ্জাক-২/৩০৭, ইবনে আবী শাইবা-১৪/১০১, তাফসীরে ইবনে কাসীর-৮/২১০, জামেউল বয়ান লিততাবারী-২৩/১৪০, আলমুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন-২/৫৪০]

হাদীসটি রেওয়ায়েত হিসেবে সহীহ।

কিন্তু বক্তব্যটি সহীহ হওয়া নিশ্চিত নয়। কারণ, একেতো এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নয়।

সম্ভবত ইবনে আব্বাস রাঃ এটি ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে গ্রহণ করেছেন। আর ইসরাঈলী বর্ণনা বাস্তবসম্মত এবং কুরআন ও হাদীস সমর্থিত না হলে তা গ্রহণীয় হয় না।

সুতরাং এ বক্তব্যটিকে সঠিক বলার কোন সুযোগ নেই। কুরআন বা বিশুদ্ধ হাদীসের আলোকে উক্ত কথাটি প্রমাণিতও নয়।

তাই এমন একটি ধারণামূলক কথাকে দলীল হিসেবে পেশ করার কোন যৌক্তিকতাই নেই। তাই এটি পরিত্যাজ্য বক্তব্য।

 

 قال أبو عبد الرحمن عصام الدين الضبابطي في جامع الأحاديث القدسية: أما شطره الثاني فلم أر احدًا ذکره مرفوعا، وظني به أنه من الإسرائليات التي رواها ابن عباس عن بني إسرائيل إھ (کتاب التوحيد والإيمان: ۱/۱۵۳، رقم الحديث: ۷۸، ط: دارالديان للتراث القاهره)

 وقال الشيخ محمد أبو شهبه في کتابه: والظاهر أنه افتراء عليه أو هو من الإسرائليات ألصق به إھ  (الإسرائيليات والموضوعات في کتب التفسير ص:۳۰۵)

وقال الآلوسي: وفي البحر لعله لا يصح شيء من ذلک أي: من جميع ما ذکر في أن ما عدا کونه اسما من أسماء الحروف وکأنه إن کان مطلعا علی الروايات التي ذکرناه لم يعتبر تصحيح الحاکم في ماروي أولاً عن ابن عباس ولا کون أحد رواته الضياء في المختارة التي هى في الاعتبار قريبة من الصحاح ولا کثرة روايه عنه وهو الذي يغلب علی الظن لکثرة الاختلاف في ما روي عنه في تعيين المراد به․․․ إھ  (روح المعاني (۲۹: ۲۷، ط: مکتبة إمداديه ملتان، پاکستان)

 

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *