প্রচ্ছদ / কসম ও মান্নত / অতীতের কোন কাজের বিষয়ে কুল্লামার কসমের হুকুম কী?

অতীতের কোন কাজের বিষয়ে কুল্লামার কসমের হুকুম কী?

প্রশ্ন

আমি ঢাকাতে একটি মেছে ভাড়া থাকতাম। আমি যেই ভাইয়ের রুমে উঠেছিলাম তিনি আমাকে শুরুতে কিছু নিয়ম কানুন বলে দিয়েছিলেন। যেমন আমার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে উনার কাছে এবং প্রতি মাসের ৮ তারিখে ভাড়া পরিশোধ করে দিতে হবে এরকম আরো কিছু নিয়ম বলেছিলেন। কিন্তু তিনি আমাকে এই কথাটা বলেননি যে বাসা ছাড়তে হলে একমাস আগে জানাতে হবে ( যদিও এটা সাধারণ নিয়ম) কিন্তু তিনি এই নিয়মটা তখন আমাকে বলেননি এবং এই ব্যাপারে আমি ১০০% নিশ্চিত, কোনো সন্দেহ নেই।

ঘটনাক্রমে আমি জুলাই মাসের তেইশ তারিখে তাকে জানালাম যে আমি সামনের মাস থেকে বাসায় থাকবো না। তখন তিনি আমাকে বললেন যে ভাই আমি তো শুরুতেই আপনাকে বলেছিলাম যে একমাস আগে জানাতে হবে। আমি প্রতি উত্তরে বললাম: না ভাই আপনি আমাকে অনেকগুলো নিয়ম কানুন বলেছিলন ঠিক আছে কিন্তু এই নিয়মটা বলেননি। এই ব্যাপারে অনেকক্ষণ ধরে ওনার সাথে তর্কাতর্কি হল।

শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল কুল্লামার শপথ করতে হবে। আমি উনাকে বললাম আপনি কুল্লামার শপথ করে বলেন আপনি আমাকে এই নিয়মটা বলেছিলেন, তাহলে আমি আপনাকে ভাড়া দিয়ে দিবো ১ মাসের। কিন্তু তিনি কিছুতেই শপথ করছেন না। ওনার মনের মধ্যে তখন সংশয় ঢুকে গিয়েছিলো। কিন্তু আমি যেহেতু ১০০% নিশ্চিত ছিলাম তাই আমি শপথ করলাম এবং উনি মেনে নিলো।

এবং শপথে এই কথাটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দিয়েছিলাম আমার কথা যদি মিথ্যা হয় তাহলে “আমি জীবনে যত বার বিয়ে করবো ততবার আমার বউ ৩ তালাক হয়ে যাবে।” পরবর্তীতে আমি বুঝতে পেরেছি যে আমার এই শপথ করা ঠিক হয়নি। তারপর আমি ওনার সাথে কথা বললাম এবং আমি ওনাকে এক মাসের ভাড়া দিয়ে দিলাম এবং উনার সাথে কথা বলে শপথটা উঠিয়ে নিলাম এবং উনিও সবকিছু মেনে নিলো।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমার এই শপথ ভাঙ্গার নিয়ম টা কি সঠিক ছিল? এবং এতে পরবর্তীতে আমার কোন সমস্যা হবে কিনা?? যদিও আমি ১০০% নিশ্চিত ছিলাম কিন্তু যেহেতু আমি মানুষ, হয়তো ভুলও হতে পারে আমার, তাই আমি শপথটা উঠিয়ে নিলাম এবং উনাকে টাকা দিয়ে দিলাম আর উনিও মেনে নিলো।

আমার শপথ ভাঙ্গার নিয়মটা কি ঠিক ছিলো?? উত্তরটি জানিয়ে দিবেন প্লিজ।

 

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

যেহেতু আপনি নিশ্চিত ছিলেন যে, আপনি সত্যই বলেছেন।

সুতরাং আপনার কুল্লামার কসম ভঙ্গ হয়নি।

তাই আপনার বিয়ে করার দ্বারা কোন সমস্যা হবে না। অর্থাৎ বিবির উপর কোন তালাক পতিত হবে না।

তবে যদি আপনি মিথ্যা বলতেন, তাহলে আপনার কসম সংঘটিত হয়ে যেতো, ফলে আপনার বিয়ের মাধ্যমে বিবি তালাক হয়ে যেতো।

যেহেতু এমন কিছু হয়নি। তাই পেরেশান হবার কিছু নেই।

কিন্তু এভাবে অহেতুক কসম করা ঠিক না। ভবিষ্যতে এমন কসম করা থেকে বিরত থাকবেন।

 

وَاللَّغْوُ لَا يُؤَاخَذُ بِهِ صَاحِبُهُ إلَّا فِي الطَّلَاقِ وَالْعَتَاقِ وَالنَّذْرِ، وَفِي فَتَاوَى مُحَمَّدِ بْنِ الْوَلِيدِ لَوْ قَالَ إنْ لَمْ يَكُنْ هُنَا فُلَانٌ فَعَلَيَّ حَجَّةٌ وَلَمْ يَكُنْ وَكَانَ لَا يَشُكُّ أَنَّهُ فُلَانٌ لَزِمَهُ ذَلِكَ اهـ. فَقَدْ عَلِمْت أَنَّ الْيَمِينَ بِالطَّلَاقِ عَلَى غَالِبِ الظَّنِّ إذَا تَبَيَّنَ خِلَافُهُ مُوجِبٌ لِوُقُوعِ الطَّلَاقِ (البحر الرائق، كتاب الأيمان-4/469، مجمع الأنهر، قديم-1/548، جديد-2/263)

وثانيها لغو لا مؤاخذة فيها إلا فى ثلاث طلاق وعتاق ونذر فيقع الطلاق على غالب الظن إذا تبين خلافه (الدر المختار مع رد المحتار-5/476، الفتاوى الهندية-1/52، جديد-1/57)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *