প্রশ্ন
হাদীসের দরসে বসা ছাত্রদের রূহানী সাহাবা বলা যাবে কি? দয়া করে জানালে কৃতার্থ হবো।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীসের দরসের মাঝে যেহেতু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জবানে বলা শব্দাবলীর আলোচনা হয়। সেই হিসেবে বলা যায় যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার সোহবতে বসে হাদীসের ছাত্রবৃন্দ।
কারণ, হাদীসের পঠন পাঠন এটা মুত্তাকী ব্যক্তিদের কাজ। আর মুত্তাকী, সুন্নাতের অনুসারীগণকে রূহানীভাবে ‘আলে রাসূল’ হওয়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
কারণ, তারা যদিও শারিরীকভাবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের সোহবতপ্রাপ্ত নয়। কিন্তু নবীজীর কথা, হাদীসের রূহানীভাবে সোহবতপ্রাপ্ত।
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ آلُ مُحَمَّدٍ؟ فَقَالَ: «كُلُّ تَقِيٍّ» وَتَلَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: {إِنْ أَوْلِيَاؤُهُ إِلَّا الْمُتَّقُونَ} [الأنفال: 34] (المعجم الأوسط، رقم-3332، المعجم الصغير للطبرانى، رقم-318، سنن الكبرى للبيهقى، رقم-2912 )
ثَنَا عَبْدُ الرَّزَاقِ، سَمِعْتُ رَجُلًا قَالَ لِلثَّوْرِيِّ مَنْ آلُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: اخْتَلَفَ النَّاسُ فَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ: أَهْلُ الْبَيْتِ، وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ مَنْ أَطَاعَهُ وَعَمِلَ بِسُنَّتِهِ. قَالَ أَبُو بَكْرٍ: أَحْسَبُ عَبْدَ الرَّزَّاقِ قَالَ: مَنْ أَطَاعَهُ (لأمالي في آثار الصحابة للحافظ الصنعاني-1\48، رقم-46، سنن الكبرى للبيهقى، رقم-2869)
(شرح ابى داود للعينى-6\285) وقيل: كل تقي إلى يوم القيامة، فهو آله عليه السلام.
তবে হাদীসের দরসে বসা ছাত্রদের “রূহানী সাহাবা” বলা আকাবির উলামাগণ থেকে প্রমাণিত নয়। এর মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরামকে পরোক্ষভাবে ছোট করার মত শোনায়। কারণ, তখন প্রশ্ন আসবে যে, সাহাবাগণ ছিলেন, জিসমানী সাহাবা, আর হাদীসের ছাত্ররা হয়ে যাচ্ছেন রূহানী সাহাবা। যা সাহাবায়ে কেরামের শানে বেআদবীর শামিল।
যদিও ব্যাখ্যা সাপেক্ষে বলার সুযোগ আছে। কিন্তু এমন বিতর্কিত এবং স্পর্শকাতর পরিভাষা পরিহার করাই যুক্তিসঙ্গত। তাই এ পরিভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই উচিত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com