প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / মিরাস বন্টনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির করণীয় কি?

মিরাস বন্টনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির করণীয় কি?

প্রশ্ন

মোহতারাম,

আস্ সালামু আলাইকুম

পিতার মৃত্যুর পর পরিবারের কার উপর (বড় ভাই/বড় বোন) উত্তোরাধিকারদের হক বন্টন (সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা) করার দায়িত্ব পড়ে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির করণীয় কি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত বন্টন কাজে গড়িমশি বা ইচ্ছা কৃত দেরি করার অপরাধ (গোনাহ) বিষয়ে শরিয়াহ কি বলে।

জানিয়ে বাধিত করবেন।

কে এইচ জামান

মহাখালি, ঢাকা

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়িত্বশীল বলা হয়নি। তবে তাদের মাঝে যদি কোন নাবালেগ থাকে, তাহলে উক্ত নাবালেগের প্রাপ্ত অংশের মাঝে কারো হস্তক্ষেপ করা জায়েজ নয়।

إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا (10

অনুবাদ- যারা এতিমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করে এবং সত্বরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে। {সূরা নিসা-১০}

وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّى يَبْلُغَ أَشُدَّهُ وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا (34) وَأَوْفُوا الْكَيْلَ إِذَا كِلْتُمْ وَزِنُوا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِيمِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا (35

অনুবাদ- আর এতিমদের মালের কাছেও যেয়ো না একমাত্র তার কল্যাণ কামনা ছাড়া; সংশ্লিষ্ট  ব্যক্তির যৌবনে পদার্পণ করা পর্যন্ত এবং অঙ্গীকার পূর্ণ কর। নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। {সূরা বনী ইসরাঈল-৩৪}

আর যদি কোন হকদার তার অংশ নিতে চায়, তাহলে প্রাপ্ত বয়স্ক আত্মীয়দের উপর দায়িত্ব হল, সম্পদ বন্টন করে দেয়া। এতে গড়িমসি করা কিছুতেই উচিত নয়। পারিবারিকভাবে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হলে, তার উচিত প্রথমে কোন প্রাজ্ঞ মুফতীর কাছ থেকে সম্পদ আত্মীয় স্বজনের মাঝে কে কতটুকু অংশ পাবে তা পরিস্কার ভাষায় জেনে নেয়া। তারপর সকল আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে, প্রয়োজনে গ্রামের কোন মুরুব্বীকে সাথে নিয়ে সবার মাঝে শরীয়ত নির্ধারিত অংশ সূচারুভাবে বন্টন করে দেয়া।

অযথা গড়িমসি করা বা কাউকে বঞ্চিত করার মানসিকতা খুবই গর্হিত ও গোনাহের কাজ। হাদীসে এ ব্যাপারে কঠোর ধমকী এসেছে।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّهُ مِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

অর্থ- হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ওয়ারিসকে মিরাস থেকে বঞ্চিত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে পাওয়ার মিরাস থেকে বঞ্চিত করবেন। {ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২৭০৩, সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-২৮৫}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

নামাযে ক্রন্দন করা এবং চোখ বন্ধ করে নামায পড়ার হুকুম কী?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারাম, নামাযের মাঝে জাহান্নামের আয়াত শুনে বা পড়ে যদি কান্না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস