প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / মৃত্যুর পূর্বে সমুদয় সম্পদ সন্তানদের জন্য না রেখে খরচ করে ফেলার হুকুম কি?

মৃত্যুর পূর্বে সমুদয় সম্পদ সন্তানদের জন্য না রেখে খরচ করে ফেলার হুকুম কি?

প্রশ্ন

জনাব মুফতি সাহেব,

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারীনি নিম্নোক্ত বিষয়ে ফাতওয়া জানার জ্ন্য আপনার স্মরণাপন্ন হলাম। আমার বর্তমান বয়স ৬০-র উর্ধে । আমার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। আমার সন্তানরা স্বাবলম্বী।  আমার ইচ্ছা মৃত্যুর পূর্বেই আমি আমার সম্পত্তি বিক্রি করে কিছু অংশ আমার প্রয়োজনে খরচ করব এবং বাকী অংশ দান-সদকা করব। এ কাজ করা আমার জন্য ঠিক হবে কিনা শরয়ী আলোকে ফাতওয়া দিলে উপকৃত হব?

নুজহাত আরা

ঢাকা

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ব্যক্তি মৃত্যু পথযাত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত তার মালিকানাধীন সমস্ত সম্পদের একচ্ছত্র মালিক হয়ে থাকে। এতে শরীয়ত সম্মত যাচ্ছেতাই হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে। যাকে ইচ্ছে তাকে দান করা, যাকে ইচ্ছে তাকে হাদিয়া দেয়া এসব কিছুই তার ইচ্ছেধীন।

এক হল কাজটি সম্পন্ন হওয়া আরেক হল কাজটি জায়েজ হওয়া।

মৃত্যু পথযাত্রী হওয়ার আগে ব্যক্তি তার মালিকানাধীন সম্পদে ইচ্ছেমত হস্তক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু যদি এ হস্তক্ষেপ দ্বারা কোন দরিদ্র ওয়ারিসকে বঞ্চিত করা বা নিয়মতান্ত্রিক ওয়ারিসদের অহেতুক বঞ্চিত করা উদ্দেশ্য হওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আপনি গোনাহগার হবেন। কিন্তু আপনি গোনাহগার হলেও উক্ত সম্পদ আপনার ইচ্ছেমত খরচ করার পর ওয়ারিসীনদের তাতে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই।

তবে যদি কাউকে বঞ্চিত করা উদ্দেশ্য নয়, বরং সন্তানরা স্বাবলম্বী হওয়ায় নিজের অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ পূর্ণ করা ও দ্বীনী কাজে সহায়তা করে সদকায়ে জারিয়ার অধিকারী হওয়ার উদ্দেশ্যে দান করে যান, তাহলে আপনি গোনাহগার হবেন না ইনশাআল্লাহ।

وفى الهندية- ولو وهب رجل شيئا لأولاده في الصحة وأراد تفضيل البعض على البعض في ذلك لا رواية لهذا في الأصل عن أصحابنا، وروي عن أبي حنيفة – رحمه الله تعالى – أنه لا بأس به إذا كان التفضيل لزيادة فضل له في الدين، وإن كانا سواء يكره وروى المعلى عن أبي يوسف – رحمه الله تعالى – أنه لا بأس به إذا لم يقصد به الإضرار، وإن قصد به الإضرار سوى بينهم يعطي الابنة مثل ما يعطي للابن وعليه الفتوى هكذا في فتاوى قاضي خان وهو المختار، – (الفتاوى الهندية، كتاب الهبة، الباب السادس في الهبة للصغير ٤/٣۹۱، رد المحتار-12/608

فى البيضاوى- والمالك هو المتصرف فى الأعيان  المملوكة كيف شاء الخ (تفسير بيضاوى، سورة الفاتحة- 1/7

বস্তুর মালিক বস্তুতে যেভাবে ইচ্ছে হস্তক্ষেপ করেতে পারে। {তাফসীরে বায়যাবী-১/৭}

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّهُ مِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

অর্থ- হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ওয়ারিসকে মিরাস থেকে বঞ্চিত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের মিরাস থেকে বঞ্চিত করবেন। {ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২৭০৩, সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-২৮৫}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

0Shares

আরও জানুন

‘সুন্দর সম্পর্ক কেন নষ্ট করে দিলা’ বলার দ্বারা কি স্ত্রী তালাক হয়ে যায়?

প্রশ্ন আস্সালামুআলাইকুম মুফতি সাহেব, এই প্রশ্ন কয়েকটা আগেও করেছিলাম, উত্তর না পেয়ে আবার করছি| ওয়াসওয়াসা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *