প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / গায়রে মুকাল্লিদদের দৃষ্টিতে ইমামে আজম রহঃ এবং গায়রে মুকাল্লিদ মাযহাবের শেষ পরিণতি

গায়রে মুকাল্লিদদের দৃষ্টিতে ইমামে আজম রহঃ এবং গায়রে মুকাল্লিদ মাযহাবের শেষ পরিণতি

লেখক– মুনাজিরে ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর ওকাড়বী রহঃ

অনুবাদঃ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

মাওলানা দাউদ গজনবী বলেনঃ আশ্চর্য ব্যাপার হল সাধারণতঃ আহলে হাদীসরা খুবই কঠোর প্রকৃতি হয়ে থাকে। ছোট ছোট বিষয়ে কঠোর সব বাক্য ব্যবহার করে থাকে। {দাউদ গজনবী-১৮}

এটাই হল নষ্ট মনের ভ্রষ্ট মানসিকতা, যাকে কুরআন বলেছে যে, وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ [١٠٤:١] তথা প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর উপর দুর্ভোগ। {সূরা হুমাজা-১} আরো ইরশাদ করেছে- وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَّهِينٍ [٦٨:١٠] তথা যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। {সূরা কলম-১০}


মাওলানা দাউদ গজনবী বলেনঃ আয়িম্মায়ে দ্বীন দ্বীনে ইসলামের যে খিদমাত করেছেন, উম্মত কিয়ামত পর্যন্ত সে ইহসান থেকে মুখ ফেরাতে পারবে না। আমাদের নিকট আয়িম্মায়ে দ্বীন সম্পর্কে যারা খারাপ ধারণা রাখে, বা তাদের ব্যাপারে কটুক্তি করে থাকে এটি তাদের গোমরাহীর নিদর্শন। আর আমার নিকট ঐ ব্যক্তির খারাপ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করার আশংকা হয়। আমাদের নিকট আয়িম্মায়ে দ্বীনের হেদায়াত ও প্রাজ্ঞতা বিষয়ে পুরো উম্মতের মাঝে ইজমা তথা ঐক্যমত্ব রয়েছে। {দাউদ গজনবী-৩৭৩}


মাওলানা দাউদ গজনবী রহঃ এর মনে আয়িম্মায়ে দ্বীনের প্রতি খুবই প্রগাঢ় মোহাব্বত ছিল। হযরত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর নাম সম্মানের সাথে নিতেন। একদিন মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক তাঁর খিদমাতে উপস্থিত ছিলেন। ইত্যোবসরে জামাতে আহলে হাদীস সংগঠনের ব্যাপারে আলোচনা শুরু হল। তখন তিনি দরদমাখা কণ্ঠে বললেনঃ মৌলবী ইসহাক! জামাতে আহলে হাদীসরা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর রূহানী বদদুআ নিয়ে বসে আছে। প্রত্যেক ব্যক্তি আবু হানীফা, আবু হানীফা বলছে। কেউ অনেক সম্মান করছে। কেউ কেউ করছে না। তাদের মাঝে একদল বলে বেড়ায় যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ নাকি মাত্র তিনটি হাদীস জানতেন। সর্বোচ্চ এগারটি হাদীস জানতেন। কেউ কেউ আবার এহসান করে বলে থাকে যে, তিনি সতের হাদীস জানতেন।
যে ব্যক্তিরা এরকম মহান ইমামের ব্যাপারে এরকম ধারণা পোষণ করে থাকে, তাদের মাঝে একতা ও ঐক্যবদ্ধতা কি করে সম্ভব? {দাউদ গজনবী-১২৭}


হযরত মুফতী মুহাম্মদ হাসান সাহেব একবার মাওলানা আব্দুল জাব্বার গজনবীর বুজুর্গীর একটি ঘটনা শুনালেন। ঘটনাটি ছিল, উমরতাসে তীলিয়া নামে একটি নামে এক মহল্লা ছিল। সেটা ছিল আহলে হাদীসদের আখড়া। সে এলাকায় আব্দুল আলী নামে এক মৌলবী ইমাম ও খতীব ছিলেন। তিনি মাদরাসায়ে গজনবীতে মাওলানা আব্দুল জাব্বার গজনবী সাহেবের কাছে পড়তেন। একবার মৌলবী আব্দুল আলী বললেনঃ “আবু হানীফা থেকেতো আমি উত্তম এবং বড়, কেননা তারতো কেবল সতেরটি হাদীস মুখস্ত ছিল। অথচ আমার তারচে অনেক বেশি হাদীস মুখস্ত আছে”।
একথা মাওলানা আব্দুল জাব্বার সাহেবের কানে একথা পৌঁছল। তিনি বুজুর্গদের খুবই সম্মান করতেন। রাগে তিনি অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। নির্দেশ দিলেন যে, “ঐ নালায়েক আব্দুল আলীকে মাদরাসা থেকে বহিস্কার করে দাও”।
যখন ঐ ছাত্রকে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়া হল, তখন মাওলানা আব্দুল জাব্বার সাহেব বললেনঃ “আমার মনে হচ্ছে এ ছেলে অচিরেই মুরতাদ হয়ে যাবে”।
মুফতী মুহাম্মদ রায়ী বলেনঃ এক সপ্তাহও অতিক্রান্ত হয়নি, ঐ ছেলে কাদিয়ানী হয়ে যায়। এ কারণে লোকেরা তাকে লাঞ্ছিত করে মসজিদ থেকে বের করে দেয়।
এ ঘটনা ঘটার পর একজন এসে মাওলানা আব্দুল জাব্বার গজনবী সাহেবকে প্রশ্ন করলেন যে, আপনি এটা কিভাবে বুঝতে পারছিলেন যে, লোকটি অচিরেই মুরতাদ হয়ে যাবে?
তিনি বললেনঃ যখন সেই ছেলের বেয়াদবীর কথা আমার কানে আসে, তখন সাথে সাথে বুখারী শরীফের ঐ হাদীস আমার মনে চলে আসে, যাতে বলা হয়েছে যে, من عاد لى وليا فقد اذنته بالحرب তথা যে ব্যক্তি আমার ওলীর বিরোদ্ধাচরণ করবে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। {হাদীসে কুদসী}
আমার দৃষ্টিতে ইমাম আবু হানীফা রহঃ ওলীআল্লাহ। যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে যুদ্ধে ঘোষণা হয়ে গেছে। তখন একথা সর্বজন বিদিত যে, যুদ্ধে প্রতিপক্ষের সবচে’ সম্মানী বস্তু ছিনিয়ে নেয়া হয়, তাই এরকম ব্যক্তির কাছে ঈমানের মত মূল্যবান বস্তু কিভাবে থাকতে পারে? {দাউদ গজনবী-১৯১-১৯২}


এমনিভাবে উমরতাসে সর্ব প্রথম আহলে হাদীস মতবাদ চালুকারী ডেপুটি কালেক্টর হাফেজ মুহাম্মদ ইউসুফও মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর ভক্ত ও অনুসারী হয়ে যায়। {এশাআতুস সুন্নাহ-২১/১১৪}


মাওলানা মাহবুব আহমাদ সাহেব উমরতাসরী লিখেনঃ আমার জানা মতে উমরতাসে যতগুলো নতুন মুরতাদ ও খৃষ্টান হয়েছে, তারা সর্ব প্রথমত গায়রে মুকাল্লিদ ছিল। {আল কিতাবুল মাজীদ-৮}


মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম সাহেব শিয়ালকুটির মনেও একবার ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বিষয়ে কিছুটা কু ধারণা চলে এসেছিল। তিনি নিজেই লিখেন যে, “আমি হযরত ইমাম সাহেব রহঃ এর ব্যাপারে গবেষণা শুরু করলাম। কিছু কিতাবের কিছু বর্ণনা আমাকে দ্বিধায় ফেলে দেয়। এর প্রতিক্রিয়া এরকম হয় যে, দ্বিপ্রহরের যে সময় সূর্য তার পূর্ণ বিকিরণ পৃথিবীর দিকে নিক্ষিপ্ত করে থাকে, সে সময় দেখলাম একে একে আমার সামনে তা আঁধারে ঢেকে গেল। এ যেন ظلمات بعضها فوق بعض তথা একের উপর এক অন্ধকার {সূরা নূর-৪০} এর সঠিক দৃষ্টান্ত। সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা আমাকে মনে করিয়ে দিলেন যে, এটা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর প্রতি খারাপ ধারণার ফল। এ থেকে ইস্তিগফার পড়। আমি কালিমা বারবার পড়তে লাগলাম। ঐ অন্ধকার তৎক্ষণাৎ বিদূরিত হয়ে গেল। এর বদলে এমন আলো বিচ্ছুরিত হতে লাগল যে, দ্বিপ্রহরের আলোর মিছিল যেন মেতে উঠেছে।

সে সময় থেকে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর প্রতি আমার বিশ্বাস ও আস্থা অনেক বেড়ে যায়। তারপর থেকে যারা ইমাম আবু হানীফা রহঃ সম্পর্কে খারাপ ধারণা রাখে তাদের বলতাম যে, আল্লাহ তাআলা মিরাজ অস্বিকারকারীদের ব্যাপারে রাসূল সাঃ এর পক্ষ থেকে বলেনঃ أَفَتُمَارُونَهُ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ [٥٣:١٢] তথা তোমরা কী বিষয়ে বিতর্ক করবে যা সে দেখেছে? {সূরা নজম-১২}

আমি ইমাম আবু হানীফা রহঃ সম্পর্কে যা পরিস্কারভাবে যা জানি, তোমরা তা নিয়ে অযথা বিতর্ক করে কোন লাভ নেই।
এবার আমি আমার লেখাটি একথার উপর শেষ করতে করছি, এবং পাঠকদের কাছে এ আশা রাখি যে, তারা যেন বুজুর্গানে দ্বীন বিশেষ করে আয়িম্মায়ে দ্বীনের ব্যাপারে সুধারণা রাখে। বেআদবীও কটুক্তি থেকে বিরত থাকে। কেননা, এর পরিণাম উভয় জাহানে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে।

نسئل الله الكريم حسن الظن والتأدب مع الصالحين ونعوذ بالله العظيم من سوء الظن بهم فانه عرق الرفض والخروج وعلامة المعاقين ولنعم ما قيل-

অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে বুজুর্গদের সাথে সুধারণা এবং আদব রাখার তৌফিক কামনা করি। আর আশ্রয় পার্থনা করি খারাপ ধারণা থেকে। কেননা, এটা রাফেজী ও খারেজীদের স্বভাব এবং ধর্মদ্রোহীতার আলামত। কতইনা সুন্দর ভাষায় কবি বলেছেন-
از خدا خواہیم توفیق ادب
بے ادب محروم شد از لطف رب
হে আল্লাহ আমাকে দাও আদব!
রবের দয়া থেকে বঞ্চিত হয় বেআদব। {তারীখে আহলে হাদীস-৭৯}


মাওলানাা মুহাম্মদ ইবরাহীম সাহেব শিয়ালকুটি বলেনঃ মরহুম মাওলানা সানাউল্লাহ উমরতাসরী আমাকে বলেছেন যে, “যে সময় আমি কানপুরে মাওলানা আহমদ হাসান কানপুরী সাহেবের কাছে “মানতেক” পড়তাম, সে সময় আমি হানাফীদের সাথে হাসি মজাক করতাম। ফলে সেখানকার লোকেরা আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উত্থাপন করে যে, আমরা আহলে হাদীসরা আয়িম্মায়ে দ্বীনদের ব্যাপারে কটুক্তিমূলক মন্তব্য করে থাকি। আমি এ ব্যাপারে মিঞা সাহেব দেহলবী সাহেব তথা নজীর হুসাই কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে, তিনি আমাকে বললেনঃ ‘যারা আয়িম্মায়ে দ্বীনদের ব্যাপারে বেআদবী করে থাকে, তাদের আমরা ছোট রাফেজী মনে করি’। এছাড়া বড় মিঞা সাহেব তার মিয়ারুল হকের মাঝে ইমাম আজম রহঃ এর কথা এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, “আমাদের ইমাম, আমাদের নেতা আবু হানীফা নুমান রহঃ আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা ও মাগফিরাতের চাদর দিয়ে ঢেকে দিন”।
এছাড়া তিনি আরো বলেনঃ “ইমাম সাহেবের মুজতাহিদ হওয়া এবং সুন্নতের অনুসারী হওয়া এবং মুত্তাকী হওয়া ও পরহেযগার হওয়াই যথেষ্ট। এছাড়া আয়াতে কারীমা ان اكرمكم عند الله اتقاكم [তথা তোমাদের মাঝে ঐ ব্যক্তি অধিক সম্মানী যিনি অধিক মুত্তাকী] তার মর্যাদাকে সমুচ্চ করেছে। {হাশিয়ায়ে তারীখে আহলে হাদীস-৮০}


মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম সাহেব শিয়ালকুটি বলেনঃ “আমি জানি যে, আমি গোনাহগার। তবে এ বিশ্বাস করি এবং আমার উস্তাদে মুহতারাম মাওলানা আবু আব্দুল্লাহ গোলাম হাসান শিয়ালকুটি রহঃ এবং মাওলানা হাফেজ আব্দুল মান্নান রহঃ মুহাদ্দেসে ওজীরাবাদীর সোহবতে এ বিশ্বাস মনে বদ্ধমূল হয়েছে যে, বুজুর্গানে দ্বীন বিশেষ করে মুজতাহিদ ইমামদের প্রতি সুধারণা রাখা বরকত পাওয়ার কারণ হয়ে থাকে। {তারীখে আহলে হাদীস-৭৯}


মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম সাহেব হাফেজ আব্দুল মান্নান সাহেব ওজীরাবাদীর ব্যাপারে লিখা হয়েছে যে, তারা আয়িম্মায়ে দ্বীনদের খুব সম্মান করতেন। এ হিসেবে তারা বলতেন যে, যে ব্যক্তি আয়িম্মায়ে দ্বীন বিশেষ করে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর সাথে বেআদবী করে, তার মৃত্যু ভালভাবে হয় না। {তারীখে আহলে হাদীস-৪২৮}

১০
নাঈম বিন হাম্মাদ খুযায়ী ইমাম বুখারী রহঃ এর উস্তাদদের একজন। তিনি হানাফীদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কিতাব লিখেছেন। এ লোক ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর প্রতি এতই বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ছিল যে, আবু হানীফা রহঃ এর বিরুদ্ধে মিথ্যা হাদীসও বানিয়েছিল। তাছাড়া ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ব্যাপারে অনেক বানোয়াট ঘটনা রটিয়েছিল। যে সব ক’টি ছিল মিথ্যাচার। {দ্রষ্টব্যঃ মিযানুল ই’তিদাল-২/৫৩৬, তাহযীবুত তাহযীব-১/৪৬৩, তারীখে আহলে হাদীস-৭০, দাউদ গজনবী-৩৭৮}

মাওলানা শিয়ালকুটি সাহেব বিস্তারিত আলোচনা করে লিখেন যে, নাঈমের ব্যক্তিত্ব এমন নয় যে, তার কথার উপর নির্ভর করে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বুজুর্গ ব্যক্তির ব্যাপারে খারাপ ধারণা করা যাবে। যে ইমাম আজম রহঃ কে হাফেজ শামসুদ্দীন জাহাবী রহঃ এর মত জারাহ তা’দীলের বিখ্যাত ইমামও ইমাম আজম রহঃ এর নাম সম্মান ও ইজ্জতের সাথে নিয়ে থাকেন।
হাফেজ ইবনে কাসীর “বেদায়া” কিতাবে ইমাম আজম রহঃ এর বিস্তর প্রশংসা করে লিখেনঃ احد الأئمة الإسلام والسادة الأعلام واحد اركان العلماء واحد الأئمة الأربعة أصحاب المذاهيب المتبوعة الخ-

এছাড়া ইমাম ইয়াহইয়া বিন মাঈন রহঃ থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেনঃ “আবূ হানীফা সেক্বা ছিলেন। তিনি সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। মিথ্যায় অভিযুক্ত ছিলেন না”।
আব্দুল্লাহ বিন দাউদ আল খারীবী রহঃ থেকে বর্ণিত যে, তিনি লোকদের বলতেনঃ “তোমরা স্বীয় নামায শেষে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর জন্য দুআ করিও। কেননা, তিনি ও ফিক্বহ ও সুন্নতকে সংরক্ষিত করেছেন। {আলবিদায়া ওয়াননিহায়া-১০৭, তারীখে আহলে হাদীস}
নাঈম বিন হাম্মাদকে গ্রেফতার করে জেলে নিক্ষেপ করা হয়। জেলেই তার মৃত্যু হয়। তাকে জানাযা ও দাফন ছাড়াই ফেলে দেয়া হয়। {তারীখে বাগদাদ-৩১৪১}
এই হল ইমামে আজমের সাথে বেআদবীর ফল। জানাযা ও কাফন-দাফন পর্যন্ত নসীবে জুটেনি।

১১
বুজুর্গ আলেম হযরত মাওলানা সাইয়্যেদ তাজাম্মুল হুসাইন বাহারী রহঃ লিখেনঃ এক গায়রে মুকাল্লিদ মৌলবী মুহাম্মদ ইবরাহীম সাহেব আরয়ী মক্কা মুকাররমায় গেল। মাওলানা সাইয়্যেদ শাহ মুহাম্মদ আলী মুঙ্গেরী রহঃ তখন সেখানে ছিলেন । মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম বললঃ রাসূল সাঃ এর মজলিস আমার স্বপ্নে পরিদৃষ্ট হয়। সে মজলিসে ইমাম আবু হানীফা রহঃ ও উপস্থিত ছিলেন। রাসূল সাঃ আমাকে বললেনঃ তুমি অযথাই ইমাম আজম আবু হানীফা রহঃ এর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করে থাক। এখনি এর জন্য মাফ চাও। আমি তৎক্ষনাৎ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর পা ধরে মাফ চাইলাম। {কামালাত-১৭}

১২
এক গায়রে মুকাল্লিদ ছাত্র দারুল উলুম দেওবন্দে পড়তো। সে ইমাম মুহাম্মদ রহঃ এর শানে বেআদবীমূলক কথা বলল। তার কথা শুনে অন্য ছাত্ররা তাকে ধরে খুব প্রহার করল। এ ঘটনার অভিযোগ মাওলানা নজীর আহমাদ সাহেবের কাছে উপস্থাপন করা হল। তিনি যখন শুনলেন ছেলেটি ইমাম মুহাম্মদ রহঃ সম্পর্কে কুৎসা বলেছে, ফলে অন্য ছাত্ররা রেগে গেছে, তখন তিনি বললেন যে, এ ছেলে একটি ফালতু কাজ করেছিল। {দাউদ গজনবী-৩৮০}

১৩
মাওলানা নজীর আহমদ সাহেবের সামনে বসে এক গায়রে মুকাল্লিদ হযরত ইবনে হুমাম রহঃ এর ব্যাপারে সমালোচনা করছিল। নজীর সাহেব ছেলেটিকে ধমক দিয়ে বললেনঃ “তিনি অনেক বড় আদমী ছিলেন। আমাদের সে মুখ নেই, যা দিয়ে তার সমালোচনা করবো”। {দাউদ গজনবী-৩৮০}
الناس فى ابى حنيفة حاسد او جاهل তথা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর শানের ব্যাপারে যারা জানতো তাদের একদল ছিল হিংসুক। আর আরেকদল ছিল অজ্ঞ। {দাউদ গজনবী-৩৭৮}

আরও জানুন

অন্যের হক আমার কাঙ্ক্ষিত পথ রুদ্ধ করবে না তো?

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাদাত হুসাইন নশ্বর এই পৃথীবিতে চলতে গেলে যেসকল বস্তুর আমরা মুখাপেক্ষী হই তন্মধ্যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস