প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
ইমাম ২য় সাজদাহ দিতে ভূলে গেলে, মুক্তাদী কর্তৃক লুকমা দেয়ার বিধান কি? উভয় সাজদার মাঝে বৈঠকে সর্বাধিক কতক্ষণ বিলম্ব করার অবকাশ আছে? এক্ষেত্রে ইমামের কতটুকু বিলম্বে মুক্তাদীগন ইমামকে লুকমা দিতে পারবেন? মেহেরবানী করে হাওয়ালা সহ জানাবেন!
আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করবেন! (ইন শা-আল্লাহ)
বিনীত-
আব্দুল হালীম
চুয়াডাঙ্গা সদর।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামায ফাসিদ বা মাকরূহ হবে এমন কোন কাজ ইমাম যদি ভুলে করতে থাকে, তখন মুক্তাদী ইমামকে তাসবীহ বা তাকবীর বলে লুকমা দেয়া জরুরী।
দুই সেজদার মাঝখানে বসে থাকার নির্দিষ্ট কোন সীমারেখা নেই। একাকি নামায পড়লে যতক্ষণ ইচ্ছে দুই সেজদার মাঝখানে বসে থাকতে পারে। কিন্তু জামাতের ক্ষেত্রে নামাযে রাসূল সাঃ এর নির্দেশনা হল, যতটুকু হলে সাধারণ দুর্বল মুসল্লিদের জন্য আসান হয়, ততটুকু সময় বসা। তবে অবশ্যই সোজা হয়ে বসতে হবে। সোজা হয়ে বসার আগেই সেজদায় চলে যাওয়া জায়েজ নয়।
ইমামকে মুসল্লিগণ যেকোন রূকনেই তখন লুকমা দিতে পারবেন, যখন স্বাভাবিকভাবে বুঝা যাবে যে, ইমাম ফরজ বা ওয়াজিব রুকুনটি ছেড়ে দিচ্ছে। এর নির্দিষ্ট কোন সীমারেখা নেই। ইমামের স্বাভাবিক আদতের ভিত্তিতে এটি নির্ভর করে থাকে। যখন অনুভব হবে ইমাম দ্বিতীয় সেজদার কথা ভুলে গেছে তখন লুকমা দিবে।
وإن فتح على إمامه لم يكن وينوي الفتح على إمامه دون القراءة ” هو الصحيح لأنه مرخص فيه وقراءته ممنوع عنها ” (هداية، كتاب الصلاة، باب ما يفسد الصلاة وما يكره-1/136، حلبى كبيرى، فصل فيما يفسد الصلاة-440
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا أَمَّ أَحَدُكُمُ النَّاسَ، فَلْيُخَفِّفْ، فَإِنَّ فِيهِمُ الصَّغِيرَ، وَالْكَبِيرَ، وَالضَّعِيفَ، وَالْمَرِيضَ، فَإِذَا صَلَّى وَحْدَهُ فَلْيُصَلِّ كَيْفَ شَاءَ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কেউ লোকদের ইমামতী করে, তখন যেন সে নামাযকে হালকা করে পড়ে। কেননা, তাদের মাঝে ছোট বাচ্চা, বৃদ্ধ, দুর্বল ও অসুস্থ্য ব্যক্তিও থাকে। তবে যদি একাকী পড়ে তাহলে যত ইচ্ছে লম্বা করে পড়তে পারে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৬৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৯৪}
مَنْ رَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلاَتِهِ، فَلْيُسَبِّحْ فَإِنَّهُ إِذَا سَبَّحَ التُفِتَ إِلَيْهِ، وَإِنَّمَا التَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ
কেউ যদি নামাযে কোন সন্দেহযুক্ত বস্তু দেখে [ইমাম থেকে] তাহলে সে যেন তাসবীহ পাঠ করে। কেননা, যখন তাসবীহ পাঠ করা হয়, তখন সেদিকে মনোযোগ নিবিষ্ট হয়। আর তাসফীক তথা এক হাতের তালু দিয়ে অপর হাতে পিঠে আঘাত মেয়েদের জন্য নির্দিষ্ট। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৮৪, ৬৫২}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।