প্রশ্ন
মোঃ রুহুল আমীন
মোহনগন্জ, নেত্রকোনা
আমার মেয়ে সুরাইয়া ইয়াসমিন কে ২০১৬ ইং নভেম্বও মাসে আব্দুল আউয়ালের সাথে বিবাহ দেওয়া হয়। গত ১৭ই জুলাই ২০১৮ ইং থেকে আমার মেয়ের জামাই নিখোঁজ হয়। আমার বিয়াইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে বিয়াই বলে যে, তাদের সাথে ছেলের কোন যোগাযোগ নেই, তারা আশংক্ষা করছে তাদের ছেলেকে পাওনাদাররা মেরে ফেলছে ,তাই তারা আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিতে বলছে। এমতাবস্থায় আমার উপর শরিয়তের কি হুকুম, তা জানালে উপকৃত হব।
২ মোসাঃ সুরাইয়া ইয়াসমিন
পিতাঃ মোঃ রুহুল আমীন আমার স্বামী আব্দুল আউয়াল (শাওন) গত ১৭ই জুলাই ২০১৮ ইং নিখোজ হয়। আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ী আমার পিতাকে জানিয়ে দিয়েছে যে, আপনার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিন। একাকী ছবর করা আমার জন্য কষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমার উপর শরিয়তের মাছয়ালা কি , ফায়ছালা জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
১
স্বামী নিখোঁজ হবার বিষয়টি আদালতে পেশ করতে হবে। প্রথমে উক্ত লোকের সাথে বিয়ের প্রমাণ পেশ করতে হবে। তারপর তার নিরুদ্দেশ হবার সংবাদ পেশ করতে হবে।
যেহেতু স্বামীর বাবার দাবী হল, ছেলে পাওনাদারদের হাতে খুন হয়েছে। তাই আদালত যাচাই বাছাই এবং সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে স্বামীর মৃত্যুর ফায়সালা প্রদান করবেন। সেই সাথে মৃত্যুর দরুন বিয়েটি ফসখ হবার নির্দেশ জারী করবেন।
আদালত থেকে বিবাহ ফসখের নির্দেশনা পাবার পর স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত তথা চার মাস দশদিন ইদ্দত শেষে উক্ত স্ত্রীলোককে অন্যত্র বিয়ে দেয়া যাবে।
وَمُقْتَضَاهُ أَنَّهُ يَجْتَهِدُ وَيُحَكِّمُ الْقَرَائِنَ الظَّاهِرَةَ الدَّالَّةَ عَلَى مَوْتِهِ وَعَلَى هَذَا يُبْتَنَى عَلَى مَا فِي جَامِعِ الْفَتَاوَى حَيْثُ قَالَ: وَإِذَا فُقِدَ فِي الْمُهْلِكَةِ فَمَوْتُهُ غَالِبٌ فَيُحْكَمُ بِهِ، كَمَا إذَا فُقِدَ فِي وَقْتِ الْمُلَاقَاةِ مَعَ الْعَدُوِّ أَوْ مَعَ قُطَّاعِ الطَّرِيقِ، أَوْ سَافَرَ عَلَى الْمَرَضِ الْغَالِبُ هَلَاكُهُ، أَوْ كَانَ سَفَرُهُ فِي الْبَحْرِ وَمَا أَشْبَهَ ذَلِكَ حُكِمَ بِمَوْتِهِ؛ لِأَنَّهُ الْغَالِبُ فِي هَذِهِ الْحَالَاتِ …………. لَكِنْ لَا يَخْفَى أَنَّهُ لَا بُدَّ مِنْ مُضِيِّ مُدَّةٍ طَوِيلَةٍ حَتَّى يَغْلِبَ عَلَى الظَّنِّ مَوْتُهُ لَا بِمُجَرَّدِ فَقْدِهِ عِنْدَ مُلَاقَاةِ الْعَدُوِّ أَوْ سَفَرِهِ الْبَحْرَ وَنَحْوَهُ إلَّا إذَا كَانَ مَلِكًا عَظِيمًا فَإِنَّهُ إذَا بَقِيَ حَيًّا تَشْتَهِرُ حَيَاتُهُ، فَلِذَا قُلْنَا إنَّ هَذَا مَبْنِيٌّ عَلَى مَا قَالَهُ الزَّيْلَعِيُّ تَأَمَّلْ (رد المحتار، كتاب المفقود، مَطْلَبٌ فِي الْإِفْتَاءِ بِمَذْهَبِ مَالِكٍ فِي زَوْجَةِ الْمَفْقُودِ-4\297، دار الفكر بيروت)
২
এছাড়া যদি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের অধিকার প্রদান করা হয়ে থাকে কাবিননামায় লিখিত আকারে বা মৌখিকভাবে। তাহলে যেসব শর্ত অনুপাতে তালাকের অধিকার প্রদান করা হয়েছে, সেসব শর্ত পাওয়া গেলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার পর ইদ্দত পালন তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হবার পর অন্যত্র বিয়ে করে নিতে পারবে।
وفي رد المحتار- وأنواعه ثلاثة : تفويض ، وتوكيل ، ورسالة وألفاظ التفويض ثلاثة : تخيير وأمر بيد ، ومشيئة . (رد المحتار-كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/452
উক্ত দু’টি পদ্ধতির যেকোন একটি গ্রহণ করার মাধ্যমে উক্ত স্ত্রীলোক অন্য স্বামী গ্রহণ করতে পারবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]