প্রচ্ছদ / ওয়াকফ/মসজিদ/ঈদগাহ / মসজিদের জন্য জমি দেবার ওয়াদা করার পর যদি না দেয় তাহলে করণীয় কি?

মসজিদের জন্য জমি দেবার ওয়াদা করার পর যদি না দেয় তাহলে করণীয় কি?

প্রশ্ন

আস্‌সালামু আলাইকুম!

জনাব মুফতী সাহেব।

আমাদের এখানে মসজিদ নিয়ে একধরনের সমস্যা চলছে। মসজিদ নির্মানের পূর্বে এক লোক মসজিদের জন্য ২ ডিসিম জায়গা রেজিস্ট্রি করে ওয়াক্‌ফ করে। এবং বলে, যদি আরো দরকার হয় তবে মসজিদের সামনে যে ২ ডিসিম জায়গা আছে, সবটুকু তিনি ওয়াক্‌ফ করবেন।

অতপর উনার ওয়াক্‌ফ করা জমিতে মসজিদ নির্মান হয়। ইদানিং মসজিদে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মসজিদ সম্পসারণের প্রয়জন হয়। তাই মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, মসজিদের সামনের জায়গাটুকু মসজিদ সম্পসারণের কাজে লাগাবে। কিন্তু জায়গার মলিক এখন তার পূর্বের কথা অনুযায়ী মসজিদের সামনের জায়গাটুকু ওয়াক্‌ফ করতে রাজি নন। তাই বিভিন্ন টাল-বাহানা পেশ করছে। সে বলে জমির প্রকৃত মালিক আমি না। মানে দখলদার হিসেবে মালিক। প্রকৃত পক্ষে জমির  সে নিজেই। মসজিদ কমিটি উনাকে মসজিদের সামনের জমি দেওয়ার কথা বললে সে বলছে, জমিটুকু আমি রেজিস্ট্রি করে দিতে পারবো না। তবে আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। চাই পুকুর কাটেন চাই বিল্ডিং দিন আমার কোন আপত্তি নেই।

এমত অবস্থায় উক্ত জমিতে মসজিদ সম্পসারণ করা যাবে কিনা। দয়া করে এর কোন সমাধান দিলে উপকৃত হব।

তাহমিম সুলতান

গাজিপুর, কালিয়াকৈর থেকে

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় দাতা লোকটি জমিন দানের ওয়াদা করেছিল। কিন্তু জমিনটি দিয়ে দেয়নি। তাই তার কাছ থেকে জোর করে জমিনটি নেয়া জায়েজ হবে না।

তবে ওয়াদা খেলাফীর কারণে লোকটি গোনাহগার হবে। লোকটিকে বুঝিয়ে জমিনটি মসজিদের অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। যদি তাতে রাজি না হয়, তাহলে জমিনটি ক্রয় করে মসজিদের অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। কিন্তু ইচ্ছেকৃত দান না করলে বা বিক্রি না করলে জবরদস্তীমূলক জমিনটি নেয়া জায়েজ হবে না।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ إِلَّا أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ ۚ [٤:٢٩

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। {সূরা নিসা-২৯}

وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ [٢:١٨٨

তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আতœসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না। {সূরা বাকারা-১৮৮}

عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : ( آية المنافق ثلاث إذا حدث كذب وإذا وعد أخلف وإذا اؤتمن خان

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি। যথা- যখন সে কথা বলে তখন মিথ্যা বলে, আর যখন ওয়াদা করে তখন তা পূর্ণ করে না, আর যখন তার কাছে আমানত রাখা হয়, তখন সে তা আত্মসাৎ করে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৫৩৬, ৩৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১০৭}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *