প্রচ্ছদ / ঈমান ও আমল / যাদু ও বিপদ মুক্তির আমল কী?

যাদু ও বিপদ মুক্তির আমল কী?

প্রশ্ন

বিপদ মুক্তির আমল কী কী? হযরত আমি অনেক বিপদগ্রস্ত। আমার শংকা হচ্ছে আমাকে কেউ যাদু করেছে। আমার কোন দুআই পূর্ণ হয় না। শুধু হতাশা আর হতাশা। এমতাবস্থায় কী কী আমল করলে আমার দুআ কবুল হবে এবং আমার প্রয়োজন পূর্ণ হবে, দয়া করে জানালে কৃতার্থ হতাম।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

এ বিষয়ে হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানব রহঃ এর লিখিত ‘আমালে কুরআনী’ বইটিতে বর্ণিত আমলগুলো করে দেখতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার উদ্দেশ্য হাসিল হবে।

উক্ত বই থেকে কয়েকটি আমল উদ্ধৃত করা হল,

সূরা নিসার ৭৫ নং আয়াত কোন জালিমের জুলুমের শিকার হলে, বেশি বেশি তিলাওয়াত করে দুআ করলে জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا

তাহাজ্জুদ নামাযের রুকুতে এ সূরা আলেইমরানের ১৯০ থেকে ২০০ আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করে দুআ করলে দুআ কবুল হয়।

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِأُولِي الْأَلْبَابِ (190) الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ (191) رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ (192) رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ (193) رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلَى رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ (194)

সূরা নিসার ৮১ ও ৮২ নং আয়াত লিখে গলায় টানালে বা পাত্রে লিখে তা যাদুগ্রস্তকে খাওয়ালে যাদুর প্রতিক্রিয়া নষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَى مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ (81) وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ (82)

সূরা আম্বিয়ার ৮৩ এবং ৮৭ নং আয়াত বেশি বেশি তিলাওয়াতে বিপদমুক্তি মিলে।

أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ (83)

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ (87)

নিজের প্রয়োজন পূর্ণ হবার জন্য একটি কাগজে লিখবে যে, بسم الله الرحمن الرحيم، من العبد الذليل الى الرب الجليل، رب انى مسنى الضر وانت ارحم الرحمين তারপর এটিকে জারি পানিতে ফেলে পড়বে-

 اللهم بحمد واله الطيبين والطاهرين وصحبه المرضين اقض حاجتى يا اكرم الاكرمين তারপর নিজের প্রয়োজনের কথা বলবে।

বিসমিল্লাহ বার হাজার বার পড়বে। এক হাজার বার পড়ে দুই রাকাত নামায পড়বে। তারপর আবার এক হাজার পড়ে আবার দুই রাকাত পড়বে। এভাবে বার হাজার বার বিসমিল্লাহ পড়ে নামায পড়ে দুআ করবে। ইনশাআল্লাহ প্রয়োজন পূর্ণ হবে।

বিঃদ্রঃ

উপরোক্ত নিয়মগুলো কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত কোন পদ্ধতি নয়। কেবলি অভিজ্ঞতালব্ধ বিষয়। যেমন ডাক্তারী ঔষধ একটি অভিজ্ঞতালব্ধ বিষয়। তেমনি কুরআনী আয়াত ও হাদীসে বর্ণিত দুআ দরূদ দিয়ে চিকিৎসা বা তদবীর করাও একটি অভিজ্ঞতালব্ধ বিষয়। এখানে কুরআন ও হাদীসের কোন বর্ণনায় তা আছে তা খুঁজতে যাওয়া নিষ্প্রয়োজন।

তাবীজ ঝাড়ফুক ইত্যাদি  বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে পড়ুন-

তাবীজ-তামীমা ও ঝাড়ফুঁকঃ কী বলে শরীয়ত? (১ম পর্ব)

তাবীজ-তামীমা ও ঝাড়ফুঁকঃ কী বলে শরীয়ত? (২য় পর্ব)

তাবীজ-তামীমা ও ঝাড়ফুঁকঃ কী বলে শরীয়ত? (শেষ পর্ব)

 

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

আজানের সময় বা খানা খাওয়া ও বাথরুমে গমণ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় মাথায় কাপড় রাখার হুকুম কী?

প্রশ্ন আমার চারটি বিষয়ে জানার ছিলো : ________ ১, বাথরুমে অবস্থানকালীন সময়ে মাথায় কাপড় দেওয়ার …