প্রচ্ছদ / আদব ও আখলাক / খানা খাওয়ার আগে লবন চেখে দেখা ও খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া কি সুন্নত?

খানা খাওয়ার আগে লবন চেখে দেখা ও খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া কি সুন্নত?

প্রশ্ন

From: আফহাম সাফির
বিষয়ঃ খাওয়ার আদব সম্পর্কে

প্রশ্নঃ
আস্ সালামু আলাইকুম,
মুফতী সাহেব,
খানা খাওয়ার আগে লবন চেখে দেখা ও খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া কি সুন্নত? দলিলসহ উত্তর দিলে খুবই উপকৃত হব।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

খানার আগে লবন চেখে দেখা সম্পর্কিত একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু তা নিতান্তই দুর্বল। যা দিয়ে সুন্নত প্রমাণ করা দুস্কর। তাই লবন দিয়ে খানা শুরু করাকে সুন্নত বলা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।

তবে ফিক্বহের কিতাবে খানার শুরুতে লবন খাওয়াকে মুস্তাহাব বা সুন্নত বলা হয়েছে।

তাই আদব হিসেবে আমল করা যেতে পারে।কিন্তু হাকীকী সুন্নত বলাটা সমীচিন নয়।

আর খানার শেষে মিষ্টি খাওয়া সুন্নত বলা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খানা খাওয়ার ক্ষেত্রে বিলাসিতা করার কোন সুযোগ ছিল না।

 

কখনো পেট ভরে খানা জুটতো না। মাসের পর মাস বাড়িতে চুলাই জ্বলতো না। তখন খেজুরই হতো একমাত্র সম্বল। আর খেজুরতো মিষ্টি। সেই হিসেবে অনেকে হয়তো খানার পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নত বলে থাকেন। কিন্তু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানা খাওয়ার পর মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য খেয়েছেন মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায় না। বরং খেজুর দিয়ে খানা সেরেছেন মর্মে বর্ণনা এসেছে।

তাই খানার শেষে মিষ্টি ভক্ষণ করাকে সুন্নত বলা ঠিক নয়।

عَنْ عَلِيٍّ أَنَّهُ قَالَ: ” مَنِ ابْتَدَأَ غَدَاءَهُ بِالْمِلْحِ، أَذْهَبَ عَنْهُ سَبْعِينَ نَوْعًا مِنَ الْبَلَاءِ ” (شعب الإيمان للبيهقى-5\103، رقم-5952، او 5553)

عَلِيّ بن أبي طَالب مَرْفُوعا: يَا عَلِيُّ عَلَيْكَ بِالْمِلْحِ فَإِنَّهُ شِفَاءٌ مِنْ سَبْعِينَ دَاءً الْجُذَامُ وَالْبَرَصُ وَالْجُنُونُ: لَا يَصِّحُ وَالْمُتَّهَم بِهِ عَبْد اللَّه بْن أَحْمَد بْن عَامر أَوْ أَبُوه فَإِنّهما يرويان نُسْخَة عَنْ أَهْل الْبَيْت كلهَا بَاطِلَة (اللآلى المصنوعة فى الأحاديث الموضوعة للسيوطى، كتاب الأطعمة-2\179)

من السنة أن يبدأ بالملح، ويختم بالملح (كتاب الكراهية-6\34، رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة-9\491، خلاصة الفتاوى، كتاب الكراهية، الفصل الخامس فى الأكل-4\360)

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كَانَ يَأْتِي عَلَيْنَا الشَّهْرُ مَا نُوقِدُ فِيهِ نَارًا، إِنَّمَا هُوَ التَّمْرُ وَالمَاءُ، إِلَّا أَنْ نُؤْتَى بِاللُّحَيْمِ»

আয়িশাহ (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের উপর দিয়ে মাস কেটে যেত, আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার) আগুন জ্বালাতাম না। আমরা কেবল খুরমা ও পানির উপর চলতাম। তবে যৎ সামান্য গোশ্ত আমাদের নিকট এসে যেত। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৪৫৮, ইফাবা-৬০১৪]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামিয়া ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …