প্রচ্ছদ / আজান ও ইকামত / আজানে মুয়াজ্জিন যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলে তখন দরূদ পড়া যাবে কী?

আজানে মুয়াজ্জিন যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলে তখন দরূদ পড়া যাবে কী?

প্রশ্ন

From: Md. Abu Abdullah Aumi
বিষয়ঃ Azaner somoy Muhammad (Sm) er proti dorud pora bishoyok

প্রশ্নঃ

আজানের সময় মুয়াজ্জিন যখন বলে “ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” তখন কি রাসূল সাঃ এর প্রতি পবিত্র দরূদ শরীফ পড়তে হয়?

যদি না পড়তে হয়, তবে কেন পড়তে হয় না? একটু ব্যাখ্যা করবেন দয়া করে।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

না, দরূদ শরীফ পড়তে হয় না। কারণ, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে আজানের সময় আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলার সময় দরূদ পড়া প্রমাণিত নয়।

সেই সাথে আজানের মাঝে দরূদ পড়ার কথা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়।

আজান যেভাবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবাগণ রাঃ থেকে প্রমাণিত সেভাবেই দিতে হবে। এর চেয়ে অতিরিক্ত করা দ্বীনের মাঝে অতিরঞ্জন হবে। যা জায়েজ নয়।

যিনি আজান শুনবেন, তিনি আজানের হুবহু শব্দ দোহরাবে এ মর্মেই হাদীস এসেছে। যদি এ সময় দরূদ পড়ার বিধান থাকতো, তাহলে হাদীসে তা বর্ণনা করা হতো। দরূদের কথা না আসাই প্রমাণ করে, এ সময় দরূদ পড়ার বিধান শরীয়ত সম্মত নয়। বরং শরয়ী বিধানে সংযোজন। যা বিদআত হিসেবে পরিত্যাজ্য হবে।

عن أبي سعيد الخدري أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قالإذا سمعتم النداء فقولوا مثل نما يقول المؤذن

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ  যখন তোমরা আজান শোন! তখন তা’ই বল যা মুয়াজ্জিন বলে। তথা আজানের জবাব দাও। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৮৭৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫২২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২০৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৭২০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১৬৩৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৭৮৪}

عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى مُعَاوِيَةَ فَنَادَى الْمُنَادِي، فَقَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ. فَقَالَ مُعَاوِيَةُ: ” اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ. قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ. قَالَ: وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ. قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ. قَالَ: وَأَنَا أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ ” قَالَ يَحْيَى: وَأَخْبَرَنِي بَعْضُ أَصْحَابِنَا أَنَّهُ لَمَّا قَالَ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، ثُمَّ قَالَ مُعَاوِيَةُ: هكذا سَمِعْتُ نَبِيَّكُمْ يَقُولُ

ঈসা বিন তালহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মুয়াবিয়া রাঃ এর দরবারে হাজির হলাম। তখন মুয়াজ্জিন আজান দিচ্ছিল। মুয়াজ্জিন বলছিল “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। তখন মুয়াবিয়া রাঃ বলেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। মুয়াজ্জিন বলল, “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। তখন মুয়াবিয়া রাঃ বললেন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। মুয়াজ্জিন বলল, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। মুয়াবিয়া রাঃ বললেন, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ।

ইয়াহইয়া বলেন, আমাকে কতিপয় সাহাবাগণ জানিয়েছেন যে,মুয়াজ্জিন যখন হাইয়্যা আলাস সালাহ বলেন, তখন তিনি বলতেন লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ”। তারপর মুয়াবিয়া রাঃ বলেন, এভাবে আমি তোমাদের নবীকে (আজানের জবাবে) বলতে শুনেছি। [সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১২৩৮, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪১৪, আলমু’জামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-৭৩৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৯২৮]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …