প্রশ্ন
নাম-মুহাম্মদ ওসমান গনি।।জেলা-চট্রগ্রাম।।প্রশ্ন-আমাদের দেশে দেখা যাই বাইয়াত করানোর ক্ষেত্রে পীর সাহেব গণ কাপড়ের সাহায্য নিয়ে থাকেন।।বাইয়াত শরীয়তের একটি বিষয়।।তাই আমার প্রশ্ন বাইয়াতের এ পদ্ধতি রাসুল(সা) থেকে প্রমানিত কিনা? নাকি এইটা বিদআত? বিষয়টি জানাবেন দয়া করে।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
রাসূল সাঃ থেকে হাত ধরে বাইয়াত করানো প্রমাণিত। কাপড় দিয়ে প্রমাণিত নয়। যেহেতু মানুষ বেশি থাকায় সবার হাত ধরা সম্ভব নয়। তাই এভাবে কাপড় দিয়ে বাইয়াত করানো হয়ে থাকে। হুবহু কাপড় দিয়ে বাইয়াত নেয়াকে সুন্নত মনে করলে বিদআত হবে। বাকি বাইয়াত করানো সুন্নত। হাত ধরে বাইয়াত করানো সুন্নত। সরাসরি কাপড় দিয়ে বাইয়াত করানোর কোন প্রমাণ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
আর মহিলাদের বাইয়াত করানোর ক্ষেত্রে মৌখিক বাইয়াত করাতে হবে। হাত ধরে বাইয়াত করানো হারাম।
حَدَّثَنِي الْحَبِيبُ الْأَمِينُ، أَمَّا هُوَ فَحَبِيبٌ إِلَيَّ، وَأَمَّا هُوَ عِنْدِي، فَأَمِينٌ عَوْفُ بْنُ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيُّ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تِسْعَةً أَوْ ثَمَانِيَةً أَوْ سَبْعَةً، فَقَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» وَكُنَّا حَدِيثَ عَهْدٍ بِبَيْعَةٍ، فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» قَالَ: فَبَسَطْنَا أَيْدِيَنَا وَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَعَلَامَ نُبَايِعُكَ؟ قَالَ: «عَلَى أَنْ تَعْبُدُوا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَالصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ، وَتُطِيعُوا – وَأَسَرَّ كَلِمَةً خَفِيَّةً – وَلَا تَسْأَلُوا النَّاسَ شَيْئًا» فَلَقَدْ رَأَيْتُ بَعْضَ أُولَئِكَ النَّفَرِ يَسْقُطُ سَوْطُ أَحَدِهِمْ، فَمَا يَسْأَلُ أَحَدًا يُنَاوِلُهُ إِيَّاهُ
আউফ বিন মালিক আশজাঈ রাঃ বলেন, আমাদের সাত বা আট নয়জন লোকের উপস্থিতিতে রাসূল সাঃ বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? অথচ আমরা ইতোপূর্বে বাইয়াত গ্রহণের সময় তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরাতো আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। তিনি আবার বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ইতোপূর্বে বাইয়াত হয়েছি। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরাতো ইতোপূর্বে আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। এখন আবার আপনার কাছে কিসের বাইয়াত নিবো? তিনি বললেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, এবং তার সাথে কাউকে শরীক করো না, পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় কর এবং আল্লাহর আনুগত্ব কর। তিনি আর একটি কথা বললেন চুপে চুপে। তা হল-লোকের কাছে কোন কিছুর জন্য হাত পাতবে না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমি দেখেছি, সেই বাইয়াত গ্রহণকারী দলের কারো কারো উটের পিঠে থাকা অবস্থায় হাত থেকে চাবুক পরে গেছে কিন্তু সে কাউকে তা তুলে দিতে অনুরোধ করেনি, বরং সে নিজেই নিচে নেমে তুলে নিয়েছে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১০৪৩}
عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ، عَنْ بَيْعَةِ النِّسَاءِ، قَالَتْ: مَا مَسَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ امْرَأَةً قَطُّ، إِلَّا أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهَا، فَإِذَا أَخَذَ عَلَيْهَا، فَأَعْطَتْهُ، قَالَ: «اذْهَبِي، فَقَدْ بَايَعْتُكِ»
উরওয়া থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহিলাদের বাইয়াত বিষয়ে আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেছেন, রাসূল সাঃ কখনোই মহিলাদের হাত স্পর্শ করেননি। বরং তিনি মুখে মুখে বাইয়াত নিয়ে নিতেন। বাইয়াত হয়ে গেলে বলতেন, যাও! তোমাকে আমি বাইয়াত করে নিয়েছি। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৮৬৬}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।