প্রচ্ছদ / জিহাদ ও কিতাল / প্রসঙ্গ মাওলানা সাদ সাহেবের বয়ানঃ জলপথের মুজাহিদের জান কি আল্লাহ তাআলা কবচ করেন?

প্রসঙ্গ মাওলানা সাদ সাহেবের বয়ানঃ জলপথের মুজাহিদের জান কি আল্লাহ তাআলা কবচ করেন?

প্রশ্ন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম। এইবার ইজতিমায় মুরুব্বিদের বলা একটি কথা নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড় চলছে। কথাটি এই রকম “যারা আল্লাহর রাস্তায় দ্বীন প্রচারের জন্য সমুদ্রে সফর করে এবং এই অবস্থায় তাদের মৃত্যু এসে যায়, তবে তাদের জান স্বয়ং আল্লাহ্‌ কবজ করেন, ফেরেশতা দিয়ে করেন না”। এই কথাটি কতোটুকু সহিহ? দলিলসহ জানাবেন ইনশা আল্লাহ্‌।

https://www.youtube.com/watch?v=fjY5oajcBSA

এই বয়ানের ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিট থেকে দেখলে ইনশা আল্লাহ্‌ কথাটি শোনা যাবে।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

হযরতের বক্তব্যটি হাদীস থেকে নেয়া। কোন মনগড়া বক্তব্য নয়।

أَبَا أُمَامَةَ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «شَهِيدُ الْبَحْرِ مِثْلُ شَهِيدَيِ الْبَرِّ، وَالْمَائِدُ فِي الْبَحْرِ كَالْمُتَشَحِّطِ فِي دَمِهِ فِي الْبَرِّ، وَمَا بَيْنَ الْمَوْجَتَيْنِ كَقَاطِعِ الدُّنْيَا فِي طَاعَةِ اللَّهِ، وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَكَلَ مَلَكَ الْمَوْتِ بِقَبْضِ الْأَرْوَاحِ إِلَّا شَهِيدَ الْبَحْرِ، فَإِنَّهُ يَتَوَلَّى قَبْضَ أَرْوَاحِهِمْ وَيَغْفِرُ لِشَهِيدِ الْبَرِّ الذُّنُوبَ كُلَّهَا، إِلَّا الدَّيْنَ وَلِشَهِيدِ الْبَحْرِ الذُّنُوبَ وَالدَّيْنَ

হজরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, নৌপথের একজন শহীদ স্থল পথের দুইজন শহীদের বরাবর। আর নৌপথে যার মাথা ঘুরে, সে সেই ব্যক্তির মতো, যে স্থল পথে রক্তে রঞ্জিত হয়। আর দুই ঢেউয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব অতিক্রমকারী আল্লাহর আনুগত্যে সারা দুনিয়া সফরকারীর সমান। আল্লাহ তায়ালা মৃত্যুর ফেরেস্তাকে সকলের জান কবজ করার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন নৌপথে শহীদের জান ব্যতিত। কেননা আল্লাহ তায়ালা নিজেই তাদের জান কবজ করেন। স্থলপথে শহীদের সকল গুনাহ তিনি মাফ করেন তার ঋন ব্যতিত। আর নৌপথে শহীদের ঋনসহ সকল গুনাহ তিনি মাফ করে দেন ।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২৭৭৮।

আলমুজামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-৭৭১৬।

জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান, হাদীস নং-১০৯০৩।

আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৫৩৩৫।

এ হাদীসটি জঈফ। আর জঈফ হাদীস ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। এতে কোন গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিসীনদের মতভেদ নেই। তাই এ হাদীসটি আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত করাতে কোন সমস্যা নেই। বাকি এর দ্বারা মূল উদ্দেশ্য যারা আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার জন্য সশস্ত্র জিহাদে অংশগ্রহণ করেন তাদের জন্য প্রযোজ্য। তারপর পর্যায়ক্রমে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের জন্য যারা সফর করেন তাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।

ফী সাবীলিল্লাহ সম্পর্কে সমৃদ্ধ জ্ঞান রাখতে পড়ুন- 

ফী সাবীলিল্লাহ শব্দের তাহকীকঃ তাবলীগী ভাইয়েরা কি এ শব্দটি গলদ ব্যবহার করছে?

দুর্বল হাদীস ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহণীয় হওয়া সম্পর্কে জানতে হলে পড়ুন- 

ফাযায়েলে আমাল ও সাদাকাতে দুর্বল হাদীস আছে তাই এ গ্রন্থটি পরিত্যাজ্য?

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. হুজুর, আপনার প্রশ্ন উওর বিভাগের লেখাগুলো গ্রন্হ আকারে বের হয়েছে কি না? হয়ে থাকলে সেটি কি ভাবে সংগ্রহ করব দয়া করে জানালে খুব উপকৃত হক। জাযাকাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *