প্রশ্ন:
From: Shamim Ahmed
Subject: others
Country : Bangladesh
Mobile :
Message Body:
বাইন তালাক হয়ে যাবার পর পূনরায় সেই স্ত্রীকে নিয়ে ঘর করার শরিয়তী বিধান কি? হালালায়ে শরীয়া জানিয়ে বাধীত করিবেন।
জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم
বাইন তালাক মূলত কয়েকভাবে হয়ে থাকে। এক তালাকে বাইন বা দুই তালাকে বাইন। কিংবা তিন তালাক হয়ে বাইন।
যদি এক তালাকে বাইন বা দুই তালাকে বাইন হয়। তাহলে শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রীর মাঝে নতুন মহর ধার্য করে দু’জন নির্ভরযোগ্য স্বাক্ষের সামনে নতুন করে বিয়ে করলেই স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল হয়ে যাবে। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে পারবে।
কিন্তু যদি তিন তালাকে বাইন হয়। যাকে শরয়ী পরিভাষায় তালাকে মুগাল্লাযা বলে। তাহলে হালালায়ে শরয়্যিয়্যাহ ছাড়া স্ত্রী হালাল হবেনা। ইসলামী শরীয়তে যা স্বাভাবিকভাবে কাম্য নয়। তাই এ থেকে বেঁচে থাকাটাই উত্তম। কেননা হাদিসের মধ্যে এসেছে যে, “হালালকারী ও যার জন্য হালাল করা হল এবং যাকে হালাল করা হল সবার উপর আল্লাহর লানত”। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৭৩৬৪)
সুতরাং এ পথে না যাওয়াই ভাল। বরং তালাক দেবার সময় শরয়ী বিধানের প্রতি খেয়াল করার মানসিকতা তৈরী করা।
তিন তালাকপ্রাপ্ত মহিলাকে যদি অন্য কোন পুরুষ বিয়ে করে। তারপর তার ঘর-সংসার করতে থাকে। অর্থাৎ তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক হয়। তারপর উক্ত স্বামী মারা যায়, বা সে কোন কারণে তালাক দেয়। তাহলে কেবল প্রথম স্বামীর জন্য উক্ত মহিলাকে বিবাহ করা জায়েজ হয়। অন্যথায় নয়।
দলিল:
فى تنوير الأبصار– و بأنت طالق بائن أو البتة….الخ واحدة بائنة ان لم ينو ثلاثا (تنوير الأبصار مع رد المحتار-4/498-500)
وفى الفتاوى الهندية-إذا كان الطلاق بائنا دون الثلاث فله أن يتزوجها في العدة وبعد انقضائها وإن كان الطلاق ثلاثا في الحرة وثنتين في الأمة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا (الفتاوى الهندية-1/472-473)
وفى مصنف ابن ابى شيبة- – حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ , عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ , عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ , عَنْ رَجُلٍ , عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ : لَعَنِ اللَّهُ الْمُحِلَّ وَالْمُحَلَّلَ لَهُ وَالْمُحَلَّلَةَ. (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب النكاح، في الرجل يُطَلِّقُ امْرَأَتَهُ فَيَتَزَوَّجُهَا رَجُلٌ لِيُحِلَّهَا لَهُ، رقم الحديث-17364)
وفيه ايضا – حَدَّثَنَا عَائِذُ بْنُ حَبِيبٍ ، عَنْ أَشْعَثَ ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ ، قَالَ : لَعَنَ اللَّهُ الْمُحَلِّلَ وَالْمُحَلَّلَ لَهُ ، وذُكِرَ أَنَّ أَبَا حَنِيفَةَ قَالَ : إِذَا تَزَوَّجَهَا لِيُحِلَّهَا ، فَرَغِبَ فِيْهَا فَلاَ بَأْسَ أَنْ يُمْسِكْهُا. (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب الرد على ابى حنيفة، نِكَاحُ الْمُحَلِّلَ، رقم الحديث-37347)
وفى موطا مالك- – حدثني يحيى عن مالك عن المسور بن رفاعة القرظي عن الزبير بن عبد الرحمن بن الزبير أن رفاعة بن سموال طلق امرأته تميمة بنت وهب في عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاثا فنكحت عبد الرحمن بن الزبير فاعترض عنها فلم يستطع أن يمسها ففارقها فأراد رفاعة أن ينكحها وهو زوجها الأول الذي كان طلقها فذكر ذلك لرسول الله صلى الله عليه وسلم فنهاه عن تزويجها وقال لا تحل لك حتى تذوق العسيلة (موطأ مالك، كتاب النكاح، باب نكاح المحلل وما أشبهه، رقم الحديث-1942)
قوله تعالى : ( فَإِنْ طَلَّقَهَا فَلا تَحِلُّ لَهُ مِنْ بَعْدُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجاً غَيْرَهُ ( . (البقرة: من الآية230)
প্রামান্য গ্রন্থাবলী:
১. সূরা বাকারা-২৩০
২. মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৭৩৬৪,৩৭৩৪৭,
৩. মুয়াত্তা মালিক, হাদিস নং-১৯৪২,
৪. ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৪৯৮-৫০০
৫. ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/৪৭২-৪৭৩
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।