কমবেশি মুলধনে শরীক ব্যক্তিদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চাইলে লাভক্ষতি কিভাবে নির্ণয় করবে?

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম। শায়েখ তিন জন ব্যাক্তি মিলে একটি ব্যাবসা পরিচালনা করতেন অনেক দিন ধরে। এখন তাদের বর্তমান অবস্থা খারাপ থাকার করনে তারা ব্যাবসাটি বন্ধ করে মুনাফা নিয়ে নিতে চাচ্ছেন।

কিন্তু ব্যাবসা যখন শুরু করেছিলেন তখন তিন জন এর মূলধন তিন রকম ছিল।

উদাহরণ কারো দু টাকা, কারো তিন টাকা, কারো পাচ টাকা। এখন শায়েখ এর কাছে আমার প্রশ্ন হলো তারা এখন তাদের মুনাফা কিভাবে ভাগ করে নিবেন। সমান তিন ভাগে নাকি যার যেরূপ মূলধন ছিল সেই হিসাব করে।

আশা করবো শায়েখ আপনার কাছে থেকে যথাযথ উওর পাব। আমি অপেক্ষা থাকবো আপনার উত্তর এর।

আমার জন্য দোয়া রাখবেন।

সৌদি আরাবিয়া রিয়াদ থেকে।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি ব্যবসা শুরু করার সময় কে কতভাগ মুনাফা পাবে তা নির্ণয় করা থাকে, তাহলে সেই হিসেবেই মুনাফা বন্টিত হবে। সমান সমান হারে নয়।

যদি সমান সমান হারে বন্টিত হবার শর্তারোপ করা হয়ে থাকে, তাহলে সমান সমান হারেই মুনাফা বন্টিত করতে হবে। যদিও মুলধন কমবেশি ছিল।

যদি মুলধন অনুপাতে মুনাফা নেবার শর্তারোপ করা হয়ে থাকে, তাহলে মুলধন অনুপাতেই মুনাফা বন্টন করতে হবে। সমান হারে নয়।

তবে একথা স্মরণ রাখতে হবে যে, ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায়, ক্ষতির ভাগ মূলধন অনুপাতেই হবে। মুনাফার শর্তানুরূপ হবে না।

যেমন মুনাফার শর্ত ছিল সবাই পাবে সমান হারে। তাহলে মুনাফা সমান হারেই পাবে যদিও টাকা একজনের দুই, একজনের তিন, একজনের পাচ।

কিন্তু ক্ষতির সময়, মুলধন অনুপাতে ক্ষতির হার নির্ণিত হবে, সমান হারে সবার ক্ষতি সমান ধরা হবে না।

যেমন প্রশ্নোক্ত উদাহরণে একজনের দুই টাকা, আরেকজনের তিন টাকা ও আরেকজনের পাঁচ টাকা মিলে হয়েছে দশ টাকা।
যদি ব্যবসায় দুই টাকা লস হয়। তাহলে থাকবে আট টাকা। সেখান থেকে দুই টাকার মালিক পাবে ১ টাকা ৬০ পয়সা। তিন টাকার মালিক পাবে ২ টাকা ৪০ পয়সা। আর পাঁচ টাকার মালিক পাবে চার টাকা।

এর মানে ক্ষতির সময় বেশি টাকার মালিকের ক্ষতি বেশি হবে, আর কম টাকার মালিকের ক্ষতি কম হবে। কিন্তু মুনাফার সময় যে শর্তারোপ করে, সেই হিসেবেই বন্টিত হবে।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

عن جابر بن زيد قال: الربح على اصطلحوا عليه، والوضعية على المال هذا فى الشريكين، فإن هذا بمأة، وهذا بمأتين (مصنف عبد الرزاق-8/248، رقم-15089)

إن شركة العنان لا يشترط فيها المساوة لا فى المال، ولا فى التصرف، فيجوز أن يكون مال أحد الشريكين أكثر من الآخر….. فيوزع الربح بينهما حسب الشرط اللذى اتفقا عليه (الفقه الإسلامى وأدلته-4/592)

أما شركة العنان فهى أن يشترك اثنان فأكثر بمالين على أن يعمل معا فى تنميتها، والربح بينهما على ما اشترطا (الفقه على مذاهب الأربعة، دار الفكر-3/75)

شركة عنان: تصح مع تساوى المال واختلاف الربح، ومع اختلاف المال وتساوى الربح، ومع اختلاف مال كل من الشريكين (معجم لغة الفقهاء، كرتاشى-261)

إن شرطا الربح بينهما بقدر رأس مالهما جاز…. والوضعية بينهما على قدر رأس مالهما أبدا (رد المحتار، زكريا-6/484، كرتاشى-4/312، بدائع الصنائع، زكريا-5/83، كرتاشى-6/62، الموسعة الفقهية الكويتية-26/61، الفتاوى الهندية-2/320، جديد-2/326)

إذا شرطا الربح على قدر المالين متساويا، أو متفاضلا، فلا شك أنه يجوز، ويكون الربح بينهما على الشرط…. والضعية على قدر المالين متساويا ومتفاضلا، لأن الوضعية اسم لجزء هالك من المال فيتقدر بقدر المال (بدائع الصنائع، زكريا-5/83، كرتاشى-6/62، الفتاوى الهندية-2/320، جديد-2/326)

ويجوز مع ذلك أن يتساويا فى الربح، أو يختلفا فيوزع الربح بينهما حسب الشرط الذى اتفقا عليه، أما الخسارة فتكون بنسبة رأس المال، فحسب عملا بقاعدة الربح على ما شرطا والضعية على قدر المالين (الفقه الأسلامى وأدلته-4/592-609-610)

وإن شرطا أن يكون الربح والضعية بينهما نصفين، فشرط الوضعية بصفة فاسدة، ولكن بهذا لا تبطل الشركة، لأن الشركة لا تبطل بالشرط الفاسدة، وإن وضعا فالوضعية على قدر رأس مالهما (الفتاوى التاتارخانية-7/491، رقم-10969)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল– [email protected]