প্রশ্ন
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ খুব জরুরী প্রয়োজনে আজ পোস্ট করছি। অনুগ্রহ করে উত্তরটা দিবেন প্লিজ!
আমাকে আমার স্বামী একদিন এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক,বাইন তালাক বলেছে। এরপর আমি বাপের বাড়ি চলে যাই কিন্তু এই বিষয়ে কাউকে কিছু বলিনি।
একদিন আমার স্বামী এসে আমাকে বুঝিয়ে সমঝিয়ে নিয়ে যায়। আমিও তার সাথে থাকতে শুরু করি।
একটা পর্যায়ে আমি একজন হুজুরের কাছে জানতে পারি এভাবে মেলামেশা হারামের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। আমি কান্নাকাটি শুরু করি ও বাপের বাড়িতে চলে যেতে চাই।
তখন আমার স্বামী একজন হুজুরকে ডেকে এনে আমার এক দেবরের সাথে বিয়ে দেয়। সেখানে আমার স্বামী ও একজন ভাবি উপস্থিত ছিলো। বিয়ের পর তিনদিন আমার স্বামীর বাড়িতেই আমাদেরকে মেলামেশা করার সুযোগ দেয়। স্বামী নিজেই পাহারা দেয় যেন কেউ বুঝতে না পারে। এভাবে তিনদিন পার হয়ে যাওয়ার পর ঐ দেবর আমাকে তালাক দেয় এবং আমার স্বামীর সাথে পুনরায় বিয়ে পরিয়ে দেওয়া হয়। মাঝখানে কোন ইদ্দাত পালন করা হয়নি। এখন আমরা ঘর সংসার করছি।
এখন আমার প্রশ্ন হলো,
এই অবস্থায় উক্ত স্বামীর সাথে সংসার করা কি বৈধ হচ্ছে? আমি বেশ কিছুদিন থেকে এই চিন্তায় ঘুমাতেও পারছি না। আমার স্বামীকে বললে তিনি বলেন, সমস্যা নাই। আমরা তো হিল্লা করে নিয়েছি। প্লিজ! একটু তাড়াতাড়ি উত্তর দিবেন। আমি একমাত্র আল্লাহর জন্য যেকোন পরিস্থিতিতে শরয়ী সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি আছি।
নিবেদক: (নামটি উহ্য রাখা হলো)
লালমনিরহাট
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
তিন তালাক হবার পর যদি ইদ্দত শেষে দেবর বিয়ে করে থাকে, তাহলে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক আলেম এবং আপনার স্বামীর উপস্থিতিতে যদি স্বামী স্ত্রী ইজাব কবুল হয়ে থাকে, তাহলে বিয়েটি শুদ্ধ হয়েছে।
যদি বিয়ের সময় শুধু আপনার স্বামী, বিয়েকারী দেবর এবং ভাবি ছিল, কিন্তু আর কেউ না থাকে, তাহলে বিবাহ হয়নি।
এছাড়া প্রথম স্বামী থেকে তালাকপ্রাপ্তা হবার পর ইদ্দত শেষ হবার আগেই যদি বিয়ে করা হয়ে থাকে, তাহলে দেবরের সাথে বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।
যদি দেবরের সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে তারপর দেবর কর্তৃক তালাকের পরপরই প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।
বরং ইদ্দত শেষ করে দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার উপস্থিতিতে বিয়ে করলেই শুদ্ধ হবে।
ومن امر رجلا بأن يزوج ابنته الصغيرة، فزوجها والأب حاضر بشهادة رجل واحد سواهما جاز النكاح (هداية، كتاب النكاح-2\3-7، الدر المختار مع الشامى-4\94، هندية-1\268)
وشرط حضور شاهدين حرين أو حر وحرتين، مكلفين، سامعين قولهما معا على الأصح فاهمين مسلمين (الدر المختار مع رد المحتار، زكريا-4/87-92، كرتاشى-3/21-23، هداية-2/307)
ولا ينعقد نكاح المسلمين إلا بحضور شاهدين، عاقلين بالغين مسلمين رجلين أو رجل وامرأتين (هداية-2/306، البحر الرائق-3/155)
ولا ينعقد نكاح المسلمين إلا بحضرة شاهدين حرين مسلمين بالغين الخ (الجوهرة النيرة، كتاب النكاح، امدادية ملتان-2/66، دار الكتاب ديوبند-2/64-65)
وَلَا تَعْزِمُوا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتَّىٰ يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ ۚ (سورة البقرة-235)
أَمَّا نِكَاحُ مَنْكُوحَةِ الْغَيْرِ وَمُعْتَدَّتِهِ فَالدُّخُولُ فِيهِ لَا يُوجِبُ الْعِدَّةَ إنْ عُلِمَ أَنَّهَا لِلْغَيْرِ لِأَنَّهُ لَمْ يَقُلْ أَحَدٌ بِجَوَازِهِ فَلَمْ يَنْعَقِدْ أَصْلًا (رد المحتار-4/274، البحر الرائق-4/242)
لا يجوز للرجل أن يتزوج زوجة غيره، وكذالك المعتدة سواء كانت العدة عن طالق، أو وفاة (الفتاوى الهندية-1/280)
ومنها ان لا تكون معتدة الغير لقوله: ولا تعزموا عقدة النكاح حتى يبلغ الكتاب أجله أى ما كتب عليها من التربص (بدائع الصنائع-2/549)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]