প্রশ্ন:
Ques sub-fabricated hadith.
Some ahle hadith brother say there r three fabricated hadith in fazale amal. Is it true?
1st hadith, the man who kaza in salah he will stay zahnnam in 28800000 years.
2nd, the akhtelaf of ummat is rahma.
3rd, the man who will not care salah , he will face 15 shast, .
জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم
১ নং এর উত্তর
এ হাদীসটি শায়েখ জাকারিয়া রহঃ তার সুবিখ্যাত গ্রন্থ ফাযায়েলে আমালে নকল করার পর নিচে আরবীতে হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন-
এটি মাজালিসুল আবরার গ্রন্থে বর্ণিত।
আমার {শায়েখ জাকারিয়া রহঃ} ব্যক্তিগত মন্তব্য হল-আমার কাছে যত হাদীসের গ্রন্থ আছে, তার কোনটিতে আমি এ হাদীস পাইনি মাজালিসুল আবরার কিতাবে ছাড়া। যে কিতাবটির প্রশংসা করেছেন আমাদের শাইখুল মাশায়েখ আল্লামা শাহ আব্দুল আজীজ দেহলবী রহঃ।
মুহাদ্দিসীনে কেরামের বিশাল জামাত হাদীসটিকে জাল হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। আরশায়েখ জাকারিয়া রহঃ নিজেও হাদীসটি সহীহ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই এ হাদীসের নিসবত শায়েখ আব্দুল আজীজ রহঃ এর তাহকীক ও প্রশসংসিত কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং এটি কোন দোষনীয় কাজ হয়নি।
কোন কিতাবে দু’ একটি দুর্বল ও বাতিল বর্ণনা আসা মানেই উক্ত কিতাবটি বাতিল ও পরিত্যাজ্য বলে সাব্যস্ত হয় না। যদি তাই হয়, তাহলে সিহাহ সিত্তা সহ কোন হাদীসের কিতাবই আর গ্রহণযোগ্য থাকবে না। কারণ প্রতিটি হাদীসের কিতাবের ব্যাপারেই কম বেশি দুর্বল ও জাল হাদীস আছে মর্মে মন্তব্য করেছেন মুহাদ্দিসীনে কেরাম।
এ হাদীসটি দলিল হিসেবে আরো যেসব কিতাবে বর্ণিত-
১-তাফসীরে হক্কী-তাফসীরে সূরা নিসা, আয়াত নং-১০৩, তাফসীরে সূরা বাকারা, আয়াত নং-৩
২-তাফসীরে রূহুল বয়ান-তাফসীরে সূরা বাকারা, আয়াত নং-৩, তাফসীরে সূরা নিসা, আয়াত নং-১০৩
এ হাদীস বর্ণনার কারণে যদি ফাযায়েলে আমাল নিন্দনীয় ও বর্জনীয় কিতাব সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে প্রথমেই তাফসীরে হক্কী ও তাফসীরে রূহুল বয়ানের বিরুদ্ধে আঙ্গুলি উত্তলন করতে হবে।
২ নং এর উত্তর
এ হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসীনদের মাঝে মতভেদ আছে। কেউ কেউ জাল বললেও অনেকেই এটাকে দুর্বল হাদীস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাই নির্ধিদ্ধায় এটাকে জাল তথা মওজু বলাটা উচিত হবে না।মোল্লা আলী কারী রহঃ এ হাদীসটি কুরতুবী ও সুনানে বায়হাকী এর উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন। {আল মওজুআতুল কুবরা-২৬}
আল্লামা সাখাবী রহঃ উম্মতী এর স্থলে “আসহাবী”শব্দ দিয়ে হাদীসটি নকল করেছেন। লক্ষ্য করুন মুহাদ্দিদীনে কেরামের মন্তব্য হাদীসটি সম্পর্কে-
اختلافأمتيرحمة
১-
জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ বলেন- হাদীসটি দুর্বল। {তাদরীবুর রাবী-২/১৬৭}
২-
মুহাম্মদ হারুল্লাহ আস সা’দী রহঃ বলেন-হাদীসটি দুর্বল। {আন নাওয়াফেখুল আতরাহ-২৩}
واختلافأصحابيرحمة
আল্লামা আজলুনী রহঃ বলেন-হাদীসটি মুরসাল ও দুর্বল। {কাশফুল খাফা-১/৬৬}
আল্লামা ইরাকী রহঃ বলেন-এ হাদীসের সনদটি দুর্বল। {তাখরীজুল আহইয়া-১/৪৭}
আল্লামা ইরাকী রহঃ আরো বলেন-হাদীসটি মুরসাল ও দুর্বল। {তাখরীজু মুখতাসারুল মানহাজ-৬০}
৩ নং এর উত্তর
এ হাদীসটিকেও মুহাদ্দিসীনে কেরামের বিশাল জামাত জাল হাদীস বলে আখ্যায়িত করেছেন।
শায়েখ জাকারিয়া রহঃ ফাযায়েলে আমালে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী রহঃ এর “আজ যাওয়াজের” গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়ে। সেই সাথে এ হাদীসটি রয়েছে আল্লামা আবুল লাইস আস সমরকন্দী রহঃ এর কুররাতুল উইয়ুন কিতাবে।
এ সকল কিতাবের রেফারেন্সে শায়েখ জাকারিয়া রহঃ উক্ত হাদীসটি ফাযায়েলে আমালে সন্নিবিষ্ট করেছেন।
উপসংহার
কোন কিতাবে কিছু জাল বর্ণনা আসা মানেই উক্ত কিতাবটি যদি বাতিল বলে সাব্যস্ত হয়, তাহলে মুসনাদে আহমাদের হুকুম কি হবে?
কারণ আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ মুসনাদে আহমাদের ২৪টি হাদীসকে জাল হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার সুবিখ্যাত গ্রন্থ “আন নুকাতুল বাদিআত আলাল মওজুয়াত” এ।
আর আল্লামা ইবনুল জাওজী রহঃ তার “আল মওজুআত” গ্রন্থে মুসনাদে আহমাদের ৩৮টি হাদীসকে জাল বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এ কারণে এ যদি সবার কাছে এ কথা প্রচার করতে শুরু করা হয় যে, মুসনাদে আহমাদের জাল হাদীস আছে, তাই এ কিতাবটি পড়া যাবে না। এটি একটি পরিত্যাজ্য গ্রন্থ। এটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে? নাকি হাস্যকর একটি বিষয় হবে এমনটি করা?
তেমনি ফাযায়েলে আমালের অভিযোগকৃত এ তিনটি হাদীসকে আমরা জাল হিসেবে মেনে নিলেও ফাযায়েলে আমাল গ্রন্থটি পরিত্যাজ্য গ্রন্থে পরিণত হয় না। হাজার হাজার হাদীসের মাঝে এ তিনটি হাদীস জাল হওয়াটা কোন ধর্তব্যতাই নেই। তাই এ টি নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাটা মোটেও উচিত হবে না। তবে এমন হাদীস বর্ণনা করা উচিত হবে না। বরং এছাড়া অন্যান্য হাদীস বর্ণনা করা উচিত। কারণ সুনিশ্চিত জাল হাদীস ইচ্ছেকৃত বর্ণনা করা জায়েজ নয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।