প্রশ্ন
বর্তমানের এ আধুনিক যুগে যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি লাভ করেছে। বিমানে কয়েক ঘন্টায় সৌদী আরবে যাওয়া সম্ভব। এমন সময়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তির জন্য আট নয় হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পায়ে হেটে হজ্ব করার হুকুম কী?
সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে ‘শিহাব চত্তুর’ নামে এক মুসলিম যুবক ভারত থেকে পায়ে হেটে হজ্জ যাত্রা শুরু করেছেন। এ বিষয়ে শরয়ী বিধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
লোক দেখানো উদ্দেশ্য না হলে এভাবে হজ্জ করা জায়েজ আছে।
সহজ মাধ্যমে হজ্জে যেতে সক্ষম হবার পরও এভাবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে পায়ে হেটে হজ্জে যাওয়া উচিত নয়। বরং নিজের সাধ্যানুপাতে সহজ মাধ্যমে হজ্জে গমণ করা উচিত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে হজ্জ করেননি। করতে উৎসাহও দেননি। তাই এটাকে সুন্নাহ মনে করার সুযোগ নেই।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا بَلَغَهُ أَنَّ أُخْتَ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ مَاشِيَةً، قَالَ: إِنَّ اللهَ لَغَنِيٌّ عَنْ نَذْرِهَا، مُرْهَا فَلْتَرْكَبْ
ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানতে পারলেন, উকবাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ)-এর বোন পদব্রজে হজ (হজ্জ) করার মানত করেছেন তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তার এরূপ মানতের মুখাপেক্ষী নন। তাকে যানবাহনে চড়ে হজে (হজ্জে) আসার নির্দেশ দাও। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৩২৯৭, জামে তিরমিজী, হাদীস নং-১৫৩৬]
عَنْ عَائِشَةَ : «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا امْرَأَةٌ، قَالَ: مَنْ هَذِهِ؟ قَالَتْ: فُلَانَةُ، تَذْكُرُ مِنْ صَلَاتِهَا. قَالَ: مَهْ، عَلَيْكُمْ بِمَا تُطِيقُونَ، فَوَاللهِ لَا يَمَلُّ اللهُ حَتَّى تَمَلُّوا، وَكَانَ أَحَبَّ الدِّينِ إِلَيْهِ مَا دَامَ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ»
‘আয়শা রাঃ হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর নিকট আসেন, তাঁর নিকট তখন এক মহিলা ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘ইনি কে?’ ‘আয়শা রাঃ উত্তর দিলেন, অমুক মহিলা, এ বলে তিনি তাঁর নামাযের কথা উল্লেখ করলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘আরে থামো! তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করা তোমাদের কর্তব্য। আল্লাহর শপথ! আল্লাহ (পুরস্কার প্রদানে) অবসন্ন হন না, যতক্ষণ না তোমরা অবসন্ন হয়ে পড়ো। আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় আমল সেটাই, যা আমলকারী নিয়মিত করে থাকে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৭৮৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৩৮]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]