প্রশ্ন
আমার তালাক হওয়ার পর আমি দ্বিতীয় বিয়ে করছি এবং সহবাস করেছি।কিন্তু আমার পূর্বের স্বামীকে ভুলতে পারছি না। এখন আমার দ্বিতীয় স্বামীকে ভালো লাগে না। এখন যদি আমি দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস না করি শুধু তার স্ত্রী হিসাবে থাকি। আর প্রথম স্বামীর কাছেও না যেয়ে ধৈর্য ধারণ করি। এবং আমার দ্বিতীয় স্বামী মারা গেলে পূর্বের স্বামীকে বিয়ে করি। তাহলে কি গুনাহ হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
বিয়ের পর স্বামীকে সহবাস করতে না দেয়া মারাত্মক গোনাহের কাজ। সেই সাথে এক স্বামীর ঘর সংসার করার সময় আগের স্বামীর কথা চিন্তা করাটাও গোনাহের কাজ।
তাই এহেন কাজ করা কোনভাবেই আপনার জন্য সমীচিন নয়।
যদি দ্বিতীয় স্বামীর সাথে ঘরসংসার করতেই মনে না চায়, তাহলে তার কাছ থেকে তালাক নিয়ে ইদ্দত শেষে প্রথম স্বামীকে বিয়ে করতে পারেন।
কিন্ত বারবার তালাক বিয়ের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক সুনাম দুই ক্ষুন্ন হবে। এর দ্বারা পরবর্তীতে সমস্যায় পড়লে আপনার সহযোগিতায় আত্মীয় স্বজন এগিয়ে নাও আসতে পারে। তাই বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تُؤَدِّي الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا
কসম ঐ আল্লাহর, যার হাতে আমার প্রাণ! নারী ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ পাকের হক আদায়কারী বলে গণ্য হবে না, যতক্ষণ না সে তার স্বামীর ন্যায়ানুগ হকগুলি আদায় করবে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৮৫৩]
إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ
স্বামী যদি তার স্ত্রীকে প্রেমের শয্যায় আহ্বান করে কিন্তু অকারণে সেই স্ত্রী তার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে, তবে রাতভর ফেরেশতারা ঐ নারীর উপর অভিশাপ দিতে থাকে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৩৭]
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠]
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com