লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সঠিককে ভুল এবং ভুলকে সঠিক বলা হতে থাকবে
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيْفَ بِكُمْ إِذَا فَسَقَ شَبَابُكُمْ، وَطَغَى نِسَاؤُكُمْ؟» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ذَلِكَ لَكَائِنٌ؟ قَالَ: «وَشَرٌّ مِنْ ذَلِكَ سَيَكُونُ، كَيْفَ بِكُمْ إِذَا رَأَيْتُمُ الْمَعْرُوفَ مُنْكَرًا وَالْمُنْكَرَ مَعْرُوفًا؟
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের কী অবস্থা হবে যখন তোমাদের পুরুষরা ফাসিক ও নারীরা অবাধ্য হয়ে যাবে?
সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কি হবেই? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন, অবশ্যই হবে। এর চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা হবে। তোমাদের হাল তখন কী হবে? যখন তোমরা ভালোকে মন্দ ও মন্দকে ভালো মনে করতে থাকবে। [আলমু’জামুল আওসাত লিততাবারানী, হাদীস নং-৯৩২৫, হিলয়াতুল আওলিয়া-৮/২৪২]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَيَأْتِي عَلَى النَّاسِ سَنَوَاتٌ خَدَّاعَاتُ، يُصَدَّقُ فِيهَا الْكَاذِبُ، وَيُكَذَّبُ فِيهَا الصَّادِقُ، وَيُؤْتَمَنُ فِيهَا الْخَائِنُ، وَيُخَوَّنُ فِيهَا الْأَمِينُ، وَيَنْطِقُ فِيهَا الرُّوَيْبِضَةُ» ، قِيلَ: وَمَا الرُّوَيْبِضَةُ؟ قَالَ: «الرَّجُلُ التَّافِهُ فِي أَمْرِ الْعَامَّةِ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অচিরেই লোকেদের উপর প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির যুগ আসবে। তখন মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী গণ্য করা হবে, আমানতের খিয়ানতকারীকে আমানতদার আমানতদারকে খিয়ানতকারী গণ্য করা হবে এবং রুওয়াইবিজা হবে সমাজ বিষয়ক আলোচক। জিজ্ঞাসা করা হলো, রুওয়াইবিজা কি? তিনি বলেনঃ নীচ প্রকৃতির লোক সে জনগণের হর্তাকর্তা হবে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০৩৬]
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ أَمَامَ الدَّجَّالِ سِنِينَ خَدَّاعَةً، يُكَذَّبُ فِيهَا الصَّادِقُ، وَيُصَدَّقُ فِيهَا الْكَاذِبُ، وَيُخَوَّنُ فِيهَا الْأَمِينُ، وَيُؤْتَمَنُ فِيهَا الْخَائِنُ، وَيَتَكَلَّمُ فِيهَا الرُّوَيْبِضَةُ “. قِيلَ: وَمَا الرُّوَيْبِضَةُ؟ قَالَ: ” الْفُوَيْسِقُ يَتَكَلَّمُ فِي أَمْرِ الْعَامَّةِ “
হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, দাজ্জালের আগমণের আগে লোকেদের উপর প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির যুগ আসবে। তখন সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদী গণ্য করা হবে, আর মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী গণ্য করা হবে। আমানতদারকে খিয়ানতকারী ও আমানতের খিয়ানতকারীকে আমানতদার গণ্য করা হবে এবং রুওয়াইবিজরা লোকদের মাঝে কথা বলবে। জিজ্ঞাসা করা হলো, রুওয়াইবিজা কি? তিনি বলেনঃ পাপিষ্ঠ প্রকৃতির লোক সে সমাজ বিষয়ক নির্দেশনাদাতা হবে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৩২৯৮]
হযরত শা’বী রহঃ বলেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত কায়েম হবে না, যতক্ষণ না জ্ঞানকে মূর্খতা ও মূর্খতাকে জ্ঞান মনে করা হবে। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৭৫৮৮]
তালাকের পরও স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকবে!
قَالَ: يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يُطَلِّقُ الرَّجُلُ الْمَرْأَةَ، ثُمَّ يَجْحَدُهَا طَلَاقَهَا، فَيُقِيمُ عَلَى فَرْجِهَا، فَهُمَا زَانِيَانِ مَا أَقَامَا
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ বলেন, লকদের মাঝে এমন যুগ আসবে, যখন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিবে, তারপর তালাক দেয়াকে অস্বিকার করবে। তারপর তার সাথেই সংসার করবে, ফলে উভয়ে যিনকারী হিসেবে পরিগণিত হবে। [আলমু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৮৬১, আলমু’জামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-১০৫৫৬]
নারীদের আধিক্য হবে
কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি হবে। পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাবে। এমন কি পঞ্চাশ নারীর জন্য একজন পুরুষ তত্বাবধায়ক হবে। [তিরমিজী, হাদীস নং-২২০৫]
عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَطُوفُ الرَّجُلُ فِيهِ، بِالصَّدَقَةِ مِنَ الذَّهَبِ، ثُمَّ لاَ يَجِدُ أَحَدًا يَأْخُذُهَا مِنْهُ، وَيُرَى الرَّجُلُ الوَاحِدُ يَتْبَعُهُ أَرْبَعُونَ امْرَأَةً يَلُذْنَ بِهِ، مِنْ قِلَّةِ الرِّجَالِ وَكَثْرَةِ النِّسَاءِ
আবূ মূসা (আশ’আরী) (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের উপর অবশ্যই এমন এক সময় আসবে যখন লোকেরা সাদকার সোনা নিয়ে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু একজন গ্রহীতাও পাবে না। পুরূষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এবং নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে চল্লিশজন নারী একজন পুরূষের অনুগমন করবে এবং তার আশ্রয়ে আশ্রিতা হবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৪১৪, ইফাবা-১৩৩১]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتْبَعَ الرَّجُلَ قَرِيبٌ مِنْ ثَلَاثِينَ امْرَأَةً، كُلُّهُنَّ يَقُولُ: أَنْكِحْنِي أَنْكِحْنِي أَنْكِحْنِي
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত হবে না, যতদিন না এমন হবে যে, এক পুরুষের পিছনে ত্রিশজন নারী ঘুরতে থাকবে। প্রত্যেকেই বলতে থাকবে, আমাকে বিয়ে কর, আমাকে বিয়ে কর, আমাকে বিয়ে কর। [মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াই, হাদীস নং-৪২৩, আসসুনানুল ওয়ারিদা ফিলফিতান, বর্ণনা নং-৪১২]
নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির অর্থ কী?
এক পুরুষের বিপরীতে পঞ্চাশের অধিক নারী হওয়া দ্বারা হুবহু এ সংখ্যা উদ্দেশ্য হতে পারে, কিংবা এর দ্বারা নারীদের সংখ্যা বেশি হওয়া উদ্দেশ্য হতে পারে।
নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ কী?
১ কিয়ামতের আগে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বৃদ্ধি পাবে। যুদ্ধের কারণে পুরুষরা মারা যেতে থাকবে। এ কারণে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
২ মেয়েদের জন্ম ও তাদের রক্ষণাবেক্ষণ বৃদ্ধি পাবে। [ফাতহুল বারী-১/১৭৯]
পঞ্চাশের বিপরীতে একজন দায়িত্বশীল হবার মানে কী?
১ ঘরের দায়িত্বশীল। যার দেখাশোনার দায়িত্বের পঞ্চাশ নারী হবে।
২ এর দ্বারা উদ্দেশ্য স্ত্রী। অর্থাৎ কিয়ামতের আগে বর্বরতা ও মূর্খতা এতোটাই বৃদ্ধি পাবে যে, এক পুরুষের অধীনে পঞ্চাশজন করে স্ত্রী থাকবে। [ফাতহুল বারী-১/১৭৯]
মৃত্যুর আকাঙ্খা করা হতে থাকবে
কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে মানুষের জীবনাচার এতোটাই জটিল, বিপদ-আপদে পূর্ণ ও সংকীর্ণ হয়ে পড়বে যে, মানুষ মৃত্যু কামনা করতে থাকবে।
عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى يَمُرَّ الرَّجُلُ عَلَى الْقَبْرِ فَيَتَمَرَّغُ عَلَيْهِ وَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي كُنْتُ مَكَانَ صَاحِبِ هَذَا الْقَبْرِ وَلَيْسَ بِهِ الدِّينُ إِلاَّ الْبَلاَءُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ, আমি তাঁর শপথ করে বলছি, দুনিয়া খতম হবে না যতক্ষন না এক ব্যক্তি কবরের পাশ দিযে যাত্রাকালে উহার উপর গড়াগড়ি দিয়ে বলবে, হায়! এই কবরবাসীর স্থানে যদি আমি হতাম। তার নিকট দ্বীন থাকবে না; থাকবে কেবল বালা মুসীবত। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৫৭, ইফাবা-৭০৩৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০৩৭]
وَيُوشِكُ يَا ابْنَ أَخِي إِنْ عِشْتَ إِلَى قَرِيبٍ أَنْ يَمُرَّ بِالْجَنَازَةِ فِي السُّوقِ فَيَرْفَعُ الرَّجُلُ رَأْسَهُ فَيَقُولُ: يَا لَيْتَنِي عَلَى أَعْوَادِهَا
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ছামেত রাঃ বলেন, হে আমার ভাতিজা! যদি তুমি দীর্ঘ সময় জীবিত থাকতে পারো, তাহলে তুমি দেখতে পাবে যে, কোন ব্যক্তির জানাযা বাজার দিয়ে অতিক্রম করবে। তখন কোন এক ব্যক্তি মাথা উঠিয়ে বলতে থাকবে, হায় আফসোস! যদি এ জানাযার খাটিয়ায় আমি হতাম। অর্থাৎ আমি মারা যেতাম আর এ খাটিয়ায় আমার লাশ নেয়া হতো। [মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৮৩৮২]
বর্তমান সময়ে সর্বশ্রেণীর মানুষের মাঝে পৃথিবীব্যাপী আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া উপরোক্ত হাদীসগুলোকে পরিপূর্ণ সত্যতায় বাস্তব করে তুলছে।
মুনাফিকী বৃদ্ধি পাবে
عَنْ أَبِي يَحْيَى , قَالَ: سُئِلَ حُذَيْفَةُ مَا النِّفَاقُ؟ قَالَ الَّذِي يَصِفُ الْإِسْلَامَ وَلَا يَعْمَلُ بِهِ
হযরত আবূ ইয়াহইয়া বলেন, হযরত হুযায়ফা রাঃ এর কাছে মুনাফিকদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। (মুনাফিক কারা?) উত্তরে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইসলামের প্রশংসা করে, কিন্তু এর উপর আমল করে না। [আলইবানাতুল কুবরা লিইবনে বাত্তাহ, হাদীস নং-৯১৪]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ، قَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا، وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا، يَظْهَرُ النِّفَاقُ، وَتُرْفَعُ الْأَمَانَةُ، وَتُقْبَضُ الرَّحْمَةُ، وَيُتَّهَمُ الْأَمِينُ، وَيُؤْتَمَنُ غَيْرُ الْأَمِينِ، أَنَاخَ بِكُمُ الشُّرْفُ الْجُونُ»، قَالُوا: وَمَا الشُّرْفُ الْجُونُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «فِتَنٌ كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি যা জানি, তোমরা যদি তা জানতে তাহলে কম হাসতে এবং বেশি করে কাঁদতে। মনে রেখো! মুনাফিকী প্রকাশ পাবে। আমানত উঠিয়ে নেয়া হবে। রহমত তথা দয়া অনুগ্রহ হারিয়ে যাবে। আমানতদারের উপর খিয়ানতের অভিযোগ করা হবে। আর খিয়ানতকারীকে আমানতদার বলা হবে। তোমাদের শুরুফুল জূন বসিয়ে রাখবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, শুরুফুল জূন কী জিনিস হে আল্লাহর রাসূল? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অন্ধকার রাতের টুকরার মত ফিতনা। [সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৭০৬, মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৮৭২৫]
عَنْ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَسُودَ كُلَّ قَوْمٍ مُنَافِقُوهُمْ
হযরত আবূ বাকরা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না, যতক্ষণ না প্রত্যেক জাতিকে তার মুনাফিকরা নেতৃত্ব দিবে। [আলমু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৭৭১৫]
قال عمرُ: إنَّ أخوفَ ما أخافُ عليكم ثلاثةٌ: منافقٌ يقرأ القرآنَ، لا يُخطي منه واوًا ولا أَلِفًا، يجادلُ الناسَ أنه أعلمُ منهم، ليُضلَّهم عن الهدى، وزلَّةُ عالِمٍ، وأئمَّةٌ مضلُّون
হযরত উমর বিন খাত্তাব রাঃ বলেন, তোমাদের ব্যাপারে সবচে’ বেশি যে বিষয়টি নিয়ে আমি শংকিত, তা হচ্ছে, তিন প্রকার মুনাফিক। ১ ঐ মুনাফিক যে কুরআনে কারীম উত্তমরূপে পড়ে। এমন কি তাতে ওয়াও ও আলিফ পর্যন্ত ভুল করে না। সে মুসলমানদের সাথে ধর্মীয় বিষয়ে বাকবিতণ্ডা করে, বুঝাতে চায় যে, সে খুবই জ্ঞানী। এর দ্বারা সে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে চায়। ২ আলেমের পদস্খলন। বা তার ভুল ফাতওয়া। ৩ পথভ্রষ্ট নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। [মুসনাদুল ফারূক, বর্ণনা নং-৯৫৭]
উপরোক্ত বর্ণনাগুলোতে যে বিবরণ এসেছে। বর্তমান সময়ের সাথে মিলিয়ে দেখুন তা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। গ্রামের সাধারণ লোক থেকে নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত মুনাফিকে ভরপুর। যারা মুখে মুখে ইসলামের প্রশংসা করে। ইসলাম সত্য ধর্ম বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। কিন্তু ইসলামের বিধানগুলো মানতে চায় না।
মানবে তো দূরে থাক, ইসলামের বিধানাবলীর বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে সর্ব প্রকার ঠাট্টা বিদ্রুপ করে থাকে।
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ যে মুনাফিক ব্যক্তি দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে তা আশা করি আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন।