প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / স্বামীর সাথে হজ্জে যাওয়া উত্তম নাকি সন্তানের সাথে?

স্বামীর সাথে হজ্জে যাওয়া উত্তম নাকি সন্তানের সাথে?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম,

আমার আব্বা-আম্মা হজ্জ্বে যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন। আমাদের এলাকার একজন লোক দুইবার হজ্জ্ব করেছেন। প্রথমবার নিজে একা গিয়েছেন এবং পরেরবার তার স্ত্রী’কেও সাথে নিয়ে গিয়েছেন। আব্বা হজ্জ্বে যাওয়ার বিষয়ে ঐ লোকের সাথে কথা বলেছিলেন, উনি বলেছেন স্ত্রী’কে সাথে নিয়ে গেলে হজ্জ্বের নিয়ম-কানুন পালনে কিছু অসুবিধা হয়। এমতাবস্থায় আমি জানতে  চাচ্ছি যে-

১। স্বামী-স্ত্রী একসাথে হজ্জ্বে গেলে হজ্জ্বের নিয়ম কানুন পালনে সত্যিই কি কোনো অসুবিধা হয়?

২। স্বামী-স্ত্রীর একসাথে হজ্জ্বে যাওয়াই কি ভালো না প্রথমে স্বামী একবার হজ্জ্ব করে এসে এরপর পরে আবার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে হজ্জ্ব করতে যাওয়া ভালো?

৩। স্বামী স্ত্রীর একসাথে হজ্জ্বে যাওয়াকে কি হাদিসে উৎসাহিত করা হয়? না সন্তান মা কে নিয়ে হজ্জ্বে যাওয়াকে উৎসাহিত করা হয়?

৪। হাদিসে স্ত্রী কে নিয়ে হজ্জ্বে যাওয়ার বিষয়ে কি বলে?

দয়া করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

স্বামী স্ত্রী একসাথে হজ্জে যাওয়ায় হজ্জের নিয়ম পালনে কোন অসুবিধা হবার শরয়ী কোন ভিত্তি নেই।

হজ্জ যাদের উপর ফরজ তাদের জন্য হজ্জে যাওয়া জরুরী। আর নারীদের ক্ষেত্রে মাহরাম সঙ্গী থাকা জরুরী। সেখানে স্বামী বা সন্তানের সাথে যাওয়া বিষয়ে উত্তম ও অনুত্তমের কোন বিষয় নেই।

হাদীসে স্বামী বা সন্তান কারো সাথে গমণকেই উৎসাহিত বা অনুৎসাহিত করা হয়নি।

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তার একাধিক স্ত্রীসহ হজ্জ করেছেন।

সুতরাং স্ত্রীকে হজ্জে গমণকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা কোনভাবেই সঙ্গত নয়।

স্ত্রীকে নিয়ে হজ্জে যাওয়া বিষয়ে অসুবিধা হবার অদ্ভুত ধারণা সম্ভবত এজন্য তৈরী হয়েছে যে, যেহেতু হজ্জ কবুল হবার প্রধানতম শর্ত হল, স্ত্রী সম্ভোগ থেকে হজ্জকালীন সময়ে বিরত থাকা, যা স্ত্রী সাথে থাকলে হয়তো সম্ভব হবে না। সেই কারণে হয়তো এমনটি ধারণা করা হয় যে, স্ত্রীকে সাথে নিয়ে হজ্জ করলে হজ্জের বিধান পালনে অসুবিধা হয়।


عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ حَجَّ هَذَا البَيْتَ، فَلَمْ يَرْفُثْ، وَلَمْ يَفْسُقْ، رَجَعَ كَمَا وَلَدَتْهُ أُمُّهُ»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব করেছে এবং তাতে কোনরূপ অশ্লীল কথা বলেনি, এবং কোন গোনাহের কাজ করেনি, সেই ব্যক্তি হজ্জ থেকে প্রত্যাবর্তন করবে গোনাহহীন অবস্থায়, যেমন গোনাহহীন ছিল যেদিন তার মাতা তাকে প্রসব করেছিল। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৮১৯, ১৭২৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৩৫০}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *